ইপেপার । আজ শুক্রবার, ১৩ ডিসেম্বর ২০২৪

মেডিকেল রিপোর্ট এলেই চার্জশিট

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:৫৩:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০১৬
  • / ৪০০ বার পড়া হয়েছে

35517_f3

সমীকরণ ডেস্ক: সিলেটে কলেজছাত্রী খাদিজার ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনার চার্জশিট দ্রুতই আদালতে দিতে চায় পুলিশ। সেই লক্ষ্যেই পুলিশ কাজ শুরু করেছে। ঘটনার সব কিছু যেহেতু পরিষ্কার সে কারণে পুলিশ ন্যায়বিচারের স্বার্থেই চার্জশিট দ্রুততম সময়ে দাখিল করবে। সিলেট মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেডিকেল রিপোর্ট এলেই তারা আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন। তবে, মেডিকেল রিপোর্ট কবে নাগাদ আসতে পারে- সেটি নিশ্চিত হয়ে কিছু বলতে পারছেন না তারা। সাধারণত রোগী সুস্থ হওয়ার পরই মেডিকেল থেকে পুলিশকে রিপোর্ট প্রদান করা হয়। গত ৩রা অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে শাবি ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। ঘটনার পর থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খাদিজা আক্তার নার্গিস। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, এখনও শঙ্কামুক্ত নয় সে। এদিকে, খাদিজার উপর হামলার ঘটনায় এখন উত্তাল সিলেট। প্রতিদিনই পালিত হচ্ছে প্রতিবাদ কর্মসূচি। আর এসব কর্মসূচিতে এসে যোগ দিয়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। দাবি উঠেছে- মামলার দ্রুত বিচারের মাধ্যমে হামলাকারী বদরুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। ঘটনার পর দুই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল বদরুল আলম। সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে তাকে রিলিজ দেয়া হলে সিলেটের শাহপরান থানা পুলিশ বদরুলকে বুধবার আদালতে হাজির করে। সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বদরুল জানিয়েছে- ‘প্রেমে সাড়া না দেয়ায় খাদিজাকে কুপিয়েছে।’ দেশজুড়ে আলোচিত এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও ছবি রয়েছে পুুলিশের হাতে। বদরুলের জবানবন্দি রয়েছে। এর পাশাপাশি পুলিশ তিন ধাপে সাক্ষ্য নিচ্ছে। খাদিজার উপর হামলা চলাকালীন যারা ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিল, যারা বদরুলকে আটক করে এবং যারা খাদিজাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে তাদের সবার বক্তব্য সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করছে পুলিশ। এ প্রক্রিয়াও দ্রুততম সময়ে শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের দক্ষিণ জোনের কর্মকর্তারা। সিলেট নগর পুলিশের দক্ষিণ অংশের উপ-পুলিশ কমিশনার বাসুদেব বণিক গতকাল বিকালে জানিয়েছেন, পুলিশ তদন্ত শেষ করলেও মেডিকেল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। মেডিকেল রিপোর্ট হাতে এলে চার্জশিট প্রদান করা সম্ভব হবে। তিনি জানান, যেহেতু ঘটনাটি মর্মান্তিক এ কারণে পুলিশ ন্যায়বিচারের স্বার্থেই খাদিজার উপর হামলার ঘটনার চার্জশিট দাখিল করবে। এদিকে, হামলাকারী বদরুল আলম আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর পুলিশ এখন তদন্তের অন্যান্য কাজ শুরু করে দিয়েছে। মহানগর পুলিশের কমিশনার কামরুল আহসান সহ সিনিয়র কর্মকর্তা এ ঘটনার তদন্তের জন্য সিরিয়াস রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শাহপরান থানার এসি সাজ্জাদুল আলম। তিনি জানান, সাক্ষীদের বক্তব্য নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মেডিকেল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে, ঘটনাকালীন সময়ের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি ইতিমধ্যে তারা সংগ্রহ করেছেন। এসব ভিডিও ও ছবি আদালতে প্রেরণ করা হবে। তিনি বলেন, খাদিজার উপর হামলা মামলার তদন্তে পুলিশ কোনো গাফলাতি করছে না। বরং সুষ্ঠুভাবে তদন্ত সম্পন্ন করার পর দ্রুততম সময়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করবে। ওদিকে, পুলিশ ঘটনার দিনই খাদিজার উপর হামলায় যে চাপাতি ব্যবহার করা হয়েছিল সেটি জব্দ করেছে পুলিশ। ওই চাপাতি নগরীর আম্বরখানার একটি দোকান থেকে ঘটনার দিন বিকালেই কিনেছে বদরুল। এবং ওই চাপাতি দিয়ে সে খাদিজার উপর হামলা চালাতে গিয়েছিল। আর হামলার পর যখন পুলিশ ও স্থানীয়রা তার দিকে এগিয়ে আসে তখনও বদরুল চাপাতি রাস্তার পাশে ফেলে দিয়েছিল।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

মেডিকেল রিপোর্ট এলেই চার্জশিট

আপলোড টাইম : ০১:৫৩:৩৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ১২ অক্টোবর ২০১৬

35517_f3

সমীকরণ ডেস্ক: সিলেটে কলেজছাত্রী খাদিজার ওপর বর্বরোচিত হামলার ঘটনার চার্জশিট দ্রুতই আদালতে দিতে চায় পুলিশ। সেই লক্ষ্যেই পুলিশ কাজ শুরু করেছে। ঘটনার সব কিছু যেহেতু পরিষ্কার সে কারণে পুলিশ ন্যায়বিচারের স্বার্থেই চার্জশিট দ্রুততম সময়ে দাখিল করবে। সিলেট মহানগর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, মেডিকেল রিপোর্ট এলেই তারা আদালতে চার্জশিট দাখিল করবেন। তবে, মেডিকেল রিপোর্ট কবে নাগাদ আসতে পারে- সেটি নিশ্চিত হয়ে কিছু বলতে পারছেন না তারা। সাধারণত রোগী সুস্থ হওয়ার পরই মেডিকেল থেকে পুলিশকে রিপোর্ট প্রদান করা হয়। গত ৩রা অক্টোবর সিলেটের এমসি কলেজ ক্যাম্পাসে শাবি ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ডিগ্রি দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী খাদিজা আক্তার নার্গিসকে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। ঘটনার পর থেকে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন খাদিজা আক্তার নার্গিস। ডাক্তাররা জানিয়েছেন, এখনও শঙ্কামুক্ত নয় সে। এদিকে, খাদিজার উপর হামলার ঘটনায় এখন উত্তাল সিলেট। প্রতিদিনই পালিত হচ্ছে প্রতিবাদ কর্মসূচি। আর এসব কর্মসূচিতে এসে যোগ দিয়েছেন নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ। দাবি উঠেছে- মামলার দ্রুত বিচারের মাধ্যমে হামলাকারী বদরুলের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। ঘটনার পর দুই দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছিল বদরুল আলম। সুস্থ হওয়ার পর হাসপাতাল থেকে তাকে রিলিজ দেয়া হলে সিলেটের শাহপরান থানা পুলিশ বদরুলকে বুধবার আদালতে হাজির করে। সিলেটের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে দেয়া জবানবন্দিতে বদরুল জানিয়েছে- ‘প্রেমে সাড়া না দেয়ায় খাদিজাকে কুপিয়েছে।’ দেশজুড়ে আলোচিত এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ও ছবি রয়েছে পুুলিশের হাতে। বদরুলের জবানবন্দি রয়েছে। এর পাশাপাশি পুলিশ তিন ধাপে সাক্ষ্য নিচ্ছে। খাদিজার উপর হামলা চলাকালীন যারা ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিল, যারা বদরুলকে আটক করে এবং যারা খাদিজাকে হাসপাতালে নিয়ে গেছে তাদের সবার বক্তব্য সাক্ষী হিসেবে গ্রহণ করছে পুলিশ। এ প্রক্রিয়াও দ্রুততম সময়ে শেষ হয়ে যাবে বলে জানিয়েছেন পুলিশের দক্ষিণ জোনের কর্মকর্তারা। সিলেট নগর পুলিশের দক্ষিণ অংশের উপ-পুলিশ কমিশনার বাসুদেব বণিক গতকাল বিকালে জানিয়েছেন, পুলিশ তদন্ত শেষ করলেও মেডিকেল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। মেডিকেল রিপোর্ট হাতে এলে চার্জশিট প্রদান করা সম্ভব হবে। তিনি জানান, যেহেতু ঘটনাটি মর্মান্তিক এ কারণে পুলিশ ন্যায়বিচারের স্বার্থেই খাদিজার উপর হামলার ঘটনার চার্জশিট দাখিল করবে। এদিকে, হামলাকারী বদরুল আলম আদালতে জবানবন্দি দেয়ার পর পুলিশ এখন তদন্তের অন্যান্য কাজ শুরু করে দিয়েছে। মহানগর পুলিশের কমিশনার কামরুল আহসান সহ সিনিয়র কর্মকর্তা এ ঘটনার তদন্তের জন্য সিরিয়াস রয়েছেন বলে জানিয়েছেন শাহপরান থানার এসি সাজ্জাদুল আলম। তিনি জানান, সাক্ষীদের বক্তব্য নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি মেডিকেল রিপোর্টের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। তবে, ঘটনাকালীন সময়ের ভিডিও ফুটেজ ও ছবি ইতিমধ্যে তারা সংগ্রহ করেছেন। এসব ভিডিও ও ছবি আদালতে প্রেরণ করা হবে। তিনি বলেন, খাদিজার উপর হামলা মামলার তদন্তে পুলিশ কোনো গাফলাতি করছে না। বরং সুষ্ঠুভাবে তদন্ত সম্পন্ন করার পর দ্রুততম সময়ে আদালতে চার্জশিট দাখিল করবে। ওদিকে, পুলিশ ঘটনার দিনই খাদিজার উপর হামলায় যে চাপাতি ব্যবহার করা হয়েছিল সেটি জব্দ করেছে পুলিশ। ওই চাপাতি নগরীর আম্বরখানার একটি দোকান থেকে ঘটনার দিন বিকালেই কিনেছে বদরুল। এবং ওই চাপাতি দিয়ে সে খাদিজার উপর হামলা চালাতে গিয়েছিল। আর হামলার পর যখন পুলিশ ও স্থানীয়রা তার দিকে এগিয়ে আসে তখনও বদরুল চাপাতি রাস্তার পাশে ফেলে দিয়েছিল।