দর্শনায় বাড়ছে আবাসিক হোটেল ব্যবসায়ীর সংখ্যা
- আপলোড টাইম : ০৯:১১:১২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৯ সেপ্টেম্বর ২০১৮
- / ১১৬৮ বার পড়া হয়েছে
জনমনে নানা ধরনের প্রশ্ন! অপরাধ এড়াতে প্রশাসনের নজরদারী প্রয়োজন
ওয়াসিম রয়েল: আবাসিক হোটেল ব্যবসায় ঝুঁকে পড়ছে দর্শনার বেশ কিছু ব্যবসায়ী। কয়েক বছরে বাড়তে বাড়তে আবাসিক হোটেলের সংখ্যা বর্তমান ৬টিতে দাঁড়িয়েছে। বিভিন্ন ধরনের অপরাধ এড়াতে এ আবাসিক হোটেলগুলোতে প্রশাসনের নজরদারী জোরদার করা উচিৎ বলে মনে করছে এলাকাবাসী।
তথ্যসুত্রে জানা গেছে, দীর্ঘদিন আগেই দর্শনা রেলবাজারে অবস্থিত হয় আবাসিক হোটেল সুরমা, আবাসিক হোটেল আল-আমিন ও আবাসিক হোটেল আলাউদ্দিন। এরপর ২০১৪-১৫ সালের দিকে দর্শনা হল্ট স্টেশনের পাশেই অবস্থিত হয় রিয়াদ আবাসিক হোটেল। পরপরই অবস্থিত হয় দর্শনা বাসস্ট্যান্ড সংলগ্ন এস এল আবাসিক হোটেল। সর্বশেষ মাস খানেক আগে পাশাপাশি অবস্থিত হয়েছে হিমেল আবাসিক হোটেল।
এছাড়াও একটি গোপন সুত্রে জানা গেছে, সীমান্তবর্তী দর্শনায় মাদক, স্বর্ণ, ল্যাগেজ ও ভারতীয় বিভিন্ন পণ্য আসা-যাওয়ার রুট হিসাবে ব্যবহৃত হওয়ায় সীমান্ত ঘেষে দর্শনা পৌর এলাকার জয়নগর গ্রামে এসকল অবৈধ ব্যবসার সাথে জড়িত কয়েকজন ব্যক্তির বাড়িতে আলাদা রুম করে হোটেল হিসাবে ভাড়া অতঃপর আত্মীয়ের পরিচয়ে থাকার অভিযোগও উঠেছে। এছাড়া দর্শনায় গুরুত্বপূর্ণ কাজের জন্য জয়নগর সীমান্ত হয়ে ভারত গমন, দেশের বৃহত্তম কেরু এন্ড (কোং) চিনিকলের বিভিন্ন কাজে ও ওয়েভ ফাউন্ডেশনের প্রধান কার্যালয়ে বাইরের মানুষের দর্শনা আগমনের কারণ। তাছাড়া এমন কোন উল্লেখযোগ্য পর্যটন কেন্দ্র বা দর্শনীয় স্থান অথবা কোন বড় সংস্থার প্রধান কার্যালয় গড়ে ওঠেনি। তাছাড়া দর্শনা দামুড়হুদা থানার অর্ন্তভুক্ত হওয়ায় থানা ও উপজেলার তেমন কোন সরকারি প্রধান কার্যালয় গড়ে ওঠেনি যে সেখানে বাইরে থেকে কোন মানুষ কাজে এসে দু’একদিন থাকার জন্য আবাসিক হোটেলে রাত যাপন করতে হবে। তাই দিনের পর দিন আবাসিক হোটেলের সংখ্যা বাড়তে থাকায় জনমনে নানা ধরনের প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।
ব্যবসায়ীরা লাখ লাখ টাকা ব্যয় করে বিলাসবহুল এ আবাসিক হোটেলগুলো তৈরি করছে এখানে বাইরে থেকে কারা এসে রাত যাপন করছে এবং আবাসিক হোটেলগুলো কিভাবে চলছে? কয়েকটি ঘটনায় জনমনে নানা ধরনের প্রশ্ন উঠে আসছে। যেমন গত ৩০ মে আল আমিন আবাসিক হোটেলে দিনে দুপুরে তালা ভেঙ্গে নগদ ৬৩ হাজার ৭শ’ টাকা ও কয়েক পিস লুঙ্গি নিয়ে যায় চোরের দল। কিন্তু এবিষয়ে হোটেল কর্তৃপক্ষ জানায় এ ধরনের কোন ঘটনা ঘটলে আমরা জানতে পারতাম। তাদের নিজেদের লোকে এ ঘটনা ঘটিয়েছে। এ বিষয়ে পুলিশ কাউকে শনাক্ত করতে পারেনি। জুন মাসের ২ তারিখে প্রকাশ হয় দর্শনা রেলবাজার সুরমা আবাসিক হোটেলে ছিনতাইকারীরা তান্ডব চালিয়ে নগদ ১ লাখ টাকা ও ৭টি মোবাইল ফোন নিয়ে যায়। কিন্তু হোটেল মালিক পক্ষ থেকে জানানো হয় এ ধরনের কোন ঘটনার কথা আমরা জানি না যদিও ঘটে থাকে তাহলে ছিনতাইয়ের শিকার হওয়া ব্যক্তিদের মধ্যে কেউ এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। এলাকার কোন চোর অথবা ছিনতাইকারী এখানে আসেনি। এ ঘটনায় পুলিশ কাউকে আটক করতে পারেনি। তবে এ কথাও অনেকে বিশ্বাস করছে এসকল চোর ও ছিনতাইকারীরা বাইরে থেকে এসে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে কয়েকদিন হোটেলে অবস্থান নিয়ে এলাকা সম্পর্কে জেনে চুরি ও ছিনতাই করে নির্বিঘেœ পালিয়ে যায়। তাই পুলিশ এদেরকে শনাক্ত করতে পারছে না।
যেমন ঘটনা ঘটেছে কয়েকদিন পূর্বে দর্শনা বাসস্ট্যান্ডের এসএল আবাসিক হোটেলে দুই দিন অবস্থান করে কুমিল্লার ৫ সদস্যের এক চোর সিন্ডিকেট মর্ডান স্টোরে সার্টারের তালা কেটে চুরি করার সময় দুই জনকে হাতে নাতে আটক করে পুলিশে দেয়। এছাড়া এলাকার সুশীল ব্যক্তিরা বলেন, এসকল আবাসিক হোটেলগুলোতে শুধু রাতেই নয় যদি প্রতিনিয়ত নজরদারী জোরদার করা হয় তাহলে মাদক, স্বর্ণ, ল্যাগেজ ব্যবসায়ী ও চোরাকারবারীদের সহজেই চিহ্নত করা যেতে পারে বলে ধারনা এলাকাবাসীর। এ বিষয়ে দর্শনা তদন্ত কেন্দ্রের অফিসার ইনচার্জ ইউনুচ আলী জানায়, প্রতিদিন আবাসিক হোটেল মালিকরা এসে তাদের রেজিস্টার খাতা দেখিয়ে যায় এবং তদন্ত কেন্দ্রের অফিসাররা সে মোতাবেক প্রতিদিন রাতে প্রত্যেকটি আবাসিক হোটেলে গিয়ে চেক করে আসে। এ বিষয়ে দর্শনার আবাসিক হোটেলগুলোতে দিনে ও রাতে নজরদারী বাড়ানোর জন্য পুলিশ সুপার মহোদয়ের দৃষ্টি কামনা করছে এলাকাবাসী।