ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

কয়লা কেলেঙ্কারির প্রকৃত তথ্য উদঘাটন হোক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৪৩:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৩৯৮ বার পড়া হয়েছে

আলোচিত কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে জনগণের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও পেট্রোবাংলা গঠিত তদন্ত কমিটি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। উল্লিখিত কমিটির তদন্তে কয়লা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা যায়নি। কয়লা গায়েবের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও না করার প্রেক্ষাপটে এ তদন্ত কমিটির সদস্যদের দক্ষতা ও আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তদন্ত প্রতিবেদনে মজুদ কয়লা হ্রাসের যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে সেসব অপ্রাসঙ্গিক নয়। প্রশ্ন হল, বাতাসের সঙ্গে ডাস্ট উড়ে যাওয়া এবং বৃষ্টির পানিতে মজুদ কয়লা থেকে কোনো ডাস্ট ধুয়ে যাওয়া- এসব কারণে কি লাখ লাখ টন কয়লা গায়েব হয়ে যেতে পারে? ২০০৫ সালের পর কখনই কয়লার মজুদ বাস্তবে পরিমাপ করা হয়নি। এক্ষেত্রে কেবল তথ্যের ওপর নির্ভর করা হয়েছে। অর্থাৎ উৎপাদনের শুরু থেকেই এক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি অবহেলা চলমান থাকায় এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এ অবহেলার নেপথ্যের কারণ শর্ষের ভূত কিনা এমন প্রশ্নও দেখা দিতে পারে। গত ১৩ বছরে কেন কোল ইয়ার্ডের প্রকৃত মজুদ যাচাই করা হল না, এ রহস্যের উদঘাটন প্রয়োজন। পেট্রোবাংলার তদন্ত প্রতিবেদনে কয়লা গায়েব হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও অজ্ঞতাকে দায়ী করা হয়েছে। প্রশ্ন হল, এ অদক্ষতা ও অজ্ঞতার দায় কার? ১৩ বছরে কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের পর কোন খাতে কী পরিমাণ কয়লা ব্যবহৃত হয়েছে; এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে বিশেষজ্ঞদের সমম্বয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। দুদক এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। পেট্রোবাংলার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কোনো সত্য আড়াল করা হয়েছে কিনা, তা যাচাই করে দেখা দরকার। প্রতি বছরের প্রতিবেদনে যে পরিমাণ কয়লা মজুদ থাকার তথ্য উল্লেখ রয়েছে, বাস্তবে তা আছে কিনা, এটা যাচাই করে দেখার বিষয়টি রুটিন কাজের অন্তর্ভুক্ত। যদি কোনো কোম্পানির কর্মকর্তা এসব তথ্য যাচাই না করেন তবে তার দায় তাকেই নিতে হয়। লাখ লাখ টন কয়লা গয়েব হয়ে যাবে, আর কর্মকর্তারা তার হদিস জানবেন না, এটি কি এতটাই হেলাফেলার বিষয়? খনি থেকে উত্তোলিত বিপুল পরিমাণ কয়লা কী করে গায়েব হয়ে গেল- যারা এর দায়িত্বে ছিলেন তাদেরই জবাব দিতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে অনুসরণযোগ্য সিস্টেম লস বিবেচনায় নিয়েই কোল ইয়ার্ডের মজুদ কয়লার প্রকৃত তথ্য নিরূপণ করা দরকার। এ ঘটনায় দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

কয়লা কেলেঙ্কারির প্রকৃত তথ্য উদঘাটন হোক

আপলোড টাইম : ০৯:৪৩:৩১ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ৯ অগাস্ট ২০১৮

আলোচিত কয়লা কেলেঙ্কারির তদন্ত প্রতিবেদনের বিষয়ে জনগণের ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও পেট্রোবাংলা গঠিত তদন্ত কমিটি প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেনি। উল্লিখিত কমিটির তদন্তে কয়লা দুর্নীতির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করা যায়নি। কয়লা গায়েবের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশও না করার প্রেক্ষাপটে এ তদন্ত কমিটির সদস্যদের দক্ষতা ও আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। তদন্ত প্রতিবেদনে মজুদ কয়লা হ্রাসের যেসব কারণ উল্লেখ করা হয়েছে সেসব অপ্রাসঙ্গিক নয়। প্রশ্ন হল, বাতাসের সঙ্গে ডাস্ট উড়ে যাওয়া এবং বৃষ্টির পানিতে মজুদ কয়লা থেকে কোনো ডাস্ট ধুয়ে যাওয়া- এসব কারণে কি লাখ লাখ টন কয়লা গায়েব হয়ে যেতে পারে? ২০০৫ সালের পর কখনই কয়লার মজুদ বাস্তবে পরিমাপ করা হয়নি। এক্ষেত্রে কেবল তথ্যের ওপর নির্ভর করা হয়েছে। অর্থাৎ উৎপাদনের শুরু থেকেই এক্ষেত্রে বড় ধরনের একটি অবহেলা চলমান থাকায় এ নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। এ অবহেলার নেপথ্যের কারণ শর্ষের ভূত কিনা এমন প্রশ্নও দেখা দিতে পারে। গত ১৩ বছরে কেন কোল ইয়ার্ডের প্রকৃত মজুদ যাচাই করা হল না, এ রহস্যের উদঘাটন প্রয়োজন। পেট্রোবাংলার তদন্ত প্রতিবেদনে কয়লা গায়েব হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অদক্ষতা ও অজ্ঞতাকে দায়ী করা হয়েছে। প্রশ্ন হল, এ অদক্ষতা ও অজ্ঞতার দায় কার? ১৩ বছরে কয়লা খনি থেকে কয়লা উত্তোলনের পর কোন খাতে কী পরিমাণ কয়লা ব্যবহৃত হয়েছে; এক্ষেত্রে কোনো অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়েছে কিনা তা যাচাই করতে বিশেষজ্ঞদের সমম্বয়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন তদন্ত কমিটি গঠন করা প্রয়োজন। দুদক এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। পেট্রোবাংলার তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে কোনো সত্য আড়াল করা হয়েছে কিনা, তা যাচাই করে দেখা দরকার। প্রতি বছরের প্রতিবেদনে যে পরিমাণ কয়লা মজুদ থাকার তথ্য উল্লেখ রয়েছে, বাস্তবে তা আছে কিনা, এটা যাচাই করে দেখার বিষয়টি রুটিন কাজের অন্তর্ভুক্ত। যদি কোনো কোম্পানির কর্মকর্তা এসব তথ্য যাচাই না করেন তবে তার দায় তাকেই নিতে হয়। লাখ লাখ টন কয়লা গয়েব হয়ে যাবে, আর কর্মকর্তারা তার হদিস জানবেন না, এটি কি এতটাই হেলাফেলার বিষয়? খনি থেকে উত্তোলিত বিপুল পরিমাণ কয়লা কী করে গায়েব হয়ে গেল- যারা এর দায়িত্বে ছিলেন তাদেরই জবাব দিতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে অনুসরণযোগ্য সিস্টেম লস বিবেচনায় নিয়েই কোল ইয়ার্ডের মজুদ কয়লার প্রকৃত তথ্য নিরূপণ করা দরকার। এ ঘটনায় দুর্নীতির প্রমাণ পাওয়া গেলে দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে।