ইপেপার । আজ শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

আজ মেহেরপুর মুক্ত দিবস

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৩৭:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ৪২৩ বার পড়া হয়েছে

17607

মেহেরপুর অফিস: আজ ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী খ্যাত মেহেরপুর পাক হানাদার মুক্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা হামলায় একে একে ভেঙ্গে পড়ে পাক হানাদারদের শক্তিশালী সামরিক বলয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ৫ ডিসেম্বর রাত থেকে পাক বাহিনী গোপনে মেহেরপুর ছেড়ে পালাতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর সকালে মিত্র বাহিনী মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করলে অবরুদ্ধ জনতা মিত্র বাহিনীর সাথে জয়ের উল্ল¬¬াসে যোগ দেয়। দিবসটি  পালন উপলক্ষে আজ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। সেই সাথে শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে নবনির্মিত আধুনিক মঞ্চে দেশের বিখ্যাত সব শিল্পিরা এক সাথে দেশের গান গেয়ে উঠবেন। মেহেরপুর মুক্ত দিবসটি বিশেষভাবে স্মরণ করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন পৌর মেয়র মুতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের  ডাকে স্বাধীনতার সুতিকাগার মুজিবনগর তথা মেহেরপুরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তৎকালীন এসডিও তৌফিক এলাহির সক্রিয় ভূমিকায় ছাত্র, আনসার-মুজাহিদদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলা হয়। ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তি বাহিনী মেহেরপুর প্রবেশ করে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। পাক বাহিনীর হাত থেকে মেহেরপুরকে মুক্ত করতে চারদিক থেকে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে মুক্তি বাহিনী।
মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী মোল্লা বলেন, যুদ্ধকালিন পাকহানাদার বাহিনী অনেক সাধারণ মানুষদের ভকেশনাল, কলেজের পিছন, তাহের ক্লিনিক পাড়া সহ বিভিন্ন সেলে ধরে নিয়ে গিয়ে অকথ্য নির্যাতন চালাতো। ৫ ডিসেম্বর রাতে পাক হানাদারবাহিনী চলে যাবার সময় মেহেরপুর ওয়াপদা, দ্বিনদত্তের ব্রীজ সহ গুরত্বপূর্ন স্থাপনাগুলো ধ্বংশ করে দেয়। মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান বাচ্চু বলেন, আমরা ৫২জন মুক্তিযোদ্ধা পাকবাহিনীকে বিতাড়িত করতে ৫ ডিসেম্বর বাড়াদিতে আক্রমণ করি । মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মূখে দরবেশপুর দিয়ে লেজ গুটিয়ে চুয়াডাঙ্গার দিকে পালিয়ে যায় শক্ররা। ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত হয়। আমরা হুংকার দিয়ে মেহেরপুরে প্রবেশ করি। আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আনন্দ করি। মেহেরপুরে প্রবেশ করার পর আনন্দ বিষাদে পরিণত হয় অসংখ্য বধ্যভূমি ও লাশ দেখে। তবে স্বাধিনতার সেই অপার আনন্দ অতুলনীয়। মেহেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বশির আহাম্মেদ বলেন, ৬ ডিসেম্বর আমাদের মেহেরপুর মুক্ত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারিনি আজও। স্বাধীনতা বিরোধিদের দ্বারা উন্নয়নের ধারাবাহীকতা বার বার বাধাগ্রস্থ হয়েছে। দেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার কাজ চলছে। অনেকেরে বিচার হয়ে গেছে। এখনও যে সকল চিন্তিত স্বাধীনতা বিরোধি ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের বিচার করতে হবে। আমরা জীবিত অবস্থায় রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ দেখে যেতে চাই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

error: Content is protected !!

আজ মেহেরপুর মুক্ত দিবস

আপলোড টাইম : ০১:৩৭:৫৯ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৬ ডিসেম্বর ২০১৬

17607

মেহেরপুর অফিস: আজ ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এই দিনে বাংলাদেশের অস্থায়ী রাজধানী খ্যাত মেহেরপুর পাক হানাদার মুক্ত হয়। বীর মুক্তিযোদ্ধাদের গেরিলা হামলায় একে একে ভেঙ্গে পড়ে পাক হানাদারদের শক্তিশালী সামরিক বলয়। মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মুখে ৫ ডিসেম্বর রাত থেকে পাক বাহিনী গোপনে মেহেরপুর ছেড়ে পালাতে থাকে। ৬ ডিসেম্বর সকালে মিত্র বাহিনী মেহেরপুর শহরে প্রবেশ করলে অবরুদ্ধ জনতা মিত্র বাহিনীর সাথে জয়ের উল্ল¬¬াসে যোগ দেয়। দিবসটি  পালন উপলক্ষে আজ জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ড কাউন্সিল শহীদ বেদিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ র‌্যালি ও আলোচনা সভার আয়োজন করেছে। সেই সাথে শহীদ সামসুজ্জোহা পার্কে নবনির্মিত আধুনিক মঞ্চে দেশের বিখ্যাত সব শিল্পিরা এক সাথে দেশের গান গেয়ে উঠবেন। মেহেরপুর মুক্ত দিবসটি বিশেষভাবে স্মরণ করতেই এমন উদ্যোগ নিয়েছেন পৌর মেয়র মুতাচ্ছিম বিল্লাহ মতু।  বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের  ডাকে স্বাধীনতার সুতিকাগার মুজিবনগর তথা মেহেরপুরের মানুষ মুক্তিযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে। তৎকালীন এসডিও তৌফিক এলাহির সক্রিয় ভূমিকায় ছাত্র, আনসার-মুজাহিদদের নিয়ে মুক্তিবাহিনী গড়ে তোলা হয়। ভারতের বিভিন্ন স্থানে প্রশিক্ষণ শেষে মুক্তি বাহিনী মেহেরপুর প্রবেশ করে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ শুরু করে। পাক বাহিনীর হাত থেকে মেহেরপুরকে মুক্ত করতে চারদিক থেকে পাক বাহিনীর বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে মুক্তি বাহিনী।
মুক্তিযোদ্ধা আকবর আলী মোল্লা বলেন, যুদ্ধকালিন পাকহানাদার বাহিনী অনেক সাধারণ মানুষদের ভকেশনাল, কলেজের পিছন, তাহের ক্লিনিক পাড়া সহ বিভিন্ন সেলে ধরে নিয়ে গিয়ে অকথ্য নির্যাতন চালাতো। ৫ ডিসেম্বর রাতে পাক হানাদারবাহিনী চলে যাবার সময় মেহেরপুর ওয়াপদা, দ্বিনদত্তের ব্রীজ সহ গুরত্বপূর্ন স্থাপনাগুলো ধ্বংশ করে দেয়। মুক্তিযোদ্ধা মতিয়ার রহমান বাচ্চু বলেন, আমরা ৫২জন মুক্তিযোদ্ধা পাকবাহিনীকে বিতাড়িত করতে ৫ ডিসেম্বর বাড়াদিতে আক্রমণ করি । মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধের মূখে দরবেশপুর দিয়ে লেজ গুটিয়ে চুয়াডাঙ্গার দিকে পালিয়ে যায় শক্ররা। ৬ ডিসেম্বর মেহেরপুর মুক্ত হয়। আমরা হুংকার দিয়ে মেহেরপুরে প্রবেশ করি। আকাশে ফাঁকা গুলি ছুড়ে আনন্দ করি। মেহেরপুরে প্রবেশ করার পর আনন্দ বিষাদে পরিণত হয় অসংখ্য বধ্যভূমি ও লাশ দেখে। তবে স্বাধিনতার সেই অপার আনন্দ অতুলনীয়। মেহেরপুর জেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার বশির আহাম্মেদ বলেন, ৬ ডিসেম্বর আমাদের মেহেরপুর মুক্ত হয়েছে ঠিকই। কিন্তু আমরা বঙ্গবন্ধুর সেই স্বপ্নের বাংলাদেশ গড়তে পারিনি আজও। স্বাধীনতা বিরোধিদের দ্বারা উন্নয়নের ধারাবাহীকতা বার বার বাধাগ্রস্থ হয়েছে। দেশে স্বাধীনতা বিরোধীদের বিচার কাজ চলছে। অনেকেরে বিচার হয়ে গেছে। এখনও যে সকল চিন্তিত স্বাধীনতা বিরোধি ঘুরে বেড়াচ্ছে তাদের বিচার করতে হবে। আমরা জীবিত অবস্থায় রাজাকার মুক্ত বাংলাদেশ দেখে যেতে চাই।