শরিয়তের মানদণ্ড ইজমা
- আপলোড টাইম : ১২:১৮:৪০ অপরাহ্ন, সোমবার, ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
- / ৫৯৫ বার পড়া হয়েছে
ধর্ম ডেস্ক: কোরান ও হাদিসে শরিয়তের কোনো বিষয়ের স্পষ্ট সমাধান পাওয়া না গেলে করণীয় কী, সে নির্দেশনাও ইসলামে রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যদি জানা না থাকে তবে অভিজ্ঞজনকে জিজ্ঞাসা কর (সূরা নাহল : ৪৩)। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর কালের আবর্তে মুজতাহিদ (গবেষক) সাহাবি, তাবেয়ি, তাবে তাবেয়ি এবং অপরাপর উলামায়ে কেরাম আল্লাহর ইলহাম অনুযায়ী কোরান ও হাদিস থেকে গবেষণা করে করে ইজমা ও কিয়াস নামক শরিয়তের আরো দুটি মূল ভিত্তি উদ্ভাবন করেছেন এবং এ ভিত্তি দুটির আলোকে সমস্যার সমাধান করে দীন পরিচালনা করে গেছেন। ইজমার আভিধানিক অর্থ ঐকমত্য। কোরান এবং সুন্নাহর পরেই ইজমার স্থান। ইজমা শরিয়তের তৃতীয় মানদণ্ড যা কোরান কিংবা হাদিস নয়, অথচ তা সব মুজতাহিদের মতে গ্রহণীয়। সত্যযুগের মুসলিম উম্মাহর মুজতাহিদদের শরিয়তের কোনো বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করাকে ইজমা বলে। তাছাড়া সত্যযুগের যেসব আলেমের একমত হওয়া গ্রহণযোগ্য সে সব আলেমের সর্বসম্মতিও ইজমা। আল্লাহ তায়ালা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর উম্মতকে এমন মর্যাদা দান করেছেন যে, এ উম্মতের বিশেষ মুমিন ব্যক্তিরা যদি কোনো বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করে তবে তাদের বিরোধিতা করা চরম পাপ। আল্লাহ তায়ালা বলেন, যে কেউ রাসুলের বিরোধিতা করে তার কাছে সরল পথ প্রকাশিত হওয়ার পর এবং মুমিনদের অনুসৃত পথের বিরুদ্ধে চলে, আমি তাকে ওই দিকেই ফেরাব যেদিক সে অবলম্বন করেছে এবং তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করব। আর তা নিকৃষ্ট গন্তব্যস্থান (সূরা নিসা: ১১৫)। পবিত্র কোরানের বিভিন্ন আয়াতে ইজমার প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে। আল্লাহ বলেন, আর তেমনি আমি তোমাদের মধ্যমপন্থি উম্মতে পরিণত করেছি, যাতে তোমরা মানুষের সাক্ষ্যদানকারী হতে পার (সূরা বাকারা: ১৪৩)। রাসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, মুসলিমরা যা ভালো মনে করে, তা আল্লাহর কাছেও ভালো। তিনি আরো বলেছেন, আমার উম্মতরা কোনো ভ্রান্ত বিষয়ে একমত হবে না। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর অনেক বিষয় সাহাবায়ে কেরামের ঐকমত্য বা ইজমা দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়। শরিয়তের যেসব সমস্যার সমাধান কোরান ও হাদিসে পাওয়া যেত না, প্রধান প্রধান সাহাবায়ে কেরাম অথবা সত্যযুগের মুজতাহিদরা সে সব বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করে ইজমার মাধ্যমে সেসব বিষয়ের সমাধান করতেন। তাই ইজমাকেও শরিয়তের মানদণ্ড মানতে হবে।