ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

ক্যান্সার শনাক্ত করার প্রযুক্তি সফলতাই আমাদের কাম্য

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:২১:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • / ৩৬১ বার পড়া হয়েছে

নানা ধরনের ক্যান্সারে আমাদের দেশে প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। মৃত্যুহার বিবেচনায় তা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। এর অন্যতম কারণ রোগ যথাসময়ে শনাক্ত না হওয়া। সাধারণত বেশির ভাগ ক্যান্সার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে চিকিৎসা না হলে পরের ধাপে তা আর নিরাময়যোগ্য থাকে না। যথাসময়ে ক্যান্সার শনাক্ত না হওয়ার মূল কারণ দারিদ্র্য ও অসচেতনতা। রোগ নির্ণয়ের ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়ার কারণে অনেকেই অসুস্থতার প্রথম দিকে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করে না। যখন যায় তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। এর ফল হয় অত্যন্ত করুণ। সেই করুণ পরিণতি রোধ করতে এগিয়ে এসেছেন এক দল গবেষক। তারা এমন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যাতে মাত্র পাঁচ মিনিটে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বলে দেওয়া যাবে, রোগীর ক্যান্সার আছে কি নেই। এতে ব্যয় হবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা। গৌরবের কথা, যে গবেষকরা এই আবিষ্কার সম্পন্ন করেছেন, তারা সবাই বাংলাদেশি এবং গবেষণাটিও সম্পন্ন হয়েছে বাংলাদেশেরই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক। এর আগে বাংলাদেশের গবেষকরা পাটের জিনোম আবিষ্কার করেছেন। ধানের নতুন নতুন উন্নততর জাত আবিষ্কারের গবেষণা সফলভাবে এগিয়ে চলেছে। অন্যান্য ফল, ফসল ও মাছের গবেষণায়ও বাংলাদেশের অনেক সুনাম রয়েছে। আর এসবই সম্ভব হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চতর গবেষণায় সরকারের বর্ধিত সহযোগিতার কারণে। সেই ধারায় এবার সাফল্যের খাতায় যুক্ত হলো চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা। জানা যায়, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন প্রকল্প হেকেপের আওতায় ২০১৬ সালে শাবিপ্রবিতে ‘নন-লিনিয়ার অপটিকস ব্যবহার করে বায়োমার্কার নির্ণয়’ শীর্ষক প্রকল্পটি গৃহীত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পরিচালিত এই গবেষণা প্রকল্পে শাবিপ্রবির ২৫ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যুক্ত রয়েছেন। তাদের দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই আবিষ্কার, যা জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করছে। শুধু অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেলেই কোনো দেশ উন্নত হয় নাÑশিক্ষা, গবেষণা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্যসহ সব ক্ষেত্রেই সামগ্রিকভাবে দেশটিকে এগিয়ে যেতে হয়। শাবিপ্রবির যে গবেষণা আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে, সেই গবেষকদলের সব সদস্যের প্রতি আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

ক্যান্সার শনাক্ত করার প্রযুক্তি সফলতাই আমাদের কাম্য

আপলোড টাইম : ০৯:২১:২৪ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

নানা ধরনের ক্যান্সারে আমাদের দেশে প্রতিবছর বহু মানুষ মারা যায়। মৃত্যুহার বিবেচনায় তা তুলনামূলকভাবে অনেক বেশি। এর অন্যতম কারণ রোগ যথাসময়ে শনাক্ত না হওয়া। সাধারণত বেশির ভাগ ক্যান্সার প্রথম ও দ্বিতীয় ধাপে চিকিৎসা না হলে পরের ধাপে তা আর নিরাময়যোগ্য থাকে না। যথাসময়ে ক্যান্সার শনাক্ত না হওয়ার মূল কারণ দারিদ্র্য ও অসচেতনতা। রোগ নির্ণয়ের ব্যয়বহুল ও সময় সাপেক্ষ প্রক্রিয়ার কারণে অনেকেই অসুস্থতার প্রথম দিকে চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার তাগিদ অনুভব করে না। যখন যায় তখন অনেক দেরি হয়ে যায়। এর ফল হয় অত্যন্ত করুণ। সেই করুণ পরিণতি রোধ করতে এগিয়ে এসেছেন এক দল গবেষক। তারা এমন এক পদ্ধতি আবিষ্কার করেছেন, যাতে মাত্র পাঁচ মিনিটে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বলে দেওয়া যাবে, রোগীর ক্যান্সার আছে কি নেই। এতে ব্যয় হবে সর্বোচ্চ ৫০০ টাকা। গৌরবের কথা, যে গবেষকরা এই আবিষ্কার সম্পন্ন করেছেন, তারা সবাই বাংলাদেশি এবং গবেষণাটিও সম্পন্ন হয়েছে বাংলাদেশেরই একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে। বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (শাবিপ্রবি)। গবেষণায় নেতৃত্ব দিয়েছেন এই বিশ্ববিদ্যালয়েরই পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক অধ্যাপক ড. ইয়াসমিন হক। এর আগে বাংলাদেশের গবেষকরা পাটের জিনোম আবিষ্কার করেছেন। ধানের নতুন নতুন উন্নততর জাত আবিষ্কারের গবেষণা সফলভাবে এগিয়ে চলেছে। অন্যান্য ফল, ফসল ও মাছের গবেষণায়ও বাংলাদেশের অনেক সুনাম রয়েছে। আর এসবই সম্ভব হচ্ছে সাম্প্রতিক সময়ে উচ্চতর গবেষণায় সরকারের বর্ধিত সহযোগিতার কারণে। সেই ধারায় এবার সাফল্যের খাতায় যুক্ত হলো চিকিৎসা বিজ্ঞানের গবেষণায় এক উজ্জ্বল সম্ভাবনা। জানা যায়, উচ্চশিক্ষার মানোন্নয়ন প্রকল্প হেকেপের আওতায় ২০১৬ সালে শাবিপ্রবিতে ‘নন-লিনিয়ার অপটিকস ব্যবহার করে বায়োমার্কার নির্ণয়’ শীর্ষক প্রকল্পটি গৃহীত হয়। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) পরিচালিত এই গবেষণা প্রকল্পে শাবিপ্রবির ২৫ জন শিক্ষক ও শিক্ষার্থী যুক্ত রয়েছেন। তাদের দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রমের ফসল এই আবিষ্কার, যা জাতি হিসেবে আমাদের গৌরবান্বিত করছে। শুধু অর্থনৈতিকভাবে এগিয়ে গেলেই কোনো দেশ উন্নত হয় নাÑশিক্ষা, গবেষণা, সংস্কৃতি, স্বাস্থ্যসহ সব ক্ষেত্রেই সামগ্রিকভাবে দেশটিকে এগিয়ে যেতে হয়। শাবিপ্রবির যে গবেষণা আমাদের মুখ উজ্জ্বল করেছে, সেই গবেষকদলের সব সদস্যের প্রতি আমাদের আন্তরিক অভিনন্দন।