ছাড়পত্র পাননি খাদিজা
- আপলোড টাইম : ১১:১৩:১৪ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১৫ ডিসেম্বর ২০১৬
- / ৩৪৫ বার পড়া হয়েছে
সমীকরণ ডেস্ক: সাক্ষ্য দিতে আদালতে আসছেন না খাদিজা। ঢাকার সাভারের সিআরপি’র ডাক্তাররা তাকে ছাড়পত্র দিচ্ছে না। ডাক্তার জানিয়েছেন, খাদিজার চিকিৎসা চলছে। এখনই তাকে রিলিজ কিংবা সিলেটে পাঠানো সম্ভব নয়। এ কারণে খাদিজার পরিবার থেকে যোগাযোগ করা হলেও চিকিৎসকরা খাদিজাকে সিলেট আসার অনুমতি দিচ্ছেন না। তবে, খাদিজার পিতা মাসুক মিয়ার আবেদনের প্রেক্ষিতে চিকিৎসকরা খাদিজার শারীরিক অবস্থা জানিয়ে আদালতের কাছে পত্র পাঠিয়েছেন। কেন খাদিজা সিলেটে আসতে পারবে না- সে বিষয়টিও ওই পত্রে ব্যাখ্যা দেয়া হয়েছে। খাদিজার পিতা মাসুক মিয়া গতকাল বিকালে জানিয়েছেন, চিকিৎসকদের দেয়া পত্র তারা আদালতে উপস্থাপন করতে গতকালই ঢাকা থেকে সিলেটে লোক পাঠিয়েছেন। সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিস হত্যাচেষ্টা মামলার বিচার শেষ পর্যায়ে রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের বিচারক সাইদুজ্জামান হিরোর আদালতে খাদিজাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছিল। এ সংক্রান্ত একটি সমন হাসপাতালের মাধ্যমে খাদিজার কাছে পৌঁছে। সাক্ষ্যগ্রহণের শেষদিনে খাদিজাকে আদালতে তলব করেছিলেন বিচারক। গত রোববার ১৫ আসামির সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আদালতে খাদিজাকে হাজির হওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়। খাদিজার পিতা মাসুক মিয়া জানিয়েছেন, আদালতের সমন পাওয়ার পর তিনি ঢাকার সাভারের সিআরপি’র ডাইরেক্টর ডা. সাঈদ আহমদের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। এবং তারা আদালতে সাক্ষ্য প্রদান করতে খাদিজাকে সিলেটে আনার অনুমতি চান। কিন্তু ডাক্তার তাদের সিলেটে আনার অনুমতি দেননি। তিনি জানান, সিআরপিতে খাদিজার ফিজিও থেরাপি চলছে। এখন খাদিজা নিজে থেকে হাঁটাচলা করতে পারেনি। তাকে হুইল চেয়ারের সাহায্যে চলাচল করতে হচ্ছে। এছাড়া হাসপাতালে প্রতিদিন সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ৪ বেলা ফিজিও থেরাপি দেয়া হচ্ছে। আরো টানা দুই মাস খাদিজাকে ফিজিও থেরাপি দিতে হবে বলে তিনি জানান। তবে, দিন দিন খাদিজার শারীরিক অবস্থার উন্নতি হচ্ছে। হাত ও পায়ে শক্তি ফিরে এলে সে অনেকটা সুস্থ হয়ে উঠবে বলে জানান মাসুক মিয়া। এদিকে, সিলেট মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতের অতিরিক্ত পিপি এডভোকেট মাহফুজুর রহমান রহমান মানবজমিনকে জানিয়েছেন, মামলায় খাদিজার বক্তব্য শোনা খুব জরুরি ছিল। কিন্তু ডাক্তাররা চিকিৎসার স্বার্থে তাকে সিলেটে আসতে দিচ্ছেন না। সংক্রান্ত একটি পত্রও ডাক্তাররা পাঠিয়েছেন। সেটি আজ আদালতে উপস্থাপন করা হবে। তবে, ঢাকার স্কয়ার হাসপাতালের একজন ডাক্তার আজ সাক্ষী হিসেবে আদালতে উপস্থিত থাকবেন। তিনি বলেন, খাদিজার মামলাটি সাক্ষ্য গ্রহণপর্ব আজই সমাপ্ত হবে। এরপর মামলাটি সিলেট মহানগর দায়রা জজ আদালতে প্রেরণ করা হবে। সেখানেই আলোচিত এ মামলার রায় ঘোষণা করা হবে বলে জানান তিনি। এদিকে, খাদিজা হত্যাচেষ্টা মামলায় মোট ৩৬ জন সাক্ষীর মধ্যে দুই কার্য দিবসে ৩২ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়েছে। একমাত্র আসামি শাবি’র বহিষ্কৃৃত ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের উপস্থিতিতে এই সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। গত ৩রা অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে চাপাতি দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে বদরুল আলম। এ ঘটনায় ৫ই অক্টোবর বদরুল দায় স্বীকার করে সিলেটের আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। গত ৮ই নভেম্বর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা সিলেটের শাহ্ পরাণ থানার এসআই হারুনুর রশীদ বদরুলের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। পরবর্তীতে আদালত চার্জশিট আমলে নিয়ে বিচার শুরু করেন। আইনজীবীরা জানিয়েছেন, খাদিজা আদালতে না এলেও মামলার ন্যায় বিচারে কোনো বাধা হবে না। কারণ, ইতিমধ্যে মামলায় ৩২ জন আসামি সাক্ষ্য দিয়ে দিয়েছেন। আদালতের কাছে এই সাক্ষীদের সাক্ষ্য পর্যাপ্ত বলে জানান তারা।