ইপেপার । আজ শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪

১০৭ রোহিঙ্গা ও ৮ ট্রলার ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার আহ্বান হিউম্যান রাইটসের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৩:৪৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৬
  • / ৩৬৭ বার পড়া হয়েছে

সমীকরণ ডেস্ক: কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গাদের বহনকারী আটটি ট্রলার এবং ১০৭ জন রোহিঙ্গাকে আটকের পর ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সহায়তাকারীরা টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে আছে এমন খবরে বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে ছয় ‘দালালকে’ আটক করা হয়। পুলিশও একজনকে আটক করে। বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ বলেন, নাফ নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে জলসীমার শূন্যরেখা অতিক্রম করে অনুপ্রবেশ চেষ্টাকালে রোহিঙ্গাদের বহনকারী আটটি ট্রলার ফিরিয়ে দেন তারা। এছাড়া অনুপ্রবেশের সহায়তার অভিযোগে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয় দালালকে আটক করা হয়। বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, উখিয়ার বালুখালী, থাইংখালী এবং ঘুমধুমের কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্টের শূন্যরেখা দিয়ে অনুপ্রবেশ চেষ্টার সময় ১০৭ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়। এদের মধ্যে ৩০ পুরুষ, ২৯ নারী ও ৪৮ জন শিশু রয়েছে বলে ইমরান জানান।
এদিকে, নির্যাতনের শিকার মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সুরক্ষা দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি ফের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডবিস্নউ)। বুধবার এ সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মীনাক্ষী গোস্বামী এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছরের ৯ অক্টোবরের পর থেকে নতুন করে মিয়ানমারে সংঘাত শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। মংডু শহরতলির পাঁচটি গ্রামের ১২ শতাধিক বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ এবং নির্বিচার গ্রেপ্তারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ আক্রান্ত এলাকায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকেও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, চলমান এই সংঘাতে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এসব নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের অনেকেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে হেঁটে বা নদীপথে বাংলাদেশে যাচ্ছে আশ্রয়ের জন্য। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার তাদের দেশে আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে নারাজ। বাংলাদেশে এখন ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়শিবিরে রয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার মনে করে, প্রকৃতপক্ষে তিন থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা এখন দেশটিতে বসবাস করছে। বাংলাদেশ সরকার দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী, নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ডকে সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই বলে আসছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার মতো সক্ষমতা তাদের নেই। এ পরিস্থিতিতে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে। তবে বাংলাদেশের এই দাবির পরও বলা যায়, আন্তর্জাতিক আইনের প্রথা অনুযায়ী চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার এসব মানুষকে বাংলাদেশ ফিরিয়ে দিতে পারে না। এসব মানুষকে প্রবেশ এবং সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতা আছে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

error: Content is protected !!

১০৭ রোহিঙ্গা ও ৮ ট্রলার ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার আহ্বান হিউম্যান রাইটসের

আপলোড টাইম : ০৩:৪৬:৫৩ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ২৫ নভেম্বর ২০১৬

সমীকরণ ডেস্ক: কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফ সীমান্তের বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে বাংলাদেশে অনুপ্রবেশের সময় রোহিঙ্গাদের বহনকারী আটটি ট্রলার এবং ১০৭ জন রোহিঙ্গাকে আটকের পর ফেরত পাঠিয়েছে বিজিবি। সীমান্তরক্ষী বাহিনীর কর্মকর্তারা জানান, রোহিঙ্গাদের অনুপ্রবেশে সহায়তাকারীরা টেকনাফের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে আছে এমন খবরে বৃহস্পতিবার ভোরে অভিযান চালিয়ে ছয় ‘দালালকে’ আটক করা হয়। পুলিশও একজনকে আটক করে। বিজিবির টেকনাফ ২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবুজার আল জাহিদ বলেন, নাফ নদীর বিভিন্ন পয়েন্ট দিয়ে জলসীমার শূন্যরেখা অতিক্রম করে অনুপ্রবেশ চেষ্টাকালে রোহিঙ্গাদের বহনকারী আটটি ট্রলার ফিরিয়ে দেন তারা। এছাড়া অনুপ্রবেশের সহায়তার অভিযোগে বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ছয় দালালকে আটক করা হয়। বিজিবির কক্সবাজার ৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল ইমরান উল্লাহ সরকার বলেন, উখিয়ার বালুখালী, থাইংখালী এবং ঘুমধুমের কয়েকটি সীমান্ত পয়েন্টের শূন্যরেখা দিয়ে অনুপ্রবেশ চেষ্টার সময় ১০৭ রোহিঙ্গাকে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানো হয়। এদের মধ্যে ৩০ পুরুষ, ২৯ নারী ও ৪৮ জন শিশু রয়েছে বলে ইমরান জানান।
এদিকে, নির্যাতনের শিকার মিয়ানমারের রোহিঙ্গাদের আশ্রয় ও সুরক্ষা দেয়ার জন্য বাংলাদেশের প্রতি ফের আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক মানবাধিকার সংগঠন হিউম্যান রাইটস ওয়াচ (এইচআরডবিস্নউ)। বুধবার এ সংস্থার দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলের পরিচালক মীনাক্ষী গোস্বামী এক বিবৃতিতে এ আহ্বান জানান। বিবৃতিতে বলা হয়, চলতি বছরের ৯ অক্টোবরের পর থেকে নতুন করে মিয়ানমারে সংঘাত শুরু হওয়ার পর বেশ কয়েকজনকে হত্যা করা হয়েছে। মংডু শহরতলির পাঁচটি গ্রামের ১২ শতাধিক বাড়িঘর ধ্বংস করা হয়েছে। মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে বিচারবহির্ভূত হত্যা, ধর্ষণ এবং নির্বিচার গ্রেপ্তারের অভিযোগ পাওয়া গেছে। বেশির ভাগ আক্রান্ত এলাকায় আন্তর্জাতিক ত্রাণ সংস্থাগুলোকেও ঢুকতে দেয়া হচ্ছে না। জাতিসংঘের হিসাব অনুযায়ী, চলমান এই সংঘাতে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে। এসব নির্যাতিত রোহিঙ্গাদের অনেকেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে হেঁটে বা নদীপথে বাংলাদেশে যাচ্ছে আশ্রয়ের জন্য। বিবৃতিতে বলা হয়, বাংলাদেশ সরকার তাদের দেশে আর কোনো রোহিঙ্গাকে আশ্রয় দিতে নারাজ। বাংলাদেশে এখন ৩০ হাজারের বেশি রোহিঙ্গা নিবন্ধিত শরণার্থী হিসেবে আশ্রয়শিবিরে রয়েছে। তবে বাংলাদেশ সরকার মনে করে, প্রকৃতপক্ষে তিন থেকে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা এখন দেশটিতে বসবাস করছে। বাংলাদেশ সরকার দেশটির সীমান্তরক্ষী বাহিনী, নৌবাহিনী এবং কোস্টগার্ডকে সমুদ্রসীমার নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য নির্দেশ দিয়েছে। বাংলাদেশ অনেক আগে থেকেই বলে আসছে, রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দেয়ার মতো সক্ষমতা তাদের নেই। এ পরিস্থিতিতে অবশ্যই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা দিতে হবে। তবে বাংলাদেশের এই দাবির পরও বলা যায়, আন্তর্জাতিক আইনের প্রথা অনুযায়ী চরম মানবাধিকার লঙ্ঘনের শিকার এসব মানুষকে বাংলাদেশ ফিরিয়ে দিতে পারে না। এসব মানুষকে প্রবেশ এবং সুরক্ষা দিতে বাংলাদেশের বাধ্যবাধকতা আছে।