সমীকরণ প্রতিবেদন:
আওয়ামী লীগ সুপরিকল্পিতভাবে জনগণের অধিকার কেড়ে নিয়ে লুট ও সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে একদলীয় বাকশালী শোষণ চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মীর্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি গতকাল সোমবার নীলফামারীর সৈয়দপুরে রাজনৈতিক জেলা বিএনপির দ্বিবার্ষিক সম্মেলনের উদ্বোধনী বক্তব্যে এসব কথা বলেন। সম্মেলনের দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথি হিসেবে ভার্চুয়ালি অংশগ্রহণ করেন বিএনপি’র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান। তিনি দিক নির্দেশনামূলক বক্তব্য দেন।
মির্জা ফখরুল আরও বলেন, বর্তমান কর্তৃত্ববাদী স্বৈরশাসক হাসিনার জুলুমের ফলে বাকস্বাধীনতা হারিয়ে মানুষ প্রতিবাদের ভাষাও ভুলে গেছে। এই সুযোগে সরকার স্বেচ্ছাচারিতায় হাজার হাজার কোটি টাকা পাচার করে দেশকে দেউলিয়াত্বের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আর তার খেসারতস্বরূপ দ্রব্যমূল্যের উর্ধ্বগতিতে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে দেশবাসীকে।
মীর্জা ফখরুল বলেন, গণতন্ত্রকে নির্বাসনে পাঠিয়ে দিয়ে সব সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে প্রহসনের নির্বাচনের মাধ্যমে বিনাভোটে ক্ষমতা কুক্ষিগত করে জাতির ঘাড়ে জগদ্দল পাথরের মতো চেপে বসেছে। এই নাভিশ্বাস পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে দেশ ও জনবিরোধী হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করে দেশকে রক্ষায় ঝাঁপিয়ে পড়তে হবে। দুর্বার আন্দোলনে ভোট চোরদের মসনদ তছনছ করে স্বাধীনতার নতুন সূর্যোদয় ঘটাতে ৭১ ও ৯১ এর মতো সংগ্রামে অবতীর্ণ হতে হবে।
তিনি বলেন, এজন্যই প্রকৃত দেশপ্রেমিক দল হিসেবে বিএনপি ১০ দফা কর্মসূচি দিয়েছে, যার অন্যতম দাবি হলো নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন। আওয়ামী লীগের অধীনে আর কোনো নির্বাচনে জনগণ যাবে না। প্রশাসনের পছন্দের লোকজনকে দিয়ে তামাশার নির্বাচন করে বাকশালীদের আর ক্ষমতা দখল করতে দেওয়া হবে না। বেগম খালেদা জিয়া আর তারেক জিয়ার নেতৃত্বে আবারো স্বাধীনতা ও গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের মাধ্যমে জাতির ভোট, ভাত ও কথার অধিকার ফিরিয়ে দেওয়া হবে। এ জন্য দলীয় নেতাকর্মীসহ দেশবাসীকে প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অধ্যক্ষ ডা. এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, দেশরক্ষা, জনগণের অধিকার সংরক্ষণ ও গণতন্ত্র পুনপ্রতিষ্ঠা করতে হলে বেগম খালেদা জিয়ার মুক্তি ও তারেক রহমানের নেতৃত্বে বাকশালী শাসনের অবসান ঘটাতে হবে, নয়তো দেশ ও জাতির ভাগ্যে চরম দুর্ভোগ নেমে আসবে। স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বও হুমকির মুখে পড়বে। এ জন্য বিএনপির সাথে ঐক্যবদ্ধ হওয়া প্রতিটি দেশপ্রেমিকের একান্ত দায়িত্ব। ইতোমধ্যে অবশ্য অনেক রাজনৈতিক দল আমাদের দাবির সাথে একমত হয়ে যুগপৎ আন্দোলন করছে। এই সম্মিলিত প্রয়াসেই মুক্তি মিলবে ইনশা আল্লাহ।
এ সময় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিএনপির রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক মন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু, যুগ্ম সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেক, দিনাজপুর পৌরসভার মেয়র সৈয়দ জাহাঙ্গীর হোসেন, সাবেক বিরোধী দলীয় হুইপ (জাপা) আলহাজ শওকত চৌধুর, উপজেলা বিএনপির সভাপতি রেজাউল করিম লোকমান, সাধারণ সম্পাদক কার্জন, পৌর বিএনপির সভাপতি হাজী রশিদুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক শেখ বাবলুসহ সৈয়দপুর ও নীলফামারী জেলা ও উপজেলা, পৌর শাখার নেতারা। সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সৈয়দপুর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট এস এম ওবায়দুর রহমান।