ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

ইসলামের দৃষ্টিতে শয়তান

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:০০:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৭৮৩ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: আরবি শব্দ শয়তানের অর্থ হলো- সীমালঙ্ঘনকারী, দাম্ভিক, স্বৈরাচারী। এই বৈশিষ্ট্যের জিন এবং মানুষ উভয়ের জন্যই শয়তান শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কোরানে কারিমে উভয়ের জন্য শয়তান পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন, সূরা আল বাকারার ১৪ নম্বর আয়াতে ইসলামের বিরুদ্ধাচারী নেতাদের শয়তান বলা হয়েছে। শয়তান শব্দটি একটি পরিভাষা হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই সব ধর্মের লোকদের কাছে একটি সুপরিচিত শব্দ। এ শয়তান জিনদের অন্তর্ভুক্ত। শয়তান কথাটি সর্বপ্রথম সেই জিনটির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে, যে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে প্রথম মানুষ হজরত আদমকে (আ.) সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানায়। শয়তানকে কোরানে ইবলিসও বলা হয়েছে। এর অর্থ হলো, বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাওয়া, ভয়ে ও আতঙ্কে নিথর হয়ে যাওয়া, দুঃখে ও শোকে মনমরা হয়ে যাওয়া, সবদিক থেকে নিরাশ হয়ে সাহস হারিয়ে ফেলা এবং হতাশা ও ব্যর্থতার ফলে মরিয়া হয়ে ওঠা।শয়তানকে ইবলিস বলার কারণ হলো, হতাশা ও নিরাশার ফলে তার আহত অহমিকা প্রবল উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং সে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে মরণ খেলায় নেমে সব ধরনের অপরাধ সংঘটনে উদ্যত হয়। কোরানে কারিমের সূরা কাহাফের ৫০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ইবলিস শয়তান জিন গোত্রীয়। আর জিনদের সৃষ্টি করা হয়েছে আগুন থেকে। সুতরাং শয়তান আগুনের তৈরি জিন জাতির অন্তর্ভুক্ত। মানুষের পূর্বে আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীর প্রতিনিধিত্বের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল জিন জাতি। তারা ছিল আগুনের তৈরি এবং দীর্ঘজীবী। এক সময় এসে তারা পারস্পরিক বিবাদে পৃথিবীকে চরম বিপর্যস্ত করে তোলে। তখন আল্লাহ তাদের পৃথিবীর কর্তৃত্ব থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেন। ফেরেশতাদের পাঠান তাদের কর্তৃত্ব ধ্বংস করতে এবং তাদের বিতাড়িত করতে। ফেরেশতারা এসে জিনদের এক দলকে ধ্বংস করে দেন, কিছু জিনকে সমুদ্রের দিকে তাড়িয়ে দেন আর কিছু জিনকে তাড়িয়ে দেন পাহাড় পর্বতের দিকে। এভাবে মহান আল্লাহ পৃথিবী পরিচালনার কর্তৃত্ব থেকে জিনদের উচ্ছেদ করেন এবং তাদের কর্তৃত্বের ক্ষমতা বিনাশ করে দেন। এই ফেরেশতা দল পৃথিবী থেকে ফিরে যাওয়ার সময় আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে একটি জিন শিশুকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। তার নাম ছিল আজাজিল। সে ফেরেশতাদের সঙ্গে বসবাস করতে থাকে এবং আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদত-বন্দেগির ক্ষেত্রে ফেরেশতাদের গুণ বৈশিষ্ট্য অর্জন করে। এভাবে সে ফেরেশতাদের সঙ্গে মিশে যায়। পরবর্তীকালে এই আজাজিলই শয়তান এবং ইবলিস হিসেবে পরিচিত হয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

ইসলামের দৃষ্টিতে শয়তান

আপলোড টাইম : ০৯:০০:২৩ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৩০ অগাস্ট ২০১৮

ধর্ম ডেস্ক: আরবি শব্দ শয়তানের অর্থ হলো- সীমালঙ্ঘনকারী, দাম্ভিক, স্বৈরাচারী। এই বৈশিষ্ট্যের জিন এবং মানুষ উভয়ের জন্যই শয়তান শব্দটি ব্যবহার করা হয়। কোরানে কারিমে উভয়ের জন্য শয়তান পরিভাষা ব্যবহার করা হয়েছে। যেমন, সূরা আল বাকারার ১৪ নম্বর আয়াতে ইসলামের বিরুদ্ধাচারী নেতাদের শয়তান বলা হয়েছে। শয়তান শব্দটি একটি পরিভাষা হিসেবে প্রাচীনকাল থেকেই সব ধর্মের লোকদের কাছে একটি সুপরিচিত শব্দ। এ শয়তান জিনদের অন্তর্ভুক্ত। শয়তান কথাটি সর্বপ্রথম সেই জিনটির জন্য ব্যবহার করা হয়েছে, যে আল্লাহর নির্দেশ অমান্য করে প্রথম মানুষ হজরত আদমকে (আ.) সিজদা করতে অস্বীকৃতি জানায়। শয়তানকে কোরানে ইবলিসও বলা হয়েছে। এর অর্থ হলো, বিস্ময়ে হতবাক হয়ে যাওয়া, ভয়ে ও আতঙ্কে নিথর হয়ে যাওয়া, দুঃখে ও শোকে মনমরা হয়ে যাওয়া, সবদিক থেকে নিরাশ হয়ে সাহস হারিয়ে ফেলা এবং হতাশা ও ব্যর্থতার ফলে মরিয়া হয়ে ওঠা।শয়তানকে ইবলিস বলার কারণ হলো, হতাশা ও নিরাশার ফলে তার আহত অহমিকা প্রবল উত্তেজিত হয়ে পড়ে এবং সে প্রাণের মায়া ত্যাগ করে মরণ খেলায় নেমে সব ধরনের অপরাধ সংঘটনে উদ্যত হয়। কোরানে কারিমের সূরা কাহাফের ৫০ নম্বর আয়াতে বলা হয়েছে, ইবলিস শয়তান জিন গোত্রীয়। আর জিনদের সৃষ্টি করা হয়েছে আগুন থেকে। সুতরাং শয়তান আগুনের তৈরি জিন জাতির অন্তর্ভুক্ত। মানুষের পূর্বে আল্লাহর পক্ষ থেকে পৃথিবীর প্রতিনিধিত্বের দায়িত্বে নিয়োজিত ছিল জিন জাতি। তারা ছিল আগুনের তৈরি এবং দীর্ঘজীবী। এক সময় এসে তারা পারস্পরিক বিবাদে পৃথিবীকে চরম বিপর্যস্ত করে তোলে। তখন আল্লাহ তাদের পৃথিবীর কর্তৃত্ব থেকে অপসারণ করার সিদ্ধান্ত নেন। ফেরেশতাদের পাঠান তাদের কর্তৃত্ব ধ্বংস করতে এবং তাদের বিতাড়িত করতে। ফেরেশতারা এসে জিনদের এক দলকে ধ্বংস করে দেন, কিছু জিনকে সমুদ্রের দিকে তাড়িয়ে দেন আর কিছু জিনকে তাড়িয়ে দেন পাহাড় পর্বতের দিকে। এভাবে মহান আল্লাহ পৃথিবী পরিচালনার কর্তৃত্ব থেকে জিনদের উচ্ছেদ করেন এবং তাদের কর্তৃত্বের ক্ষমতা বিনাশ করে দেন। এই ফেরেশতা দল পৃথিবী থেকে ফিরে যাওয়ার সময় আল্লাহর অনুমতি সাপেক্ষে একটি জিন শিশুকে সঙ্গে করে নিয়ে যায়। তার নাম ছিল আজাজিল। সে ফেরেশতাদের সঙ্গে বসবাস করতে থাকে এবং আল্লাহর আনুগত্য ও ইবাদত-বন্দেগির ক্ষেত্রে ফেরেশতাদের গুণ বৈশিষ্ট্য অর্জন করে। এভাবে সে ফেরেশতাদের সঙ্গে মিশে যায়। পরবর্তীকালে এই আজাজিলই শয়তান এবং ইবলিস হিসেবে পরিচিত হয়।