ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

জীবে দয়া ও ইসলাম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:১৭:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৮
  • / ১৪১৪ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: আল্লাহতায়ালা দুনিয়াতে নানা প্রজাতির প্রাণী সৃষ্টি করেছেন। মূলত মানুষের প্রয়োজনেই এসবের সৃষ্টি। জীববৈচিত্র্য না থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য থাকত না, মানুষের বসবাস করাও দুরূহ হয়ে উঠত। আমাদের খাদ্যসহ জীবনধারণের অনেক উপকরণ আমরা প্রাণীদের কাছ থেকেই পেয়ে থাকি। বিভিন্ন জীবের অল্প অল্প ভূমিকার ফলে আমাদের পরিবেশ সমৃদ্ধ হয়। এরা আমাদের এ ধরাকে বাসযোগ্য রাখার জন্য অনবরত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমাদের প্রয়োজনের তাগিদেই প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখা জরুরি।
ইসলাম জীবে দয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। রাসূল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ কোমল, তিনি সব কাজে কোমলতা পছন্দ করেন।’ হাদিসে আছে, ‘তোমাদের সহজ করার জন্য পাঠানো হয়েছে, কঠোরতা আরোপের জন্য পাঠানো হয়নি।’ দয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে রাসূল (সা.) মানুষ ও জীবজন্তুকে একই চোখে দেখেছেন। মহানবীকে (সা.) আল্লাহ পাঠিয়েছেন বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ। জীববৈচিত্র্যও তার রহমতের আওতাধীন। আমরা অনেকেই পশু-পাখি ভালোবাসি, আবার অনেকে এদের কষ্ট দিই। কিন্তু হাদিসে জীবজন্তুর ওপর দয়া করার ব্যাপারে তাগিদ দেয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, একবার এক ব্যক্তি পথ চলছিলেন, এ সময় খুব পানি পিপাসা পেলে তিনি রাস্তার পাশের কুয়ায় নেমে পানি পান করলেন। এরপর তিনি কুয়া থেকে উঠে দেখলেন, একটি পিপাসার্ত কুকুর হাঁপাচ্ছে আর নিজের পা চাটছে। তখন তিনি আবার কুয়ায় নেমে নিজের মোজায় পানি ভরে মোজাটি কামড়ে ধরে উপরে উঠলেন এবং কুকুরটিকে পানি পান করালেন। আল্লাহ তার এ কাজটি কবুল করলেন এবং তার গুনাহ মাফ করে দিলেন। এ কথা শুনে সাহাবিরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! চতুষ্পদ জন্তুর উপকার করলে কি আমাদের সওয়াব মিলবে? তিনি বললেন, প্রত্যেক সজীব বস্তু ও প্রাণীর উপকার করাতেই সওয়াব রয়েছে।
যেসব প্রাণী সরাসরি আমাদের উপকারে আসে সেগুলোর যতœআত্তি তো করতে হবেই, এমনকি মানুষের জন্য ক্ষতিকর প্রাণীও নির্বংশ করা যাবে না। কারণ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সব ধরনের প্রাণীর অস্তিত্ব দরকার। যেমন সাপ বাহ্যত আমাদের ক্ষতি করে। কিন্তু সাপের অস্তিত্ব পরিবেশের জন্য অনেক বড় নিয়ামক। এছাড়া শীতকালে যেসব অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসে সেগুলো পাইকারি হারে শিকার করলেও পরিবেশের ভারসাম্য হারাবে। নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই সবার উচিত জীবের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

জীবে দয়া ও ইসলাম

আপলোড টাইম : ০৯:১৭:২২ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ১৫ অগাস্ট ২০১৮

ধর্ম ডেস্ক: আল্লাহতায়ালা দুনিয়াতে নানা প্রজাতির প্রাণী সৃষ্টি করেছেন। মূলত মানুষের প্রয়োজনেই এসবের সৃষ্টি। জীববৈচিত্র্য না থাকলে পরিবেশের ভারসাম্য থাকত না, মানুষের বসবাস করাও দুরূহ হয়ে উঠত। আমাদের খাদ্যসহ জীবনধারণের অনেক উপকরণ আমরা প্রাণীদের কাছ থেকেই পেয়ে থাকি। বিভিন্ন জীবের অল্প অল্প ভূমিকার ফলে আমাদের পরিবেশ সমৃদ্ধ হয়। এরা আমাদের এ ধরাকে বাসযোগ্য রাখার জন্য অনবরত প্রয়াস চালিয়ে যাচ্ছে। এজন্য আমাদের প্রয়োজনের তাগিদেই প্রাণীদের বাঁচিয়ে রাখা জরুরি।
ইসলাম জীবে দয়ার প্রতি বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। রাসূল (সা.) বলেন, ‘আল্লাহ কোমল, তিনি সব কাজে কোমলতা পছন্দ করেন।’ হাদিসে আছে, ‘তোমাদের সহজ করার জন্য পাঠানো হয়েছে, কঠোরতা আরোপের জন্য পাঠানো হয়নি।’ দয়ার দৃষ্টিকোণ থেকে রাসূল (সা.) মানুষ ও জীবজন্তুকে একই চোখে দেখেছেন। মহানবীকে (সা.) আল্লাহ পাঠিয়েছেন বিশ্বজগতের জন্য রহমতস্বরূপ। জীববৈচিত্র্যও তার রহমতের আওতাধীন। আমরা অনেকেই পশু-পাখি ভালোবাসি, আবার অনেকে এদের কষ্ট দিই। কিন্তু হাদিসে জীবজন্তুর ওপর দয়া করার ব্যাপারে তাগিদ দেয়া হয়েছে। আবু হুরায়রা (রা.) হতে বর্ণিত, রাসূল (সা.) বলেছেন, একবার এক ব্যক্তি পথ চলছিলেন, এ সময় খুব পানি পিপাসা পেলে তিনি রাস্তার পাশের কুয়ায় নেমে পানি পান করলেন। এরপর তিনি কুয়া থেকে উঠে দেখলেন, একটি পিপাসার্ত কুকুর হাঁপাচ্ছে আর নিজের পা চাটছে। তখন তিনি আবার কুয়ায় নেমে নিজের মোজায় পানি ভরে মোজাটি কামড়ে ধরে উপরে উঠলেন এবং কুকুরটিকে পানি পান করালেন। আল্লাহ তার এ কাজটি কবুল করলেন এবং তার গুনাহ মাফ করে দিলেন। এ কথা শুনে সাহাবিরা বললেন, ইয়া রাসূলাল্লাহ! চতুষ্পদ জন্তুর উপকার করলে কি আমাদের সওয়াব মিলবে? তিনি বললেন, প্রত্যেক সজীব বস্তু ও প্রাণীর উপকার করাতেই সওয়াব রয়েছে।
যেসব প্রাণী সরাসরি আমাদের উপকারে আসে সেগুলোর যতœআত্তি তো করতে হবেই, এমনকি মানুষের জন্য ক্ষতিকর প্রাণীও নির্বংশ করা যাবে না। কারণ পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষায় সব ধরনের প্রাণীর অস্তিত্ব দরকার। যেমন সাপ বাহ্যত আমাদের ক্ষতি করে। কিন্তু সাপের অস্তিত্ব পরিবেশের জন্য অনেক বড় নিয়ামক। এছাড়া শীতকালে যেসব অতিথি পাখি আমাদের দেশে আসে সেগুলো পাইকারি হারে শিকার করলেও পরিবেশের ভারসাম্য হারাবে। নিজেদের অস্তিত্বের স্বার্থেই সবার উচিত জীবের প্রতি দয়া প্রদর্শন করা।