ঝিনাইদহে বিদেশ থাকা পরিবারকে টার্গেট করে দেওয়া হচ্ছে হানা পুলিশকে ম্যানেজ করে একের পর এক ডাকাতি : প্রতিকার নেই
- আপলোড টাইম : ০৯:৪৪:১৯ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ২ অক্টোবর ২০১৬
- / ৪০১ বার পড়া হয়েছে
ঝিনাইদহ প্রতিনিধি: “তোর চার ছেলে বিদেশ থাকে। দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। নইলে বাড়ির মেয়েদেরকে নিয়ে যাব”। ডাকাতদলের এই কথায় গৃহস্থ জলিল মুন্সি ভয়ে ঘরে থাকা ৮০ হাজার টাকা তাদের হাতে তুলে দেয়। ঝিনাইদহ সদর উপজেলার পশ্চিম ঝিনাইদহ (মাধবপুর) গ্রামে অস্ত্রধারী ডাকাতদল হানা দিয়ে গত বৃহস্পতিবার ভোরে এ ভাবে ডাকাতি করেছে। এর কিছুদিন আগে একই এলাকার চন্ডিপুর ও লক্ষিপুর গ্রামে ডাকাতি হয়। সদর উপজেলার গান্না ইউনিয়নে চিহ্নত একটি অস্ত্রধারী গ্র“প এ ভাবে একের পর এক ডাকাতি করে যাচ্ছে, কিন্তু মানুষ কোন প্রতিকার পাচ্ছে না। পুলিশ আসে, অভিযোগ লিখে নিয়ে যায়। কিন্তু ডাকাতদলের সদস্যরা থেকে যায় অধরা। পশ্চিম ঝিনাইদহ (মাধবপুর) গ্রামের জলিল মুন্সি জানান, ঘটনার সময় তিনি স্ত্রী আনোয়ারা বেগমকে নিয়ে ঘরের বারান্দায় ঘুমিয়ে ছিলেন। ভোরের দিকে ১৫/২০ জনের একদল অস্ত্রধারী ডাকাতদল তার বাড়িতে প্রবেশ করে পানি পান করতে চায়। কাছে থাকা জাগ ও গ্লাস এগিয়ে দিতেই মাথার উপর অস্ত্র ধরে দুর্বৃত্তরা। তারা বলেতে থাকে “তোর চার ছেলে বিদেশ থাকে। দুই লাখ টাকা চাঁদা দিতে হবে। নইলে বাড়ির মেয়েদেরকে নিয়ে যাব”। ডাকাতদলের এ কথা শুনে তিনি ভীত সন্ত্রস্ত হয়ে পুত্রবধু কুলছুমকে ঘর খুলতে বলেন। ডাকাতরা ঘরের মধ্যে ঢুকে বাক্স খুলে নগদ ৮০ হাজার টাকা, দুইটি মোবাইল ও টর্চ লাইট নিয়ে চলে যায়। সকালে ঝিনাইদহ সদর উপজেলার বেতাই বাজারের পুলিশ ক্যাম্পে অভিযোগ দিয়ে আসেন তিনি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত কোন ফল নেই বলে জানান জলিল মুন্সি। তিনি অভিযোগ করেন, এলাকায় প্রতি রাতেই গরু চুরি হচ্ছে, চাঁদা ধরছে, ছিনতাই হচ্ছে। এতে গ্রামের মানুষ ভীত হয়ে পড়েছে। এ ব্যাপারে বেতাই বাজারের পুলিশ ক্যাম্পের আইসি তারিকুল ইসলাম তারেক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, ডাকাতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করা হচ্ছে। উল্লেখ্য গত রোববার একই এলাকার লক্ষিপুর গ্রামের কবীর, আবদুল ও সবুজের বাড়িতে হানা দেয়। তারা পরিবারের সদস্যদের জিম্মি করে স্বর্ণ, নগদ টাকাসহ ঘরের মালামাল লুট করে নিয়ে যায়। সকালে খবর পেয়ে সুমাইয়া ও সুন্দরী বেগম নামের দুই নারীকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করা হয়। তাদেরকে নির্যাতন করা হলেও ভয়ে মুখ খুলছেন না। এ ঘটনার পর পুলিশ চন্ডিপুর গ্রামের মহব্বত আলীর ছেলে আমির হোসেনকে আটক করে। কিন্তু তাকে ঝিনাইদহ সদর থানায় সোপর্দ করার নাম করে রাস্তার মধ্যে এনে সমঝোতা করে ছেড়ে দিয়েছে বলেও পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠেছে। তবে পুলিশ ছেড়ে দেওয়ার কথা অস্বীকার করেছে। এলাকাবাসির অভিযোগ সাবেক চরমপন্থী দলের সদস্যদের নিয়ে গোটা গান্না ইউনিয়নে একটি আস্ত্রধারী গ্র“প গড়ে উঠেছে। বেতাই ক্যাম্প পুলিশকে ম্যানেজ করে তারা বিভিন্ন অপকর্ম চালিয়ে গেলেও মানুষ কোন প্রতিকার পাচ্ছে না বলেও জানা গেছে।