ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ০১ মে ২০২৫

তিস্তা চুক্তি করে মোদিকে কৃতিত্ব নিতে দেবেন না মমতা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:২১:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬
  • / ৩৪৬ বার পড়া হয়েছে

43123_331সমীকরণ ডেস্ক: তিস্তা চুক্তি নিয়ে মাত্র দুদিন আগেই ভারতের লোকসভায় এক বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীব কুমার বালিয়ান জানিয়েছিলেন, তিস্তা চুক্তি রূপায়ণের বিষয়ে ভারত সরকার উদ্যোগী। সব পক্ষের স্বার্থরক্ষা করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধান সূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তিস্তা ইস্যুতে মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টার সময়েই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে নোট বাতিলের পরিপ্রেক্ষিতে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করে চলেছেন তাতে মমতাকে আস্থায় নেয়ার কোনো পরিস্থিতিই আর নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কলকাতার এক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক অমিত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তিতে মত দিয়ে মোদিকে কৃতিত্বের ভাগিদার হতে দেবেন না। মোদির সঙ্গে ঢাকা সফর এবং স্থলসীমান্ত চুক্তির সফল রূপায়ণের পরে বাংলাদেশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নমনীয় মনোভাব নিয়ে অতি আশাবাদীরাও মনে করছেন, হাসিনার ভারত সফরে তিস্তা নিয়ে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী অবশ্য কদিন আগেই বলেছেন, তিস্তা চুক্তির বিষয়ে ভারতের সরকার ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রতি আমাদের যে আস্থা আছে, তা আমরা পুনরায় জানিয়েছি। আগামী ১৭ই ডিসেম্বর ভারত সফরে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগেই ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তি বিষয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ শেষ করে আনতে পারবে বলে ভারত বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছিল, কিন্তু নোট বাতিলের পরবর্তী পর্যায়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে আগামী দিনের রাজনৈতিক লক্ষ্যকে সামনে রেখে মোদির বিরুদ্ধে সরাসরি  যুদ্ধে নেমেছেন তাতে আপাতত তিস্তা চুক্তি ঝুলেই থাকবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। মোদিকে ক্ষমতা থেকে হঠানোর ডাকও দিয়েছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তাকে খুন করার চক্রান্তের অভিযোগের পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে উৎখাতে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করার মতো অভিযোগ তুলে রাজনীতিকে উত্তাল করে দিয়েছেন। বিমান বিভ্রাট নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে। সেখানে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। কলকাতাভিত্তিক সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিএসআইআরডি) অধ্যাপক বিনোদ মিশ্র মিডিয়াকে বলেছেন, কিন্তু এখন নোট বাতিল ইস্যুতে মোদি ও মমতার যেরকম বিবাদপূর্ণ সম্পর্ক, তাতে মোদির কথা মমতা শুনবেন, এমনটা মনে হচ্ছে না। এর আগে মনমোহন সিং সরকার তিস্তা চুক্তি নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেলেও মমতার বাধার মুখে সেখান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছিল।  কিন্তু মোদি যদি মমতাকে সঙ্গে নিয়ে সেই চুক্তি করতে পারেন তাহলে মোদির মুকুটে যুক্ত হবে আরেকটি পালক। কিন্তু মমতা সেটা হতে দেবেন না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, মোদি-মমতার বিরোধে উদ্বিগ্ন হওয়া এবং অপেক্ষা করা ছাড়া ঢাকার আর করারও কিছু নেই।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

You cannot copy content of this page

তিস্তা চুক্তি করে মোদিকে কৃতিত্ব নিতে দেবেন না মমতা

আপলোড টাইম : ১২:২১:৪০ অপরাহ্ন, রবিবার, ৪ ডিসেম্বর ২০১৬

43123_331সমীকরণ ডেস্ক: তিস্তা চুক্তি নিয়ে মাত্র দুদিন আগেই ভারতের লোকসভায় এক বিবৃতি দিয়ে কেন্দ্রীয় প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী সঞ্জীব কুমার বালিয়ান জানিয়েছিলেন, তিস্তা চুক্তি রূপায়ণের বিষয়ে ভারত সরকার উদ্যোগী। সব পক্ষের স্বার্থরক্ষা করে সবার কাছে গ্রহণযোগ্য একটি সমাধান সূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা হচ্ছে। পশ্চিমবঙ্গের সঙ্গে তিস্তা ইস্যুতে মতৈক্যে পৌঁছানোর চেষ্টার সময়েই মোদি সরকারের বিরুদ্ধে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে নোট বাতিলের পরিপ্রেক্ষিতে একের পর এক বিস্ফোরক অভিযোগ করে চলেছেন তাতে মমতাকে আস্থায় নেয়ার কোনো পরিস্থিতিই আর নেই বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা। কলকাতার এক রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক অমিত মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, দেশের অভ্যন্তরীণ পরিস্থিতি যা দাঁড়িয়েছে তাতে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বাংলাদেশের সঙ্গে তিস্তা চুক্তিতে মত দিয়ে মোদিকে কৃতিত্বের ভাগিদার হতে দেবেন না। মোদির সঙ্গে ঢাকা সফর এবং স্থলসীমান্ত চুক্তির সফল রূপায়ণের পরে বাংলাদেশ নিয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নমনীয় মনোভাব নিয়ে অতি আশাবাদীরাও মনে করছেন, হাসিনার ভারত সফরে তিস্তা নিয়ে চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। ভারতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাইকমিশনার সৈয়দ মোয়াজ্জেম আলী অবশ্য কদিন আগেই বলেছেন, তিস্তা চুক্তির বিষয়ে ভারতের সরকার ও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারের প্রতি আমাদের যে আস্থা আছে, তা আমরা পুনরায় জানিয়েছি। আগামী ১৭ই ডিসেম্বর ভারত সফরে আসছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরের আগেই ঝুলে থাকা তিস্তা চুক্তি বিষয়ে চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ শেষ করে আনতে পারবে বলে ভারত বাংলাদেশকে আশ্বস্ত করেছিল, কিন্তু নোট বাতিলের পরবর্তী পর্যায়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যেভাবে আগামী দিনের রাজনৈতিক লক্ষ্যকে সামনে রেখে মোদির বিরুদ্ধে সরাসরি  যুদ্ধে নেমেছেন তাতে আপাতত তিস্তা চুক্তি ঝুলেই থাকবে বলে মনে করছেন রাজনৈতিক মহল। মোদিকে ক্ষমতা থেকে হঠানোর ডাকও দিয়েছেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কেন্দ্রীয় সরকারের বিরুদ্ধে তাকে খুন করার চক্রান্তের অভিযোগের পাশাপাশি রাজ্য সরকারকে উৎখাতে সেনাবাহিনীকে ব্যবহার করার মতো অভিযোগ তুলে রাজনীতিকে উত্তাল করে দিয়েছেন। বিমান বিভ্রাট নিয়ে পশ্চিমবঙ্গের পুলিশ স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা রুজু করেছে। সেখানে অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে মুখ্যমন্ত্রীকে খুনের চেষ্টার অভিযোগ আনা হয়েছে। কলকাতাভিত্তিক সেন্টার ফর স্টাডিজ ইন ইন্টারন্যাশনাল রিলেশনস অ্যান্ড ডেভেলপমেন্টের (সিএসআইআরডি) অধ্যাপক বিনোদ মিশ্র মিডিয়াকে বলেছেন, কিন্তু এখন নোট বাতিল ইস্যুতে মোদি ও মমতার যেরকম বিবাদপূর্ণ সম্পর্ক, তাতে মোদির কথা মমতা শুনবেন, এমনটা মনে হচ্ছে না। এর আগে মনমোহন সিং সরকার তিস্তা চুক্তি নিয়ে অনেক দূর এগিয়ে গেলেও মমতার বাধার মুখে সেখান থেকে সরে আসতে বাধ্য হয়েছিল।  কিন্তু মোদি যদি মমতাকে সঙ্গে নিয়ে সেই চুক্তি করতে পারেন তাহলে মোদির মুকুটে যুক্ত হবে আরেকটি পালক। কিন্তু মমতা সেটা হতে দেবেন না বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা। তাদের মতে, মোদি-মমতার বিরোধে উদ্বিগ্ন হওয়া এবং অপেক্ষা করা ছাড়া ঢাকার আর করারও কিছু নেই।