ইপেপার । আজ রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চিরনিদ্রায় শায়িত সৈয়দ শামসুল হক

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০২:১৫:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ৫৬৫ বার পড়া হয়েছে

1475066772

সমীকরণ ডেস্ক: ‘পরানের গহীন ভিতর’ জাদুর রুমাল নেড়ে ছয় দশকের বেশি সময় বাংলা সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে সদর্পে বিচরণ করেছেন তিনি; সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বাংলার মানুষের কাছে শেষ বিদায় নিলেন সবার শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে। বুধবার বৃষ্টিভেজা সকালে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ; এসেছিলেন সরকারের মন্ত্রীরা, আমলারা, রাজনীতিবিদরা। বহু যুগের কলমযুদ্ধের সহযোদ্ধা, শিল্প-সাহিত?্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধি, আর ভক্ত, পাঠকথসবার হাতে ছিল শ্রদ্ধার ফুল। বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ লেখকের কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। সৈয়দ হকের স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হকের সঙ্গে কথা বলেন, সান্ত্বনা দেন। রাষ্ট্রপতির পর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা জানানোর পর কৈশোরের বন্ধু সৈয়দ হককে স্মরণ করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, মেট্রিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে পরিচয়। মৃত্যুর চার-পাঁচ দিন আগেও টেলিফোনে কথা হয়েছে। মনেপ্রাণে সাহিত্যিক ছিলেন। এর বাইরের কাজগুলো গৌন ছিল। মেধা এবং শ্রমের সাহায্যে অসাধারণ সাহিত্য নির্মাণ করেছেন। পরিমাণে যেমন বড়, গুণেও সমৃদ্ধ। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিত ঘোষ লেখক সৈয়দ শামসুল হককে বর্ণনা করেন রবীন্দ্রনাথের পরে বাংলা সাহিত্যের সর্বক্ষেত্রে বিচরণ করা একমাত্র লেখক হিসেবে। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার দেখায় সৈয়দ শামসুল হক ছিলেন ‘পরিপূর্ণ এক বাঙালি, পরিপূর্ণ এক মানুষ, পরিপূর্ণ এক সাহিত্যিক’, যিনি হাজার বছরের বাঙালির ইতিহাস নিজের কবিতায় বিবৃত করে গেছেন।
জন্মস্থান কুড়িগ্রামে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জানাজা শেষে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের দক্ষিণ দিকে সবুজ ধানখেতের পাশে কবিকে সমাহিত করা হয়। এর আগে বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে কবির মরদেহ কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কুড়িগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে কবির মরদেহ যৌথভাবে গ্রহণ করেন জেলা পরিষদের প্রশাসক জাফর আলী, জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন, কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র আবদুল জলিল, জেলা পুলিশ সুপার তবারক উল্লাহ ও কলেজের অধ্যক্ষ সাবিহা খাতুন। এ সময় কবির স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হক, ছেলে দ্বিতীয় সৈয়দ হক, পুত্রবধূ, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। হেলিকপ্টার থেকে কবির মরদেহ নামিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণে রাখা হয়। সেখানে সকাল থেকে অপেক্ষায় থাকা কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাটসহ আশপাশের এলাকা থেকে হাজারো মানুষ কবির মরদেহে শ্রদ্ধা জানান।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

চিরনিদ্রায় শায়িত সৈয়দ শামসুল হক

আপলোড টাইম : ০২:১৫:৫১ অপরাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬

1475066772

সমীকরণ ডেস্ক: ‘পরানের গহীন ভিতর’ জাদুর রুমাল নেড়ে ছয় দশকের বেশি সময় বাংলা সাহিত্যের সব ক্ষেত্রে সদর্পে বিচরণ করেছেন তিনি; সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হক বাংলার মানুষের কাছে শেষ বিদায় নিলেন সবার শ্রদ্ধা-ভালোবাসায় সিক্ত হয়ে। বুধবার বৃষ্টিভেজা সকালে ঢাকার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এসেছিলেন রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ; এসেছিলেন সরকারের মন্ত্রীরা, আমলারা, রাজনীতিবিদরা। বহু যুগের কলমযুদ্ধের সহযোদ্ধা, শিল্প-সাহিত?্য-সাংস্কৃতিক অঙ্গনের প্রতিনিধি, আর ভক্ত, পাঠকথসবার হাতে ছিল শ্রদ্ধার ফুল। বেলা ১১টা ২৫ মিনিটে রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ লেখকের কফিনে ফুল দিয়ে শেষ শ্রদ্ধা জানান। সৈয়দ হকের স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হকের সঙ্গে কথা বলেন, সান্ত্বনা দেন। রাষ্ট্রপতির পর প্রধানমন্ত্রীর পক্ষে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন তার সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মোহাম্মদ জয়নুল আবেদীন। প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী মাহবুবুল হক শাকিলও এ সময় উপস্থিত ছিলেন। শ্রদ্ধা জানানোর পর কৈশোরের বন্ধু সৈয়দ হককে স্মরণ করেন অধ্যাপক সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী। তিনি বলেন, মেট্রিক পরীক্ষা দিতে গিয়ে পরিচয়। মৃত্যুর চার-পাঁচ দিন আগেও টেলিফোনে কথা হয়েছে। মনেপ্রাণে সাহিত্যিক ছিলেন। এর বাইরের কাজগুলো গৌন ছিল। মেধা এবং শ্রমের সাহায্যে অসাধারণ সাহিত্য নির্মাণ করেছেন। পরিমাণে যেমন বড়, গুণেও সমৃদ্ধ। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক বিশ্বজিত ঘোষ লেখক সৈয়দ শামসুল হককে বর্ণনা করেন রবীন্দ্রনাথের পরে বাংলা সাহিত্যের সর্বক্ষেত্রে বিচরণ করা একমাত্র লেখক হিসেবে। কবি মুহম্মদ নূরুল হুদার দেখায় সৈয়দ শামসুল হক ছিলেন ‘পরিপূর্ণ এক বাঙালি, পরিপূর্ণ এক মানুষ, পরিপূর্ণ এক সাহিত্যিক’, যিনি হাজার বছরের বাঙালির ইতিহাস নিজের কবিতায় বিবৃত করে গেছেন।
জন্মস্থান কুড়িগ্রামে সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের দাফন সম্পন্ন হয়েছে। বুধবার বিকাল সাড়ে ৪টার দিকে জানাজা শেষে কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজের প্রধান ফটকের দক্ষিণ দিকে সবুজ ধানখেতের পাশে কবিকে সমাহিত করা হয়। এর আগে বেলা ৩টা ৫৫ মিনিটে ঢাকা থেকে হেলিকপ্টারে করে কবির মরদেহ কুড়িগ্রাম সরকারি কলেজ মাঠে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে কুড়িগ্রামবাসীর পক্ষ থেকে কবির মরদেহ যৌথভাবে গ্রহণ করেন জেলা পরিষদের প্রশাসক জাফর আলী, জেলা প্রশাসক খান মো. নুরুল আমিন, কুড়িগ্রাম পৌরসভার মেয়র আবদুল জলিল, জেলা পুলিশ সুপার তবারক উল্লাহ ও কলেজের অধ্যক্ষ সাবিহা খাতুন। এ সময় কবির স্ত্রী আনোয়ারা সৈয়দ হক, ছেলে দ্বিতীয় সৈয়দ হক, পুত্রবধূ, সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূরসহ অনেকেই উপস্থিত ছিলেন। হেলিকপ্টার থেকে কবির মরদেহ নামিয়ে কলেজ প্রাঙ্গণে রাখা হয়। সেখানে সকাল থেকে অপেক্ষায় থাকা কুড়িগ্রাম, রংপুর, লালমনিরহাটসহ আশপাশের এলাকা থেকে হাজারো মানুষ কবির মরদেহে শ্রদ্ধা জানান।