ইপেপার । আজ শনিবার, ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪

ট্রাফিক সপ্তাহ সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসুক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৯:০৭:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৩৭২ বার পড়া হয়েছে

আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় গতকাল রোববার থেকে সারাদেশে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন শুরু করেছে পুলিশ। রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে গত ২৯ জুলাই জাবালে নূর পরিবহনের বাস চাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করে। এসময় সড়কে চালকের ও গাড়ির লাইসেন্স পরীক্ষায় ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। তাদের পরীক্ষায় অনেক পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়াও মন্ত্রী-এমপিরাও আটকা পড়েন। এরমাঝে পুলিশের ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। গতকাল চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম ট্রাফিক সপ্তাহ উদ্বোধনকালে আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময় তিনি বলেন, ট্রাফিক সপ্তাহে লাইন্সেস ছাড়া ফিটনেসবিহীন গাড়ি, হেল্পার দিয়ে ড্রাইভিংসহ ট্রাফিক আইনের যে কোনো ব্যত্যয় হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহন, ফুটপাত দিয়ে চালানো, ট্রাফিক সিগন্যাল ভায়োলেশন করা, উল্টো পথে চলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই সময়ে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, লাইসেন্স ছাড়া চালক, হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলসহ কোনোভাবে ট্রাফিক আইনের ব্যত্যয় হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন না মানার যে চেষ্টা, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিনের সমস্যার কথা ঢাকায় উল্লেখ করেন ডিএমপি কমিশনার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘বহুবিধ কারণে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সমস্যা রয়েছে, নানা সীমাবদ্ধতা সত্বেও আমরা চেষ্টা করছি এ আইন বাস্তবায়নের। অনেক সময় পেশাজীবীদের স্টিকার লাগিয়ে আইন লঙ্ঘন করা হয়। আরও একটি সমস্যা আমাদের ভৌত অবকাঠামো না থাকা। বাস টার্মিনাল নেই, যেসব আছে তা ডিপোতে পরিণত হয়েছে।’ ‘এছাড়া আইন না মানার সংস্কৃতিও সবচেয়ে বড় সমস্যা। একটি এলাকায় গেলে আমরা খুব ট্রাফিক রুল মানি, কিন্তু সেখান থেকে বেরোলে আর মানি না।’ সব জায়গায় ট্রাফিক রুল মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিশৃঙ্খলা নয়, শৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ আনতে হবে। আইন মানতে হবে, যারা আইন মানে না, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আইনের প্রয়োগ করার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন। ট্রাফিক আইন সঠিকভাবে অনুসরণ না করার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, প্রাণ হারাচ্ছে যাত্রী বা পথচারী। কার্যত রাস্তা-ঘাটে চলাচল এখন অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।
আমরা মনে করি, যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে শুধু ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন নয়, গোটা পরিবহন ব্যবস্থায় দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। যথাযথ প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের গাড়ি চালনা রোধ করতে হবে। প্রতিটি যানকে নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য করতে হবে। একইসঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যেসব সমস্যা রয়েছে তা সমাধান করতে হবে। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী ঢেলে সাজাতে হবে ট্রাফিক ব্যবস্থা। পাশাপশি নাগরিক সমাজকেও ট্রাফিক আইন মেনে চলায় সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমরা আশা করব- আইনের যথাযথ প্রয়োগে এবার ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের উদ্দেশ্য সফল হবে। যার মধ্যদিয়ে নতুন উদ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। কেবল এক সপ্তাহের র্কর্মসূচি পালনই নয়, দায়িত্বপালনে সবর্দাই এর প্রতিফলন অব্যাবহত রাখার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। শৃঙ্খলাবদ্ধ একটি ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে আমাদের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ হিসেবে টিকে থাকুক- এটাই কাম্য।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ট্রাফিক সপ্তাহ সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসুক

আপলোড টাইম : ০৯:০৭:০৮ পূর্বাহ্ন, সোমবার, ৬ অগাস্ট ২০১৮

আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় গতকাল রোববার থেকে সারাদেশে ট্রাফিক সপ্তাহ পালন শুরু করেছে পুলিশ। রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কে গত ২৯ জুলাই জাবালে নূর পরিবহনের বাস চাপায় শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি করে। এসময় সড়কে চালকের ও গাড়ির লাইসেন্স পরীক্ষায় ট্রাফিক পুলিশের ভূমিকায় দেখা যায় শিক্ষার্থীদের। তাদের পরীক্ষায় অনেক পুলিশ কর্মকর্তা ছাড়াও মন্ত্রী-এমপিরাও আটকা পড়েন। এরমাঝে পুলিশের ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের বিষয়টি অত্যন্ত তাৎপর্যবহ। গতকাল চুয়াডাঙ্গার পুলিশ সুপার মাহবুবুর রহমান পিপিএম ট্রাফিক সপ্তাহ উদ্বোধনকালে আইনের কঠোর প্রয়োগের মাধ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠায় ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এসময় তিনি বলেন, ট্রাফিক সপ্তাহে লাইন্সেস ছাড়া ফিটনেসবিহীন গাড়ি, হেল্পার দিয়ে ড্রাইভিংসহ ট্রাফিক আইনের যে কোনো ব্যত্যয় হলে তার বিরুদ্ধে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। একইসঙ্গে মোটরসাইকেলে তিনজন আরোহন, ফুটপাত দিয়ে চালানো, ট্রাফিক সিগন্যাল ভায়োলেশন করা, উল্টো পথে চলার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এই সময়ে ফিটনেসবিহীন গাড়ি, লাইসেন্স ছাড়া চালক, হেলমেট ছাড়া মোটরসাইকেলসহ কোনোভাবে ট্রাফিক আইনের ব্যত্যয় হলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আইন না মানার যে চেষ্টা, তার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলেও পুলিশের এই ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা জানান।
ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় দীর্ঘদিনের সমস্যার কথা ঢাকায় উল্লেখ করেন ডিএমপি কমিশনার এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, ‘বহুবিধ কারণে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় সমস্যা রয়েছে, নানা সীমাবদ্ধতা সত্বেও আমরা চেষ্টা করছি এ আইন বাস্তবায়নের। অনেক সময় পেশাজীবীদের স্টিকার লাগিয়ে আইন লঙ্ঘন করা হয়। আরও একটি সমস্যা আমাদের ভৌত অবকাঠামো না থাকা। বাস টার্মিনাল নেই, যেসব আছে তা ডিপোতে পরিণত হয়েছে।’ ‘এছাড়া আইন না মানার সংস্কৃতিও সবচেয়ে বড় সমস্যা। একটি এলাকায় গেলে আমরা খুব ট্রাফিক রুল মানি, কিন্তু সেখান থেকে বেরোলে আর মানি না।’ সব জায়গায় ট্রাফিক রুল মেনে চলার আহ্বান জানিয়ে ডিএমপি কমিশনার বলেন, বিশৃঙ্খলা নয়, শৃঙ্খলার মধ্যদিয়ে এ অবস্থা থেকে উত্তরণ আনতে হবে। আইন মানতে হবে, যারা আইন মানে না, তাদের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধভাবে আইনের প্রয়োগ করার প্রতিও গুরুত্বারোপ করেন। ট্রাফিক আইন সঠিকভাবে অনুসরণ না করার কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে, প্রাণ হারাচ্ছে যাত্রী বা পথচারী। কার্যত রাস্তা-ঘাটে চলাচল এখন অনিরাপদ হয়ে উঠেছে।
আমরা মনে করি, যান চলাচলে শৃঙ্খলা ফেরাতে শুধু ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থাপনার আধুনিকায়ন নয়, গোটা পরিবহন ব্যবস্থায় দৃষ্টি দেয়া প্রয়োজন। যথাযথ প্রশিক্ষণ ও লাইসেন্সবিহীন চালকদের গাড়ি চালনা রোধ করতে হবে। প্রতিটি যানকে নিয়ম মেনে চলতে বাধ্য করতে হবে। একইসঙ্গে ট্রাফিক ব্যবস্থাপনায় যেসব সমস্যা রয়েছে তা সমাধান করতে হবে। সময়ের চাহিদা অনুযায়ী ঢেলে সাজাতে হবে ট্রাফিক ব্যবস্থা। পাশাপশি নাগরিক সমাজকেও ট্রাফিক আইন মেনে চলায় সচেতনতা বাড়াতে হবে। আমরা আশা করব- আইনের যথাযথ প্রয়োগে এবার ট্রাফিক সপ্তাহ পালনের উদ্দেশ্য সফল হবে। যার মধ্যদিয়ে নতুন উদ্যমে সড়কে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে। কেবল এক সপ্তাহের র্কর্মসূচি পালনই নয়, দায়িত্বপালনে সবর্দাই এর প্রতিফলন অব্যাবহত রাখার চ্যালেঞ্জ নিতে হবে। শৃঙ্খলাবদ্ধ একটি ট্রাফিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার মাধ্যমে আমাদের সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সুশৃঙ্খল ও নিরাপদ হিসেবে টিকে থাকুক- এটাই কাম্য।