ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মিতু হত্যা : অগ্রগতি নেই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:২৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ১২৬৮ বার পড়া হয়েছে

BD-Protidin-04-12-2016-10সমীকরণ ডেস্ক: সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু খুনের আজ (রবিবার) ছয় মাস পূর্ণ হলেও নেই তদন্তের সন্তোষজনক অগ্রগতি। দীর্ঘ এই সময়ে উন্মোচিত হয়নি মিতু খুনের আসল কারণ। পুলিশ প্রকাশ করতে পারেনি খুনের পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতার নাম। এমনকি সুরাহা হয়নি পুলিশের খাতায় ‘পলাতক’ খুনের জন্য কিলার ভাড়া করা কামরুল ইসলাম ওরফে মুছা সিকদার ‘অন্তর্ধান’ রহস্যের। এই দীর্ঘ সময়ে পুলিশের সাফল্য বলতে সাত আসামি গ্রেফতার ও অস্ত্র মামলার চার্জশিট প্রদান। সব মিলিয়ে এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে এ হত্যাকা-ের সার্বিক বিষয়। দেশব্যাপী তোলপাড় করা এ মামলার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ মিতুর পরিবার। মামলার তদন্তের গতি দেখে বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন তারা। মামলার তদন্তের সার্বিক অগ্রগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মিতুর মা সাহেদা মোশারফ। তিনি বলেন, ‘এখন মামলার বিষয়ে পুলিশ কোনো যোগাযোগই করছে না। তারা হত্যাকা-ের তদন্তের অগ্রগতি আমাদের জানাচ্ছে না। তদন্তের গতি দেখে মনে হচ্ছে খুনের বিচার দেখে যেতে পারব না। হত্যার বিচার কার কাছে চাইব! আল্লাহর কাছে ছাড়া আর কারও কাছে বিচার চাওয়ার উপায় নেই।’ তিনি বলেন, ‘মিতু শুধু একজন সাবেক এসপির স্ত্রী নন। একজন সাবেক ওসির মেয়েও। তার হত্যাকা-ের তদন্ত নিয়ে যদি এমন হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের বিচার চাওয়ার কোনো পথ আছে?’ মামলার তদন্তে গাফিলতির কথা অস্বীকার করে তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ হত্যাকা-ের তদন্ত করা হচ্ছে।’ তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মিতু হত্যাকা-ের পর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও মূল রহস্য উন্মোচনে কোমর বেঁধে নামে পুলিশ প্রশাসন। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সব ইউনিট দেশব্যাপী শুরু করে সাঁড়াশি অভিযান। ওই অভিযানে আটক করা হয় ১৫ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে। খুনের এক মাসের মধ্যেই এ খুনের সরাসরি অংশগ্রহণকারী ও অস্ত্র সরবরাহকারীসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন খুনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী রাশেদ ও নবী। কিন্তু তদন্তের একপর্যায়ে অজ্ঞাত কারণে থমকে যায় তদন্তের গতি। ১ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের চালানো এক অভিযানে শাহজাহান ও রাঙ্গুনিয়া থেকে মুছার ভাই সাইদুল আলম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর বাইরে পুলিশের বলার মতো কোনো সাফল্য নেই। ২৮ জুলাই হত্যাকা-ের ব্যবহার করা অস্ত্র মামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২২ নভেম্বর এ মামলার বিচারও শুরু করে আদালত। তবে হত্যাকা-ের পর ছয় মাস হয়ে গেলেও পুলিশ উন্মোচন করতে পারেনি মিতু হত্যার আসল কারণ। চিহ্নিত করতে পারেনি আসল নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী কে। যদিও পুলিশের দাবি, এখনো কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করা মুছা ও কালুকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। যদিও মুছার স্ত্রীর দাবি, মুছা পুলিশ হেফাজতেই রয়েছেন। প্রসঙ্গত, ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

মিতু হত্যা : অগ্রগতি নেই

আপলোড টাইম : ১২:২৩:০৭ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬

BD-Protidin-04-12-2016-10সমীকরণ ডেস্ক: সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু খুনের আজ (রবিবার) ছয় মাস পূর্ণ হলেও নেই তদন্তের সন্তোষজনক অগ্রগতি। দীর্ঘ এই সময়ে উন্মোচিত হয়নি মিতু খুনের আসল কারণ। পুলিশ প্রকাশ করতে পারেনি খুনের পরিকল্পনাকারী ও নির্দেশদাতার নাম। এমনকি সুরাহা হয়নি পুলিশের খাতায় ‘পলাতক’ খুনের জন্য কিলার ভাড়া করা কামরুল ইসলাম ওরফে মুছা সিকদার ‘অন্তর্ধান’ রহস্যের। এই দীর্ঘ সময়ে পুলিশের সাফল্য বলতে সাত আসামি গ্রেফতার ও অস্ত্র মামলার চার্জশিট প্রদান। সব মিলিয়ে এখনো ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে এ হত্যাকা-ের সার্বিক বিষয়। দেশব্যাপী তোলপাড় করা এ মামলার উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি না হওয়ায় হতাশ মিতুর পরিবার। মামলার তদন্তের গতি দেখে বিচারের আশা ছেড়ে দিয়েছেন তারা। মামলার তদন্তের সার্বিক অগ্রগতিতে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন মিতুর মা সাহেদা মোশারফ। তিনি বলেন, ‘এখন মামলার বিষয়ে পুলিশ কোনো যোগাযোগই করছে না। তারা হত্যাকা-ের তদন্তের অগ্রগতি আমাদের জানাচ্ছে না। তদন্তের গতি দেখে মনে হচ্ছে খুনের বিচার দেখে যেতে পারব না। হত্যার বিচার কার কাছে চাইব! আল্লাহর কাছে ছাড়া আর কারও কাছে বিচার চাওয়ার উপায় নেই।’ তিনি বলেন, ‘মিতু শুধু একজন সাবেক এসপির স্ত্রী নন। একজন সাবেক ওসির মেয়েও। তার হত্যাকা-ের তদন্ত নিয়ে যদি এমন হয়, তাহলে সাধারণ মানুষের বিচার চাওয়ার কোনো পথ আছে?’ মামলার তদন্তে গাফিলতির কথা অস্বীকার করে তদন্ত কর্মকর্তা ও চট্টগ্রাম মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার মো. কামরুজ্জামান বলেন, ‘মামলার বাকি আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে। সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে এ হত্যাকা-ের তদন্ত করা হচ্ছে।’ তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মিতু হত্যাকা-ের পর হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও মূল রহস্য উন্মোচনে কোমর বেঁধে নামে পুলিশ প্রশাসন। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সব ইউনিট দেশব্যাপী শুরু করে সাঁড়াশি অভিযান। ওই অভিযানে আটক করা হয় ১৫ হাজারের বেশি ব্যক্তিকে। খুনের এক মাসের মধ্যেই এ খুনের সরাসরি অংশগ্রহণকারী ও অস্ত্র সরবরাহকারীসহ সাতজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এ ছাড়া পুলিশের সঙ্গে ‘বন্দুকযুদ্ধে’ নিহত হয়েছেন খুনে সরাসরি অংশগ্রহণকারী রাশেদ ও নবী। কিন্তু তদন্তের একপর্যায়ে অজ্ঞাত কারণে থমকে যায় তদন্তের গতি। ১ জুলাই গোয়েন্দা পুলিশের চালানো এক অভিযানে শাহজাহান ও রাঙ্গুনিয়া থেকে মুছার ভাই সাইদুল আলম সিকদার ওরফে সাকু মাইজ্যাকে গ্রেফতার করে পুলিশ। এর বাইরে পুলিশের বলার মতো কোনো সাফল্য নেই। ২৮ জুলাই হত্যাকা-ের ব্যবহার করা অস্ত্র মামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। ২২ নভেম্বর এ মামলার বিচারও শুরু করে আদালত। তবে হত্যাকা-ের পর ছয় মাস হয়ে গেলেও পুলিশ উন্মোচন করতে পারেনি মিতু হত্যার আসল কারণ। চিহ্নিত করতে পারেনি আসল নির্দেশদাতা ও পরিকল্পনাকারী কে। যদিও পুলিশের দাবি, এখনো কিলিং মিশনে অংশগ্রহণ করা মুছা ও কালুকে গ্রেফতারের জন্য অভিযান চালানো হচ্ছে। যদিও মুছার স্ত্রীর দাবি, মুছা পুলিশ হেফাজতেই রয়েছেন। প্রসঙ্গত, ৫ জুন নগরীর জিইসির মোড় এলাকায় ছেলেকে স্কুলবাসে তুলে দিতে যাওয়ার পথে দুর্বৃত্তদের হাতে খুন হন সাবেক এসপি বাবুল আক্তারের স্ত্রী মাহমুদা খানম মিতু। এ ঘটনার পর বাবুল আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে মামলা করেন।