সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত-পাকিস্তানকে সংযত আচরণের আহ্বান
- আপলোড টাইম : ১২:১০:৪১ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ৭ অক্টোবর ২০১৬
- / ৩৪০ বার পড়া হয়েছে
সমীকরণ ডেস্ক: কাশ্মিরে সেনা ঘাঁটিতে হামলা নিয়ে ভারত-পাকিস্তানের ভেতর উত্তেজনার মধ্যে পরমাণু শক্তিধর প্রতিবেশী দুই দেশকে সংযত আচরণ করার আহবান জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বৃহস্পতিবার সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী ভাষণে এ আহবান জানান তিনি। শেখ হাসিনা বলেন, ‘ভারত, পাকিস্তান- দুটি দেশকেই আমরা আহবান করব যে, তারা যেন সংযত আচরণ করে, কোনো উত্তেজনা যেন সৃষ্টি না হয়, যাতে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষগুলো কোনো রকম কষ্টে না পড়ে সেটাই আমরা চাই।’ ভারত শাসিত কাশ্মিরের উরি সেনা ঘাঁটিতে গত ১৮ সেপ্টেম্বর জঙ্গি হামলায় ১৯ সেনা নিহতের পর থেকে দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা চলছে। এরইমধ্যে গত ২৯ সেপ্টেম্বর ভারতীয় সেনাবাহিনী নিয়ন্ত্রণ রেখা অতিক্রম করে পাকিস্তানের সীমানায় ঢুকে জঙ্গি আস্তানায় অভিযান চালানোর দাবি করে। তবে পাকিস্তান সীমান্ত অতিক্রমের দাবি নাকচ করে দুই পক্ষে গোলাগুলি হয়েছে বলে পাকিস্তানের পক্ষ থেকে বলা হয়। এরপর থেকে কাশ্মির সীমান্তে ভারত ও পাকিস্তানের সৈন্যদের মধ্যে কয়েক দফায় গুলি বিনিময়ের ঘটনা ঘটেছে। এ প্রেক্ষাপটে পাকিস্তানে নভেম্বরে সার্ক সম্মেলনে যোগ না দেয়ার ঘোষণা দেয় ভারত। পরে বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানও সম্মেলনে না যাওয়ার ঘোষণা দিলে দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক সহযোগিতা সংস্থার শীর্ষ এ সম্মেলন বাতিল হয়। গত দুই দশকে কাশ্মিরে সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতী এই হামলা নিয়ে জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনেও উত্তাপ ছড়িয়েছে ভারত-পাকিস্তান। সংকট নিরসনে মধ্যস্থতার প্রস্তাব দিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি-মুন। প্রতিবেশী দুই দেশকে সংঘাত থেকে বিরত থাকার আহবান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘দক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি বজায় থাকুক। দক্ষিণ এশিয়ায় কোনো রকম সংঘাত হোক, কোনো রকম উত্তেজনা হোক, সেটা আমরা কখনো চাই না।’ এই অঞ্চলের এক দেশের সঙ্গে আরেক দেশের সংঘাত হলে বাংলাদেশও ক্ষতিগ্রস্ত হবে বলে জানান তিনি।
অপরাধীর সাজা হবেই : এছাড়া প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, তিনি কোনো দল দেখেন না। অপরাধীর কোনো দল থাকতে পারে না। অপরাধী যে-ই হোক, তার বিচার হবেই। বৃহস্পতিবার বিকেলে দশম সংসদের দ্বাদশ অধিবেশনের সমাপনী বক্তৃতায় সিলেটে ছাত্রলীগ নেতার চাপাতির কোপে ছাত্রী আহত হাওয়ার ঘটনা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, ‘আমি কোনো দল দেখি না। যে অপরাধী, তার বিচার হবেই।’ সিলেটের ছাত্রী খাদিজাকে কুপিয়ে গুরুতর জখমের ঘটনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ওই ঘটনার সময় সেখানে অনেক লোক উপস্থিত থাকলেও কেউ কেন এগিয়ে যায়নি? কেউ কি মেয়েটাকে রক্ষা করতে পারত না? মানুষের মানবিক মূল্যবোধ কেন এত কমে গেল?’ মেয়েটিকে রক্ষা করার জন্য কারও এগিয়ে না যাওয়ার ঘটনায় তিনি উদ্বেগ প্রকাশ করেন। গত সোমবার বিকালে সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা পরীক্ষার হল থেকে বের হওয়ার পর প্রকাশ্যে সিলেটের ছাত্রলীগ নেতা বদরুল আলম চাপাতি দিয়ে তাকে কুপিয়ে আহত করেন। বদরুল শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ও ছাত্রলীগের সহসম্পাদক। খাদিজা বর্তমানে স্কয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তার অবস্থা সংকটাপন্ন। ঘটনার পরই স্থানীয় জনতা বদরুলকে ধরে পুলিশের হাতে সোপর্দ করে। ইতোমধ্যে বদরুল ওই ঘটনার দায় স্বীকার করে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। ছাত্রলীগ নেতা বদরুলের ব্যাপারে সংসদ নেতা বলেন, অপরাধীকে ধরা হয়েছে এবং তার বিচার হবেই। সে দলের কোনো কাজ করেনি। কিন্তু কিছু পত্রিকা একে দলীয় হিসেবে প্রচার করার অপচেষ্টা করেছে।