ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ১২ ডিসেম্বর ২০২৪

ইসলামে শ্রমিকের অধিকার

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:১৮:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অগাস্ট ২০১৮
  • / ৫১৬ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: তাসকিন জাহানইসলাম শ্রমিকদের সব সময় সহানু: ভূতির চোখে দেখে। কোনো শ্রমিককে সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ দিতে নিষেধ করে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তিকে তার শক্তি-সামর্থ্যরে অতিরিক্ত কষ্ট দেয়া যাবে না’ (সূরা বাকারা: ২৩২)। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কাজের লোকদের যে পরিমাণ হালকা কাজ দেবে, কিয়ামতের দিন তার ওজন সেভাবে হালকা গ্রহণ করা হবে।’ –তারগিব এভাবেই ইসলাম শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি শ্রমিককে কাজে নিয়োগের পূর্বে তার মজুরি নির্ধারণ করে দিতে বলেছে। এ বিষয়ে ইসলামের বিধান হলো, সম্মানজনকভাবে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করতে হবে। যেন ওই শ্রমিক তার নিজের ও পরিবারের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষেধ করেছেন, ‘বেতন-ভাতা সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করার পূর্বে কাজে নিয়োগ করতে’ (বায়হাকি)। রাসুল (সা.) শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণ করে নিয়োগের কথা বলার পর শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের নীতিমালাও ঠিক করে দিয়েছেন। ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর পূর্বেই তার মজুরি পরিশোধ করে দাও।’ -ইবনে মাজা। ইসলামের বিধান হলো, চুক্তি মোতাবেক শ্রমিকের বেতন- ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করা। বেতন নিয়ে কোনো ধরনের তালবাহানা মারাত্মক অপরাধ। এছাড়া ইসলাম শ্রমিককে পরিপূর্ণভাবে ছুটি লাভের অধিকার প্রদান করেছে। ইসলাম মনে করে, কাজের মাঝে ছুটি প্রদানের ফলে শ্রমিকরা কাজে উৎসাহ লাভ করে। ইসলামের দৃষ্টিতে চাকরির নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন শ্রমিক ও তার পরিবারের রিজিকের সঙ্গে জড়িত, বিষয়টি অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা অপরাধ সমতুল্য। এ ব্যাপারে কোরান ও হাদিসের মত হচ্ছে, শ্রমিকদের ছোটখাটো অপরাধগুলো সংশোধন করে তাদের কাজে স্থায়ীভাবে রাখা। হাদিসে আছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী করিমের (সা.) কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল, কাজের লোককে আমি কতবার ক্ষমা করব? তিনি চুপ রইলেন। সে পুনরায় তাকে প্রশ্ন করলে এবারো তিনি চুপ রইলেন। অতঃপর তৃতীয়বার প্রশ্ন করলে, তিনি জবাব দিলেন দৈনিক সত্তরবার ক্ষমা করবে। -আবু দাউদ। উপরোক্ত বিধান ছাড়াও ইসলাম শ্রমিকের ওভার টাইম ও বোনাস প্রদানের কথাও বলেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শক্তি-সামর্থ্যরে অতিরিক্ত কাজ শ্রমিকদের ওপর চাপাবে না। যদি কখনো কোনো অতিরিক্ত কাজ চাপাতে হয় তাহলে তাকে সাহায্য করবে। অর্থাৎ অতিরিক্ত বেতন-ভাতা প্রদান করবে।’-বোখারি

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ইসলামে শ্রমিকের অধিকার

আপলোড টাইম : ০৮:১৮:২২ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ৪ অগাস্ট ২০১৮

ধর্ম ডেস্ক: তাসকিন জাহানইসলাম শ্রমিকদের সব সময় সহানু: ভূতির চোখে দেখে। কোনো শ্রমিককে সাধ্যের অতিরিক্ত কাজ দিতে নিষেধ করে বলা হয়েছে, ‘কোনো ব্যক্তিকে তার শক্তি-সামর্থ্যরে অতিরিক্ত কষ্ট দেয়া যাবে না’ (সূরা বাকারা: ২৩২)। হাদিসে রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘তোমরা কাজের লোকদের যে পরিমাণ হালকা কাজ দেবে, কিয়ামতের দিন তার ওজন সেভাবে হালকা গ্রহণ করা হবে।’ –তারগিব এভাবেই ইসলাম শ্রমিকদের পাশে দাঁড়িয়ে শিশুশ্রম নিষিদ্ধ করার পাশাপাশি শ্রমিককে কাজে নিয়োগের পূর্বে তার মজুরি নির্ধারণ করে দিতে বলেছে। এ বিষয়ে ইসলামের বিধান হলো, সম্মানজনকভাবে শ্রমিকদের মজুরি নির্ধারণ করতে হবে। যেন ওই শ্রমিক তার নিজের ও পরিবারের মৌলিক চাহিদাগুলো পূরণ করতে পারে। এ প্রসঙ্গে হাদিসে আছে, রাসুলুল্লাহ (সা.) নিষেধ করেছেন, ‘বেতন-ভাতা সুস্পষ্টভাবে নির্ধারণ করার পূর্বে কাজে নিয়োগ করতে’ (বায়হাকি)। রাসুল (সা.) শ্রমিকদের বেতন নির্ধারণ করে নিয়োগের কথা বলার পর শ্রমিকদের বেতন পরিশোধের নীতিমালাও ঠিক করে দিয়েছেন। ইবনে ওমর (রা.) হতে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শ্রমিকের গায়ের ঘাম শুকানোর পূর্বেই তার মজুরি পরিশোধ করে দাও।’ -ইবনে মাজা। ইসলামের বিধান হলো, চুক্তি মোতাবেক শ্রমিকের বেতন- ভাতা যথাসময়ে পরিশোধ করা। বেতন নিয়ে কোনো ধরনের তালবাহানা মারাত্মক অপরাধ। এছাড়া ইসলাম শ্রমিককে পরিপূর্ণভাবে ছুটি লাভের অধিকার প্রদান করেছে। ইসলাম মনে করে, কাজের মাঝে ছুটি প্রদানের ফলে শ্রমিকরা কাজে উৎসাহ লাভ করে। ইসলামের দৃষ্টিতে চাকরির নিরাপত্তার বিষয়টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ একজন শ্রমিক ও তার পরিবারের রিজিকের সঙ্গে জড়িত, বিষয়টি অবহেলার দৃষ্টিতে দেখা অপরাধ সমতুল্য। এ ব্যাপারে কোরান ও হাদিসের মত হচ্ছে, শ্রমিকদের ছোটখাটো অপরাধগুলো সংশোধন করে তাদের কাজে স্থায়ীভাবে রাখা। হাদিসে আছে, হজরত আবদুল্লাহ ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, এক ব্যক্তি নবী করিমের (সা.) কাছে এসে জিজ্ঞেস করল, হে আল্লাহর রাসুল, কাজের লোককে আমি কতবার ক্ষমা করব? তিনি চুপ রইলেন। সে পুনরায় তাকে প্রশ্ন করলে এবারো তিনি চুপ রইলেন। অতঃপর তৃতীয়বার প্রশ্ন করলে, তিনি জবাব দিলেন দৈনিক সত্তরবার ক্ষমা করবে। -আবু দাউদ। উপরোক্ত বিধান ছাড়াও ইসলাম শ্রমিকের ওভার টাইম ও বোনাস প্রদানের কথাও বলেছে। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘শক্তি-সামর্থ্যরে অতিরিক্ত কাজ শ্রমিকদের ওপর চাপাবে না। যদি কখনো কোনো অতিরিক্ত কাজ চাপাতে হয় তাহলে তাকে সাহায্য করবে। অর্থাৎ অতিরিক্ত বেতন-ভাতা প্রদান করবে।’-বোখারি