ইপেপার । আজ রবিবার, ২৬ জানুয়ারী ২০২৫

মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুলের দাফন সম্পন্ন মর্যাদা না পাওয়ার আক্ষেপটা থেকেই গেল!

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:০১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৬
  • / ৪০৮ বার পড়া হয়েছে

Untitled-1হুসাইন মালিক: মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুল ইসলামের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টায় মরহুমের অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী দৌলাৎদিয়াড় সর্দারপাড়া ঈদগাহ ময়দান সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।।মরহুমের আরেকটি অন্তিম ইচ্ছা ছিলো তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে দাফন করা হবে কিন্তু বিধাতা তার কপালে সেটা লেখেননি। গতকাল মরহুমরে পরিবারের সদস্যরা চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মহোদয়, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মহোদয় এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের স্বাধীন বাংলাদেশের এই পরাধীন মুক্তিযোদ্ধার দাফনকার্যে শরিক হওয়ার জন্য সংবাদপত্রের মাধ্যেমে অনুরোধ করলেও মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুল ইসলামের দাফনকার্যে কাউকে শরিক হতে দেখা যায়নি। এমনকি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিজেও অংশ নেননি দাফনকার্যে। মরহুমের ভাতিজা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং চুয়াডাঙ্গা টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের ইন্সট্রাক্টর (পদার্থ) মোহাম্মদ রিপন আলী আক্ষেপ নিয়ে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে ডান হাত হারানো ও জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে অনুদানপ্রাপ্ত আমার মেজো চাচাকে মুক্তিযোদ্ধার সরকারী স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, তিনি জীবদ্দশায় নিজের স্বীকৃতির জন্য একবার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা অফিসে ঘুষ চাওয়ায় তিনি রেগে গিয়ে আর কোনদিন গেজেটভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেননি, তিনি বলতেন দেশ স্বাধীন করেছি ঘুষ দিয়ে সনদ নেওয়ার জন্য না। রিপন আরও বলেন, এদেশে অপ্রাসঙ্গিক অনেক অনুষ্ঠানে বড় বড় কর্মকর্তাসহ সবাইকে যেতে দেখা যায় অথচ আমার চাচার দাফনকার্যে শরিক হতে কেউ আসেননি। এমনকি মুক্তিযোদ্ধারাও আসেননি। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে অনুদানপ্রাপ্ত এবং মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রেখে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুল ইসলাম আবারো আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়ে গেল! যেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। বেশকিছুদিন আগে একজন সৎ পুলিশ সুপারকে এই জেলাবাসী রাজকীয় বিদায় জানিয়েছিল কিস্তু একজন স্বাধীনতার সৈনিকের দাফনকার্যে জেলাবাসীর তেমন কেউ অংশগ্রহন না করে প্রমান করলো গরীব তো গরীব। হোক সে মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী। যেটা আমাদের লজ্জা..! জেলা প্রশাসক মহোদয়, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মহোদয় এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের ব্যস্ততা থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা মানে সাধারণ জনগণ কি পারতাম না? এই মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারীর দাফনে শরীক হতে?
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলাৎদিয়াড় ফায়ার সার্ভিসপাড়ার মরহুম দরবার আলীর ছেলে মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুল ইসলাম গত সোমবার ২৭ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হযেছিলো ৭২ বছর। তার স্ত্রী হালিমা বেগমসহ ৪ ছেলে মেয়ে রেখে যান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুলের দাফন সম্পন্ন মর্যাদা না পাওয়ার আক্ষেপটা থেকেই গেল!

আপলোড টাইম : ০২:০১:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ২৯ নভেম্বর ২০১৬

Untitled-1হুসাইন মালিক: মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুল ইসলামের দাফনকার্য সম্পন্ন হয়েছে। গতকাল সকাল ১০টায় মরহুমের অন্তিম ইচ্ছা অনুযায়ী দৌলাৎদিয়াড় সর্দারপাড়া ঈদগাহ ময়দান সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়।।মরহুমের আরেকটি অন্তিম ইচ্ছা ছিলো তাকে রাষ্ট্রীয় সম্মানে দাফন করা হবে কিন্তু বিধাতা তার কপালে সেটা লেখেননি। গতকাল মরহুমরে পরিবারের সদস্যরা চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক মহোদয়, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মহোদয় এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও জেলায় কর্মরত সাংবাদিকদের স্বাধীন বাংলাদেশের এই পরাধীন মুক্তিযোদ্ধার দাফনকার্যে শরিক হওয়ার জন্য সংবাদপত্রের মাধ্যেমে অনুরোধ করলেও মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুল ইসলামের দাফনকার্যে কাউকে শরিক হতে দেখা যায়নি। এমনকি স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান নিজেও অংশ নেননি দাফনকার্যে। মরহুমের ভাতিজা জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি এবং চুয়াডাঙ্গা টেকনিক্যাল স্কুল এ্যান্ড কলেজের ইন্সট্রাক্টর (পদার্থ) মোহাম্মদ রিপন আলী আক্ষেপ নিয়ে বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে পাক হানাদার বাহিনীর গুলিতে ডান হাত হারানো ও জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে অনুদানপ্রাপ্ত আমার মেজো চাচাকে মুক্তিযোদ্ধার সরকারী স্বীকৃতি দেওয়া হয়নি, তিনি জীবদ্দশায় নিজের স্বীকৃতির জন্য একবার চেষ্টা করেছিলেন কিন্তু মুক্তিযোদ্ধা অফিসে ঘুষ চাওয়ায় তিনি রেগে গিয়ে আর কোনদিন গেজেটভুক্ত হওয়ার চেষ্টা করেননি, তিনি বলতেন দেশ স্বাধীন করেছি ঘুষ দিয়ে সনদ নেওয়ার জন্য না। রিপন আরও বলেন, এদেশে অপ্রাসঙ্গিক অনেক অনুষ্ঠানে বড় বড় কর্মকর্তাসহ সবাইকে যেতে দেখা যায় অথচ আমার চাচার দাফনকার্যে শরিক হতে কেউ আসেননি। এমনকি মুক্তিযোদ্ধারাও আসেননি। জাতিরজনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বাক্ষরিত প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল হতে অনুদানপ্রাপ্ত এবং মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা রেখে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুল ইসলাম আবারো আমাদের বিবেককে নাড়া দিয়ে গেল! যেটা নতুন করে বলার অপেক্ষা রাখেনা। বেশকিছুদিন আগে একজন সৎ পুলিশ সুপারকে এই জেলাবাসী রাজকীয় বিদায় জানিয়েছিল কিস্তু একজন স্বাধীনতার সৈনিকের দাফনকার্যে জেলাবাসীর তেমন কেউ অংশগ্রহন না করে প্রমান করলো গরীব তো গরীব। হোক সে মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী। যেটা আমাদের লজ্জা..! জেলা প্রশাসক মহোদয়, ভারপ্রাপ্ত পুলিশ সুপার মহোদয় এবং জেলা-উপজেলা পর্যায়ের মুক্তিযোদ্ধাসহ রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংবাদিক নেতৃবৃন্দের ব্যস্ততা থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু আমরা মানে সাধারণ জনগণ কি পারতাম না? এই মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারীর দাফনে শরীক হতে?
উল্লেখ্য, চুয়াডাঙ্গা শহরতলীর দৌলাৎদিয়াড় ফায়ার সার্ভিসপাড়ার মরহুম দরবার আলীর ছেলে মহান মুক্তিযুদ্ধে পঙ্গুত্ববরণকারী আজিজুল ইসলাম গত সোমবার ২৭ নভেম্বর বিকাল সাড়ে ৫টায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হযেছিলো ৭২ বছর। তার স্ত্রী হালিমা বেগমসহ ৪ ছেলে মেয়ে রেখে যান।