অপরিণত বয়সের প্রেম : বিয়ের দাবিতে হোগলডাঙ্গায় ছেলের বাড়িতে
- আপলোড টাইম : ০৭:০৬:৪৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ২৮ জুলাই ২০১৮
- / ৯৩০ বার পড়া হয়েছে
কিশোরীর ৫ দিনের অবস্থান : অতঃপর থানা হেফাজতে!
রোকনুজ্জামান রোকন, ভালাইপুর প্রতিনিধি: চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার হোগলডাঙ্গায় অপরিণত বয়সের এক কলেজ ছাত্রের বাড়িতে বিয়ের দাবিতে ৫ দিন যাবত ছাত্রীর অবস্থানসহ অনশন। অতঃপর দামুড়হুদা মডেল থানায় পুলিশ হেফাজতে অপরিণত বয়সের দুই কিশোর-কিশোরী। তবে এই ঘটনায় ছেলের সাথে মেয়ের বিয়ের বন্ধ করার বিষয়ে সহায়তা করার শর্তে ছেলে পক্ষের নিকট থেকে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নেওয়ার ব্যাপক গুঞ্জন উঠেছে হোগলডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বশিরের বিরুদ্ধে। তবে টাকা নেওয়া বিষয়টি অস্বীকার করেছেন হোগলডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ বশির।
জানা যায়, চুয়াডাঙ্গা সদর উপজেলার আলুকদিয়া গ্রামের ট্রাক ড্রাইভার ইউনুস আলীর কলেজ পড়–য়া মেয়ের সাথে দামুড়হুদা হোগলডাঙ্গা গ্রামের আবেদ আলীর কলেজ পড়–য়া ছেলে শাকিলের সাথে সম্পর্ক গড়ে উঠে। এরই একপর্যায়ে মেয়েটি ওই ছেলের সাথে বিয়ের জন্য পীড়াপিড়ি করতে থাকে। এতে ছেলে রাজি না হওয়ায় গত ৫ দিন আগে কলেজ পড়–য়া ওই মেয়ে বিয়ের দাবিতে ছেলে শাকিলের বাড়িতে একটানা ৫দিন অবস্থান নেয়। ৫দিন যাবত মেয়েটি হোগলডাঙ্গায় ছেলের বাড়িতে অবস্থান নিলেও হোগলডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির পক্ষ থেকে কোন আইনানুগ ব্যবস্থাগ্রহন করা হয়নি বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ। অপ্রাপ্ত বয়স্ক ছেলে-মেয়ের বিয়ে আইনগতভাবে সম্ভব নয় জেনেও এঘটনা ৫দিন জিইয়ে রেখে মেয়ের সাথে ছেলের বিয়ে বন্ধের সহায়তা করার শর্তে ছেলে পক্ষের নিকট থেকে কৌশলে মোটা অংকের টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলেও ফাঁড়ি ইনচার্জ বশিরের বিরুদ্ধে একাধিক নির্ভরযোগ্য সূত্রের অভিযোগ রয়েছে।ছেলের ভগ্নিপতি আল-আমিন এই বিয়েতে কোনভাবেই রাজি না হওয়ায় অপরিণত বয়সের কিশোর-কিশোরীকে গোপনে বিয়ে দিতে তাদের পরিবারের সদস্যরা আলুকদিয়ার উদ্দেশ্যে রওনা দেয়। এসময় ছেলের ভগ্নিপতি পার্শবর্তী লক্ষিপুর ফাঁড়ি পুলিশকে শাকিলকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছে মর্মে মোবাইল ফোনে অভিযোগ করে। অপহরণের অভিযোগ পেয়ে লক্ষিপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সিদ্দিক পথিমধ্যে ছেলে-মেয়েকে আটক করে। আটকের পরে এসআই সিদ্দিক জানতে পারেন, আসলে এটা অপহরণের কোন ঘটনা নই, প্রেমঘটিত বিষয়। তারপর তিনি উর্ধতন কর্তৃপক্ষের সাথে কথা বলে ছেলে-মেয়েকে দামুড়হুদা মডেল থানা হেফাজতে পাঠিয়ে দেন। এবিষয়ে হোগলডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বশিরের জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি কোন টাকার লেনদেন করেনি। আমি বরং বিষয়টি সমাধান করার চেষ্টা করছি। ৫দিন ধরে একটি নাবালিকা মেয়ে এক নাবালক ছেলের বাড়িতে অবস্থান করছে আপনি কোন উদ্যোগ নেননি কেন? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে গেছেন।এবিষয়ে লক্ষিপুর ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই সিদ্দিকের সাথে কথা বললে তিনি জানান, আমি একটি অপহরণের অভিযোগ পেয়ে পথিমধ্যে তাদের আটক করেছি। আটকের পর জানতে পারি বিষয়টি প্রেমঘটিত। তখন আমি সঙ্গে সঙ্গে ওসি স্যারকে বিষয়টি জানায়। ওসি স্যার ছেলে মেয়েকে থানা হেফাজতে নেওয়ার নির্দেশ দেন। আমি থানা হেফাজতে প্রেরণ করি।
দামুড়হুদা মডেল থানার ওসি রাজশাহীতে অবস্থান করায় এবিষয়ে কথা হয় ওসি (তদন্ত) জিএম ইমদাদুল হকের সাথে। তিনি বলেন, অপ্রাপ্ত বয়সের একটি ছেলে ও একটি মেয়ে আমাদের হেফাজতে আছে। তাদের পরিবারের অভিভাবকদের সাথে আলোচনা করে তাদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। হোগলডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ এসআই বশিরের বিরুদ্ধে টাকা নেওয়ার অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এবিষয়ে আমার জানা নেই। আপনারা খোজ নিয়ে দেখতে পারেন।