ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

রাতের সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র জিপু যা বললেন..

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৩৫৮ বার পড়া হয়েছে

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে চাল ভর্তি ট্রাকটি আটকানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানালেন পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধূরী জিপু। গতকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয়রা পৌরসভার প্রধান ফটকে চাল ভর্তি নাম্বারপ্লেটবিহীন পৌরসভার নিজস্ব একটি ট্রাক আটকে করে স্থানীয়রা। পরে এ ঘটনায় রাত ১টার দিকে শহরের কেদারগঞ্জস্থ পৌর মেয়রের রাজনৈতিক অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এসময় পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধূরী জিপু বলেন, আমার পৌর এলাকার ভিতরে ভাতাভোগীর সংখ্যা অনেক। এছাড়া কার্ড ব্যতিত অসহায় হতদরিদ্্র মানুষের সংখ্যাও অনেক বেশি। এ সকল ভাতাভোগীরা নি¤œ আয়ের মানুষ হলেও সমাজে তাদের একটা সম্মান আছে। দিনের বেলা লাইনে দাড়িয়ে চাল নিতে গেলে তাদের সম্মান হানি হয়। অতীত থেকে আমরা দেখেছি বয়স্ক মা-বোনেরা দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে থেকে চাল নেওয়ার সময় তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এ সকল অসহায় মানুষকে অযথা দূর্ভোগের হাত থেকে রেহাই দিতে গত ঈদুল ফিতরে আমি নিজেসহ আমার কর্মিরা ভাতাভোগীদের বাড়ি বাড়ি তাদের প্রাপ্য চাল পৌছে দিয়েছি। তাছাড়া যে পরিমান চাল পাওয়া যায়, তা দিনের বেলা বিতরণ করলে প্রতিজনকে ৪ কেজি করে চাল দেওয়া সম্ভব হবে না। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হওয়ায় কার্ড ছাড়া কেউ যদি আমার কাছে চাল নিতে আসে তাহলে আমি তাদের ফিরিয়ে দিতে পারি না। তাদেরও অল্প করে হলেও চাল দিতে হয়। ফলে গত কয়েকদিন আগে পৌর পরিষদসহ কর্মকর্তাগণ একটি সভার মাধ্যমে সন্ধ্যার পর চাল বিতরণ ও পৌর এলাকার সকল হতদরিদ্ররা যেন চাল পান সে মোতাবেক বিতরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই অনুপাতে গত দুইদিন ধরে চাল বিতরণ শুরু করা হয়। একটি ওয়ার্ডের মধ্যে কয়েকটি মহল্লাভাগ করে তালিকা তৈরি করা হয়। সেই তালিকা অনুযায়ী ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করা হচ্ছে। যে বিষয়টা ইতোমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার কর্মকর্তাসহ স্থানীয়রা সরেজমিন পরিদর্শন করে তার প্রমাণ পান। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে যারা আমার সম্মানহানি করতে এ ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র একরামুল হক মুক্তা। তিনি বলেন, আমরা সকল নিয়ম মেনে চাল বিতরণ করছিলাম। হঠাৎ করে সেই চাল বিতরণ কার্যক্রমের ছন্দ পতন ঘটলো। আমার ভলো কাজ করছি। হতদরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে চাল পৌছে দিচ্ছি। ঘরে ঘরে চাল পৌছে দেওয়ার এই ভালো কাজটাকে অনেকে পছন্দ করেনি। তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। ঝামেলার হাত থেকে রেহাই পেতে পৌর পরিষদে এক সাধারণ সভায় এভাবে চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পৌরসভার নিজস্ব গাড়িতে এবং নিজস্ব লেবার দিয়ে তালিকা অনুপাতে ভাতাভোগীদের মধ্যে চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিরাজুল ইসলাম মনি বলেন, আমরা যে চাল পাই তা দিয়ে আমাদের এলাকার অসহায় হতদরিদ্র সকল মানুুষের মধ্যে দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে প্রাপ্ত চাল ভাগ করে সবার মাঝে বন্টন করার চেষ্টা করি। এসময় তিনি আরো বলেন, গত পৌর মেয়রের আমল থেকেই আমরা এভাবে চাল বিতরণ করছি।
পৌর মেয়র আরো বলেন, পৌরসভার চেয়ারে বসার পর থেকেই নানাভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। একের পর এক মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। পৌরসভার কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে নানাভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এতো কিছুর পরও আমি শক্তহাতে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছি। তিনি আরো জানান, গত ঈদুল ফিতরের আগে মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতরণ নিয়ে এ ধরনের কিছু লোকজন সমস্যার সৃষ্টি করেছিলো। সে সময় ভাতাভোগী কার্ডধারীরর সংখ্যা বেশি থাকায় মাননীয় হুইপ মহোদয় নির্দেশ দেন কম করে হলেও সকলে চাল পায়। ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের সকল হতদরিদ্র মানুষ সরকারের দেওয়া সহায়তা পাবেন সে বিষয়টা নিশ্চত করার জন্য আমরা সকলের বাড়ি বাড়ি চাল পৌছে দিচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে মহিলা কাউন্সিলর সুলতানা আনজু রতœা বলেন, কার্ডধারীদের কষ্ট লাঘব করতে পৌর মেয়র মহোদয়সহ পৌর পরিষদ উদ্যোগ নিয়েছেন সন্ধ্যার পর চাল বিতরণ করতে হবে। এতে করে লোকজনের চাপ কিছুটা কমবে। সে হিসেবে তালিকা অনুযায়ী চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এসময় তিনি আরো বলেন অনেক সময় নিজের ব্যক্তিগত টাকা দিয়েও চাল কিনে দিতে হয়। কারন তারা যে চাল পান তা দিয়ে সকলকে দেওয়া সম্ভব হয় না।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনার আবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা কাউন্সিলর ববি ও শেফালিসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মি ও স্থানীয় জনগণসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদকর্মিরা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

রাতের সংবাদ সম্মেলনে পৌর মেয়র জিপু যা বললেন..

আপলোড টাইম : ০৮:৪৫:৩৮ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৯ অগাস্ট ২০১৮

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারনে চাল ভর্তি ট্রাকটি আটকানো হয়েছে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানালেন পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধূরী জিপু। গতকাল আনুমানিক সাড়ে ১০টার দিকে স্থানীয়রা পৌরসভার প্রধান ফটকে চাল ভর্তি নাম্বারপ্লেটবিহীন পৌরসভার নিজস্ব একটি ট্রাক আটকে করে স্থানীয়রা। পরে এ ঘটনায় রাত ১টার দিকে শহরের কেদারগঞ্জস্থ পৌর মেয়রের রাজনৈতিক অফিসে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করেন। এসময় পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধূরী জিপু বলেন, আমার পৌর এলাকার ভিতরে ভাতাভোগীর সংখ্যা অনেক। এছাড়া কার্ড ব্যতিত অসহায় হতদরিদ্্র মানুষের সংখ্যাও অনেক বেশি। এ সকল ভাতাভোগীরা নি¤œ আয়ের মানুষ হলেও সমাজে তাদের একটা সম্মান আছে। দিনের বেলা লাইনে দাড়িয়ে চাল নিতে গেলে তাদের সম্মান হানি হয়। অতীত থেকে আমরা দেখেছি বয়স্ক মা-বোনেরা দীর্ঘক্ষণ লাইনে দাড়িয়ে থেকে চাল নেওয়ার সময় তাদের অনেক কষ্ট করতে হয়েছে। এ সকল অসহায় মানুষকে অযথা দূর্ভোগের হাত থেকে রেহাই দিতে গত ঈদুল ফিতরে আমি নিজেসহ আমার কর্মিরা ভাতাভোগীদের বাড়ি বাড়ি তাদের প্রাপ্য চাল পৌছে দিয়েছি। তাছাড়া যে পরিমান চাল পাওয়া যায়, তা দিনের বেলা বিতরণ করলে প্রতিজনকে ৪ কেজি করে চাল দেওয়া সম্ভব হবে না। আমি একজন জনপ্রতিনিধি হওয়ায় কার্ড ছাড়া কেউ যদি আমার কাছে চাল নিতে আসে তাহলে আমি তাদের ফিরিয়ে দিতে পারি না। তাদেরও অল্প করে হলেও চাল দিতে হয়। ফলে গত কয়েকদিন আগে পৌর পরিষদসহ কর্মকর্তাগণ একটি সভার মাধ্যমে সন্ধ্যার পর চাল বিতরণ ও পৌর এলাকার সকল হতদরিদ্ররা যেন চাল পান সে মোতাবেক বিতরণের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সেই অনুপাতে গত দুইদিন ধরে চাল বিতরণ শুরু করা হয়। একটি ওয়ার্ডের মধ্যে কয়েকটি মহল্লাভাগ করে তালিকা তৈরি করা হয়। সেই তালিকা অনুযায়ী ভিজিএফ’র চাল বিতরণ করা হচ্ছে। যে বিষয়টা ইতোমধ্যে চুয়াডাঙ্গা সদর থানার কর্মকর্তাসহ স্থানীয়রা সরেজমিন পরিদর্শন করে তার প্রমাণ পান। উদ্দেশ্যপ্রণোদিত হয়ে যারা আমার সম্মানহানি করতে এ ন্যাক্কারজনক কাজ করেছে তাদেরকে চিহ্নিত করে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের দাবী জানাচ্ছি।
এ সময় আরো বক্তব্য রাখেন প্যানেল মেয়র একরামুল হক মুক্তা। তিনি বলেন, আমরা সকল নিয়ম মেনে চাল বিতরণ করছিলাম। হঠাৎ করে সেই চাল বিতরণ কার্যক্রমের ছন্দ পতন ঘটলো। আমার ভলো কাজ করছি। হতদরিদ্র মানুষের ঘরে ঘরে চাল পৌছে দিচ্ছি। ঘরে ঘরে চাল পৌছে দেওয়ার এই ভালো কাজটাকে অনেকে পছন্দ করেনি। তারা পূর্ব পরিকল্পিতভাবে এ ধরনের ঘটনা ঘটিয়েছে। ঝামেলার হাত থেকে রেহাই পেতে পৌর পরিষদে এক সাধারণ সভায় এভাবে চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। পৌরসভার নিজস্ব গাড়িতে এবং নিজস্ব লেবার দিয়ে তালিকা অনুপাতে ভাতাভোগীদের মধ্যে চাল বিতরণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিরাজুল ইসলাম মনি বলেন, আমরা যে চাল পাই তা দিয়ে আমাদের এলাকার অসহায় হতদরিদ্র সকল মানুুষের মধ্যে দেওয়া সম্ভব নয়। ফলে প্রাপ্ত চাল ভাগ করে সবার মাঝে বন্টন করার চেষ্টা করি। এসময় তিনি আরো বলেন, গত পৌর মেয়রের আমল থেকেই আমরা এভাবে চাল বিতরণ করছি।
পৌর মেয়র আরো বলেন, পৌরসভার চেয়ারে বসার পর থেকেই নানাভাবে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করা হচ্ছে। একের পর এক মিথ্যা অপবাদ ছড়ানো হচ্ছে। পৌরসভার কার্যক্রম সঠিকভাবে সম্পন্ন করতে নানাভাবে বাধা দেওয়া হচ্ছে। এতো কিছুর পরও আমি শক্তহাতে আমার উপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে আসছি। তিনি আরো জানান, গত ঈদুল ফিতরের আগে মোমিনপুর ইউনিয়ন পরিষদে চাল বিতরণ নিয়ে এ ধরনের কিছু লোকজন সমস্যার সৃষ্টি করেছিলো। সে সময় ভাতাভোগী কার্ডধারীরর সংখ্যা বেশি থাকায় মাননীয় হুইপ মহোদয় নির্দেশ দেন কম করে হলেও সকলে চাল পায়। ঈদকে সামনে রেখে চুয়াডাঙ্গা পৌর শহরের সকল হতদরিদ্র মানুষ সরকারের দেওয়া সহায়তা পাবেন সে বিষয়টা নিশ্চত করার জন্য আমরা সকলের বাড়ি বাড়ি চাল পৌছে দিচ্ছি।
সংবাদ সম্মেলনে মহিলা কাউন্সিলর সুলতানা আনজু রতœা বলেন, কার্ডধারীদের কষ্ট লাঘব করতে পৌর মেয়র মহোদয়সহ পৌর পরিষদ উদ্যোগ নিয়েছেন সন্ধ্যার পর চাল বিতরণ করতে হবে। এতে করে লোকজনের চাপ কিছুটা কমবে। সে হিসেবে তালিকা অনুযায়ী চাল বিতরণ করা হচ্ছে। এসময় তিনি আরো বলেন অনেক সময় নিজের ব্যক্তিগত টাকা দিয়েও চাল কিনে দিতে হয়। কারন তারা যে চাল পান তা দিয়ে সকলকে দেওয়া সম্ভব হয় না।
সংবাদ সম্মেলনে আরো উপস্থিত ছিলেন কমিশনার আবুল হোসেন, জাহাঙ্গীর আলম, মহিলা কাউন্সিলর ববি ও শেফালিসহ ছাত্রলীগ, যুবলীগ, সেচ্ছাসেবক লীগের নেতাকর্মি ও স্থানীয় জনগণসহ বিভিন্ন ইলেকট্রিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সংবাদকর্মিরা।