ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারী ২০২৫

আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ডা. বিডি দাস পিকলুর ভুল অপারেশন

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:১২:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৫৪৩ বার পড়া হয়েছে

শিশুর মৃত্যু ও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এক মহিলা
আলমডাঙ্গা অফিস: আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এক শিশুর মৃত্যু ও এক মহিলা ২ বার অপারেশনের পরেও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গতকাল শনিবার আলমডাঙ্গা হাজীমোড়ে অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে রোগীর পরিবারের লোকজন সাংবাদিকদের কাছে কান্না জড়িত কণ্ঠে ইউনাইটেড মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসার বর্ণনা দেয়।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা বাবুপাড়ার সোহাগের স্ত্রী সিমা খাতুন সন্তান সম্ভাবা হয়ে ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হয়। ভর্তির পর মেহেরপুর-গাংনী হেলথ কমপ্লেক্সের ডাক্তার বিডি দাস পিকলু ওই রাতেই সিমার অপারেশন করলে একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপরই রোগী ও শিশুর অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং শিশুর মা আশংঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন আছে। তাছাড়া গত ১৯ জুলাই আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের ছোট পুটিমারী গ্রামের তানজেদ আলীর মেয়ে রোজিনা খাতুন (৩০) বাড়িতে গুরুত্বর অসুস্থ হলে তাকে আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করে। ভর্তির একদিন পর ডা. বিডি দাস পিকলু রোজিনার অপারেশন করে। অপারেশনের দুইদিন পর রোগি বাড়িতে যেয়ে চরম অসুস্থ হয়ে পড়লে পুনরায় ওই ক্লিনিকে ভর্তি করে এবং ওই দিনই ২য় বার ডা. বিডি দাস পিকলু অপারেশন করে। অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাকে উন্নতমানের চিকিৎসা করানোর জন্য রাজশাহীতে রেফার্ড করা হয়।
রেফার করার পর রোগীর পরিবারের লোকজন ক্লিনিকের মালিকের সাথে বাকবিতন্ডাই জড়িয়ে পড়ে। তার অত্যান্ত গরীব, পরপর দুইবার অপারেশন করার খরচ জোগাতে তাদের হিমশীম খেতে হয়েছে। ক্লিনিকে ভর্তি করার সময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বারবার বলেছে আমরা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করাবো। রোগীর অপারেশনের সময় ডাক্তার ৫ ব্যাগ রক্ত লাগবে জানালে, রোগীর পরিবার ৫ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করে। ভুল চিকিৎসার কারণে রোজিনা এখন মৃত্যু শয্যায়। এখন ক্লিনিকের লোকজন রোগীকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন।
এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গার বিশিষ্ট সমাজসেবক শহিদুল কাউনাইন টিলুসহ বেশকিছু লোকজন ক্লিনিকের মালিকের নিকট অনুরোধ করেন রোগীকে সুষ্ঠুভাবে চিকিৎসা করার জন্য। কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন তালবাহানা করে রোগীকে ক্লিনিক থেকে বের করে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্লিনিকের মালিক ও ডা. বিডি দাসের সাথে কথা বলতে গেলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ পর্যায়ে সাংবাদিকদের সাথে অসদাচরণ করে। জানা যায়, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে ব্যাপারটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য জোর তদবীর চালাচ্ছিল।
উল্লেখ্য, আজ থেকে ১৫ দিন আগে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে অব্যবস্থাপনা, অপরিচ্ছন্নতা, নিয়মিত চিকিৎসক না থাকার কারনে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ডা. বিডি দাস পিকলুর ভুল অপারেশন

আপলোড টাইম : ১০:১২:০৫ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৫ অগাস্ট ২০১৮

শিশুর মৃত্যু ও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে এক মহিলা
আলমডাঙ্গা অফিস: আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ডাক্তারের ভুল চিকিৎসায় এক শিশুর মৃত্যু ও এক মহিলা ২ বার অপারেশনের পরেও মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে। গতকাল শনিবার আলমডাঙ্গা হাজীমোড়ে অবস্থিত ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে রোগীর পরিবারের লোকজন সাংবাদিকদের কাছে কান্না জড়িত কণ্ঠে ইউনাইটেড মেডিক্যাল সেন্টারের চিকিৎসকদের ভুল চিকিৎসার বর্ণনা দেয়।
জানা গেছে, আলমডাঙ্গা বাবুপাড়ার সোহাগের স্ত্রী সিমা খাতুন সন্তান সম্ভাবা হয়ে ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি হয়। ভর্তির পর মেহেরপুর-গাংনী হেলথ কমপ্লেক্সের ডাক্তার বিডি দাস পিকলু ওই রাতেই সিমার অপারেশন করলে একটি কন্যা সন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরপরই রোগী ও শিশুর অবস্থার অবনতি হলে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রেফার্ড করে। রাজশাহী মেডিকেল কলেজের কর্তব্যরত চিকিৎসক শিশুটিকে মৃত বলে ঘোষণা করেন এবং শিশুর মা আশংঙ্কাজনক অবস্থায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজে ভর্তি হয়ে চিকিৎসাধীন আছে। তাছাড়া গত ১৯ জুলাই আলমডাঙ্গার জেহালা ইউনিয়নের ছোট পুটিমারী গ্রামের তানজেদ আলীর মেয়ে রোজিনা খাতুন (৩০) বাড়িতে গুরুত্বর অসুস্থ হলে তাকে আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করে। ভর্তির একদিন পর ডা. বিডি দাস পিকলু রোজিনার অপারেশন করে। অপারেশনের দুইদিন পর রোগি বাড়িতে যেয়ে চরম অসুস্থ হয়ে পড়লে পুনরায় ওই ক্লিনিকে ভর্তি করে এবং ওই দিনই ২য় বার ডা. বিডি দাস পিকলু অপারেশন করে। অপারেশনের পর রোগীর অবস্থা সংকটজনক হওয়ায় তাকে উন্নতমানের চিকিৎসা করানোর জন্য রাজশাহীতে রেফার্ড করা হয়।
রেফার করার পর রোগীর পরিবারের লোকজন ক্লিনিকের মালিকের সাথে বাকবিতন্ডাই জড়িয়ে পড়ে। তার অত্যান্ত গরীব, পরপর দুইবার অপারেশন করার খরচ জোগাতে তাদের হিমশীম খেতে হয়েছে। ক্লিনিকে ভর্তি করার সময় ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বারবার বলেছে আমরা বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দিয়ে অপারেশন করাবো। রোগীর অপারেশনের সময় ডাক্তার ৫ ব্যাগ রক্ত লাগবে জানালে, রোগীর পরিবার ৫ ব্যাগ রক্ত সরবরাহ করে। ভুল চিকিৎসার কারণে রোজিনা এখন মৃত্যু শয্যায়। এখন ক্লিনিকের লোকজন রোগীকে দ্রুত অন্যত্র সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করছেন।
এ ব্যাপারে আলমডাঙ্গার বিশিষ্ট সমাজসেবক শহিদুল কাউনাইন টিলুসহ বেশকিছু লোকজন ক্লিনিকের মালিকের নিকট অনুরোধ করেন রোগীকে সুষ্ঠুভাবে চিকিৎসা করার জন্য। কিন্তু ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন তালবাহানা করে রোগীকে ক্লিনিক থেকে বের করে দিতে চেষ্টা চালাচ্ছেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় সাংবাদিকরা ক্লিনিকের মালিক ও ডা. বিডি দাসের সাথে কথা বলতে গেলে তারা বিষয়টি এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে। এ পর্যায়ে সাংবাদিকদের সাথে অসদাচরণ করে। জানা যায়, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে ব্যাপারটি ধামাচাপা দেওয়ার জন্য জোর তদবীর চালাচ্ছিল।
উল্লেখ্য, আজ থেকে ১৫ দিন আগে আলমডাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাহাত মান্নান ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে আলমডাঙ্গা ইউনাইটেড মেডিকেল সেন্টারে অব্যবস্থাপনা, অপরিচ্ছন্নতা, নিয়মিত চিকিৎসক না থাকার কারনে ২৫ হাজার টাকা জরিমানা আদায় করেন।