ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

রাত পোহালেই খুশির ঈদ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩০:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৬২০ বার পড়া হয়েছে

ডেস্ক রিপোর্ট: দিনক্ষণ আগেই নিধাির্রত হয়ে আছে। কোরবানির পশু কেনার পবর্ও এরই মধ্যে সেরে ফেলেছেন অনেকে। প্রস্তুতির পালা প্রায় শেষ। এখন অপেক্ষা কেবল রাত পোহানোর। ভোরের আলো ফুটলেই ১০ জিলহজ। পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধমীর্য় উৎসব। গতকাল সোমবার পবিত্র হজ সম্পন্ন হয়েছে। মহান আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে আগামীকাল সারাদেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধমীর্য় উৎসব কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। ঘরে ঘরে মহান ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হবে মানুষের মন।
এবার কোরবানির ঈদ উদযাপন হচ্ছে ঠিক জাতীয় সংসদ নিবার্চনের ডামাডোল বেজে ওঠার ঠিক আগমুহূর্তে। তাই এ ঈদ রাজনীতিকদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। যদিও গত কয়েক মাস ধরেই গ্রামগঞ্জে নিবার্চনী বাতাস বইতে শুরু করেছে। সব রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রাথীর্রা নিজ নিজ নিবার্চনী এলাকায় ছুটে গেছেন। বিলবোর্ড-ফেস্টুন জনগণকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর মধ্য দিয়ে মূলত সম্ভাব্য প্রাথীর্রা আগাম নিবার্চনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। সব মিলিয়ে এবার ঈদ হয়ে উঠেছে অনেকটা নিবার্চনী আমেজের। তবে ধর্মাপ্রণ মুসলমানদের কাছে এসব কিছু ছাপিয়ে ধমীর্য় ভাবগাম্ভীর্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে। আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজের জানমাল ও প্রিয়তম জিনিস সন্তুষ্টচিত্তে বিলিয়ে দেয়ার সুমহান শিক্ষা নিয়ে তারা ঈদুল আজহা উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী কোরবানি করা ওয়াজিব। আল কোরআনের সূরা কাউসারে কোরবানির মাহাত্ম্য সম্পকের্ বলা হয়েছে, ‘অতএব তোমার পালনকতার্র উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ো এবং কোরবানি করো।’ সূরা হজে বলা হয়েছে, ‘কোরবানি করার পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নিদের্শনা।’ এবিষয়ে মহান আল্লাহর ঘোষণা, ‘কোরবানির পশুর রক্ত-মাংস কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছে না বরং তার কাছে পৌঁছে শুধু তোমাদের ত্যাগ বা তাকওয়া’ (সূরা হজ : ৩৭)। তাই মহান আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য কোরবানির জন্য বিশুদ্ধ নিয়তের প্রয়োজন হয় এবং ত্যাগের প্রবল সাধনা থাকতে হয়। অধিকন্তু কোরবানির পশুর গোশত গরিব-অসহায় লোকদের দান করা শ্রেয়। এতে একদিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অজর্ন করা যায়, অন্যদিকে সামাজিক বন্ধন সুসংহত হয়। আপাত দৃষ্টিতে কোরবানি বলতে পশু জবেহ হলেও এর মাধ্যমে অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে এবং সত্য-ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম-সাধনার শক্তি সঞ্চারিত হয়। এ শিক্ষা নিয়ে আগামীকাল বুধবার দেশের মুসলমান সম্প্রদায় ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মহান আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি করবে। সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়, ‘ওরে হত্যা নয় আজ সত্য-গ্রহ শক্তির উদ্বোধন।’ প্রকৃতপক্ষে কোরবানির ত্যাগের মাধ্যমে মানবিক-নৈতিক শক্তি ও সাহস অজির্ত হয়, যা দিয়ে অন্যায়-অপশক্তিকে পরাজিত করা যায়। একইভাবে ধৈর্য-ত্যাগের শিক্ষাও গ্রহণ করা যায়।
পবিত্র ঈদুল আজহার তাৎপর্য তুলে ধরে বরাবরের মতো দেশের সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করছে বিশেষ সংখ্যা। সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতার থেকে সম্প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। ঈদের দিন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের দিন সকালে গণভবনে সবর্স্তরের মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মি কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা এবং সবর্স্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। পরে একই স্থানে বিচারপতি ও বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

রাত পোহালেই খুশির ঈদ

আপলোড টাইম : ০৯:৩০:৪৯ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ২১ অগাস্ট ২০১৮

ডেস্ক রিপোর্ট: দিনক্ষণ আগেই নিধাির্রত হয়ে আছে। কোরবানির পশু কেনার পবর্ও এরই মধ্যে সেরে ফেলেছেন অনেকে। প্রস্তুতির পালা প্রায় শেষ। এখন অপেক্ষা কেবল রাত পোহানোর। ভোরের আলো ফুটলেই ১০ জিলহজ। পবিত্র ঈদুল আজহা। মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধমীর্য় উৎসব। গতকাল সোমবার পবিত্র হজ সম্পন্ন হয়েছে। মহান আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানির মধ্য দিয়ে আগামীকাল সারাদেশে মুসলিম সম্প্রদায়ের অন্যতম প্রধান ধমীর্য় উৎসব কোরবানির ঈদ উদযাপিত হবে। ঘরে ঘরে মহান ত্যাগের মহিমায় মহিমান্বিত হবে মানুষের মন।
এবার কোরবানির ঈদ উদযাপন হচ্ছে ঠিক জাতীয় সংসদ নিবার্চনের ডামাডোল বেজে ওঠার ঠিক আগমুহূর্তে। তাই এ ঈদ রাজনীতিকদের কাছে বিশেষ গুরুত্ব বহন করছে। যদিও গত কয়েক মাস ধরেই গ্রামগঞ্জে নিবার্চনী বাতাস বইতে শুরু করেছে। সব রাজনৈতিক দলের সম্ভাব্য প্রাথীর্রা নিজ নিজ নিবার্চনী এলাকায় ছুটে গেছেন। বিলবোর্ড-ফেস্টুন জনগণকে ঈদের শুভেচ্ছা জানানোর মধ্য দিয়ে মূলত সম্ভাব্য প্রাথীর্রা আগাম নিবার্চনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। সব মিলিয়ে এবার ঈদ হয়ে উঠেছে অনেকটা নিবার্চনী আমেজের। তবে ধর্মাপ্রণ মুসলমানদের কাছে এসব কিছু ছাপিয়ে ধমীর্য় ভাবগাম্ভীর্য সর্বোচ্চ গুরুত্ব পেয়েছে। আল্লাহর উদ্দেশ্যে নিজের জানমাল ও প্রিয়তম জিনিস সন্তুষ্টচিত্তে বিলিয়ে দেয়ার সুমহান শিক্ষা নিয়ে তারা ঈদুল আজহা উদযাপনের প্রস্তুতি নিয়েছেন।
ইসলামী শরিয়াহ অনুযায়ী কোরবানি করা ওয়াজিব। আল কোরআনের সূরা কাউসারে কোরবানির মাহাত্ম্য সম্পকের্ বলা হয়েছে, ‘অতএব তোমার পালনকতার্র উদ্দেশ্যে নামাজ পড়ো এবং কোরবানি করো।’ সূরা হজে বলা হয়েছে, ‘কোরবানি করার পশু মানুষের জন্য কল্যাণের নিদের্শনা।’ এবিষয়ে মহান আল্লাহর ঘোষণা, ‘কোরবানির পশুর রক্ত-মাংস কিছুই আল্লাহর কাছে পৌঁছে না বরং তার কাছে পৌঁছে শুধু তোমাদের ত্যাগ বা তাকওয়া’ (সূরা হজ : ৩৭)। তাই মহান আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য কোরবানির জন্য বিশুদ্ধ নিয়তের প্রয়োজন হয় এবং ত্যাগের প্রবল সাধনা থাকতে হয়। অধিকন্তু কোরবানির পশুর গোশত গরিব-অসহায় লোকদের দান করা শ্রেয়। এতে একদিকে আল্লাহর সন্তুষ্টি অজর্ন করা যায়, অন্যদিকে সামাজিক বন্ধন সুসংহত হয়। আপাত দৃষ্টিতে কোরবানি বলতে পশু জবেহ হলেও এর মাধ্যমে অন্যায়-অসত্যের বিরুদ্ধে এবং সত্য-ন্যায় প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সংগ্রাম-সাধনার শক্তি সঞ্চারিত হয়। এ শিক্ষা নিয়ে আগামীকাল বুধবার দেশের মুসলমান সম্প্রদায় ত্যাগের মহিমায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মহান আল্লাহর উদ্দেশে পশু কোরবানি করবে। সাম্যের কবি কাজী নজরুল ইসলামের ভাষায়, ‘ওরে হত্যা নয় আজ সত্য-গ্রহ শক্তির উদ্বোধন।’ প্রকৃতপক্ষে কোরবানির ত্যাগের মাধ্যমে মানবিক-নৈতিক শক্তি ও সাহস অজির্ত হয়, যা দিয়ে অন্যায়-অপশক্তিকে পরাজিত করা যায়। একইভাবে ধৈর্য-ত্যাগের শিক্ষাও গ্রহণ করা যায়।
পবিত্র ঈদুল আজহার তাৎপর্য তুলে ধরে বরাবরের মতো দেশের সংবাদপত্রগুলো প্রকাশ করছে বিশেষ সংখ্যা। সরকারি-বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল ও বেতার থেকে সম্প্রচারিত হবে বিশেষ অনুষ্ঠানমালা। পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন। ঈদের দিন বঙ্গভবনে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এবং গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ ও আমন্ত্রিত অতিথিদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঈদের দিন সকালে গণভবনে সবর্স্তরের মানুষ ও দলীয় নেতাকর্মি কবি, সাহিত্যিক, লেখক, সাংবাদিক, শিক্ষক, বুদ্ধিজীবীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশা এবং সবর্স্তরের মানুষের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন। পরে একই স্থানে বিচারপতি ও বিদেশি কূটনীতিকদের সঙ্গে ঈদের শুভেচ্ছা বিনিময় করবেন তিনি।