ইপেপার । আজ রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

চুয়াডাঙ্গার শীর্ষ সন্ত্রাসী মোমিন গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এলেও বিরাজ করছে আতঙ্ক ধরা ছোয়ার বাইরে গডফাদারসহ বাকি সদস্যরা : দ্রুত গ্রেফতারের দাবি এলাকাবাসীর!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:৩৭:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ৩৬৪ বার পড়া হয়েছে

IMG_20161219_150732-1নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি, বোমাবাজী মামলার প্রধান আসামী ছয়ঘরিয়া গ্রামে অবস্থিত গ্রীন হাউজের প্রধান মোমিনসহ তার বাহিনীর ৩জন সদস্য গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এলেও অজানা আতঙ্ক কাটছে এলাকাবাসীর মন থেকে। কারণ মোমিনের গডফাদার ও তার বাহিনীর বাকি সদস্যরা এখনো রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। তবে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি করেছে পুলিশের একাধিক সুত্র। মোমিন বাহিনীর গডফাদার ও বাকি সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার করে তাদের অস্ত্র ভান্ডার উদ্ধার করে এলাকায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্বস্তি ফিরিয়ে আনার জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলার সুযোগ্য ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সময়ের সমীকরণে র্শীষ সন্ত্রাসী মোমিন ও তার প্রতিষ্ঠিত ছয়ঘরিয়া গ্রামের গ্রীন হাউজ ও হিজলগাড়ী বাজারের রেড হাউজের কালো অধ্যায় প্রকাশ হওয়ায় পত্রিকা নিয়ে কাড়াকাড়ি লক্ষ করা গেছে অত্র এলাকায়। মোবাইলে অনেক ভোক্তভোগী পত্রিকা অফিসে দিতে থাকে মোমিন বাহিনীর বিরুদ্ধে লোকহর্ষকর তথ্য।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে,  চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের আনিছ উদ্দিনের ছেলে প্রায় ৭ বছর আগে তিতুদহ ইউনিয়নের গড়াইটুপি অ¤্রবতি মেলার আয়োজক শুকুর আলীর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে মেলার মাঠে সেচ্ছাসেবক কমিটির সদস্য হিসেবে মেলায় দাপট প্রতিষ্ঠা করে। এখান থেকেই তার উৎত্থান শুরু। এরপর দিনে দিনে অপরাধ জগতের গভীরে প্রবেশ করে এলাকায় ছোট খাটো চুরি, ছিনতায়ের মত অপরাধ করতে থাকে গোপনে। বছর দুয়েক আগে মোমিন ও তার বাহিনী  হাতে ছয়ঘড়িয়া টু বড়শলুয়া সড়কে প্রকাশ্যে দিবালোকে খুন হয় ছয়ঘড়িয়া গ্রামের সিরাজ মেম্বার। সে খুন মামলার প্রধান আসামী করা হয় মোমিনকে। কিন্তু রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যায় মোমিন ও তার সদস্যরা। আর একারণেই এর প্রকার অপ্রতিরোধ্য হওয়ার পাশাপাশি হয়ে ওঠে চুয়াডাঙ্গা জেলার এক মূর্তিমান আতঙ্ক শীর্ষ সন্ত্রাসী মোমিন। নিজের দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেখিয়ে ভীতি সজ্ঞার করে এলাকায় করতে থাকে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি। মোমিন ও তার বাহিনী কেরুজ ছয়ঘরিয়া ফার্মে অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন করে ব্যাপক সুবিধাভোগ করে থাকে। জোরপূর্বক কেরুজ জমি দখলে নেওয়া থেকে শুরু রাস্তার গাছ কাঠা সব কিছুই মামোলি ব্যাপারে পরিনত হয় তার কাছে। কিছুদিন পূর্বেও সে ছয়ঘরিয়া বানিজ্যিক খামারের তেল চুরি করতে গিয়ে ইনচার্জকে শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে তারই গ্রামের এক দম্পতির কাছ থেকে দুপুর বেলা ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। কেরুজ হিজলগাড়ী ফার্মের কর্মকর্তাকেও ফার্মে এসে মারধর করে সে ও তার আশ্রয় দাতা হিজলগাড়ী বাজারের জনৈক ওই ভূষিমাল ব্যবসায়ী। মোমিনকে সামনে রেখে হিজলগাড়ী এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য জনৈক ভূষিমাল ব্যবসায়ী ও স্থানীয় যুবলীগের সাবেক এক নেতা উঠতি বয়সী যুবকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে গড়ে তোলে কথিত রেড হাউজ। রেড হাউজের সদস্যদের মধ্যে থেকে বিশ্বস্ত যুবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় দেশী অস্ত্র। যেমন, চাপাতি, রামদা, শিকদা। অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে প্রকাশ্য দিবালোকেই ওই সমস্ত যুবকরাও মাঝে মাঝেই চা পাতি রামদার মহড়া দিত। তাদের ভয়ে টু শব্দ পর্যন্ত করতে পারিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী, সুধীমহল। তাদের এই সমস্ত অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ইতোমধ্যেই তাদের হাতে প্রহারের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তার সুষ্ঠ কোন বিচার হয়নি। এদিকে গতকাল দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকায় গ্যাং গ্রুপ প্রধান মোমিন ও তার কথিত সংগঠন ছয়ঘরিয়া গ্রীন হাউজ ও হিজলগাড়ীর রেড হাউজ নিয়ে তথ্য ভিত্তিক সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয় এলাকায়। এলাকার শান্তি প্রিয় অনেকেই পুলিশের পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাদের অনেকেই পত্রিকা অফিসে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে আবার কেউ মোবাইলে অভিনন্দনের পাশাপাশি গ্রীন হাউজ ও রেড হাউজ সম্পর্কে লোকহর্ষকর তথ্য প্রদান করে। তারই আলোকে আজকের এই প্রতিবেদন। এই সমস্ত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সরেজমিনে ছয়ঘরিয়া গ্রামে গেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি তুলে ধরেন মোমিনের উৎত্থানের ইতিহাস। মোমিন বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট বড়শলুয়া গ্রামের বসতিপাড়ার এক দম্পতি অভিযোগ করে বলেন, কিছুদিন পূর্বে মোমিন ও তার বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে ছয়ঘরিয়া প্রাইমারী স্কুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে ৫০ হাজার টাকার বিনিময় ছেড়ে দিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষন করে নেয়।  আর এই কথা যদি পুলিশ কিংবা সাংবাদিকদের বলি তবে বোমা মেরে স্বপরিবারে হত্যার হুমকিও দেয় তারা। বড়শলুয়া বসতি পাড়ার এক চা দোকানী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমীকরণকে বলেন, প্রায় ৭ মাস পূর্বে তার বোনকে নিয়ে একটা ঝামেলা হয়। পরে গ্রাম্যভাবে অভিযুক্তকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলে সেদিনই রাতের বেলা মোমিন তাদের বাড়ীতে এসে অস্ত্রের মুখে জি¤িম করে সেই ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। বড়শলুয়া মসজিদে বসে কথা হয় স্থানীয় এক ক্ষমতাশীন দলের নেতার সাথে তিনিও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমরা মোমিন বাহিনীর কাছে অসহায়। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই পুরো বাহিনী নিয়ে এসে হামলে পড়ে তাদের ওপর। খাড়াগোদা বাজারের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীও নাম প্রকাশ না করার শর্তে একই রকম তথ্য দেয়। বছর খানেক পূর্বে হিজলগাড়ী বাজারের এক পোল্ট্রি ব্যবসায়ীর সাথে জনৈক ও ভূষিমাল ব্যবসায়ীর গোলযোগের কারণে তিতুদহ ইউনিয়নের বলদিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্যের ভাস্তেকে গড়াইটুপির মেলার যাত্রা প্যান্ডেলের মধ্যে বেধরক মারপিট করে মারাক্তকভাবে আহত করে মোমিন ও তার বাহিনী। এই নিয়ে সে সময় বেশ গরম অবস্থা তৈরী হয় এলাকায়। কিন্তু মোমিন বাহিনীর অস্ত্রের ভয়ে চুপ হয়ে যায় ঘটনাটি। এরই কিছুদিন পর হিজলগাড়ী বাজারের এক কসমেটিক্স ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদা টাকা না দেওয়া বেধরক মারধর করে রেড হাউজের সদস্যরা। ঐদিনই হিজলগাড়ী বাজারে যৌথ দেশী অস্ত্রের মহড়া দেয় রেড হাউজ ও গ্রীন হাউজের সদস্যরা। এতকিছুর পরও ভোক্তভোগীরা মৃত্যুর ভয়ে মোমিন বাহিনীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ প্রদান থেকে বিরত থাকে। কিন্তু বিধি বাম হঠাৎ করেই কালোপোল গ্রামে চাঁদার টাকা আনতে গিয়ে সাহসী গ্রামবাসীর হাতে গনধোলাই খেয়ে এখন পুলিশের খাঁজায়। মোমিন ও তার বাহিনীর ২ সদস্য গ্রেফতার হওয়ায় একদিকে যেমন ভোক্তভোগীদের মাঝে বিরাজ করছে চাপা আনন্দ অন্য দিকে অজানা শঙ্কাও কাটছে না তাদের মন থেকে। কারণ মোমিন গ্রেফতার হলেও তার অস্ত্রের ভান্ডার, গডফাদার ও বাকি সদস্যরা রয়েছে ধরাছেয়ার বাইরে। তবে পুলিশের তরফ থেকে বলা হচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যেই মোমিন বাহিনীর বাকি সদস্যদের গ্রেফতার করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে। এই বাহিনীর সাথে যেই জড়িত থাকুন না কেন, সে যত বড় মাপের নেতাই হোক না কেন,তাদের কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না এবিষয়ে ।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

চুয়াডাঙ্গার শীর্ষ সন্ত্রাসী মোমিন গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এলেও বিরাজ করছে আতঙ্ক ধরা ছোয়ার বাইরে গডফাদারসহ বাকি সদস্যরা : দ্রুত গ্রেফতারের দাবি এলাকাবাসীর!

আপলোড টাইম : ০২:৩৭:০৭ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ ডিসেম্বর ২০১৬

IMG_20161219_150732-1নিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা জেলার শীর্ষ সন্ত্রাসী একাধিক হত্যা, চাঁদাবাজি, বোমাবাজী মামলার প্রধান আসামী ছয়ঘরিয়া গ্রামে অবস্থিত গ্রীন হাউজের প্রধান মোমিনসহ তার বাহিনীর ৩জন সদস্য গ্রেফতার হওয়ায় এলাকায় স্বস্তি ফিরে এলেও অজানা আতঙ্ক কাটছে এলাকাবাসীর মন থেকে। কারণ মোমিনের গডফাদার ও তার বাহিনীর বাকি সদস্যরা এখনো রয়েছে ধরাছোয়ার বাইরে। তবে তাদের দ্রুত গ্রেফতার করে আইনের আওতায় নিয়ে আসার প্রক্রিয়া চলছে বলে দাবি করেছে পুলিশের একাধিক সুত্র। মোমিন বাহিনীর গডফাদার ও বাকি সদস্যদের দ্রুত গ্রেফতার করে তাদের অস্ত্র ভান্ডার উদ্ধার করে এলাকায় আইনশৃংখলা পরিস্থিতি স্বাভাবিক ও স্বস্তি ফিরিয়ে আনার জন্য চুয়াডাঙ্গা জেলার সুযোগ্য ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপারের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে এলাকাবাসী। অন্যদিকে চুয়াডাঙ্গা থেকে প্রকাশিত দৈনিক সময়ের সমীকরণে র্শীষ সন্ত্রাসী মোমিন ও তার প্রতিষ্ঠিত ছয়ঘরিয়া গ্রামের গ্রীন হাউজ ও হিজলগাড়ী বাজারের রেড হাউজের কালো অধ্যায় প্রকাশ হওয়ায় পত্রিকা নিয়ে কাড়াকাড়ি লক্ষ করা গেছে অত্র এলাকায়। মোবাইলে অনেক ভোক্তভোগী পত্রিকা অফিসে দিতে থাকে মোমিন বাহিনীর বিরুদ্ধে লোকহর্ষকর তথ্য।
পুলিশ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে,  চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার ছয়ঘরিয়া গ্রামের আনিছ উদ্দিনের ছেলে প্রায় ৭ বছর আগে তিতুদহ ইউনিয়নের গড়াইটুপি অ¤্রবতি মেলার আয়োজক শুকুর আলীর সাথে সখ্যতা গড়ে তুলে মেলার মাঠে সেচ্ছাসেবক কমিটির সদস্য হিসেবে মেলায় দাপট প্রতিষ্ঠা করে। এখান থেকেই তার উৎত্থান শুরু। এরপর দিনে দিনে অপরাধ জগতের গভীরে প্রবেশ করে এলাকায় ছোট খাটো চুরি, ছিনতায়ের মত অপরাধ করতে থাকে গোপনে। বছর দুয়েক আগে মোমিন ও তার বাহিনী  হাতে ছয়ঘড়িয়া টু বড়শলুয়া সড়কে প্রকাশ্যে দিবালোকে খুন হয় ছয়ঘড়িয়া গ্রামের সিরাজ মেম্বার। সে খুন মামলার প্রধান আসামী করা হয় মোমিনকে। কিন্তু রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় ধরাছোয়ার বাইরে থেকে যায় মোমিন ও তার সদস্যরা। আর একারণেই এর প্রকার অপ্রতিরোধ্য হওয়ার পাশাপাশি হয়ে ওঠে চুয়াডাঙ্গা জেলার এক মূর্তিমান আতঙ্ক শীর্ষ সন্ত্রাসী মোমিন। নিজের দলের নতুন সদস্য সংগ্রহ করার পাশাপাশি এলাকায় প্রকাশ্যে অস্ত্রের মহড়া দেখিয়ে ভীতি সজ্ঞার করে এলাকায় করতে থাকে প্রকাশ্যে চাঁদাবাজি। মোমিন ও তার বাহিনী কেরুজ ছয়ঘরিয়া ফার্মে অস্ত্রের মহড়া প্রদর্শন করে ব্যাপক সুবিধাভোগ করে থাকে। জোরপূর্বক কেরুজ জমি দখলে নেওয়া থেকে শুরু রাস্তার গাছ কাঠা সব কিছুই মামোলি ব্যাপারে পরিনত হয় তার কাছে। কিছুদিন পূর্বেও সে ছয়ঘরিয়া বানিজ্যিক খামারের তেল চুরি করতে গিয়ে ইনচার্জকে শারিরিকভাবে লাঞ্ছিত করে। শংকরচন্দ্র ইউনিয়ন পরিষদের সামনে থেকে তারই গ্রামের এক দম্পতির কাছ থেকে দুপুর বেলা ৬০ হাজার টাকা ছিনিয়ে নেয়। কেরুজ হিজলগাড়ী ফার্মের কর্মকর্তাকেও ফার্মে এসে মারধর করে সে ও তার আশ্রয় দাতা হিজলগাড়ী বাজারের জনৈক ওই ভূষিমাল ব্যবসায়ী। মোমিনকে সামনে রেখে হিজলগাড়ী এলাকায় প্রভাব বিস্তারের জন্য জনৈক ভূষিমাল ব্যবসায়ী ও স্থানীয় যুবলীগের সাবেক এক নেতা উঠতি বয়সী যুবকদের বিভিন্ন প্রলোভন দেখিয়ে গড়ে তোলে কথিত রেড হাউজ। রেড হাউজের সদস্যদের মধ্যে থেকে বিশ্বস্ত যুবকদের হাতে তুলে দেওয়া হয় দেশী অস্ত্র। যেমন, চাপাতি, রামদা, শিকদা। অদৃশ্য ক্ষমতার দাপটে প্রকাশ্য দিবালোকেই ওই সমস্ত যুবকরাও মাঝে মাঝেই চা পাতি রামদার মহড়া দিত। তাদের ভয়ে টু শব্দ পর্যন্ত করতে পারিনি স্থানীয় ব্যবসায়ী, সুধীমহল। তাদের এই সমস্ত অপকর্মের প্রতিবাদ করতে গিয়ে বাজারের বেশ কয়েকজন ব্যবসায়ী ইতোমধ্যেই তাদের হাতে প্রহারের শিকার হয়েছেন। কিন্তু তার সুষ্ঠ কোন বিচার হয়নি। এদিকে গতকাল দৈনিক সময়ের সমীকরণ পত্রিকায় গ্যাং গ্রুপ প্রধান মোমিন ও তার কথিত সংগঠন ছয়ঘরিয়া গ্রীন হাউজ ও হিজলগাড়ীর রেড হাউজ নিয়ে তথ্য ভিত্তিক সংবাদ প্রকাশ হলে তোলপাড় শুরু হয় এলাকায়। এলাকার শান্তি প্রিয় অনেকেই পুলিশের পাশাপাশি সাংবাদিকদেরও অভিনন্দন জানিয়েছেন। তাদের অনেকেই পত্রিকা অফিসে স্বশরীরে উপস্থিত হয়ে আবার কেউ মোবাইলে অভিনন্দনের পাশাপাশি গ্রীন হাউজ ও রেড হাউজ সম্পর্কে লোকহর্ষকর তথ্য প্রদান করে। তারই আলোকে আজকের এই প্রতিবেদন। এই সমস্ত তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সরেজমিনে ছয়ঘরিয়া গ্রামে গেলে নাম প্রকাশ না করার শর্তে একাধিক ব্যক্তি তুলে ধরেন মোমিনের উৎত্থানের ইতিহাস। মোমিন বাহিনীর অত্যাচারে অতিষ্ট বড়শলুয়া গ্রামের বসতিপাড়ার এক দম্পতি অভিযোগ করে বলেন, কিছুদিন পূর্বে মোমিন ও তার বাহিনীর সদস্যরা তাদেরকে বাড়ী থেকে তুলে নিয়ে ছয়ঘরিয়া প্রাইমারী স্কুলে নিয়ে গিয়ে আটকে রেখে ৫০ হাজার টাকার বিনিময় ছেড়ে দিয়ে সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষন করে নেয়।  আর এই কথা যদি পুলিশ কিংবা সাংবাদিকদের বলি তবে বোমা মেরে স্বপরিবারে হত্যার হুমকিও দেয় তারা। বড়শলুয়া বসতি পাড়ার এক চা দোকানী নাম প্রকাশ না করার শর্তে সমীকরণকে বলেন, প্রায় ৭ মাস পূর্বে তার বোনকে নিয়ে একটা ঝামেলা হয়। পরে গ্রাম্যভাবে অভিযুক্তকে ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হলে সেদিনই রাতের বেলা মোমিন তাদের বাড়ীতে এসে অস্ত্রের মুখে জি¤িম করে সেই ৬০ হাজার টাকা নিয়ে যায়। বড়শলুয়া মসজিদে বসে কথা হয় স্থানীয় এক ক্ষমতাশীন দলের নেতার সাথে তিনিও ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন আমরা মোমিন বাহিনীর কাছে অসহায়। তাদের বিরুদ্ধে কেউ কিছু বললেই পুরো বাহিনী নিয়ে এসে হামলে পড়ে তাদের ওপর। খাড়াগোদা বাজারের এক প্রভাবশালী ব্যবসায়ীও নাম প্রকাশ না করার শর্তে একই রকম তথ্য দেয়। বছর খানেক পূর্বে হিজলগাড়ী বাজারের এক পোল্ট্রি ব্যবসায়ীর সাথে জনৈক ও ভূষিমাল ব্যবসায়ীর গোলযোগের কারণে তিতুদহ ইউনিয়নের বলদিয়া গ্রামের সাবেক ইউপি সদস্যের ভাস্তেকে গড়াইটুপির মেলার যাত্রা প্যান্ডেলের মধ্যে বেধরক মারপিট করে মারাক্তকভাবে আহত করে মোমিন ও তার বাহিনী। এই নিয়ে সে সময় বেশ গরম অবস্থা তৈরী হয় এলাকায়। কিন্তু মোমিন বাহিনীর অস্ত্রের ভয়ে চুপ হয়ে যায় ঘটনাটি। এরই কিছুদিন পর হিজলগাড়ী বাজারের এক কসমেটিক্স ব্যবসায়ীকে প্রকাশ্য দিবালোকে চাঁদা টাকা না দেওয়া বেধরক মারধর করে রেড হাউজের সদস্যরা। ঐদিনই হিজলগাড়ী বাজারে যৌথ দেশী অস্ত্রের মহড়া দেয় রেড হাউজ ও গ্রীন হাউজের সদস্যরা। এতকিছুর পরও ভোক্তভোগীরা মৃত্যুর ভয়ে মোমিন বাহিনীর বিরুদ্ধে পুলিশের কাছে অভিযোগ প্রদান থেকে বিরত থাকে। কিন্তু বিধি বাম হঠাৎ করেই কালোপোল গ্রামে চাঁদার টাকা আনতে গিয়ে সাহসী গ্রামবাসীর হাতে গনধোলাই খেয়ে এখন পুলিশের খাঁজায়। মোমিন ও তার বাহিনীর ২ সদস্য গ্রেফতার হওয়ায় একদিকে যেমন ভোক্তভোগীদের মাঝে বিরাজ করছে চাপা আনন্দ অন্য দিকে অজানা শঙ্কাও কাটছে না তাদের মন থেকে। কারণ মোমিন গ্রেফতার হলেও তার অস্ত্রের ভান্ডার, গডফাদার ও বাকি সদস্যরা রয়েছে ধরাছেয়ার বাইরে। তবে পুলিশের তরফ থেকে বলা হচ্ছে দ্রুত সময়ের মধ্যেই মোমিন বাহিনীর বাকি সদস্যদের গ্রেফতার করে এলাকায় শান্তি ফিরিয়ে আনতে পুলিশ সর্বদা তৎপর রয়েছে। এই বাহিনীর সাথে যেই জড়িত থাকুন না কেন, সে যত বড় মাপের নেতাই হোক না কেন,তাদের কোন প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না এবিষয়ে ।