ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে শুভ জন্মাষ্টমী পালিত : আলমডাঙ্গায় হুইপ ছেলুন জোয়ার্দ্দার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪০:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮
  • / ৫৭৮ বার পড়া হয়েছে

সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে
ডেস্ক রিপোর্ট: উৎসবমুখর পরিবেশে গীতাযজ্ঞ, প্রার্থনা, বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা, প্রসাদ বিতরণ আর যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে হিন্দুধর্মের প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উৎসব পালিত হয়েছে। জন্মাষ্টমী পালন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে নানা কর্মসূচি পালন করে।
নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আর্বিভাব তিথীকে কেন্দ্র করেই শুভ জন্মাষ্টমী পালন করা হয়। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা অর্চনা, তারকব্রক্ষ হরিনাম সংর্কীতন ও তারকব্রক্ষ নামযজ্ঞেরও আয়োজন করা হয়। ঘরে ঘরে ভক্তরা উপবাস থেকে জন্মাষ্টমীতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা ও পূঁজা গীতাযজ্ঞ, কৃষ্ণপূজা ও পদাবলী কীর্তন করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বর্ণিল র‌্যালি হয়ে থাকে। চুয়াডাঙ্গাতেও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুভ জন্মাষ্টমী পালিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন মন্ডপ থেকে মিছিল নিয়ে শহরের শহীদ হাসান চত্বরে সমবেত হন শ্রীকৃষ্ণ ভক্তরা। এ সময় ঢোলের বোল, ব্যান্ডের বাজনা, শ্রীকৃষ্ণর বিভিন্ন রূপে সেজে তাদের জয়গানে মুখর হয়ে উঠে পুরো শহর। পুরুষদের পাশাপাশি ব্যানার, ফেস্টুন, পতাকা হাতে অংশ নেন নারী ও শিশুরাও। তারা উলুধ্বনি এবং শুভ শুভ দিন শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন স্লোগান দেন। এরপর হাজারো কৃষ্ণ ভক্তের অংশগ্রহণে একটি শোভাযাত্রা শহরের সত্য নারায়ন মন্দির চত্বর থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সত্য সত্য নারায়ণ মন্দিরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে পূজা আর্চনা করা হয়। শোভাযাত্রায় অংশ নেন জাতীয় সংসদের হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি, জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ, সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

দ্বাপরযুগে পাশবিক শক্তি যখন সত্য, সুন্দর ও পবিত্রতাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই অসুন্দর, অসুর ও দানবীয় পাশবিক শক্তিকে দমন করে মানবজাতীকে রক্ষা এবং শুভ শক্তিকে পুন:প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে “দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন” এ ব্রত নিয়ে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আর্বিভাব ঘটে পূণৃ অবতার রুপে। পুর্ণ অবতার বলতে ভগবান বিষ্ণুর প্রত্যক্ষ উপস্থিতিকে নির্দেশ করে এবং ঈশ্বরের শক্তি ও গুণাবলী প্রদর্শন করাকে গোবিন্দ, পরমেশ্বর প্রভৃতি নামে অভিহিত করে। মথুরার রাজা কংসের অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছিল। সবাই যখন অতিষ্টি তখন কংস একদিন দৈববাণী শুনতে পেলেন তার ভগ্নী দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তান তাকে বধ করবে। এরপর কংস দেবকী ও তার স্বামী বসুদেবকে কারাবন্দী করে রাখে। দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তান শ্রীকৃষ্ণের জীবন বিপন্ন জেনে পিতা বসুদেব জন্মরাত্রেই দৈবসহায়তায় কারাগারে তেকে তাঁকে গোকুলে যশোদা ও নন্দের কাছে রেখে আসেন। শ্রীকৃষ্ণের জন্মের রাত ছিল গভীর অন্ধকার। তাঁর আর্বিভাবের সঙ্গে সঙ্গে বসুদেব দেখলেন শিশুটি চার হাতে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম ধারণ করে আছেন। দেখে তিনি বুজতে পারলেন জগতের মঙ্গলার্থে পূর্ণব্রক্ষ নারায়ণ তাদের ঘরে জন্মগ্রহণ করেছেন। বসুদেব করজোড়ে প্রণাম ও বন্দনার পর দেবকী প্রার্থনা করলেন। শ্রীকৃষ্ণ একজন সাধারণ শিশুর রুপ ধারণ করলেন। বাল্য কাল থেকেই কৃষ্ণ তাঁর অলৌকিক শক্তির প্রমাণ দিয়েছিলেন পুতনাবধ, দমবন্ধনলীলা, কলীয়দমন, গ্লোরবধ ধারণ প্রভৃতি কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে। নিপীড়িত মানুষ মুক্তির আশায় কৃষ্ণের অনুসারী হয়ে ওঠে এবং ক্রমান্বয়ে কংস বধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। অবশেষে শ্রীকৃষ্ণ কংসরাজাকে বধ করে।


তিতুদহ প্রতিনিধি জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা সদরের নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের গড়াইটুপি অনির্বাণ যুব সংঘের উদ্যোগে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মষ্টমী উপলক্ষে নানা আয়োজনসহ মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ১০টার সময় প্রথমবারের মত গড়াইটুপি পালপাড়ার কিছু যুবকদের উদ্যোগে এ শোভাডাত্রা বের হয়। শ্রী গৌতম মজুৃুমদারের সভাপতিত্বে ও মদু সূদন কুমার পালের পরিচালনায় অনির্বাণ যুব সংঘের সেক্রেটারি সঞ্জয় কুমার শর্মা ও বিশেষ সদস্য গণেশ কুমার পালসহ দেড় শতাধিক ছেলে মেয়েকে নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বের হয় এই সংঘের উদ্দ্যগে। গড়াইটুপি থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি খাড়াগোদা এবং পরে তেঘরী গিয়ে শেষ হয়।

আলমডাঙ্গা অফিস জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, পুরষ্কার বিতরণী ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টার সময় আলমডাঙ্গার প্রধান প্রধান সড়কে র‌্যালি শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আলমডাঙ্গা পৌর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল কুমার ঘোষ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি।
এসময় তিনি বলেন- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা শত শত বছর ধরে অত্র জনপদে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে যার যার ধর্ম পালন করে চলেছি। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাড়াতে হবে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়ে অশুভ শক্তিকে বিনাশ করেছে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমঙ্গীর হান্নান। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত সাধুখা’র উপস্থাপনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাষ্টার, বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা, আলমডাঙ্গা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডা. অমল কুমার বিশ্বাস, সুশীল কুমার ভৌতিকা, লিপন কুমার বিশ্বাস, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার জহুরুল ইসলাম স্বপন প্রমূখ। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি পুরষ্কার বিতরণ করেন।

দর্শনা অফিস জানিয়েছে, সারা দেশের ন্যায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দর্শনায় শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী পালিত হয়েছে। সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবতা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথিতে গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দর্শনা পুরাতন বাজার সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির হতে এক র‌্যালি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিন শেষে কেরুজ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। শাস্ত্রমতে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৫শ’ বছর পূর্বে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে। তাঁর জন্মতিথিকে জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্যাপন করা হয়। র‌্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় পুরহীত গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বলেন- পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়-নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়, তখন সেই অশুভ শক্তিকে দমন করে কল্যাণ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য অবতার হিসেবে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের জন্য যুগে যুগে ভগবান মানুষের মধ্যে অবতীর্ণ হন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন। দামুড়হুদা উপজেলার ২৮টি মন্দিরের ভক্তবৃন্দ র‌্যালিতে অংশগ্রহন করে। দামুড়হুদা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জগবন্ধু ধর র‌্যালির শুভ উদ্ভোধন করেন। র‌্যালি শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম দেবনাথ, দর্শনা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রতন লোধ, সাধারণ সম্পাদক সোমবাবু, পুরাতন বাজার মন্দির নির্মাণ কমিটির সভাপতি স্বরুপ দাস, মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত সান্তারা, ডা. দুলাল চন্দ্র দে, সুধির কুমার প্রমূখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রভাষক মিল্টন কুমার সাহা।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ জন্মষ্টামী উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট ও জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের আয়োজনে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়ছে। গতকাল রবিবার বিকালে মেহেরপুরের শ্রী শ্রী নায়েব বাড়ি পূজা মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রাটি বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন, জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ, সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বোস মানু, সদর থানার ওসি রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক শ্বাশত নিপ্পনসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরষরা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রা শেষে নায়েব বাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বোস মানু, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক শ্বাশত নিপ্পন, অশোক রঞ্জন পাল প্রমূখ। পরে মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তিমুলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, মহাপ্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।


গাংনী অফিস জানিয়েছে, সারা বিশ্বের ন্যায় মেহেরপুরের গাংনীতে জন্মাষ্টমি পালিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১১টার সময় এ উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বয়সের শতাধিক নারী-পুরুষ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রাটি গাংনী উপজেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে গাংনী মাধ্যমিক স্কুল এন্ড কলেজ চত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা সুশান্ত কুমার পাত্র। এসময় বক্তব্য রাখেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ধীরেন দাশ, গণেশ দাশ, সুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস, প্রদীপ দাশ, রহিতোষ দাশ, তারাপদ দাশ প্রমূখ। সবশেষে মহা প্রভূর প্রসাদ খাওয়া হয়।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, ঝিনাইদহে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল রোববার দুপুরে জেলা মদন মোহন মন্দিরে মঙ্গল প্রদিপ প্রজ্জলন করে জন্মাষ্টমীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। পরে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ সচীব রেজাই রাফিন সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস, সংগঠনের জেলা সাধারন সম্পাদক এ্যাড. সুবীর কুমার সমাদ্দার। এছাড়ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বাকাহীদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল কনক কুমার দাস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক শেখসহ হিন্দু ধর্মাবল্মী শত শত নারী পুরষ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। এখানে মুসলামান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই একত্রে নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করে। তাদের মধ্যে নেই কোন বিভেদ। তিনি আরো বলেন, প্রায় ৫শ’ বছর আগে যখন অত্যাচারীরা নির্বিচারে মানুষকে অত্যাচার করছিল। ঠিক তখন ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে। শ্রী কৃষ্ণ সেই সময় দুষ্টের দমন করে শিষ্টের পালন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, বহু বছর আগে কংশ যখন তার কারাগারে নিরপরাধ মানুষকে বন্দি করেছিলেন তখন ভগবান শ্রী কৃষ্ণ আবির্ভাব ঘটে এবং তিনি সেই কারাবন্দী মানুষকে মুক্ত করেছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সবার। সৃষ্টির মানুষ যখনই বিপদে পড়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাদের রক্ষা করে। আলোচনা সভা শেষে হিন্দু ধর্মবলম্বী সকলের অংশ গ্রহনে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল বর্ন্যাঢ্য র‌্যালী। অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োন করে হিন্দু ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্ট ও সহযোগীতা করে জেলা প্রশাসন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গা-মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে শুভ জন্মাষ্টমী পালিত : আলমডাঙ্গায় হুইপ ছেলুন জোয়ার্দ্দার

আপলোড টাইম : ০৮:৪০:৩৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮

সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাঁড়াতে হবে
ডেস্ক রিপোর্ট: উৎসবমুখর পরিবেশে গীতাযজ্ঞ, প্রার্থনা, বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা, প্রসাদ বিতরণ আর যথাযথ মর্যাদা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্যদিয়ে হিন্দুধর্মের প্রবর্তক শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন ‘শুভ জন্মাষ্টমী’ উৎসব পালিত হয়েছে। জন্মাষ্টমী পালন উপলক্ষে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর ও ঝিনাইদহে নানা কর্মসূচি পালন করে।
নিজস্ব প্রতিবেদক জানিয়েছেন, ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আর্বিভাব তিথীকে কেন্দ্র করেই শুভ জন্মাষ্টমী পালন করা হয়। এ উপলক্ষে দেশের বিভিন্ন মন্দিরে পূজা অর্চনা, তারকব্রক্ষ হরিনাম সংর্কীতন ও তারকব্রক্ষ নামযজ্ঞেরও আয়োজন করা হয়। ঘরে ঘরে ভক্তরা উপবাস থেকে জন্মাষ্টমীতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের আরাধনা ও পূঁজা গীতাযজ্ঞ, কৃষ্ণপূজা ও পদাবলী কীর্তন করে থাকেন। দেশের বিভিন্ন স্থানে জন্মাষ্টমী উপলক্ষে বর্ণিল র‌্যালি হয়ে থাকে। চুয়াডাঙ্গাতেও বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রার মধ্য দিয়ে শুভ জন্মাষ্টমী পালিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন মন্ডপ থেকে মিছিল নিয়ে শহরের শহীদ হাসান চত্বরে সমবেত হন শ্রীকৃষ্ণ ভক্তরা। এ সময় ঢোলের বোল, ব্যান্ডের বাজনা, শ্রীকৃষ্ণর বিভিন্ন রূপে সেজে তাদের জয়গানে মুখর হয়ে উঠে পুরো শহর। পুরুষদের পাশাপাশি ব্যানার, ফেস্টুন, পতাকা হাতে অংশ নেন নারী ও শিশুরাও। তারা উলুধ্বনি এবং শুভ শুভ দিন শ্রীকৃষ্ণের জন্মদিন স্লোগান দেন। এরপর হাজারো কৃষ্ণ ভক্তের অংশগ্রহণে একটি শোভাযাত্রা শহরের সত্য নারায়ন মন্দির চত্বর থেকে বের হয়ে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে পুনরায় সত্য সত্য নারায়ণ মন্দিরে এসে শেষ হয়। পরে সেখানে পূজা আর্চনা করা হয়। শোভাযাত্রায় অংশ নেন জাতীয় সংসদের হুইপ চুয়াডাঙ্গা-১ আসনের সংসদ সদস্য চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি, জেলা প্রশাসক জিয়াউদ্দীন আহমেদ, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মো. কলিমুল্লাহ, সাবেক পৌর মেয়র ও জেলা আ.লীগের যুগ্ম সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটনসহ প্রশাসনিক কর্মকর্তা ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ।

দ্বাপরযুগে পাশবিক শক্তি যখন সত্য, সুন্দর ও পবিত্রতাকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়েছিল, তখন সেই অসুন্দর, অসুর ও দানবীয় পাশবিক শক্তিকে দমন করে মানবজাতীকে রক্ষা এবং শুভ শক্তিকে পুন:প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে “দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালন” এ ব্রত নিয়ে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আর্বিভাব ঘটে পূণৃ অবতার রুপে। পুর্ণ অবতার বলতে ভগবান বিষ্ণুর প্রত্যক্ষ উপস্থিতিকে নির্দেশ করে এবং ঈশ্বরের শক্তি ও গুণাবলী প্রদর্শন করাকে গোবিন্দ, পরমেশ্বর প্রভৃতি নামে অভিহিত করে। মথুরার রাজা কংসের অত্যাচারের মাত্রা দিন দিন বেড়ে যাচ্ছিল। সবাই যখন অতিষ্টি তখন কংস একদিন দৈববাণী শুনতে পেলেন তার ভগ্নী দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তান তাকে বধ করবে। এরপর কংস দেবকী ও তার স্বামী বসুদেবকে কারাবন্দী করে রাখে। দেবকীর অষ্টম গর্ভের সন্তান শ্রীকৃষ্ণের জীবন বিপন্ন জেনে পিতা বসুদেব জন্মরাত্রেই দৈবসহায়তায় কারাগারে তেকে তাঁকে গোকুলে যশোদা ও নন্দের কাছে রেখে আসেন। শ্রীকৃষ্ণের জন্মের রাত ছিল গভীর অন্ধকার। তাঁর আর্বিভাবের সঙ্গে সঙ্গে বসুদেব দেখলেন শিশুটি চার হাতে শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম ধারণ করে আছেন। দেখে তিনি বুজতে পারলেন জগতের মঙ্গলার্থে পূর্ণব্রক্ষ নারায়ণ তাদের ঘরে জন্মগ্রহণ করেছেন। বসুদেব করজোড়ে প্রণাম ও বন্দনার পর দেবকী প্রার্থনা করলেন। শ্রীকৃষ্ণ একজন সাধারণ শিশুর রুপ ধারণ করলেন। বাল্য কাল থেকেই কৃষ্ণ তাঁর অলৌকিক শক্তির প্রমাণ দিয়েছিলেন পুতনাবধ, দমবন্ধনলীলা, কলীয়দমন, গ্লোরবধ ধারণ প্রভৃতি কর্মকান্ডের মধ্য দিয়ে। নিপীড়িত মানুষ মুক্তির আশায় কৃষ্ণের অনুসারী হয়ে ওঠে এবং ক্রমান্বয়ে কংস বধের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে। অবশেষে শ্রীকৃষ্ণ কংসরাজাকে বধ করে।


তিতুদহ প্রতিনিধি জানিয়েছে, চুয়াডাঙ্গা সদরের নবগঠিত গড়াইটুপি ইউনিয়নের গড়াইটুপি অনির্বাণ যুব সংঘের উদ্যোগে পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের জন্মষ্টমী উপলক্ষে নানা আয়োজনসহ মঙ্গল শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার সকাল ১০টার সময় প্রথমবারের মত গড়াইটুপি পালপাড়ার কিছু যুবকদের উদ্যোগে এ শোভাডাত্রা বের হয়। শ্রী গৌতম মজুৃুমদারের সভাপতিত্বে ও মদু সূদন কুমার পালের পরিচালনায় অনির্বাণ যুব সংঘের সেক্রেটারি সঞ্জয় কুমার শর্মা ও বিশেষ সদস্য গণেশ কুমার পালসহ দেড় শতাধিক ছেলে মেয়েকে নিয়ে একটি শোভাযাত্রা বের হয় এই সংঘের উদ্দ্যগে। গড়াইটুপি থেকে শুরু হয়ে শোভাযাত্রাটি খাড়াগোদা এবং পরে তেঘরী গিয়ে শেষ হয়।

আলমডাঙ্গা অফিস জানিয়েছে, আলমডাঙ্গায় ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উপলক্ষ্যে আলোচনা সভা, পুরষ্কার বিতরণী ও র‌্যালি অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল রবিবার বিকেল সাড়ে ৪টার সময় আলমডাঙ্গার প্রধান প্রধান সড়কে র‌্যালি শেষে উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন আলমডাঙ্গা পৌর পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি পরিমল কুমার ঘোষ। প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন জাতীয় সংসদের হুইপ ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সোলায়মান হক জোয়ার্দ্দার ছেলুন এমপি।
এসময় তিনি বলেন- ধর্ম যার যার, উৎসব সবার। আমরা শত শত বছর ধরে অত্র জনপদে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বজায় রেখে যার যার ধর্ম পালন করে চলেছি। সাম্প্রদায়িক অপশক্তির বিরুদ্ধে আমাদের সকলকে ঐক্যবদ্ধভাবে রুখে দাড়াতে হবে। ভগবান শ্রীকৃষ্ণ পৃথিবীতে আবির্ভূত হয়ে অশুভ শক্তিকে বিনাশ করেছে।
সভায় বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান, চুয়াডাঙ্গা পৌরসভার সাবেক মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিয়াজুল ইসলাম জোয়ার্দ্দার টোটন, আলমডাঙ্গা উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও পৌর মেয়র হাসান কাদির গনু, চুয়াডাঙ্গা জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মুন্সি আলমঙ্গীর হান্নান। হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বজিত সাধুখা’র উপস্থাপনায় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউপি চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইয়াকুব আলী মাষ্টার, বিশিষ্ট আওয়ামী লীগ নেতা লিয়াকত আলী লিপু মোল্লা, আলমডাঙ্গা উপজেলা পূজা উদযাপন কমিটির সভাপতি ডা. অমল কুমার বিশ্বাস, সুশীল কুমার ভৌতিকা, লিপন কুমার বিশ্বাস, ৩নং ওয়ার্ড কাউন্সিলার জহুরুল ইসলাম স্বপন প্রমূখ। অনুষ্ঠান শেষে প্রধান অতিথি পুরষ্কার বিতরণ করেন।

দর্শনা অফিস জানিয়েছে, সারা দেশের ন্যায় নানা আয়োজনের মধ্য দিয়ে দর্শনায় শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী পালিত হয়েছে। সনাতন হিন্দু সম্প্রদায়ের দেবতা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মতিথিতে গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে দর্শনা পুরাতন বাজার সার্বজনীন শ্রী শ্রী দূর্গা মন্দির হতে এক র‌্যালি বের হয়ে শহরের বিভিন্ন স্থান প্রদক্ষিন শেষে কেরুজ মন্দিরে গিয়ে শেষ হয়। শাস্ত্রমতে, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ জন্মগ্রহণ করেছিলেন ৫শ’ বছর পূর্বে ভাদ্র মাসের কৃষ্ণপক্ষের অষ্টমী তিথিতে। তাঁর জন্মতিথিকে জন্মাষ্টমী হিসেবে উদ্যাপন করা হয়। র‌্যালি শেষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা সভায় পুরহীত গৌরাঙ্গ বিশ্বাস বলেন- পাশবিক শক্তি যখন ন্যায়-নীতি, সত্য ও সুন্দরকে গ্রাস করতে উদ্যত হয়, তখন সেই অশুভ শক্তিকে দমন করে কল্যাণ ও ন্যায় প্রতিষ্ঠার জন্য অবতার হিসেবে শ্রীকৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে। দুষ্টের দমন ও শিষ্টের পালনের জন্য যুগে যুগে ভগবান মানুষের মধ্যে অবতীর্ণ হন এবং সত্য ও সুন্দরকে প্রতিষ্ঠা করেন। দামুড়হুদা উপজেলার ২৮টি মন্দিরের ভক্তবৃন্দ র‌্যালিতে অংশগ্রহন করে। দামুড়হুদা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি জগবন্ধু ধর র‌্যালির শুভ উদ্ভোধন করেন। র‌্যালি শেষে আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন উপজেলা উদযাপন কমিটির সাধারণ সম্পাদক উত্তম দেবনাথ, দর্শনা পুজা উদযাপন কমিটির সভাপতি রতন লোধ, সাধারণ সম্পাদক সোমবাবু, পুরাতন বাজার মন্দির নির্মাণ কমিটির সভাপতি স্বরুপ দাস, মন্দির কমিটির সাধারণ সম্পাদক অনন্ত সান্তারা, ডা. দুলাল চন্দ্র দে, সুধির কুমার প্রমূখ। অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন প্রভাষক মিল্টন কুমার সাহা।
মেহেরপুর অফিস জানিয়েছে, মেহেরপুরে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ জন্মষ্টামী উপলক্ষে জেলা প্রশাসন, হিন্দু ধর্মীয় কল্যাণ ট্রাষ্ট ও জেলা পূজা উদ্যাপন পরিষদের আয়োজনে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রা বের করা হয়ছে। গতকাল রবিবার বিকালে মেহেরপুরের শ্রী শ্রী নায়েব বাড়ি পূজা মন্দির প্রাঙ্গণ থেকে বর্ণাঢ্য মঙ্গল শোভাযাত্রাটি বের করা হয়। শোভাযাত্রাটি শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিন শেষে একই স্থানে গিয়ে শেষ হয়। মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন, জেলা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর পল্লব ভট্টাচার্য, জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ, সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বোস মানু, সদর থানার ওসি রবিউল ইসলাম, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক শ্বাশত নিপ্পনসহ হিন্দু সম্প্রদায়ের নারী-পুরষরা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন। শোভাযাত্রা শেষে নায়েব বাড়ি মন্দির প্রাঙ্গণে জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সভাপতি ডা. রমেশ চন্দ্র নাথ’র সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন মেহেরপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি অধ্যাপক ফরহাদ হোসেন। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জেলা পূজা উদযাপন পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অভিজিৎ বোস মানু, জেলা আওয়ামী লীগের উপ-প্রচার সম্পাদক শ্বাশত নিপ্পন, অশোক রঞ্জন পাল প্রমূখ। পরে মন্দির প্রাঙ্গণে ভক্তিমুলক সঙ্গীতানুষ্ঠান, মহাপ্রসাদ বিতরণসহ বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।


গাংনী অফিস জানিয়েছে, সারা বিশ্বের ন্যায় মেহেরপুরের গাংনীতে জন্মাষ্টমি পালিত হয়েছে। গতকাল রোববার সকাল সাড়ে ১১টার সময় এ উপলক্ষে হিন্দু সম্প্রদায়ের বিভিন্ন বয়সের শতাধিক নারী-পুরুষ বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করে। শোভাযাত্রাটি গাংনী উপজেলা শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে। পরে গাংনী মাধ্যমিক স্কুল এন্ড কলেজ চত্বরে এক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন স্থানীয় হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা সুশান্ত কুমার পাত্র। এসময় বক্তব্য রাখেন হিন্দু সম্প্রদায়ের নেতা ধীরেন দাশ, গণেশ দাশ, সুকেশ চন্দ্র বিশ্বাস, প্রদীপ দাশ, রহিতোষ দাশ, তারাপদ দাশ প্রমূখ। সবশেষে মহা প্রভূর প্রসাদ খাওয়া হয়।

ঝিনাইদহ অফিস জানিয়েছে, ঝিনাইদহে ভগবান শ্রী কৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী পালিত হয়েছে। এ উপলক্ষে গতকাল রোববার দুপুরে জেলা মদন মোহন মন্দিরে মঙ্গল প্রদিপ প্রজ্জলন করে জন্মাষ্টমীর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান। পরে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস এর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ। বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পরিষদ সচীব রেজাই রাফিন সরকার, বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের জেলা সভাপতি নারায়ন চন্দ্র বিশ্বাস, সংগঠনের জেলা সাধারন সম্পাদক এ্যাড. সুবীর কুমার সমাদ্দার। এছাড়ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক বাকাহীদ হোসেন, অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আসাদুজ্জামান, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল কনক কুমার দাস, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাম্মী ইসলাম, সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এমদাদুল হক শেখসহ হিন্দু ধর্মাবল্মী শত শত নারী পুরষ উপস্থিত ছিলেন। আলোচনা সভায় পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বলেন, সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির দেশ বাংলাদেশ। এখানে মুসলামান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিষ্টান সবাই একত্রে নিজ নিজ ধর্মীয় উৎসব পালন করে। তাদের মধ্যে নেই কোন বিভেদ। তিনি আরো বলেন, প্রায় ৫শ’ বছর আগে যখন অত্যাচারীরা নির্বিচারে মানুষকে অত্যাচার করছিল। ঠিক তখন ভগবান শ্রী কৃষ্ণের আবির্ভাব ঘটে। শ্রী কৃষ্ণ সেই সময় দুষ্টের দমন করে শিষ্টের পালন করে শান্তি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। জেলা প্রশাসক সরোজ কুমার নাথ বলেন, বহু বছর আগে কংশ যখন তার কারাগারে নিরপরাধ মানুষকে বন্দি করেছিলেন তখন ভগবান শ্রী কৃষ্ণ আবির্ভাব ঘটে এবং তিনি সেই কারাবন্দী মানুষকে মুক্ত করেছিলেন। সভাপতির বক্তব্যে জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কনক কান্তি দাস বলেন, ভগবান শ্রীকৃষ্ণ সবার। সৃষ্টির মানুষ যখনই বিপদে পড়ে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ তাদের রক্ষা করে। আলোচনা সভা শেষে হিন্দু ধর্মবলম্বী সকলের অংশ গ্রহনে অনুষ্ঠিত হয় বিশাল বর্ন্যাঢ্য র‌্যালী। অনুষ্ঠানের সার্বিক আয়োন করে হিন্দু ধর্মীয় কল্যান ট্রাস্ট ও সহযোগীতা করে জেলা প্রশাসন।