আজ আলমডাঙ্গা মুক্ত দিবস
- আপলোড টাইম : ১২:২২:১০ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ নভেম্বর ২০১৬
- / ৫৭৫ বার পড়া হয়েছে
আলমডাঙ্গা অফিস: ১৯৭১ সালের ১২নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের মতে আলমডাঙ্গামুক্ত দিবস। আবার কেউ কেউ শহীদ দিবস বলে থাকে। জামাল উদ্দিন ও এ্যাডঃ আব্দুর রশিদ স্মৃতি চারণ করতে যেয়ে অশ্রু সজল চোখে বলেন, আমার ভাই নান্নু ঐ দিন সম্মুখ সমরে যুদ্ধে শহীন হন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর আলমডাঙ্গা বেলগাছি গ্রামের প্রায় ২শ’ মুক্তিযোদ্ধা একত্রিত হয় বেং তারা সিদ্ধান্ত নেয় আলমডাঙ্গা শহর এটাক করে শহরটি দখল করতে হবে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক জামাল উদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বেতন ভাতা করে দেয়া হয়। আবুল হোসেন মোল¬া নান্নুর নেতৃত্বে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি দল এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হান্নান ও সুলতান জোয়ার্দ্দারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যদের একটি দল ভাগ করে তাদের ২ ভাগে ভাগ করে একদল কালিদাসপুর ব্রীজ রেকি করে রেললাইন ও ইলেকট্রিক লাইন মাইন দিয়ে উড়িয়ে দেবে, অন্য দল আলমডাঙ্গা শহর রেকি করে দেখবে। ২ দলকেই বলা আছে তারা কাজ শেষ করে বেলগাছি পোয়ামরিতে উপস্থিত হবে। জামাল উদ্দিন, আব্দুর রশিদসহ প্রায় ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা নির্দিষ্ট ঐ স্থানে উপস্থিত হয়। রাত ৩টা পর্যন্ত ২ গ্রুপের কেউ নির্দিষ্ট স্থানে না পৌঁছালে জামাল উদ্দিনসহ সবাই ঐ স্থান ত্যাগ করে চলে যান। তারা পুনরায় বেলগাছিতে একত্রিত হয়ে ভোর ৫টার সময় আব্দুর রশিদ মোল¬া ১টা গুলীর শব্দ শুনতে পান। ঐ সময় সকল মুক্তিযোদ্ধাকে অবহিত করলে জামাল উদ্দিনকে দলবল নিয়ে প্রস্তুত হতে বলেন। গুলীর শব্দ আলমডাঙ্গা হতে আসছে কিনা জানতে সবাই অস্ত্র নিয়ে হাউসপুর ব্রীজ এর কাছে এসে কয়েকজন রাজাকার দেখতে পায়। রাজাকাররা ওদের অবস্থান টের পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এক জন রাজাকার মতলেবকে ধরে ফেলে মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর সবাই ক্যানেলের পাড়ে পজিশন নেয়। থেমে থেমে গোলাগুলী চলছে। ঐ সময় হরিণাকুন্ডু থানার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবার প্রায় ২শ’ মুক্তিযোদ্ধার দল নিয়ে আলমডাঙ্গায় প্রবেশ করে। তখনও যুদ্ধ চলছে। জামাল উদ্দিন জানান, তিনি তার দলবল নিয়ে গার্লস স্কুলের ভিতর ঢুকে পড়েন। গার্লস স্কুল থানার সামনে তাদের অবস্থান টের পেয়ে পাক আর্মিরা একের পর এক গুলী বর্ষণ করতে থাকলে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে থাকে। জামাল উদ্দিন ঐ সময় চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে বলেন, তোমরা ভয় পেও না, সবাই সাবধান হও। কথা শেষ না হতেই ১টা গুলী জামাল উদ্দিনের পায়ে লাগে। গুলীবিদ্ধ হয়ে জামাল উদ্দিন মাটিত লুটিয়ে পড়েন। এসএলআর দিয়ে ফায়ার করতে করতে পিছু হয়ে যান। হান্নান, সুলতান গং দিদার খার বাড়ীর ভিতর থেকে থানা লক্ষ্য করে গুলী ছুড়তে থাকে। ঐ সময় দুলাল আলমডাঙ্গা ওসিএলএসডি আঃ গফুরের ছেলে ভাল নাম গোলাম মোস্তফা দুলাল। ১৯৭১ সালের ১২ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধাদের মতে আলমডাঙ্গামুক্ত দিবস। আবার কেউ কেউ শহীদ দিবস বলে থাকে। জামাল উদ্দিন ও এ্যাডঃ আব্দুর রশিদ স্মৃতি চারণ করতে যেয়ে অশ্রু সজল চোখে বলেন, আমার ভাই নান্নু ঐ দিন সম্মুখ সমরে যুদ্ধে শহীন হন। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালের ১১ নভেম্বর আলমডাঙ্গা বেলগাছি গ্রামের প্রায় ২শ’ মুক্তিযোদ্ধা একত্রিত হয় বেং তারা সিদ্ধান্ত নেয় আলমডাঙ্গা শহর এটাক করে শহরটি দখল করতে হবে। সিদ্ধান্ত মোতাবেক জামাল উদ্দিন বলেন, মুক্তিযোদ্ধাদের বেতন ভাতা করে দেয়া হয়। আবুল হোসেন মোল¬া নান্নুর নেতৃত্বে ১৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি দল এবং মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুল হান্নান ও সুলতান জোয়ার্দ্দারের নেতৃত্বে ১৫ সদস্যদের একটি দল ভাগ করে তাদের ২ ভাগে ভাগ করে একদল কালিদাসপুর ব্রীজ রেকি করে রেললাইন ও ইলেকট্রিক লাইন মাইন দিয়ে উড়িয়ে দেবে, অন্যদল আলমডাঙ্গা শহর রেকি করে দেখবে। ২ দলকেই বলা আছে তারা কাজ শেষ করে বেলগাছি পোয়ামরিতে উপস্থিত হবে। জামাল উদ্দিন, আব্দুর রশিদসহ প্রায় ১৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা নির্দিষ্ট ঐ স্থানে উপস্থিত হয়। রাত ৩টা পর্যন্ত ২ গ্র“পের কেউ নির্দিষ্ট স্থানে না পৌঁছালে জামাল উদ্দিনসহ সবাই ঐ স্থান ত্যাগ করে চলে যান। তারা পুনরায় বেলগাছিতে একত্রিত হয়ে ভোর ৫টার সময় আব্দুর রশিদ মোল¬া ১টা গুলীর শব্দ শুনতে পান। ঐ সময় সকল মুক্তিযোদ্ধাকে অবহিত করলে জামাল উদ্দিনকে দলবল নিয়ে প্র¯‘ত হতে বলেন। গুলীর শব্দ আলমডাঙ্গা হতে আসছে কিনা জানতে সবাই অস্ত্র নিয়ে হাউসপুর ব্রীজ এর কাছে এসে কয়েকজন রাজাকার দেখতে পায়। রাজাকাররা ওদের অবস্থান টের পেয়ে দৌড়ে পালিয়ে যায়। এক জন রাজাকার মতলেবকে ধরে ফেলে মুক্তিযোদ্ধারা। এরপর সবাই ক্যানেলের পাড়ে পজিশন নেয়। থেমে থেমে গোলাগুলী চলছে। ঐ সময় হরিণাকুণ্ডু থানার মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আবার প্রায় ২শ’ মুক্তিযোদ্ধার দল নিয়ে আলমডাঙ্গায় প্রবেশ করে। তখনও যুদ্ধ চলছে। জামাল উদ্দিন জানান, তিনি তার দলবল নিয়ে গার্লস স্কুলের ভিতর ঢুকে পড়েন। গার্লস স্কুল থানার সামনে তাদের অবস্থান টের পেয়ে পাক আর্মিরা একের পর এক গুলী বর্ষণ করতে থাকলে অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধারা পিছু হটতে থাকে। জামাল উদ্দিন ঐ সময় চিৎকার দিয়ে লাফিয়ে বলেন, তোমরা ভয় পেও না, সবাই সাবধান হও। কথা শেষ না হতেই ১টা গুলী জামাল উদ্দিনের পায়ে লাগে। গুলীবিদ্ধ হয়ে জামাল উদ্দিন মাটিত লুটিয়ে পড়েন। এসএলআর দিয়ে ফায়ার করতে করতে পিছু হয়ে যান। হান্নান, সুলতান গং দিদার খার বাড়ীর ভিতর থেকে থানা লক্ষ্য করে গুলী ছুড়তে থাকে। ঐ সময় দুলাল আলমডাঙ্গা ওসিএলএসডি আঃ গফুরের ছেলে ভাল নাম গোলাম মোস্তফা দুলাল।
১২ নভেম্বর আলমডাঙ্গা শহরের চারদিক থেকে ৫ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা পরিকল্পিতভাবে হামলা চালিয়ে সন্ধ্যার মধ্যে আলমডাঙ্গা শত্রু মুক্ত করে। ঐ দিন ১৭ জন পাকিস্তানি সৈন্য, ১৯ জন রাজাকার ও একজন অবাঙালি পুলিশকে হত্যা করা হয়। দিনব্যাপী যুদ্ধে মুক্তিযোদ্ধা আনসার আলী, খন্দকার আশরাফ আলী আশু, মোল¬া আবুল হোসেন নান্নু শহীদ হন এবং গোলাম মোস্তফা দুলাল ও জামালউদ্দিন আহত হন। পাকসেনাদের হাতে আলমডাঙ্গার বিশিষ্ট ব্যক্তি ডা. বজলুর রহমান শহীদ হন। এই যুদ্ধের বিবরণ দিতে গিয়ে আব্দুল হান্নান বলেছেন, ১২ নভেম্বর আলমডাঙ্গা শহরে এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় অপ্রত্যাশিত রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়। আমরা পরিকল্পনা করেছিলাম নভেম্বর মাসে আলমডাঙ্গা শহরে ঈদ-উল-ফিতরের নামাজের জামাত ঘেরাও করে শান্তি কমিটির কিছু চিহ্নিত লোককে জীবিত অবস্থায় ধরে আনবো। এ ঘেরাওতে আমরা পাঁচ শতাধিক মুক্তিযোদ্ধা অংশ নেবো। এদিন আমাদের অনেকে শহীদ হলেও আমরা চিহ্নিত লোকগুলোকে জীবিত ধরবোই। আমাদের প্রস্তুতি শুরু হলো।
মিরপুর থানার মুজিববাহিনীর কমান্ডার মারফত আলী, আলমডাঙ্গা থানার কাজী কামাল ও হরিনাকুন্ড থানার কমান্ডার আবদার রহমানসহ তাদের দলকে আমাদের সিদ্ধান্তের কথা জানানো হয়। তাঁদের আলমডাঙ্গা শহরের আশপাশ এলাকায় অবস্থান করার জন্য অনুরোধ করা হয়। এরা সবাই আলমডাঙ্গা শহরের আশেপাশে বিভিন্ন জায়গায় অবস্থান নিতে শুরু করেন। রেকি করার জন্য মোল¬া আবু হোসেন নান্নু ভাইকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। নান্নু ভাইয়ের সঙ্গে আমাদের দলের কয়েকজন সাহসী মুক্তিযোদ্ধাকে দেওয়া হয়। কথা ছিল নান্নু ভাই ডামোশ ও এরশাদপুর গ্রাম থেকে খবর যোগাড় করে আমাদের কাছে সরবরাহ করবেন। তার উপর ভিত্তি করে আমরা ঈদের জামাত ঘেরাও করবো। কিন্তু আমরা নান্নু ভাইয়ের উপর ভরসা করতে পারছিলাম না। কারণ নান্নু ভাই ছিলেন খুব তেজী ও মেজাজী। তাই কখন কী করে বসেন ঠিক নেই। এরকম একটা আশঙ্কা নিয়ে আমরা দুই দলে ভাগ হলাম।
১২ নভেম্বর ভোর রাতে হঠাৎ আলমডাঙ্গা শহরের দিকে গুলির শব্দ শুরু হয়। আমরা অনুমান করলাম, নিশ্চয় নান্নু ভাইয়ের সঙ্গে যুদ্ধ শুরু হয়েছে। তাই আমরা সবাই দৌড়ে আলমডাঙ্গা শহরের পূর্বপাশের গ্রাম পার-আলমডাঙ্গাতে এলাম। তখন হাউসপুর ব্রিজের কাছে গোলাগুলি চলছিল। আমি আমার দলের সবাইকে পার-আলমডাঙ্গাতে রেখে হাউসপুর ব্রিজের কাছে ঘটনা জানার জন্য যাই। সেখানে গিয়ে জানলাম ভোরবেলা রেকি করার সময় নান্নু ভাইয়ের সঙ্গে মুক্তিযোদ্ধাদের রাজাকাররা দেখে ফেলে এবং গুলি চালায়। মুক্তিযোদ্ধারা তার পাল্টা জবাব দেয়। এভাবে গোলাগুলি শুরু হয়ে গেছে। এরমধ্যে নান্নুর ছোট ভাই মোল¬া আবদুর রশিদ অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে গোলাগুলির শব্দ শুনে বেলগাছি গ্রাম থেকে চলে এসেছেন। সবাই মিলে আলাপ-আলোচনা করে যুদ্ধ চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্ত নিলাম। আমি পার-আলমডাঙ্গা গ্রামে আমাদের অন্যান্য মুক্তিযোদ্ধাদের কাছে ফিরে এলাম। আমরা আনন্দধাম, এরশাদপুর ও পার আলমডাঙ্গার দিক থেকে গুলি করতে করতে আলমডাঙ্গা শহরের মধ্যে ঢুকতে লাগলাম। এভাবে সকাল ৭টার মধ্যে পুরোপুরি গোলাগুলি শুরু হয়ে গেল। গোলাগুলির শব্দ শুনে মারফত আলী, কাজী কামাল, আবদার রহমানসহ বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধার দল এসে হাজির হলো। তাঁরা আমাদের সঙ্গে একান্ত হয়ে যুদ্ধে অংশ নিলেন। সকাল ১০টার মধ্যে আলমডাঙ্গা শহরের চতুর্দিক থেকে তুমুল গোলাগুলির শব্দ হতে লাগল। দুপুর ১২টার মধ্যে থানা বাদে আলমডাঙ্গা শহরের সব এলাকা আমাদের দখলে চলে আসে। দুপুর ১টার দিকে থানা দখলের জন্য আক্রমণ করা হয়। কমান্ডার জামালউদ্দিন বেশকিছু মুক্তিযোদ্ধাকে সঙ্গে নিয়ে হামলা করেন। আমি ছিলাম থানার পূর্ব-দক্ষিণ কোণে দিদার খাঁর বাড়িতে। থানাতে যখন চরম গোলাগুলি চলছে, আমি তখন দিদার খাঁর ঘর থেকে জানালা দিয়ে হালকা মেশিনগানের ফায়ার করছিলাম। হঠাৎ করে থানা থেকে কেটি গুলি এসে টেলিফোনের তারের খুঁটিতে লাগল, খুঁটি ভেদ করে আমার পাশের গোলাম মোস্তফা দুলালের এস.এল.আর-এর ম্যাগাজিনে লাগে, সেখান থেকে তার হাত, হাত ভেদ করে পিছনে দাঁড়ানো কুরবানের উরুতে লাগে। এ সময় থানার সামনে কমান্ডার জামাল উদ্দিনের পায়ে গুলি লাগে। থানায় ছিল পাকিস্তানি সৈন্যদের পাকা বাঙ্কার, অনেক সময় ধরে গোলাগুলির পরও আমরা থানা দখল করতে ব্যর্থ হলাম। এরপর আমরা ফায়ার বন্ধ করে দিয়ে স্টেশনের দিকে সরকারি খাদ্যগুদামের কাছে গেলাম। সেখানকার বেশকিছু রাজাকার আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করল।
আমরা পুনরায় গোবিন্দপুরের মধ্যে দিয়ে গার্লস স্কুলের দক্ষিণদিকে মাঠের মধ্যে গিয়ে দাঁড়ালাম। এমন সময় থানা কাউন্সিলের দক্ষিণপাশে বর্তমানে খাদ্যগুদামের পিছনে দাঁড়িয়ে দোয়ারকা বাবুর জমির চারদিকে ঘেরা দেয়ালের পাশ থেকে বেশ কয়েক রাউন্ড গুলি হলো। খবর পেলাম, পাকসৈন্যের গুলিতে মোল¬া আবুল হোসেন নান্নু ভাই শহীদ হয়েছেন। গোবিন্দপুরের নূর মোহাম্মদ, সবেদ আলী, সেলিম ও লুৎফর কোনরকমে বেঁচে গেছেন। তখন প্রায় সন্ধ্যা, তাই আর পাল্টা আক্রমণ করা সম্ভব হয়নি। নান্নু ভাইয়ের কাছে একটি হালকা মেশিনগান ও বেশকিছু টাকা ছিল। সকালের দিকে যুদ্ধের সময় আলমডাঙ্গা এক্সচেঞ্জের কাছে আনসার নামে আবদার রহমানের দলের একজন মুক্তিযোদ্ধা শহীদ হন। দুপুরের দিকে থানায় যখন যুদ্ধ চলছিল, তখন খন্দকার আশরাফ আলী আশু গোবিন্দপুরের মধ্যে দিয়ে এসে ড. বজলুর রহমানের বাড়ির কাছ দিয়ে থানার দিকে রওনা হন। পাক সেনারা থানায় স্বাধীন বাংলার পতাকা তুলে রাখায় আশু বুঝতে না পেরে এগুতে থাকেন। এমন সময় পাক সেনাদের গুলিতে তিনি শহীদ হন। এসময় রাজাকারা ডা. বজলুর রহমানকে তার নিজ বাড়িতে গুলি করে হত্যা করে। ঐ দিন মুক্তিযোদ্ধারা আলমডাঙ্গা সোনালী ব্যাংক হতে ৮২,৫০০/- টাকা এবং বেশকিছু স্বর্ণ নিয়ে যায়। এরমধ্যে কিছু অচল টাকা ছিল। এ টাকা হতে ভারতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যেকে ৫০০ টাকা এবং স্থানীয় প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধাদের প্রত্যেককে ১০০টাকা করে মোট ৩২০০০টাকা বিতরণ করা হয়। কুষ্টিয়া শহরের মুক্তিযোদ্ধাদের থাকা খাওয়া, চিকিৎসা ও অন্যান্য কাজে ১৫০০০ টাকা খরচ হয়। বাকি টাকা স্বর্ণ আলমডাঙ্গা স্টেশনপাড়ার মোল¬া আব্দুর রশিদ ভারতে জমা দেন। ১২ নভেম্বর আলমডাঙ্গা শহরের যুদ্ধে অর্ধশতাধিক পাকসৈন্য, রাজাকার, অবাঙালি নিহত হয়। এইদিন বরিশাল জেলার মঠবাড়িয়ার হলতা গ্রামের হাফিজ পুলিশসহ অনেক রাজাকার আমাদের কাছে আত্মসমর্পণ করে এবং স্বাধীনতার স্বপক্ষে যুদ্ধ করেন। কাজী কামাল, মারফত আলী, শফিউর রহমান সুলতান তাদের দলের মুক্তিযোদ্ধাদের নিয়ে আলমডাঙ্গা শহরের উত্তরপাশে যুদ্ধে লিপ্ত ছিলেন। আবদার রহমানের দল আলমডাঙ্গা শহরের পূর্ব-দক্ষিণ কোণে সাহাপট্টির একচেঞ্জ এলাকায় যুদ্ধ করেন। এইদিন খন্দকার আশরাফ আলী আশু কয়েকজন মুক্তিযোদ্ধাকে নিয়ে ইসলামপুর গ্রামের দিকে ছিলেন। তিনি গোলাগুলির শব্দ শুনে তার দল নিয়ে আলমডাঙ্গা যুদ্ধে অংশ নেন। আলমডাঙ্গা শহরের যুদ্ধের পর আলমডাঙ্গা থানার বাড়াদি গ্রামে বাসভর্তি করে পাকসৈন্য আসে। আমাদের দলের মুক্তিযোদ্ধারা পাকসৈন্যকে বাধা দেয়। মুক্তিযোদ্ধা ও পাকসৈন্যের মধ্যে অনেক সময় ধরে গুলিবিনিময় হয়। পাকসৈন্য পিছু হটে পালিয়ে যায়। এ যুদ্ধে আমাদের দলের কোন মুক্তিযোদ্ধা আহত বা শহীদ হননি। পাকসৈন্যের অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয়।