মেহেরপুরে মেয়ের ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় বলি হলো পিতা হত্যাকাণ্ডের পর বাড়ী ছেড়ে পালিয়েছে অভিযুক্তরা
- আপলোড টাইম : ০২:০৮:৩৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ নভেম্বর ২০১৬
- / ৪২৯ বার পড়া হয়েছে
মেহেরপুর অফিস: ইভটিজিংয়ের প্রতিবাদ করায় মেহেরপুরে প্রাণ দিতে হলো বাবা নূহ নবীকে। মেয়ে ও পরিবারের দাবি ঐ গ্রামের রাসেল নামের একটি ছেলে দীর্ঘদিন ধরে তাকে উত্ত্যক্ত করে আসছিল। ফলে উভয় পরিবারের মধ্যে সংঘর্ষ ও মামলার ঘটনাও ঘটে। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তার বাবাকে হত্যা করা হয়েছে বলে দাবি তাদের। দোষীদের আইনের আওতায় আনার আশ্বাস আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর। হত্যার পর থেকেই আতঙ্ক বিরাজ করছে অভিভাবকদের মাঝে। এদিকে গতকাল সোমবার ঘটনার সাথে জড়িত বুড়িপোতা গ্রামের মোনর উদ্দিনের ছেলে সোলেমানকে (২৯) আটক করেছে পুলিশ। মেহেরপুর সদর উপজেলার বুড়িপোতা গ্রামের ৭ম শ্রেণীর ছাত্রীকে বেশ কয়েক মাস ধরে বিয়ের প্রস্তাব ও উত্ত্যক্ত করে আসছিল একই এলাকার রাজ্জাকের ছেলে রাসেল। গেল ঈদুল ফিতরের দিন শ্যামলী বেড়াতে গেলে তার হাত ধরে টানাটানি করে রাসেল। বাড়ি গিয়ে সে ঘটনাটি তার অভিভাবকদের জানায়। তার বাবা গ্রামের মোড়ে গিয়ে ছেলেটিকে চড় থাপ্পড় মারে। পরে ছেলে পক্ষের চার জনকে ছুরিকাঘাত করে মেয়ে পক্ষের লোকজন। এ ঘটনায় মেয়ের বাবাসহ চার জনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করে রাসেলের পরিবার। কিছুদিন পর জামিনে বের হয়ে আসেন তারা। কিন্তু তারপর থেকেই ছেলে পক্ষের হুমকিতে তিন মাস ধরে গ্রাম ছাড়া ছিলেন। গেল ১৫ দিন আগে এলাকাবাসীর আশ্বাসে তারা গ্রামে ফিরে আসেন। তারপর থেকেই ছেলে পক্ষের লোকেরা তাদের হুমকি দিয়ে আসছিল বলে অভিযোগ তাদের। শনিবার সন্ধ্যায় গ্রামের রাস্তার পাশে ওৎ পেতে বসে ছিলেন কয়েক জন। এ সময় নূহ নবীর উপর হামলা চালায় তারা। রড, হাতুড়ি ও দেশীয় অস্ত্র দিয়ে পিটিয়ে জখম করে তাকে। তার চিৎকারে পরিবারের সদস্যরা ছুটে আসলে তাদেরও পিটিয়ে জখম করে তারা। এ ঘটনায় আহত হয় মেয়ে শ্যামলী, চাচা ফিরোজ আলী ও তার মা উলফাতুন বেগম। পরে রাত সাড়ে ১১টার দিকে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায় নূহ নবী।
আহত চাচা ফিরোজের দাবি গ্রামের রাসেল, রাজ্জাক, ইউনূছসহ আরো কয়েকজন তার ভাইকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় ইউপি সদস্য শরিফুল ইসলামকেও দায়ী করেন তারা। হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবি তাদের।
এদিকে এ ঘটনায় আতঙ্ক বিরাজ করছে অভিভাবকদের মাঝে। ঐ গ্রামের অধিকাংশ অভিভাবক ও প্রতিবেশীরাই জানান, এভাবে মেয়েদের উত্ত্যক্ত করলে তাদের মেয়েদের কিভাবে স্কুলে পাঠাবেন এ নিয়ে শঙ্কায় আছেন তারা। প্রতিবাদ করলে আবার মেরে ফেলা হচ্ছে। তাহলে তাদের ছেলে মেয়েদের ভবিষ্যৎ কি হবে।
অভিযুক্তদের বাড়িতে গিয়ে তাদের পাওয়া যায়নি। তবে ইউপি সদস্যের শরিফুল ইসলাম জানান, সে বার বার গ্রামের মেম্বার নির্বাচিত হওয়ায়, তাকে জনগন থেকে বিচ্ছিন্ন করার জন্যই এ হত্যার সাথে তাকে জড়ানোর চেষ্টা করছে।
মেহেরপুর সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইকবাল বাহার চৌধুরী জানান, পূর্ব শত্র“তার জের ধরে এ হত্যা কান্ড ঘটেছে। আসামীদের চিহ্নিত করে আইনের আওতায় আনার আশ্বাস দেন তিনি।