ইপেপার । আজ বুধবার, ১২ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

সান্নিধ্য গ্রহণে ইসলাম

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১২:১১:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৬
  • / ৪৮৪ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: মানুষ সামাজিক জীব, তাই বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই তাকে বিভিন্নজনের সঙ্গে মিশতে হয়। অনেকের সান্নিধ্য গ্রহণ করতে হয়। পার্থিব বৈধ প্রয়োজনে যে কোনো ধর্ম-বর্ণের মানুষের সঙ্গে মিশতে, লেনদেন করতে ইসলামে কোনো বিধি-নিষেধ নেই। তবে ইসলাম সৎ ও আদর্শবান মানুষের সঙ্গে মেশার প্রতি তাগিদ দিয়েছে। কথায় আছে, সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। সান্নিধ্যের প্রভাব মানুষের জীবনে অনস্বীকার্য। ভালো মানুষের সঙ্গে চললে এর সুপ্রভাব যেমন পড়ে তেমনি খারাপ মানুষের সঙ্গে চললে কুপ্রভাবও পড়ে। এজন্য প্রত্যেক মুমিনের প্রয়োজন এমন মানুষের সঙ্গে চলা যাতে কেয়ামতের দিন তা উত্তরণের জন্য সহায়ক হয়। একজন মুমিন-মুসলমান হিসেবে বন্ধু ও সারথি নির্বাচন করা এবং তাদের মধ্যে কী কী গুণের প্রয়োজন, এসব ব্যাপারে ইসলামে নির্দেশনা রয়েছে। পবিত্র কোরানে আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনরা যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কোনো কাফেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করে। যারা এমনটি করবে, আল্লাহ তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবেন না’ (আলে ইমরান-২৮)। ভালো কিংবা মন্দ বন্ধু গ্রহণের পরিণাম সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীতে যার সঙ্গে যার বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা রয়েছে, পরকালে তাদের সঙ্গেই তার হাশর-বিচার হবে।’ বিখ্যাত দার্শনিক ইমাম গাজ্জালী (রহ.) বলেছেন, ‘সবাইকে বন্ধু নির্বাচন করা যাবে না; বরং তিনটি স্বভাব যার মাঝে বিদ্যমান, এমন লোককে বন্ধু নির্বাচন করা চাই। তিনটি গুণ হলোÑ এক. বন্ধুকে হতে হবে জ্ঞানী, বিচক্ষণ। দুই. বন্ধুর চরিত্র হতে হবে সুন্দর ও মাধুর্যময়। তিন. বন্ধুকে হতে হবে নেককার, পুণ্যবান।’ মুমিনের সব কাজই আমল-ইবাদত। কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করাও একজন মুমিনের নাজাতের অসিলা হতে পারে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশে কাউকে ভালোবাসল, একমাত্র তার জন্যই কাউকে ঘৃণা করল, তারই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাউকে দান করল এবং তা থেকে বিরত থাকল; তবে নিঃসন্দেহে সে নিজ ইমানকে পূর্ণতা দান করল’ (আবু দাউদ)। নিজে সান্নিধ্য গ্রহণে যেমন যাচাই-বাছাই করবে তেমনি ছেলেমেয়েরা কাদের সঙ্গে মিশছে, কাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে সেই খবরও অভিভাবকদের রাখতে হবে। অসৎ সান্নিধ্যের কারণে সন্তান অসৎ পথে পা বাড়াতে পারে, তাই এ ব্যাপারে অভিভাবককে সচেতন হতে হবে। তাদের বুঝিয়ে প্রয়োজনে শাসন করে সৎ পথে ফেরাতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

সান্নিধ্য গ্রহণে ইসলাম

আপলোড টাইম : ১২:১১:৪৪ অপরাহ্ন, বুধবার, ১৯ অক্টোবর ২০১৬

ধর্ম ডেস্ক: মানুষ সামাজিক জীব, তাই বেঁচে থাকার প্রয়োজনেই তাকে বিভিন্নজনের সঙ্গে মিশতে হয়। অনেকের সান্নিধ্য গ্রহণ করতে হয়। পার্থিব বৈধ প্রয়োজনে যে কোনো ধর্ম-বর্ণের মানুষের সঙ্গে মিশতে, লেনদেন করতে ইসলামে কোনো বিধি-নিষেধ নেই। তবে ইসলাম সৎ ও আদর্শবান মানুষের সঙ্গে মেশার প্রতি তাগিদ দিয়েছে। কথায় আছে, সৎ সঙ্গে স্বর্গবাস অসৎ সঙ্গে সর্বনাশ। সান্নিধ্যের প্রভাব মানুষের জীবনে অনস্বীকার্য। ভালো মানুষের সঙ্গে চললে এর সুপ্রভাব যেমন পড়ে তেমনি খারাপ মানুষের সঙ্গে চললে কুপ্রভাবও পড়ে। এজন্য প্রত্যেক মুমিনের প্রয়োজন এমন মানুষের সঙ্গে চলা যাতে কেয়ামতের দিন তা উত্তরণের জন্য সহায়ক হয়। একজন মুমিন-মুসলমান হিসেবে বন্ধু ও সারথি নির্বাচন করা এবং তাদের মধ্যে কী কী গুণের প্রয়োজন, এসব ব্যাপারে ইসলামে নির্দেশনা রয়েছে। পবিত্র কোরানে আল্লাহ বলেন, ‘মুমিনরা যেন অন্য মুমিনকে ছেড়ে কোনো কাফেরকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ না করে। যারা এমনটি করবে, আল্লাহ তাদের সঙ্গে কোনো সম্পর্ক রাখবেন না’ (আলে ইমরান-২৮)। ভালো কিংবা মন্দ বন্ধু গ্রহণের পরিণাম সম্পর্কে রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘পৃথিবীতে যার সঙ্গে যার বন্ধুত্ব ও ভালোবাসা রয়েছে, পরকালে তাদের সঙ্গেই তার হাশর-বিচার হবে।’ বিখ্যাত দার্শনিক ইমাম গাজ্জালী (রহ.) বলেছেন, ‘সবাইকে বন্ধু নির্বাচন করা যাবে না; বরং তিনটি স্বভাব যার মাঝে বিদ্যমান, এমন লোককে বন্ধু নির্বাচন করা চাই। তিনটি গুণ হলোÑ এক. বন্ধুকে হতে হবে জ্ঞানী, বিচক্ষণ। দুই. বন্ধুর চরিত্র হতে হবে সুন্দর ও মাধুর্যময়। তিন. বন্ধুকে হতে হবে নেককার, পুণ্যবান।’ মুমিনের সব কাজই আমল-ইবাদত। কাউকে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করাও একজন মুমিনের নাজাতের অসিলা হতে পারে। রাসুল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর উদ্দেশে কাউকে ভালোবাসল, একমাত্র তার জন্যই কাউকে ঘৃণা করল, তারই সন্তুষ্টি অর্জনের জন্য কাউকে দান করল এবং তা থেকে বিরত থাকল; তবে নিঃসন্দেহে সে নিজ ইমানকে পূর্ণতা দান করল’ (আবু দাউদ)। নিজে সান্নিধ্য গ্রহণে যেমন যাচাই-বাছাই করবে তেমনি ছেলেমেয়েরা কাদের সঙ্গে মিশছে, কাদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করছে সেই খবরও অভিভাবকদের রাখতে হবে। অসৎ সান্নিধ্যের কারণে সন্তান অসৎ পথে পা বাড়াতে পারে, তাই এ ব্যাপারে অভিভাবককে সচেতন হতে হবে। তাদের বুঝিয়ে প্রয়োজনে শাসন করে সৎ পথে ফেরাতে হবে।