আজ দর্শনা মুক্ত দিবস
- আপলোড টাইম : ১২:৫৮:১১ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬
- / ৭২৪ বার পড়া হয়েছে
দর্শনা অফিস: আজ ভয়াল ৪ডিসেম্বর দর্শনা মুক্ত দিবস। ১৯৭১ সালের এ দিনে দর্শনাকে মুক্ত করতে মুক্তিবাহিনী ও ভরতীয় মিত্রবাহিনী যৌথভাবে পাক-হানাদার বাহিনীর সাথে রাতভর যুদ্ধ করে সকাল সাড়ে ৬টার দিকে দর্শনাকে মুক্ত করে। ১৯৭১ সালের ৩ ডিসেম্বর বারাদির অপারে ভারতে অবস্থানরত মুক্তিযোদ্ধা ক্যাম্প থেকে এস নাস্তিপুর মাঠে বসে রাতের খাবার খেয়ে মুক্তিযুদ্ধের কমান্ডার নুর হাকিম, কাসেদ আলী ও আবুল খয়েরের নেত্রীতে ৩০জন মুক্তিযোদ্ধা এবং ভারতীয় মিত্রবাহিনীর ক্যাপ্টেন মুকিত এর নেত্রীত্বে প্রায় ১৫০জন ভারতীয় মিত্রবাহিনী দামুড়হুদা উপজেলার গোবিন্দ পুরের পাশ দিয়ে রাবারের নৌকা দিয়ে প্রতাপপুর ও গোবিন্দপুর মাঝামাঝি রাত ১০টার দিকে মাথাভাঙ্গা নদী পার হয়ে পরাণপুর ও লোকনাথ পুরের মধ্যের নলগাড়ীর রাস্তা ধরে লোকনাথপুর মাঠের কাঁঠাল বাগনের ভিতর দিয়ে গিয়ে ধাপড়ী রাস্তা পার হয়ে বটজল ও গবরা মাঠে আবস্থান নিয়ে রাত ভর ব্যাংকার কেটে এ্যাম্বুস নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি নেয়। অপর একটি দলে মুত্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুস ছামাদ ও আব্দুর রহমানের নেত্রীত্বে জীবননগর উথুলী দিক থেকে এবং মোবারক হোসেনের নেত্রীত্বে আর একটি মুক্তিযোদ্ধা ও মিত্রবাহিনী গেদে সীমান্ত থেকে এসে দর্শনায় আবস্থান নেয়। এরপর কমান্ডারের নির্দেশে ভোর রাত এর দিকে পরাণপুর বেলে মাঠে শান্তিপাড়া সংলগ্ন এলাকায় আবস্থানরত পাক-হানাদার বাহিনী কিছু বুঝে উঠার অগেই তাদের উপর একের পর এক সেল, এসমজি ও এসেলারের গুলি ছুড়ে হামলা শুরু করা হয়। এসময় উভয় পক্ষের মধ্যে তুমুল যুদ্ধ শুরু হয়। প্রায় ৩ঘন্টা ধরে থেমে থেমে মুক্তিযোদ্ধাদের ত্রীমুখী আক্রমনে বাক-হানাদার বাহিনীর উপর গুলি বর্ষন হতে থাকে এসময় পাক-বাহিনী দিশেহারা হয়ে পড়ে। এরপর পাক-বাহিনী দুধপাতিলা গ্রামের খোসেদের কাঁঠাল বাগান থেকে সেলিং ও গুলি শুরু করে। এর মধ্যে মিত্রবাহিনীর দুইটি ট্যাং চলে আসে। এরপর পাক-বাহিনী উপর তুমুল আক্রমন শুরু করলে দিশে খুজে না পেয়ে পালাতে থাকে। সকাল সাড়ে ৬টার দিকে পাক-বাহিনী দর্শনা রেল-লাইন ধরে চুয়াডাঙ্গা জেলা শহরের দিকে পালাতে থাকে। কেউ কেউ সড়ক পথ ধরে একের পর এক মিত্র ও মুক্তি-বাহিনীর ত্রীমুখী আক্রমণে পাক-হানাদার বাহিনী পালাতে থাকে। এ যুদ্ধে অসংখ্য পাক-বাহিনীর সৈন্য মারা যায়। পাক-বাহিনী দিশেহারা কোন দিক-বিদিক না পেয়ে। সমস্ত পাক-হানাদার বাহিনী দর্শনা ছেড়ে পালিয়ে শুরু করে। এ যুদ্ধে পাক-হানাদার বাহিনীর প্রায় দেড়শতাধিক সৈন্য মারা যায় এবং মুক্তিযোদ্ধা সিরাজগঞ্জের ইপিয়ার আবুল কাশের ডান সেলের আঘাতে পা উঠে যায়। এছাড়া নুর হাকিম, মিত্রবাহিনীর ১জন মারা যায়। এরপর মুক্তিবাহিনীর ও মিত্র-বাহিনীর নেতীত্বদানকারী ক্যাপ্টেন মুকিত এর নেত্রীত্বে দর্শনা কেরু চিনিকলের প্রধান কার্যলয়ের সমানে জয়বাংলা শ্লোগান দিয়ে বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করেন। এসময় জয়বাংলা শ্লোগানে শ্লোগানে দর্শনার মাটি থেকে পাক-হানাদার বাহিনীদের প্রতিহত করে দর্শনাকে মুক্ত করা হয়। এসময় পতাকা উত্তোলনের সময় মিষ্টার বুফে স্যালুট গ্রহন করেন। এরপর ৪ডিসেম্বর দিনভর যুদ্ধ করে দামুড়হুদা উপজেলার কোষাঘাটা ও উজিরপুর পর্যন্ত পাক-হানাদার মুক্ত করা হয়।