ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

চুয়াডাঙ্গায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ৪ দিন পরও সমাধানের নেই অগ্রগতি

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:৩৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৬৯৭ বার পড়া হয়েছে

যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে; এ খাতে কর্মরত চালক-শ্রমিকরা চরম হতাশায়
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝিনাইদহ জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি কর্তৃক চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী বাস চলাচলে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট পালন করছে চুয়াডাঙ্গা জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। একটানা ৪দিন এ ধর্মঘটের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন আন্তজেলা যাত্রী সাধারণ। একই সাথে এ খাতের কর্মচারীরাও পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায় । একই সাথে এ খাতের সাথে জড়িত সকল ব্যবসায় নেমেছে চরম হতাশা। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট গতাকল রোববার ৪ দিন পার হলেও সঠিক সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারছে না কোনো পক্ষ। চুয়াডাঙ্গা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ তিল পরিমাণ ছাড় দিতে নারাজ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ।
জানা যায়, গত সপ্তাহে রয়েল পরিবহনের দুটি যাত্রীবাহী গাড়ি মেহেরপুর থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত চলাচলের জন্য যা যা উপকরণ দরকার তার সবকিছু ঠিকঠাক করে রাস্তায় ছাড়ে বাস দুটি। স্বাভাবিক পরিবেশটি ঘুলা করে ঝিনাইদহ মালিক পক্ষ তারা পরিবহন দুটি চালাতে না দেওয়াসহ একে একে উক্ত পরিবহনের ঢাকামুখি সকল গাড়ী চুয়াডাঙ্গাতে ফেরত পাঠানোসহ বন্ধ করে দেয় পরিবহনটির কাউন্টার। ফলে এ ঘটনার প্রতিবাদ স্বরুপ পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদও ডাক দেয় বৃহৎ আন্দোলনের। তারাও বন্ধ করে দেয় অভ্যান্তরীন রুটের সকল গাড়ি চলাচল। আন্তজেলা যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার একদিন পর শরু হয় দেশজুড়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন। সেখানের একে একে সকল জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আন্তজেলাসহ সকল জেলার যাথে বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে চরম বিপাকে পড়ে যাত্রী সাধারণ। এতকিছুর পরও চুয়াডাঙ্গা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতাদের কথা, যৌক্তিক দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
নেতারা বলেন, কাগজপাতি রুট পার্মিট থাকার পরও যাদি এভাবে অন্যায় করে তারা আমাদের গাড়ি চলতে না দেয় তাহলে কনো এক সময় বাদবাকি গাড়ি গুলোর উপরও এ ধরণের প্রভাব ফেলত পারে তারা। সে জন্য তাদের অসত উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে দেওয়া যাবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
এদিকে, কয়েকদিন একটানা গাড়ি চালাতে না পেরে চরম হতাশার কথা জানান চুয়াডাঙ্গা শাপলা পরিবহনের এক চালক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, একদিন কাজ না করলে যাদের দুমুঠো খাবার জুটানো কষ্টকর সেখানে পরপর ৪দিন গাড়ি বন্ধ। এই ৪ দিন উপার্জন নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে আছি। এসময় তিনি আরো বলেন, একেতো চুয়াডাঙ্গা’র আন্তজেলা আন্দোলন তার উপর নতুন করে যোগ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাপি অঘোষিত আন্দোলন। এ পরিস্থিতিতে কি হয় সেটা অনুমান করে বলা কঠিন। তবে যায় হোক ক্ষতি যা হবার তা আমাদেরই হচ্ছে। এভাবে তার কষ্টের কথা তুলে ধরেন। একটানা ৪দিন গাড়ি বন্ধ থাকাতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন আন্তজেলাসহ দুরপাল্লার যাত্রীসাধারণ। এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন দুইদিন ছুটির কবলে পড়ার পর গতকাল রোববার সকল অফিস আদলত খোলা থাকায় ভোগান্তির মাত্রা কয়েকগুন বেড়ে যায়। ছোট ছোট যানবাহনে করে দুর দুরান্তের অফিসসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হয়েছে যাত্রীদের।
এদিকে, এ ধর্মঘটের ফলে এই খাত জুড়ে থাকা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। গাড়ির গ্যারেজগুলোতে গাড়ির আনাগোনা নেই। নেই বড় বড় হাতুড়িরর জোরে জোরে শব্দ। ফলে এক প্রকার ফাকায় অলস সময় কাটাতে দেখা যায় গ্যারেজ মালিকসহ কর্মচারীদের। এছাড়াও যানবাহনের যন্ত্রাংশের দোকানেও মন্দা অবস্থা। যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ীরা বলছেন। বেচা বিক্রি প্রায় শুন্যের কোঠায়। তারা বলছেন, সড়কে পরিবহনসহ সকল বাস বন্ধ রয়েছে যার ফলে বেচা বিক্রিও আগের মতো নেই। তবে তরা আশা করছেন কুরবানির আগে হয়তো পরিবেশ ঠিক হয়ে যাবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চুয়াডাঙ্গায় অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘটের ৪ দিন পরও সমাধানের নেই অগ্রগতি

আপলোড টাইম : ০৯:৩৭:৪৫ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অগাস্ট ২০১৮

যাত্রীদের দুর্ভোগ চরমে; এ খাতে কর্মরত চালক-শ্রমিকরা চরম হতাশায়
নিজস্ব প্রতিবেদক: ঝিনাইদহ জেলা বাস-মিনিবাস মালিক সমিতি কর্তৃক চুয়াডাঙ্গা থেকে ছেড়ে যাওয়া যাত্রীবাহী বাস চলাচলে বাধা দেয়ার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের পরিবহন ধর্মঘট পালন করছে চুয়াডাঙ্গা জেলা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ। একটানা ৪দিন এ ধর্মঘটের ফলে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন আন্তজেলা যাত্রী সাধারণ। একই সাথে এ খাতের কর্মচারীরাও পড়েছেন চরম বিড়ম্বনায় । একই সাথে এ খাতের সাথে জড়িত সকল ব্যবসায় নেমেছে চরম হতাশা। গত বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে শুরু হওয়া এ ধর্মঘট গতাকল রোববার ৪ দিন পার হলেও সঠিক সমাধানের উদ্যোগ নিতে পারছে না কোনো পক্ষ। চুয়াডাঙ্গা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ তিল পরিমাণ ছাড় দিতে নারাজ। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার নির্দেশ।
জানা যায়, গত সপ্তাহে রয়েল পরিবহনের দুটি যাত্রীবাহী গাড়ি মেহেরপুর থেকে পটুয়াখালী পর্যন্ত চলাচলের জন্য যা যা উপকরণ দরকার তার সবকিছু ঠিকঠাক করে রাস্তায় ছাড়ে বাস দুটি। স্বাভাবিক পরিবেশটি ঘুলা করে ঝিনাইদহ মালিক পক্ষ তারা পরিবহন দুটি চালাতে না দেওয়াসহ একে একে উক্ত পরিবহনের ঢাকামুখি সকল গাড়ী চুয়াডাঙ্গাতে ফেরত পাঠানোসহ বন্ধ করে দেয় পরিবহনটির কাউন্টার। ফলে এ ঘটনার প্রতিবাদ স্বরুপ পূর্ব ঘোষণা অনুযায়ী চুয়াডাঙ্গা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদও ডাক দেয় বৃহৎ আন্দোলনের। তারাও বন্ধ করে দেয় অভ্যান্তরীন রুটের সকল গাড়ি চলাচল। আন্তজেলা যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যাওয়ার একদিন পর শরু হয় দেশজুড়ে নিরাপদ সড়কের দাবিতে ছাত্রদের আন্দোলন। সেখানের একে একে সকল জেলার সড়ক যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আন্তজেলাসহ সকল জেলার যাথে বাস যোগাযোগ বন্ধ হয়ে গেলে চরম বিপাকে পড়ে যাত্রী সাধারণ। এতকিছুর পরও চুয়াডাঙ্গা মালিক শ্রমিক ঐক্য পরিষদ নেতাদের কথা, যৌক্তিক দাবি না মানা পর্যন্ত তাদের শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যাবেন তারা।
নেতারা বলেন, কাগজপাতি রুট পার্মিট থাকার পরও যাদি এভাবে অন্যায় করে তারা আমাদের গাড়ি চলতে না দেয় তাহলে কনো এক সময় বাদবাকি গাড়ি গুলোর উপরও এ ধরণের প্রভাব ফেলত পারে তারা। সে জন্য তাদের অসত উদ্দেশ্য চরিতার্থ করতে দেওয়া যাবে না। দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত তারা আন্দোলন চালিয়ে যাবেন।
এদিকে, কয়েকদিন একটানা গাড়ি চালাতে না পেরে চরম হতাশার কথা জানান চুয়াডাঙ্গা শাপলা পরিবহনের এক চালক। নাম প্রকাশ না করার শর্তে তিনি বলেন, একদিন কাজ না করলে যাদের দুমুঠো খাবার জুটানো কষ্টকর সেখানে পরপর ৪দিন গাড়ি বন্ধ। এই ৪ দিন উপার্জন নেই। পরিবার পরিজন নিয়ে চরম বিপাকে আছি। এসময় তিনি আরো বলেন, একেতো চুয়াডাঙ্গা’র আন্তজেলা আন্দোলন তার উপর নতুন করে যোগ হয়েছে বাংলাদেশ ব্যাপি অঘোষিত আন্দোলন। এ পরিস্থিতিতে কি হয় সেটা অনুমান করে বলা কঠিন। তবে যায় হোক ক্ষতি যা হবার তা আমাদেরই হচ্ছে। এভাবে তার কষ্টের কথা তুলে ধরেন। একটানা ৪দিন গাড়ি বন্ধ থাকাতে চরম দুর্ভোগে পড়েছেন আন্তজেলাসহ দুরপাল্লার যাত্রীসাধারণ। এদিকে বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হওয়া আন্দোলন দুইদিন ছুটির কবলে পড়ার পর গতকাল রোববার সকল অফিস আদলত খোলা থাকায় ভোগান্তির মাত্রা কয়েকগুন বেড়ে যায়। ছোট ছোট যানবাহনে করে দুর দুরান্তের অফিসসহ প্রয়োজনীয় কাজ সারতে হয়েছে যাত্রীদের।
এদিকে, এ ধর্মঘটের ফলে এই খাত জুড়ে থাকা ব্যাবসা প্রতিষ্ঠানগুলো মুখ থুবড়ে পড়েছে। গাড়ির গ্যারেজগুলোতে গাড়ির আনাগোনা নেই। নেই বড় বড় হাতুড়িরর জোরে জোরে শব্দ। ফলে এক প্রকার ফাকায় অলস সময় কাটাতে দেখা যায় গ্যারেজ মালিকসহ কর্মচারীদের। এছাড়াও যানবাহনের যন্ত্রাংশের দোকানেও মন্দা অবস্থা। যন্ত্রাংশ ব্যবসায়ীরা বলছেন। বেচা বিক্রি প্রায় শুন্যের কোঠায়। তারা বলছেন, সড়কে পরিবহনসহ সকল বাস বন্ধ রয়েছে যার ফলে বেচা বিক্রিও আগের মতো নেই। তবে তরা আশা করছেন কুরবানির আগে হয়তো পরিবেশ ঠিক হয়ে যাবে।