ইপেপার । আজ শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

চীনা প্রেসিডেন্টের সফরে কী পেল বাংলাদেশ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:০৬:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৬
  • / ৮৪২ বার পড়া হয়েছে

china-presidentসমীকরণ ডেস্ক: চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে দুদেশের সম্পর্ক নিয়ে যে রকম উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে তা অভূতপূর্ব। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে জানিয়েছেন, দুদেশের সম্পর্ক এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। চীনা প্রেসিডেন্টের কথায়, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক এক নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বন্ধু হিসেবে পাশে থাকতে চীন প্রস্তুত। তিনি বলেন, ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্কের পর্যায় থেকে দুদেশের সম্পর্ক এখন কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত হবে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দুদেশের মধ্যে ২৭টি নানা ধরনের চুক্তি এবং সমঝোতা হয়েছে। বলা হচ্ছে চীনা প্রেসিডেন্ট যে রকম বিপুল বিনিয়োগ নিয়ে এসেছেন এই সফরের সময় সেটা একটা রেকর্ড। দুদেশের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী চীন বাংলাদেশকে ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ দেবে বিভিন্ন খাতে। এর বেশিরভাগই অবকাঠামো খাতে। চীন আসলে বাংলাদেশের কোন কোন খাতে কী পরিমাণ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেথ এর মধ্যে কয়টি প্রকল্প আসলে এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়েছে? গতকাল বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেই শেখ হাসিনা এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আনুষ্ঠানিকভাবে ছয়টি প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম এবং খুলনায় দুটি বড় তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, যার একেকটির ক্ষমতাই হবে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে একটি টানেল তৈরির প্রকল্পেও অর্থ সহায়তা দিচ্ছে চীন। এছাড়া একটি সারকারখানা, ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট নামে একটি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে চীনা অর্থ সাহায্যে। চীন বাংলাদেশের উপকূলে গভীর সমুদ্রে একটি বন্দর নির্মাণেও আগ্রহী ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতের এ নিয়ে আপত্তি আছে। যার ফলে এই প্রকল্পটি নিয়ে কথাবার্তা আর এগোয়নি বলেই মনে করা হয়। চীনা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় এসেছেন চীনা ব্যবসায়ীদের একটি বড় প্রতিনিধি দলও। বাংলাদেশ বিনিয়োগে তারা কতটা উৎসাহী? বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষস্থানীয় সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মতলুব আহমেদ বলছেন, চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের ১৩টা চুক্তি হয়েছে। এই ১৩টি চুক্তিতে প্রায় এক হাজার তিনশ ষাট কোটি ডলার ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে। তিনি বলেন, এর মধ্যে সৌর বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে অবকাঠামো, রেলওয়েসহ নানা খাতের বিনিয়োগ ও ব্যবসা রয়েছে। মতলুব আহমেদ জানান, এর প্রতিদানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা চীনের কাছে কোটা ফ্রি এবং ডিউটি ফ্রি পণ্য রপ্তানির সুযোগ চেয়েছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

চীনা প্রেসিডেন্টের সফরে কী পেল বাংলাদেশ

আপলোড টাইম : ০১:০৬:২১ অপরাহ্ন, শনিবার, ১৫ অক্টোবর ২০১৬

china-presidentসমীকরণ ডেস্ক: চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের বাংলাদেশ সফরকে কেন্দ্র করে দুদেশের সম্পর্ক নিয়ে যে রকম উচ্ছ্বাস দেখা যাচ্ছে তা অভূতপূর্ব। প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ঢাকায় আনুষ্ঠানিক বৈঠক শেষে জানিয়েছেন, দুদেশের সম্পর্ক এক নতুন পর্যায়ে প্রবেশ করতে যাচ্ছে। চীনা প্রেসিডেন্টের কথায়, বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক এক নতুন ঐতিহাসিক অধ্যায়ের সূচনায়। বাংলাদেশের অর্থনৈতিক উন্নয়নে বন্ধু হিসেবে পাশে থাকতে চীন প্রস্তুত। তিনি বলেন, ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্কের পর্যায় থেকে দুদেশের সম্পর্ক এখন কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উন্নীত হবে। বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জানিয়েছেন, দুদেশের মধ্যে ২৭টি নানা ধরনের চুক্তি এবং সমঝোতা হয়েছে। বলা হচ্ছে চীনা প্রেসিডেন্ট যে রকম বিপুল বিনিয়োগ নিয়ে এসেছেন এই সফরের সময় সেটা একটা রেকর্ড। দুদেশের কর্মকর্তাদের তথ্য অনুযায়ী চীন বাংলাদেশকে ২৪ বিলিয়ন বা ২ হাজার ৪০০ কোটি ডলারের ঋণ দেবে বিভিন্ন খাতে। এর বেশিরভাগই অবকাঠামো খাতে। চীন আসলে বাংলাদেশের কোন কোন খাতে কী পরিমাণ বিনিয়োগ করতে যাচ্ছেথ এর মধ্যে কয়টি প্রকল্প আসলে এখনো পর্যন্ত চূড়ান্ত হয়েছে? গতকাল বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকেই শেখ হাসিনা এবং প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং আনুষ্ঠানিকভাবে ছয়টি প্রকল্প উদ্বোধন করেছেন। এর মধ্যে রয়েছে চট্টগ্রাম এবং খুলনায় দুটি বড় তাপ বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণ প্রকল্প, যার একেকটির ক্ষমতাই হবে ১ হাজার ৩২০ মেগাওয়াট। চট্টগ্রামে কর্ণফুলী নদীর তলদেশ দিয়ে একটি টানেল তৈরির প্রকল্পেও অর্থ সহায়তা দিচ্ছে চীন। এছাড়া একটি সারকারখানা, ন্যাশনাল ডাটা সেন্টার এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কনফুসিয়াস ইন্সটিটিউট নামে একটি গবেষণা কেন্দ্র স্থাপিত হচ্ছে চীনা অর্থ সাহায্যে। চীন বাংলাদেশের উপকূলে গভীর সমুদ্রে একটি বন্দর নির্মাণেও আগ্রহী ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের প্রতিবেশী ভারতের এ নিয়ে আপত্তি আছে। যার ফলে এই প্রকল্পটি নিয়ে কথাবার্তা আর এগোয়নি বলেই মনে করা হয়। চীনা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ঢাকায় এসেছেন চীনা ব্যবসায়ীদের একটি বড় প্রতিনিধি দলও। বাংলাদেশ বিনিয়োগে তারা কতটা উৎসাহী? বাংলাদেশে ব্যবসায়ীদের শীর্ষস্থানীয় সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের প্রেসিডেন্ট মতলুব আহমেদ বলছেন, চীনের ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে তাদের ১৩টা চুক্তি হয়েছে। এই ১৩টি চুক্তিতে প্রায় এক হাজার তিনশ ষাট কোটি ডলার ব্যবসা এবং বিনিয়োগের সম্ভাবনা আছে। তিনি বলেন, এর মধ্যে সৌর বিদ্যুৎ থেকে শুরু করে অবকাঠামো, রেলওয়েসহ নানা খাতের বিনিয়োগ ও ব্যবসা রয়েছে। মতলুব আহমেদ জানান, এর প্রতিদানে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীরা চীনের কাছে কোটা ফ্রি এবং ডিউটি ফ্রি পণ্য রপ্তানির সুযোগ চেয়েছেন।