নদ-নদীর সুরক্ষা ও ইসলাম
- আপলোড টাইম : ১০:১৭:১৫ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৬ জুলাই ২০১৮
- / ৩৩৩ বার পড়া হয়েছে
ধর্ম ডেস্ক: নদীমাতৃক বাংলাদেশে মানুষের জীবন সম্পূর্ণভাবে পানির ওপর নির্ভরশীল। নদ-নদীর পানিকে কেন্দ্র করেই গড়ে উঠেছে এদেশের মানুষের জীবনধারা। কিন্তু ভয়াবহ অস্তিত্ব সংকটে আমাদের দেশের নদ-নদীগুলো। পলি জমে প্রায় ৯৫টি নদী বিলুপ্তির পথে। এতে ভূ-প্রাকৃতিক ভারসাম্যের ওপর বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে আসার আশঙ্কা করছেন বিশেষজ্ঞরা। নদ-নদী শুকিয়ে যাওয়ায় শুকনো মৌসুমে দেশের বিভিন্ন এলাকায় ভূগর্ভস্থ পানির স্তর অনেক নিচে নেমে গেছে। প্রয়োজনে-অপ্রয়োজনে সেচ ও পানীয় জলের জন্য ভূগর্ভস্থের পানি তোলায় আর্সেনিকে ভয়াবহভাবে আক্রান্ত হচ্ছে দেশের বিভিন্ন এলাকার মানুষ। নদীগুলো শুকিয়ে যাওয়ায় বড় ধরনের বিপর্যয় নেমে এসেছে দেশের মৎস্য সম্পদ ও নৌপরিবহনে। নদ-নদী মূলত আল্লাহ সৃষ্ট মহান নিয়ামত। এই নিয়ামতের মাধ্যমে কেবল মানবজাতিকেই নয়, গোটা বিশ্বজাহানকে টিকিয়ে রেখেছেন মহান আল্লাহ। একদিন একটি মুহূর্তের জন্যও যদি পৃথিবীর বুক থেকে নদ-নদী আর সাগর উঠিয়ে নেয়া যায়, মুহূর্তের মাঝেই নিঃশেষ হয়ে যাবে সব কিছু। অহেতুক সৃষ্টি করা হয়নি এসব নদ-নদী। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরানে এরশাদ হচ্ছে, ‘এবং তিনি পৃথিবীতে সুদৃঢ় পর্বত স্থাপন করেছেন। যাতে পৃথিবী তোমাদের নিয়ে আন্দোলিত না হয় এবং স্থাপন করেছেন নদ-নদী ও পথ, যাতে তোমরা তোমাদের গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পার। আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি আকাশম-লী ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন, যিনি আকাশ থেকে পানি বর্ষণ করে তা দিয়ে তোমাদের জীবিকার জন্য ফলমূল উৎপাদন করেন, যিনি নৌযানকে তোমাদের অধীন করে দিয়েছেন যাতে তার বিধানে তা সমুদ্রে বিচরণ করে এবং তিনি তোমাদের কল্যাণে নিয়োজিত করেছেন নদীগুলো। অন্যত্র ইরশাদ হচ্ছে, তিনি পৃথিবীকে বিস্তৃৃত করেছেন এবং তার মধ্য থেকে পর্বত ও নদ-নদী সৃষ্টি করেছেন। তাই আমাদের উচিত কেবল মানবিক চাহিদা বা প্রয়োজন থেকে নয়, একজন খাঁটি মুসলমান হিসেবে প্রত্যেকটি নদ-নদীর সুষ্ঠু সংরক্ষণে ভূমিকা পালন করা। কোনোভাবে যেন আল্লাহসৃষ্ট এসব নদ-নদীর গতিরোধ না হয় কিংবা কোনো কারণেই যেন মৃত্যুবরণ না করতে হয় নদ-নদীগুলোকে। এ ব্যাপারে সক্রিয় ভূমিকা পালন করা আমাদের ইমানি দায়িত্ব। মনে রাখতে হবে, নদ-নদীগুলো আমাদের অযাচিত কর্মকা-ের ফলে হারিয়ে গেলে এর ভয়াবহ পরিণতি কিন্তু আমাদেরই ভোগ করতে হবে।