ইপেপার । আজ রবিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৫

কোরবানির মহান শিক্ষা

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:১২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ৫৭৭ বার পড়া হয়েছে

ধর্ম ডেস্ক: পশু কোরবানির মাধ্যমে আমরা পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করেছি। এক বছর পর আবার আমাদের সামনে এই কোরবানির সুযোগ আসবে। তবে এই কোরবানির যে শিক্ষা তা সারা বছরই কাজে লাগবে। নিছক পশু জবাই আর তা দিয়ে ভূরিভোজের জন্যই আল্লাহ এই কোরবানির বিধান দেননি। এর মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে নিজের কাছে টেনে নেন। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যই কোরবানি। এই ইবাদতের মাধ্যমে বান্দা তার প্রভুর দরবারে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। দুনিয়ার সবকিছু থেকে বিমুখ হয়ে একমাত্র আল্লাহকে পাওয়ার সাধনাই হলো এই কোরবানি। আর সেই সাধনা বছরের শুধু একদিনই নয়, সারা বছরই দরকার। সবকিছুর উপরে আল্লাহর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দেয়া বান্দার কর্তব্য। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বান্দার গোলামি প্রকাশ পায়, প্রভুর জন্য তার ভালোবাসা ও ত্যাগের মাত্রা নির্ণীত হয়। আল্লাহর দান আল্লাহকে ফিরিয়ে দিতে আমরা কতটা প্রস্তুত এরই একটি ক্ষুদ্র পরীক্ষা হলো কোরবানি। আমাদের জীবনসম্পদ আল্লাহর কাছে উৎসর্গ করার প্রতিশ্রুতিই গ্রহণ করি কোরবানির মাধ্যমে। পশু কোরবানির সময় আমরা বলে থাকি, ‘আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু সারা জাহানের রব আল্লাহর জন্য।’ (সুরা আনআম-১৬২)। আমাদের জীবন ও সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ। এ দুটো জিনিস আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করাই ইমানের অপরিহার্য দাবি এবং জান্নাত লাভের পূর্বশর্ত। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনের জীবন ও সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন।’ (সুরা তওবা-১১০)। সুতরাং আল্লাহর দেয়া জীবন ও সম্পদ তার রাস্তায় ব্যয় করার ক্ষেত্রে কোনো কার্পণ্য করা সমীচীন নয়। কোরবানির বড় শিক্ষা হচ্ছে তাকওয়া বা খোদাভীতি। কে আল্লাহকে ভয় করে পশু জবাইয়ের মাধ্যমে তার সান্নিধ্য লাভের চেষ্টা করেছে সেটাই তিনি দেখেন। আর এই তাকওয়াই হলো মুমিন জীবনের অনন্ত পাথেয়। কারো জীবনে তাকওয়ার পাথেয় থাকলে তার আর কোনো কিছুর কমতি নেই। এই তাকওয়া দ্বারাই সে দুনিয়া ও আখেরাতের সব ধাপ অতিক্রম করতে পারবে। তাকওয়ার দ্বারা সুন্দর হয় ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র। দুনিয়ার আর কেউ দেখুক আর না দেখুক আমি কী করছি সেটা আল্লাহ দেখছেন সেই অনুভূতিই মানুষকে সঠিক পথে চলতে সহায়তা করে। আর এই অনুভূতি জাগ্রত করে কোরবানি।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

কোরবানির মহান শিক্ষা

আপলোড টাইম : ০১:১২:০৬ অপরাহ্ন, বুধবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০১৬

ধর্ম ডেস্ক: পশু কোরবানির মাধ্যমে আমরা পবিত্র ঈদুল আজহা উদযাপন করেছি। এক বছর পর আবার আমাদের সামনে এই কোরবানির সুযোগ আসবে। তবে এই কোরবানির যে শিক্ষা তা সারা বছরই কাজে লাগবে। নিছক পশু জবাই আর তা দিয়ে ভূরিভোজের জন্যই আল্লাহ এই কোরবানির বিধান দেননি। এর মাধ্যমে আল্লাহ বান্দাকে আরো ঘনিষ্ঠভাবে নিজের কাছে টেনে নেন। আল্লাহকে সন্তুষ্ট করার জন্যই কোরবানি। এই ইবাদতের মাধ্যমে বান্দা তার প্রভুর দরবারে নিঃশর্ত আত্মসমর্পণ করে। দুনিয়ার সবকিছু থেকে বিমুখ হয়ে একমাত্র আল্লাহকে পাওয়ার সাধনাই হলো এই কোরবানি। আর সেই সাধনা বছরের শুধু একদিনই নয়, সারা বছরই দরকার। সবকিছুর উপরে আল্লাহর সন্তুষ্টিকে প্রাধান্য দেয়া বান্দার কর্তব্য। কোরবানির মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বান্দার গোলামি প্রকাশ পায়, প্রভুর জন্য তার ভালোবাসা ও ত্যাগের মাত্রা নির্ণীত হয়। আল্লাহর দান আল্লাহকে ফিরিয়ে দিতে আমরা কতটা প্রস্তুত এরই একটি ক্ষুদ্র পরীক্ষা হলো কোরবানি। আমাদের জীবনসম্পদ আল্লাহর কাছে উৎসর্গ করার প্রতিশ্রুতিই গ্রহণ করি কোরবানির মাধ্যমে। পশু কোরবানির সময় আমরা বলে থাকি, ‘আমার নামাজ, আমার কোরবানি, আমার জীবন ও আমার মৃত্যু সারা জাহানের রব আল্লাহর জন্য।’ (সুরা আনআম-১৬২)। আমাদের জীবন ও সম্পদের প্রকৃত মালিক আল্লাহ। এ দুটো জিনিস আল্লাহর ইচ্ছা অনুযায়ী ব্যয় করাই ইমানের অপরিহার্য দাবি এবং জান্নাত লাভের পূর্বশর্ত। আল্লাহ বলেন, ‘নিশ্চয়ই আল্লাহ মুমিনের জীবন ও সম্পদ জান্নাতের বিনিময়ে কিনে নিয়েছেন।’ (সুরা তওবা-১১০)। সুতরাং আল্লাহর দেয়া জীবন ও সম্পদ তার রাস্তায় ব্যয় করার ক্ষেত্রে কোনো কার্পণ্য করা সমীচীন নয়। কোরবানির বড় শিক্ষা হচ্ছে তাকওয়া বা খোদাভীতি। কে আল্লাহকে ভয় করে পশু জবাইয়ের মাধ্যমে তার সান্নিধ্য লাভের চেষ্টা করেছে সেটাই তিনি দেখেন। আর এই তাকওয়াই হলো মুমিন জীবনের অনন্ত পাথেয়। কারো জীবনে তাকওয়ার পাথেয় থাকলে তার আর কোনো কিছুর কমতি নেই। এই তাকওয়া দ্বারাই সে দুনিয়া ও আখেরাতের সব ধাপ অতিক্রম করতে পারবে। তাকওয়ার দ্বারা সুন্দর হয় ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র। দুনিয়ার আর কেউ দেখুক আর না দেখুক আমি কী করছি সেটা আল্লাহ দেখছেন সেই অনুভূতিই মানুষকে সঠিক পথে চলতে সহায়তা করে। আর এই অনুভূতি জাগ্রত করে কোরবানি।