জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিন যাবৎ নানা সমস্যায় জর্জরিত চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার!
- আপলোড টাইম : ০২:৪০:০৬ অপরাহ্ন, সোমবার, ১৯ ডিসেম্বর ২০১৬
- / ৩৪৯ বার পড়া হয়েছে
জীবননগর অফিস: জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি দীর্ঘদিন যাবৎ নানা সমস্যায় জর্জরিত। ফলে, জীবননগর উপজেলাসহ পাশ্ববর্তী এলাকা থেকে চিকিৎসাসেবা নিতে আসা রোগীরা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। এছাড়া মুমুর্ষ রোগী হলেই দায় এড়াতে করা হচ্ছে রেফার। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি অত্রালাকার সাধারণ মানুষের চিকিৎসাসেবার একমাত্র ঠিকানা। ৩১শয্যার এই স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি সম্প্রতি চুয়াডাঙ্গা ২ আসনের সংসদ সদস্য হাজী আলী আজগার টগর এমপি’র সহযোগীতায় ৩১শর্য্য থেকে ৫১শর্য্যার হাসপাতালের কার্য্যক্রম চলছে। তবে, ঠিক কবে নাগাদ এটা চালু হবে তার নিশ্চয়তা নেই। প্রথমত স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি নেই পর্যাপ্ত লোক বল, চিকিৎসক, ঔষধ, চিকিৎসার সরঞ্জাম,আসবাব পত্র, নেই অক্সিজেনের ব্যবস্থা, পর্যাপ্ত সাপ্লায় নেই ব্যান্ডেজ, গজ, সিরিন্স। এক্সারে মেশিন ও রোগী বহণের এ্যাম্বুলেন্স রয়েছে বিকল। বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের পড়তে হয় সমস্যায়। নেই অপরেশন থিয়েটার। এসব না থাকায় চিকিৎসকরা রোগীদের ঠিকতম সেবা দিতে পারছে না। স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি অনুমোদিত ৯ চিকিৎসক থাকার কথা থাকলেও আছে মাত্র ৫ জন। শুধু তাই নয়, শুন্য রয়েছে এ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি গুরুত্বপূর্ণ পদ আবাসিক মেডিকেল অফিসার, গাইনী কনসালটেন্ট, এ্যানেসথিয়া, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, সার্জিক্যাল কনসালটেন্ট। জরুরী চিকিৎসার জন্য একটি এ্যাম্বুলেন্স থাকলেও সেটি ব্যবহারের একেবারেই অনুপযোগী। বন্ধ রয়েছে ইসিজি বিভাগ, বিদ্যুত চলে গেলে নেই কোন বিকল্প বিদ্যুতের ব্যবস্থা যাও বা আছে সেটি তেল বিনে মুখ থুবড়ে পড়ে আছে । মাঝে, মাঝে যখন কোন বিশেষ ব্যক্তি স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি পরিদর্শন করতে আসে তখনই শুধু এটি ব্যবহার করা হয়। এছাড়া মুমুর্ষ রোগীদের রক্তের গ্রুপিং করার ব্যবস্থা না থাকায় রোগীদের পড়তে হয় চরম বিপদে। বন্ধ রয়েছে ইর্মাজেন্সী বিভাগের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বিভাগ অপারেশন থিয়েটারটিও ফলে অপারেশন বন্ধ রয়েছে। সব মিলিয়ে এক প্রকার খুঁড়িয়ে, খুঁড়িয়ে চলছে কমপ্লেক্সটি। রোগী ও সচেতন মহলের অভিযোগ হাসপাতাল নয় যেন সাজাপাতাল। হাসপাতালে গেলে দেখা যায় আছে কয়েকটি ডাক্তার আর ফ্যাশান ডিজাইনার নার্স তারা রোগীর গায়ে হাত দিতে নাক সিটকান ব্যবহারও অশভনীয়। অপরদিকে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে যে সমস্থ ডাক্তার আছেন তারা রোগী দেখার থেকে বিভিন্ন ঔষধ কোম্পানীর লোকদের সাথে বানিজ্য নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করেন। চিকিৎসকের কাছে একজন রোগীর গুরুত্ব সব থেকে বেশী হলেও জীবননগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ডাক্তারদের কাছে রোগীর থেকে ঔষধ কোম্পানীর এম আরদের গুরুত্ব বেশী। অনেক সময় দেখা যায় ঔষধ কোম্পানীর লোকেরা ডাক্তারের চেয়ারে বসে আড্ডা দিচ্ছেন অথবা ডাক্তারের রুমে বসে থাকেন যার ফলে রোগীরা ডাক্তারের কাছে চিকিৎসাসেবা নিতে চরম সমস্যার সম্মক্ষীন হতে হয়। এস্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটিতে চিকিৎসা নিতে আশা মহেশপুর থানার শ্যামকুড় গ্রামের নাম প্রকাশে অনইচ্ছুক এক ব্যক্তি অভিযোগ করে বলেন, আমি হাসপাতালে আমার ছেলেকে নিয়ে এসেছিলাম। ডাক্তার রোগী না দেখে ঔষধ কোম্পানির প্রতিনিধিদের সাথে গল্প করছেন। একজন ডাক্তারের কাছে আমার ছেলের চিকিৎসারর ব্যাপারে বেশী জোরাজুরী করলে, চিকিৎসক আমার ছেলেকে চিকিৎসা না দিয়ে আমাকে বলেন, আপনার ছেলের চিকিৎসা এখানে হবে না বাইরে নিয়ে যাও। এদিকে, জীবননগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডাঃ হেদায়েত বিন সেতু। উল্লেখিত সকল সমস্যা সমন্ধে এই প্রতিবেদককে জানান, স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটি যেসব সমস্যা আছে তার সমাধান অচিরেই হবে সদ্য নির্মিত ৫১ শয্যার হাসপাতালের শুভ উদ্বোধন হলে। তিনি আরো বলেন, আমাদের স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে যেসব সরঞ্জাম নেই আমরা ইতো মধ্যেই উদ্ধর্তন কর্তপক্ষকে জানিয়েছি আশা করি খুব শীঘ্রই তা সমাধান হবে। তিনি এও বলেন রোগীর থেকে বিভিন্ন কোমাপানীর এম আরদের নিয়ে ডাক্তারদের গল্পের বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখা হবে প্রমান পেলে তাদেরকে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা করা হবে। তাছাড়া ঔষধ কোম্পানীর লোকদের ব্যাপারে আমরা একটি সময় নিধারন করে দিয়েছি যদি কেউ এই নিয়ম না মানে তা হলে সে সমস্থ ডাক্তার এবং ঔষধ কোম্পানীর প্রতিনিধির ব্যাপারে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্তা ব্যক্তিদের কাছে এলাকাবাসীর জোর দাবী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সটির নানাবিধ সমস্যার সমাধান করে এলাকার সকল শ্রেণীর মানুষের সুচিকিৎসা নিশ্চিত করা হোক।