ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

প্রাণীবৈচিত্র্য রক্ষায় ইসলাম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • / ৩৭০ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী সব প্রাণীই মানুষের জীবনের অংশ এবং প্রতিটি প্রজাতিরই মর্যাদা প্রাপ্য। পৃথিবীতে জীবনের উৎস যে পানি, এ বিষয়ে জোর দিতে পরিবেশবিদরা কখনো ক্লান্তিবোধ করেন না। জীবন ও পানির সম্পর্ক যে কত বেশি ঘনিষ্ঠ, এর ওপর কোরানে কারিমের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়নি আর কোনো ঐশীগ্রন্থ। সূরা আল আম্বিয়ার ৩০ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলছেন, ‘আর অবিশ্বাসী যারা, তারা কি ভেবে দেখেনি যে, আকাশম-লী ও পৃথিবীর মুখ বন্ধ ছিল; তখন আমরা (আল্লাহ) উভয়কে খুলে দিলাম এবং পানি থেকে সব জীবিত বস্তু আমরা তৈরি করেছি? তারা কি এরপরও বিশ্বাস করবে না?’ সর্বশক্তিমান আল্লাহ আরো বলছেন, ‘এবং আল্লাহ আকাশ থেকে পানি প্রেরণ করেন; অতএব, তিনি পানি দ্বারা মৃত্তিকাকে জীবন দেন এর মৃত্যুর পর। নিশ্চিতভাবেই এতে প্রকৃতপক্ষে নিদর্শন আছে তাদের জন্য যারা মনোযোগ দিয়ে শোনে।’ -সূরা আন নাহল: ৬৫ নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘কোনো লোক শস্য আবাদ করল, যা অন্য মানুষ, প্রাণী বা পাখি খেয়ে থাকে; সে ব্যক্তি বেহেশতে তার যথাযথ পুরস্কার পাবেন।’ হাদিসে আরো বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রাণীকে পানি খেতে না দেয়া কিংবা বৃক্ষপল্লব ধ্বংস করা ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্মক পাপ হিসেবে গণ্য।’ মানবজীবন ও প্রকৃতি নিয়ে ইসলামের এমন অবস্থান থেকে বোঝা যায় যে, পানির স্বাভাবিক গতি ও প্রকৃতির নিজ চাহিদাতে কোনো অবস্থাতেই হস্তক্ষেপ করা চলবে না। নগরায়ণ ও শিল্পায়নের অজুহাতে প্রাকৃতিক পরিবেশকে ধ্বংস করা যাবে না। উপরন্তু এটা মনে করতে হবে, আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে এসব সৃষ্টিকে কীভাবে সমন্বয় করে মানুষের উপকারে লাগানো যায়। এমন জ্ঞান অন্বেষণ করা মুসলমানদের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ, আল্লাহতায়ালার দেয়া এসব প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয় এবং বিশ্ব ধ্বংসের উপযোগী অস্ত্রশস্ত্র উৎপাদন ও প্রয়োগের মধ্য দিয়ে যেভাবে প্রকৃতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে- এটা বিশ্ববাসীর জন্য ক্ষতিকর। ইসলাম জীবন ও বাস্তবতার সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে থাকে। ইহলৌকিক কিংবা পরকালীন, যাই হোক না কেন মানবজীবনের প্রতিটি কাজকে ধর্মের আওতায় আনা ইসলামের অনন্য বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ ইসলাম জীবনকে দেখে সম্পূর্ণরূপে। জীবনের বিভিন্ন অঙ্গন একই মূলনীতিমাফিক পরিচালনা করতে হয়। তাই মানবজীবনের মানোন্নয়নের উপায় হিসেবে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে, প্রকৃতি-পরিবেশ-প্রাণিবৈচিত্র্য বিধ্বংসী প্রযুক্তি বিকাশের সঙ্গে ইসলাম ও মুসলমানদের যে কোনো সম্পর্ক নেই সেটাও স্পষ্ট করতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

প্রাণীবৈচিত্র্য রক্ষায় ইসলাম

আপলোড টাইম : ০৮:২৮:৪৩ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ধর্ম ডেস্ক: ইসলামের শিক্ষা অনুযায়ী সব প্রাণীই মানুষের জীবনের অংশ এবং প্রতিটি প্রজাতিরই মর্যাদা প্রাপ্য। পৃথিবীতে জীবনের উৎস যে পানি, এ বিষয়ে জোর দিতে পরিবেশবিদরা কখনো ক্লান্তিবোধ করেন না। জীবন ও পানির সম্পর্ক যে কত বেশি ঘনিষ্ঠ, এর ওপর কোরানে কারিমের চেয়ে বেশি গুরুত্ব দেয়নি আর কোনো ঐশীগ্রন্থ। সূরা আল আম্বিয়ার ৩০ নম্বর আয়াতে আল্লাহতায়ালা বলছেন, ‘আর অবিশ্বাসী যারা, তারা কি ভেবে দেখেনি যে, আকাশম-লী ও পৃথিবীর মুখ বন্ধ ছিল; তখন আমরা (আল্লাহ) উভয়কে খুলে দিলাম এবং পানি থেকে সব জীবিত বস্তু আমরা তৈরি করেছি? তারা কি এরপরও বিশ্বাস করবে না?’ সর্বশক্তিমান আল্লাহ আরো বলছেন, ‘এবং আল্লাহ আকাশ থেকে পানি প্রেরণ করেন; অতএব, তিনি পানি দ্বারা মৃত্তিকাকে জীবন দেন এর মৃত্যুর পর। নিশ্চিতভাবেই এতে প্রকৃতপক্ষে নিদর্শন আছে তাদের জন্য যারা মনোযোগ দিয়ে শোনে।’ -সূরা আন নাহল: ৬৫ নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘কোনো লোক শস্য আবাদ করল, যা অন্য মানুষ, প্রাণী বা পাখি খেয়ে থাকে; সে ব্যক্তি বেহেশতে তার যথাযথ পুরস্কার পাবেন।’ হাদিসে আরো বলা হয়েছে, ‘কোনো প্রাণীকে পানি খেতে না দেয়া কিংবা বৃক্ষপল্লব ধ্বংস করা ইসলামের দৃষ্টিতে মারাত্মক পাপ হিসেবে গণ্য।’ মানবজীবন ও প্রকৃতি নিয়ে ইসলামের এমন অবস্থান থেকে বোঝা যায় যে, পানির স্বাভাবিক গতি ও প্রকৃতির নিজ চাহিদাতে কোনো অবস্থাতেই হস্তক্ষেপ করা চলবে না। নগরায়ণ ও শিল্পায়নের অজুহাতে প্রাকৃতিক পরিবেশকে ধ্বংস করা যাবে না। উপরন্তু এটা মনে করতে হবে, আধুনিক বিজ্ঞানের সঙ্গে এসব সৃষ্টিকে কীভাবে সমন্বয় করে মানুষের উপকারে লাগানো যায়। এমন জ্ঞান অন্বেষণ করা মুসলমানদের নৈতিক দায়িত্ব। কারণ, আল্লাহতায়ালার দেয়া এসব প্রাকৃতিক সম্পদের অপচয় এবং বিশ্ব ধ্বংসের উপযোগী অস্ত্রশস্ত্র উৎপাদন ও প্রয়োগের মধ্য দিয়ে যেভাবে প্রকৃতিকে ধ্বংস করা হচ্ছে- এটা বিশ্ববাসীর জন্য ক্ষতিকর। ইসলাম জীবন ও বাস্তবতার সমন্বিত দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করে থাকে। ইহলৌকিক কিংবা পরকালীন, যাই হোক না কেন মানবজীবনের প্রতিটি কাজকে ধর্মের আওতায় আনা ইসলামের অনন্য বৈশিষ্ট্য। অর্থাৎ ইসলাম জীবনকে দেখে সম্পূর্ণরূপে। জীবনের বিভিন্ন অঙ্গন একই মূলনীতিমাফিক পরিচালনা করতে হয়। তাই মানবজীবনের মানোন্নয়নের উপায় হিসেবে বিজ্ঞান-প্রযুক্তিতে কাজ করতে হবে। একই সঙ্গে, প্রকৃতি-পরিবেশ-প্রাণিবৈচিত্র্য বিধ্বংসী প্রযুক্তি বিকাশের সঙ্গে ইসলাম ও মুসলমানদের যে কোনো সম্পর্ক নেই সেটাও স্পষ্ট করতে হবে।