চুয়াডাঙ্গা মধুখালীর মাঠে পাটকাঠি ও কলাগাছ ফেলে লাটাহাম্বারের গতিরোধ বোমার আঘাতে গরুব্যাপারি ভুলু নিহত : আহত ১৬ ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকায় পুলিশ র্যাব ও বিজিবির সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত
- আপলোড টাইম : ০২:০৮:০০ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৬
- / ৪৩৩ বার পড়া হয়েছে
শহর প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গা মুন্সিগঞ্জ মধুখালীর মাঠে আবারও দুধর্ষ ডাকাত দলের হানায় কালু (২৮) নামের এক গরু ব্যবসায়ী নিহত ও কমপক্ষে ১৬জন গুরুতর জখম হয়েছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত আনুমানিক সাড়ে ৮টার দিকে চুয়াডাঙ্গার আলমডাঙ্গা উপজেলার মধুখালির মাঠে এ ঘটনাটি ঘটে। নিহত কালু মুন্সিগঞ্জ নতিডাঙ্গা গ্রামের শেখ পাড়ার রবুর ছেলে। আহতরা হলেন, চুয়াডাঙ্গা হাটবোয়ালিয়ার বৈদ্দ্যনাথপুর গ্রামের শেখ পাড়ার মৃত মিরাজুলের ছেলে হানিফ (২৮), আলমডাঙ্গা উপজেলার নতিডাঙ্গা গ্রামের ২নং ওয়ার্ডের মাদ্রাসা পাড়ার শাহাবুদ্দিনের ছেলে টরিক (২৬), একই গ্রামের বদরউদ্দীনের ছেলে মিল্কী (৩৫), শাহাবুদ্দীনের ছেলে আজিজুল (৩২), ঠান্ডু মালিতার ছেলে ডা: জিয়াউর রহমান (৩৩), চাদ আলীর ছেলে বাবুল আক্তার (৩৬), বিলায়েতের ছেলে হারেজ (৩০), নবীছদ্দীনের দুই ছেলে ওয়াজ (২৮) ও ড্রাইভার ওহিদ (৩০), মৃত বারেকের ছেলে একরামুল (৪০), উম্মাদ আলীর ছেলে সিরাজুল (৩৪), কালু (৩০), বদরউদ্দীন (৬১), জোব্বার (৪৫), ওহিদের ছেলে নূহু (৩৫) ও নিহত ভুলুর বড় ভাই নালু। এরমধ্যে বাবুল আক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় জরুরী বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা: রাজিবুল হক তাকে রাজশাহী মেডিকেলে রেফার্ড করেন। জানা যায়, গতকাল রাত সাড়ে ৮টার দিকে একটি লাটা হাম্বারযোগে শিয়ালমারি গরুর হাট থেকে গরু বিক্রি করে ১৫/২০ জন গরু ব্যবসায়ী নিজ বাড়ি নতিডাঙ্গায় ফিরছিলেন। পথিমধ্যে তারা মধুখালী মাঠে পৌঁছালে দেখে কারা যেন রাস্তায় পাটকাঠি ও কলাগাছ ফেলে রেখেছে। পরে লাটাহাম্বারে থাকা গরু ব্যবসায়ীরা কিছু বুঝে ওঠার আগেই ২০-২৫ মুখোশধারী ডাকাত তাদেরকে ঘিরে ফেলে যার কাছে যা আছে সব বের করে দিতে বলে। এসময় সবাই টাকা দিতে না চাইলে ও গরু ব্যবসায়ীরা ডাক চিৎকার দিলে ডাকাতেরা বেশ কয়েকটি বোমার বিস্ফোরণ ঘটিয়ে দেশীয় অস্ত্র, হেসো ও রামদা দিয়ে কুপিয়ে গরু ব্যবসায়ী হানিফের কাছে থাকা ৫০ হাজার, মিল্কীর ৫ লক্ষ, জিয়াউর রহমানের ৮৫ হাজার, আজিজুলের ৩লক্ষ ৮০হাজার টাকা ছিনিয়ে নিয়ে পালিয়ে যায়। অন্যদের নিকট থেকে কত টাকা ছিনতাই হয়েছে তা তাৎক্ষনিকভাবে জানা সম্ভব হয়নি। এ খবর পেয়ে স্থানীয়রা ঘটনাস্থলে এসে আহতদের উদ্ধার করে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করলে ভুলুকে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষনা করেন। গুরুতর আহত বাবুল আক্তারের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজে রেফার্ড এবং হানিফ, টরিক, মিল্কী, আজিজুল, ডা: জিয়াউর রহমানকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এছাড়াও লাটাহাম্বার ড্রাইভার ওহিদ তার ভাই ওয়াজ, একরামুল, সিরাজ, কালু, বদর, নুহ এবং নিহত ভুলুর বড় ভাই নালুসহ আহতরা স্থানীয় একটি চিকিৎসা কেন্দ্রে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
এ ঘটনায় আহত গরু ব্যবসায়ী পশু চিকিৎসক ডা: জিয়াউর রহমান এই প্রতিবেদক ও পুলিশকে জানান, আমরা রাতে সব সময় বোয়ালমারি হয়ে বাড়ি ফিরি। রাতে মধুখালি হয়ে চলাচলে পুলিশের বারন থাকলেও ড্রাইভার ওহিদ কেন এদিকে গেল তা নিয়ে আমাদের মনে প্রশ্ন রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এ পথে যাবার আগে ড্রাইভার ওহিদ নাকি মুন্সিগঞ্জ ফাঁড়ির এসআই তরিকুলের সাথে কথা বলে নিশ্চিত হয়েছিল। তবুও কেন এমন ঘটনা ঘটল তা নিয়েও আমাদের প্রশ্ন। স্থানীয় ও প্রতক্ষদর্শীরা বলেন, ঘটনার পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে এসে পালিয়ে যাওয়া ডাকাতদলের দিকে টর্চ না মেরে আহতদের দিকে লাইট ধরে থাকেন। এ নিয়েও স্থানীয়দের মধ্যে তীব্র সমালোচনার ঝড় বইছে।
এ ঘটনার সংবাদ পেয়ে চুয়াডাঙ্গা পুলিশ সুপার রশীদুল হাসান চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে আহতদের দেখতে আসেন ও ঘটনার বিস্তারিত বর্ণনা শুনে ডাকাতদের দ্রুত গ্র্রেফতারে পুলিশী অভিযান পরিচালনার নির্দেশ দেন। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত ডাকাতদলটিকে গ্রেফতারে ঘটনাস্থলের আশপাশ এলাকা পুলিশ, র্যাব ও বিজিবি ঘিরে রেখে সাঁড়াশি অভিযান অব্যাহত রেখেছে এবং এই অভিযান আজ সকাল পর্যন্ত চলবে বলে নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে।