ইপেপার । আজ শনিবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৫

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধের সাজসাজ রব

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:১২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ৩৫৫ বার পড়া হয়েছে

image_1672_256723

সমীকরণ ডেস্ক: খালি করা হচ্ছে গ্রাম। মহড়া দিচ্ছে যুদ্ধবিমান। মজুত হচ্ছে বাড়তি সেনা, গোলাবারুদ। নিয়ন্ত্রণরেখার দু’পাড় বরাবর প্রস্তুতি জোরদার করছে পাকিস্তান ও ভারত দুদেশই এবং দুদেশই বলছে তাদের আশঙ্কা অন্যপক্ষ হামলা চালাতে পারে। গত দুদিন ধরেই ভারত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নিজেদের চৌকিতে অস্ত্রশস্ত্র মজুত করছে বলে সরব ছিল পাক প্রশাসন। এবার পরবর্তী পদক্ষেপে উরি এলাকার নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন গ্রামগুলো থেকে লোক সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে পাক সেনা। উরিতে সেনা ছাউনির বিপরীতে সীমান্ত পারে পাকিস্তানের জাওয়ন্দ বলে যে গ্রামটি রয়েছে খালি করে দেয়া হয়েছে সেটি। আপাতত ওই গ্রামের দখল নিয়েছে পাক সেনা। শুক্রবার থেকেই ইসলামাবাদের আকাশ চিরে উড়তে দেখা গিয়েছিল যুদ্ধবিমান এফ-১৬। আপৎকালীন ভিত্তিতে ওই বিমান রানওয়ের পরিবর্তে রাস্তায় নামতে পারে কি না, পাক বিমানবাহিনী তাও পরীক্ষা করে দেখেছে। ইসলামাবাদ-লাহোর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে চলে ওই প্রশিক্ষণ। পরে পাক বিমানবাহিনীর মুখপাত্র জাভেদ মহম্মদ আলি বলেন, ‘এই মহড়ার সঙ্গে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি রুটিন প্রক্রিয়া।’ বায়ুসেনা মুখপাত্র ওই কথা বললেও, দিল্লি অবশ্য একে যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবেই দেখছে। পাকিস্তানকে পাল্টা চাপে রাখতে এ দিন ভারতও মিরাজ ২০০০ বিমান থেকে পরীক্ষামূলকভাবে মিকা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকা নিশানায় সফলভাবে আঘাত করতে সমর্থ হয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র। ভারতীয় সেনাবাহিনীও বসে নেই। পরিস্থিতি সামলাতে ধর্মশালা থেকে বাড়তি এক ব্রিগেড সেনা উরিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে রাস্তা গিয়েছে, সেই রাস্তা ধরে শুরু হয়েছে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। নিরাপত্তার প্রয়োজনে গ্রামবাসী তো বটেই, এমনকি জম্মু-কাশ্মির পুলিশকেও উরি এলাকায় নিয়ন্ত্রণরেখার আশপাশে ঘেঁষতে দেয়া হচ্ছে না। জম্মু-কাশ্মিরের ডিজিপি (আইনশৃঙ্খলা) এসপি বৈদ বলেন, ‘উরি এলাকায় পাহাড়ের উঁচুতে বসে রয়েছে পাক সেনারা। অবস্থানগত এই ফায়দা নিয়েই সেনা ছাউনিতে হামলা করতে সুবিধে হয়েছে জঙ্গিদের।’ পুলিশের পক্ষ থেকেও কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে জানানো হয়, নিয়ন্ত্রণরেখায় ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ছে। কুপওয়ারার কাছে এ দিন নিয়ন্ত্রণরেখায় সন্দেহজনক গতিবিধি নজরে এলে গুলি চালায় বিএসএফ। ঘটনায় কেউ হতাহত না হওয়ায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। আবার জম্মুর আখনুর এলাকা থেকে এক পাক নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছে। সে লস্কর জঙ্গি বলে বিএসএফের দাবি। এরই মধ্যে শনিবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বারামুলাতে মারা যায় এক কিশোর। পরে তার মৃতদেহ ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা।
আবার পাক প্রশাসনের একাংশের বিশ্বাস, অন্যান্যবার জঙ্গি হামলার পরে সাময়িকভাবে যুদ্ধের জিগির ওঠে। পরে তা থিতিয়েও যায়। কিন্তু এবারে পরিস্থিতি ভিন্ন। খোদ পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও তাই জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যাওয়ার আগে পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের কাছে নিজের আশঙ্কা জানিয়ে গিয়েছেন। ইসলামাবাদের দাবি, নিয়ন্ত্রণরেখার নিকটবর্তী চৌকিগুলোতে ভারী অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ মোতায়েন করার কাজ শুরু করেছে ভারত। হামলার প্রস্তুতিতে মজুত করা হচ্ছে জ্বালানি তেল। পাক সংবাদ মাধ্যমে এমনও অভিযোগ করা হয়েছে যে, যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ভারত নিয়ন্ত্রণরেখায় বফর্স কামান, ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে। আর এই সামরিক প্রস্তুতি দেখভালের পেছনে রয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অভিযোগ নস্যাৎ করে গতকাল ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, উরি হামলার পর জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ করা গিয়েছে উপত্যকায়। একই সঙ্গে ভারতের চৌকি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে পাক সেনা। পাল্টা জবাব দিতেই ভারতকে নিয়ন্ত্রণরেখায় নিজের প্রস্তুতি বাড়াতে হচ্ছে। তার মানে এই নয়, ভারত যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বরং পাক হামলার আশঙ্কায় জম্মু-কাশ্মিরসহ গোটা পশ্চিম সীমান্তকে সতর্ক করেছে। সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছে পঞ্জাব, রাজস্থানের আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণরেখাতেও। সতর্ক করে দেয়া হয়েছে গুজরাত ও মহারাষ্ট্র সরকারকে।
নয়াদিল্লি মনে করছে, আসলে ভারতীয় সেনা হামলা করতে পারে বলে আগাম আশঙ্কায় ভুগছে পাকিস্তান। তাই আগেভাগেই গ্রামগুলো খালি করে কৌশলগত অবস্থান নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চাইছে। যাতে অতর্কিতে ভারতীয়দের হামলা রোখা সম্ভব হয়। তাদের এই সক্রিয়তা নিয়ে শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে কথা হয়েছে জম্মু-কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির। পরে কাশ্মিরের পরিস্থিতি নিয়ে রাজনাথের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরও। পরিস্থিতির দাবি মেনে প্রয়োজনে কাশ্মিরে সেনার গতিবিধি বাড়ানোর পক্ষেও একমত হন দুই মন্ত্রী। এরই মধ্যে গতকাল যৌথ মহড়ায় অংশ নিতে পাকিস্তানে পৌঁছায় রুশ সেনা। পাক অধিকৃত কাশ্মিরের গিলগিট, বালতিস্তানে ওই মহড়া হওয়ার কথা। সেই কারণে দুদিন আগে থেকেই ওই আকাশসীমায় বাণিজ্যিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রাশিয়ার এই পদক্ষেপে কূটনৈতিকভাবে অস্বস্তিতে ভারত। কারণ উরি হামলার পর বিদেশ মন্ত্রক দাবি করেছিল, মস্কোর পক্ষ থেকে ঘরোয়াভাবে জানানো হয় যে রুশ সেনা ওই যৌথ মহড়া বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারপরও রুশ সেনারা পাকিস্তানে যাওয়ায় দিল্লি কিছুটা অবাক। তবে তারা মুখে বলছে, দুদেশের যৌথ মহড়া আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। তাই সম্ভবত হচ্ছে। যেমন এ মুহূর্তে ভস্নাডিভোস্তকে রুশ সেনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী মোকাবেলায় যৌথ মহড়া করছে ভারতীয় সেনাও। অন্যদিকে দিল্লিকে কিছুটা কূটনৈতিক স্বস্তি দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। বালুচিস্তানে দমনপীড়ন বন্ধ না করলে অর্থনৈতিক অবরোধ চাপানো হবে বলে তারা সতর্ক করেছে পাকিস্তানকে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

ভারত-পাকিস্তান সীমান্তে যুদ্ধের সাজসাজ রব

আপলোড টাইম : ০১:১২:২০ অপরাহ্ন, রবিবার, ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৬

image_1672_256723

সমীকরণ ডেস্ক: খালি করা হচ্ছে গ্রাম। মহড়া দিচ্ছে যুদ্ধবিমান। মজুত হচ্ছে বাড়তি সেনা, গোলাবারুদ। নিয়ন্ত্রণরেখার দু’পাড় বরাবর প্রস্তুতি জোরদার করছে পাকিস্তান ও ভারত দুদেশই এবং দুদেশই বলছে তাদের আশঙ্কা অন্যপক্ষ হামলা চালাতে পারে। গত দুদিন ধরেই ভারত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নিজেদের চৌকিতে অস্ত্রশস্ত্র মজুত করছে বলে সরব ছিল পাক প্রশাসন। এবার পরবর্তী পদক্ষেপে উরি এলাকার নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন গ্রামগুলো থেকে লোক সরানোর প্রক্রিয়া শুরু করেছে পাক সেনা। উরিতে সেনা ছাউনির বিপরীতে সীমান্ত পারে পাকিস্তানের জাওয়ন্দ বলে যে গ্রামটি রয়েছে খালি করে দেয়া হয়েছে সেটি। আপাতত ওই গ্রামের দখল নিয়েছে পাক সেনা। শুক্রবার থেকেই ইসলামাবাদের আকাশ চিরে উড়তে দেখা গিয়েছিল যুদ্ধবিমান এফ-১৬। আপৎকালীন ভিত্তিতে ওই বিমান রানওয়ের পরিবর্তে রাস্তায় নামতে পারে কি না, পাক বিমানবাহিনী তাও পরীক্ষা করে দেখেছে। ইসলামাবাদ-লাহোর জাতীয় সড়ক বন্ধ করে চলে ওই প্রশিক্ষণ। পরে পাক বিমানবাহিনীর মুখপাত্র জাভেদ মহম্মদ আলি বলেন, ‘এই মহড়ার সঙ্গে ভারত-পাকিস্তানের সাম্প্রতিক উত্তেজনার কোনো সম্পর্ক নেই। এটি রুটিন প্রক্রিয়া।’ বায়ুসেনা মুখপাত্র ওই কথা বললেও, দিল্লি অবশ্য একে যুদ্ধের প্রস্তুতি হিসেবেই দেখছে। পাকিস্তানকে পাল্টা চাপে রাখতে এ দিন ভারতও মিরাজ ২০০০ বিমান থেকে পরীক্ষামূলকভাবে মিকা ক্ষেপণাস্ত্র ছুড়েছে। দৃষ্টিসীমার বাইরে থাকা নিশানায় সফলভাবে আঘাত করতে সমর্থ হয়েছে এই ক্ষেপণাস্ত্র। ভারতীয় সেনাবাহিনীও বসে নেই। পরিস্থিতি সামলাতে ধর্মশালা থেকে বাড়তি এক ব্রিগেড সেনা উরিতে পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। পাশাপাশি নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর যে রাস্তা গিয়েছে, সেই রাস্তা ধরে শুরু হয়েছে সুড়ঙ্গ খোঁড়ার কাজ। নিরাপত্তার প্রয়োজনে গ্রামবাসী তো বটেই, এমনকি জম্মু-কাশ্মির পুলিশকেও উরি এলাকায় নিয়ন্ত্রণরেখার আশপাশে ঘেঁষতে দেয়া হচ্ছে না। জম্মু-কাশ্মিরের ডিজিপি (আইনশৃঙ্খলা) এসপি বৈদ বলেন, ‘উরি এলাকায় পাহাড়ের উঁচুতে বসে রয়েছে পাক সেনারা। অবস্থানগত এই ফায়দা নিয়েই সেনা ছাউনিতে হামলা করতে সুবিধে হয়েছে জঙ্গিদের।’ পুলিশের পক্ষ থেকেও কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতিকে জানানো হয়, নিয়ন্ত্রণরেখায় ক্রমশ উত্তেজনা বাড়ছে। কুপওয়ারার কাছে এ দিন নিয়ন্ত্রণরেখায় সন্দেহজনক গতিবিধি নজরে এলে গুলি চালায় বিএসএফ। ঘটনায় কেউ হতাহত না হওয়ায় তল্লাশি অভিযান শুরু হয়েছে। আবার জম্মুর আখনুর এলাকা থেকে এক পাক নাগরিক গ্রেপ্তার হয়েছে। সে লস্কর জঙ্গি বলে বিএসএফের দাবি। এরই মধ্যে শনিবার পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে বারামুলাতে মারা যায় এক কিশোর। পরে তার মৃতদেহ ঘিরে বিক্ষোভ দেখায় উত্তেজিত জনতা।
আবার পাক প্রশাসনের একাংশের বিশ্বাস, অন্যান্যবার জঙ্গি হামলার পরে সাময়িকভাবে যুদ্ধের জিগির ওঠে। পরে তা থিতিয়েও যায়। কিন্তু এবারে পরিস্থিতি ভিন্ন। খোদ পাক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফও তাই জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে যাওয়ার আগে পাক সেনাপ্রধান রাহিল শরিফের কাছে নিজের আশঙ্কা জানিয়ে গিয়েছেন। ইসলামাবাদের দাবি, নিয়ন্ত্রণরেখার নিকটবর্তী চৌকিগুলোতে ভারী অস্ত্রশস্ত্র, গোলাবারুদ মোতায়েন করার কাজ শুরু করেছে ভারত। হামলার প্রস্তুতিতে মজুত করা হচ্ছে জ্বালানি তেল। পাক সংবাদ মাধ্যমে এমনও অভিযোগ করা হয়েছে যে, যুদ্ধের প্রস্তুতিতে ভারত নিয়ন্ত্রণরেখায় বফর্স কামান, ব্রহ্মস ক্ষেপণাস্ত্র পাঠাচ্ছে। আর এই সামরিক প্রস্তুতি দেখভালের পেছনে রয়েছেন খোদ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। অভিযোগ নস্যাৎ করে গতকাল ভারতের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানিয়েছে, উরি হামলার পর জঙ্গি তৎপরতা বৃদ্ধির প্রবণতা লক্ষ করা গিয়েছে উপত্যকায়। একই সঙ্গে ভারতের চৌকি লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ছে পাক সেনা। পাল্টা জবাব দিতেই ভারতকে নিয়ন্ত্রণরেখায় নিজের প্রস্তুতি বাড়াতে হচ্ছে। তার মানে এই নয়, ভারত যুদ্ধের জন্য তৈরি হচ্ছে। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক বরং পাক হামলার আশঙ্কায় জম্মু-কাশ্মিরসহ গোটা পশ্চিম সীমান্তকে সতর্ক করেছে। সুরক্ষা বাড়ানো হয়েছে পঞ্জাব, রাজস্থানের আন্তর্জাতিক নিয়ন্ত্রণরেখাতেও। সতর্ক করে দেয়া হয়েছে গুজরাত ও মহারাষ্ট্র সরকারকে।
নয়াদিল্লি মনে করছে, আসলে ভারতীয় সেনা হামলা করতে পারে বলে আগাম আশঙ্কায় ভুগছে পাকিস্তান। তাই আগেভাগেই গ্রামগুলো খালি করে কৌশলগত অবস্থান নিয়ে যুদ্ধের প্রস্তুতি শুরু করে দিতে চাইছে। যাতে অতর্কিতে ভারতীয়দের হামলা রোখা সম্ভব হয়। তাদের এই সক্রিয়তা নিয়ে শনিবার ভারতের কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী রাজনাথ সিংহের সঙ্গে কথা হয়েছে জম্মু-কাশ্মিরের মুখ্যমন্ত্রী মেহবুবা মুফতির। পরে কাশ্মিরের পরিস্থিতি নিয়ে রাজনাথের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী মনোহর পর্রীকরও। পরিস্থিতির দাবি মেনে প্রয়োজনে কাশ্মিরে সেনার গতিবিধি বাড়ানোর পক্ষেও একমত হন দুই মন্ত্রী। এরই মধ্যে গতকাল যৌথ মহড়ায় অংশ নিতে পাকিস্তানে পৌঁছায় রুশ সেনা। পাক অধিকৃত কাশ্মিরের গিলগিট, বালতিস্তানে ওই মহড়া হওয়ার কথা। সেই কারণে দুদিন আগে থেকেই ওই আকাশসীমায় বাণিজ্যিক বিমান চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। রাশিয়ার এই পদক্ষেপে কূটনৈতিকভাবে অস্বস্তিতে ভারত। কারণ উরি হামলার পর বিদেশ মন্ত্রক দাবি করেছিল, মস্কোর পক্ষ থেকে ঘরোয়াভাবে জানানো হয় যে রুশ সেনা ওই যৌথ মহড়া বাতিলের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারপরও রুশ সেনারা পাকিস্তানে যাওয়ায় দিল্লি কিছুটা অবাক। তবে তারা মুখে বলছে, দুদেশের যৌথ মহড়া আগে থেকেই ঠিক করা ছিল। তাই সম্ভবত হচ্ছে। যেমন এ মুহূর্তে ভস্নাডিভোস্তকে রুশ সেনার সঙ্গে সন্ত্রাসবাদী মোকাবেলায় যৌথ মহড়া করছে ভারতীয় সেনাও। অন্যদিকে দিল্লিকে কিছুটা কূটনৈতিক স্বস্তি দিয়েছে ইউরোপীয় পার্লামেন্ট। বালুচিস্তানে দমনপীড়ন বন্ধ না করলে অর্থনৈতিক অবরোধ চাপানো হবে বলে তারা সতর্ক করেছে পাকিস্তানকে।