শনিবার, ১৭ মে, ২০২৫
সর্বশেষ স্থানীয় সংবাদ জাতীয় রাজনীতি আর্ন্তজাতিক সারাদেশ অর্থনীতি খেলা বিনোদন ফ্যাক্টচেক আজকের পত্রিকা প্রযুক্তি চাকরি

জুলাই গণহত্যার প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন

  • আপলোড তারিখঃ ২৩-০৪-২০২৫ ইং
জুলাই গণহত্যার প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন

শেখ হাসিনা ক্ষমতা প্রলম্বিত করতে বিগত সাড়ে ১৫ বছর গুম খুন নির্যাতন নিপীড়নের মাধ্যমে বিরোধী নেতাকর্মীদের হীনবল এবং বিনাশের অপকৌশল নেন। ফলে ফ্যাসিবাদী জমানায় বিনা কারণে হাজারো মানুষের প্রাণ গেছে। বিশেষ করে চব্বিশের জুলাই-আগস্টে শিক্ষার্থীদের নেতৃত্বে গড়ে ওঠা বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে রাষ্ট্রীয় বাহিনী এত ভয়াবহ মাত্রায় বলপ্রয়োগ করে যে, এতে প্রায় দুই হাজার তাজা প্রাণ ঝরে গেছে। আহত হয়েছেন ২৫ হাজারের মতো মানুষ। খোদ জাতিসঙ্ঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় হাসিনার নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বাহিনীগুলো বেপরোয়া গুলি চালিয়ে বিপুলসংখ্যক আন্দোলনকারীসহ নিরীহ মানুষ হত্যা করেছে। এ নিষ্ঠুরতায় সবচেয়ে বেশি জড়িত ছিল পুলিশ সদস্যরা। বিগত দেড় দশকে ব্যাপকভাবে সুবিধা দিয়ে শেখ হাসিনা রাষ্ট্রীয় বাহিনীটিকে পেটোয়া বাহিনীতে রূপ দেন। যাতে করে পুলিশ গণশত্রুতে পরিণত হয়। ৫ আগস্ট-পরবর্তী পুলিশ সদস্যদের রাতারাতি উধাও হওয়া যার প্রমাণ। প্রবল গণরোষে ৫ আগস্ট শেখ হাসিনার তখতেতাউস উল্টে তার পতন ঘটে। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর তিনি পালিয়ে ভারতে আশ্রয় নেন; যে দেশের প্রতি তার ছিল নিঃশর্ত আনুগত্য। শুধু তিনি নন, তার প্রায় ৪৫ হাজার দোসর ভারতে আশ্রিত। সেখানে বসে তারা বাংলাদেশকে অস্থিতিশীল করার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। দেশ হাসিনার দুঃশাসনমুক্ত হওয়ার পর জুলাই গণহত্যায় অংশগ্রহণকারীদের বিচার ত্বরান্বিত করতে অন্তর্র্বতী সরকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল পুনর্গঠন করেছে। জুলাই অভ্যুত্থান চলাকালে সংঘটিত হত্যা, গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী অপরাধের কোনো মামলায় এই প্রথম তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। গত সোমবার প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে চিফ প্রসিকিউটরের কার্যালয়ে। ছাত্র-জনতার আন্দোলনের সময় রাজধানীর চানখাঁরপুলে গুলি করে হত্যা করা হয় ছয়জনকে। গণহত্যার এ ঘটনায় আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের মামলায় ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) সাবেক কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ আটজনকে আসামি করা হয়। সেই হত্যাকাণ্ডের তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করেছে ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা। ট্রাইব্যুনালে আরো জানানো হয়, তদন্তকালে পলাতক আসামি সাবেক ডিএমপি কমিশনার হাবিবুর রহমানসহ অন্য আসামিরা সরাসরি তত্ত্বাবধান/অংশগ্রহণ, অধীনস্থদের নির্দেশ প্রদান, সহযোগিতা, অধীনস্থদের বলপ্রয়োগ থেকে বিরত না রাখাসহ অন্যান্য উপায়ে ভূমিকা রাখতে মানবতাবিরোধী অপরাধ করেছেন বলে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে। এটি শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসেবে বলা হয়েছে। আমরা মনে করি, জুলাই আন্দোলনে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধসহ গণহত্যার অভিযোগে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে দায়ের হওয়া মামলাগুলোর মধ্যে একটির চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয়া এই বিচারকাজের বড় অগ্রগতি। কারণ শেখ হাসিনা সরকারের জুলাই হত্যকাণ্ডসহ বিগত সাড়ে ১৫ বছরের সব অপকর্মের বিচার সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করতে না পাড়লে দেশে আইনের শাসন ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে এটি সহজে অনুধাবন করা যায়, বর্তমান অন্তর্র্বতী সরকার দেশে আইনের শাসন পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কতটা আন্তরিক। দেশবাসীর চাওয়া, হাসিনার আমলে সংঘটিত সব গণহত্যার বিচার সবধরনের বিতর্কমুক্ত এবং প্রশ্নাতীতভাবে পরিচালিত হোক। সেই সাথে বিচার-পরবর্তী সাজাপ্রাপ্তদের শাস্তি দ্রুত বাস্তবায়ন করাই হবে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠার গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।



কমেন্ট বক্স
notebook

কারা বিএনপির সদস্য হতে পারবেন, জানালেন আমীর খসরু