শব্দদূষণ রোধে ইসলাম
- আপলোড টাইম : ১২:২২:৫৮ অপরাহ্ন, মঙ্গলবার, ১১ অক্টোবর ২০১৬
- / ৪৫৬ বার পড়া হয়েছে
ধর্ম ডেস্ক: মানুষের জন্য এমন কোনো কাজ করা কখনো শোভনীয় নয় যাতে অন্য কষ্ট পায়। চিৎকার-চেঁচামেচি ও শোরগোল তথা শব্দদূষণ মানুষের চিন্তাকে বিক্ষিপ্ত করে, মনোযোগে বিঘœ ঘটায়। যারা মনোযোগের সঙ্গে মস্তিষ্কের কাজে মগ্ন থাকেন তাদের জন্য শব্দদূষণ একটি বিরক্তিকর বিষয়। সৃজনশীল ও উদ্ভাবনী মানুষের অনেক শ্রম পণ্ড করে দিতে পারে একটুখানি শব্দ। পড়াশোনা, লেখালেখিসংক্রান্ত কাজে যারা মগ্ন থাকেন শব্দের তীব্রতা তাদের কাজকেও প্রচণ্ডভাবে বাধাগ্রস্ত করে। মানুষের কষ্ট হয়, বিরক্তির উদ্রেক ঘটায় অথবা কাজে বাধা সৃষ্টি করে এমন যে কোনো কাজ ইসলামে নিষিদ্ধ। আল্লাহ বলেন, ‘আর তোমার চলার ক্ষেত্রে মধ্যপন্থা অবলম্বন কর, তোমার আওয়াজ নিচু কর; নিশ্চয় সবচেয়ে নিকৃষ্ট আওয়াজ হলো গাধার আওয়াজ।’ মুক্ত মনে কথা বলা, চিত্তবিনোদনের আয়োজন, অবসর সময় কাটানোর নানা ব্যবস্থা এসব কিছুর অধিকার মানুষের মৌলিকভাবে আছে। তবে মানুষের অধিকারের সীমারেখা হলো অন্যের অধিকার যেন নষ্ট না হয়। এমন কোনো অধিকার চর্চা করা যাবে না যা অন্যের অধিকারকে খর্ব করে। আপনি নিজের জায়গায় এমনভাবে ঘর নির্মাণ করতে পারবেন না যা অন্যের বসবাসের জন্য হুমকি হয়ে দাঁড়ায়। তেমনি টেলিভিশন, রেডিও ইত্যাদির অতিমাত্রায় আওয়াজ করাও বৈধ নয়। কারণ তা প্রতিবেশীর শান্তি বিনষ্ট করে কিংবা তাকে ঘাবড়ে দেয়। রাসুল (সা.) শব্দদূষণের ব্যাপারে অত্যন্ত সতর্ক ছিলেন। একবার তিনি মসজিদে এতেকাফ অবস্থায় ছিলেন। শুনতে পেলেন সাহাবায়ে কেরাম উচ্চস্বরে কোরান তেলাওয়াত করছেন। তখন তিনি পর্দা সরিয়ে বললেন, নিশ্চয়ই তোমরা প্রত্যেকে আল্লাহর পরিবেশে আছো। সুতরাং একে অপরকে কষ্ট দেবে না এবং কোরান তেলাওয়াতের সময় অথবা নামাজ পড়াকালীন একে অপর থেকে স্বরকে উঁচু করবে না। কোরানে বলা হয়েছে, ‘তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ডাক কাকুতি-মিনতি করে এবং অতি সংগোপনে। তিনি সীমা অতিক্রমকারীদের পছন্দ করেন না।’ আধুনিক যান্ত্রিক জীবনের এক দুঃসহ ও অবিচ্ছেদ্য ক্ষতিকর দিক হচ্ছে শব্দদূষণ। বর্তমানে এই শব্দদূষণ মারাত্মক আকার ধারণ করেছে। সবচেয়ে বেশি শব্দদূষণের শিকার রাজধানী ঢাকা। এই নগরীতে বাস করাই এখন কষ্টকর হয়ে গেছে। আমরা সবাই ইসলামকে আদর্শ হিসেবে ধারণ করলে শব্দদূষণের কবল থেকে রক্ষা পেতে পারি। কারো ডিস্টার্ব হয় এমন কোনো উঁচু শব্দ ইসলাম সমর্থন করে না।