ইপেপার । আজ রবিবার, ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ২৪ ভাদ্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

ফলোআপ : দর্শনা শান্তিপাড়ায় প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে দীর্ঘদিনের পরকীয়া : শাস্তির দাবিতে আজ দর্শনায় সর্বসাধারণের মানববন্ধন সেকালের ডিম বিক্রেতা একালের সাংবাদিক : লম্পট রাজুর কোটি টাকার উৎস কি?

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০১:০২:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬
  • / ৪৩৬ বার পড়া হয়েছে

13872628_1191377167570023_6244448631609268347_n 14322414_711371339010277_7597290814397819938_nনিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার সীমান্ত শহর দর্শনার ডিম বিক্রেতা ও পত্রিকার হকার নামধারী আলোচিত সাংবাদিক হারুন রাজুর নানা কু-কীর্তি ফাঁস। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতিসহ ভয়ঙ্কর চাঁদাবাজী ও লাম্পট্যের অভিযোগ করেছে এলাকার সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসী ক্রমেই তার  বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করেছে এবং সেইসাথে এই নামধারী সাংবাদিকের শাস্তির দাবীতে দর্শনাবাসী ফুঁসে উঠেছে। আজ তার শাস্তির দাবীতে দর্শনা শহরের সর্বসাধারণ মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে। এছাড়াও এলাকাবাসীর জিজ্ঞাসা কিভাবে জিরো থেকে কোটিপতি বনে গেল রাজু! উল্লেখ্য সম্প্রতি ঈদুল আজহার আগের দিন দর্শনা শহরে সিপি ভূট্টা ক্রয় কেন্দ্রের পাশের  কটি বাড়ীতে  প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকাকালে এলাকাবাসী তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়।
কে এই হারুন রাজু ? দর্শনা শহরের আজমপুর গ্রামের  তোতা মিয়ার ছেলে হারুন অর রশীদ রাজু । দারিদ্রতার কষাঘাতে সপ্তম শ্রেনীর বেশি শিক্ষার গন্ডি পেরুবার আগেই রুটিরুজির পথে পা বাড়ায় রাজু। প্রথমে দর্শনা বাজারে সিদ্ধ ডিম বিক্রিই ছিল তার পেশা। এরপর ২০০০ সালের দিকে দর্শনা শহরের আওয়াল হোসেন ও সাইদুল্লাহ আল সাহেদ মাথাভাঙ্গার দর্শনা বুরে‌্যা প্রধানের দায়িত্ব নিলে রাজু তাদের অধীনে  হকার  হিসাবে কাজ শুরু করে । সে সময় দর্শনা শহরে পত্রিকা নিয়ে ছুটে বেড়াতো রাজু। একসময় চাকুরীর বদলির কারণে আওয়াল হোসেন জীবননগর অফিসে চলে যান এবং এর কিছুদিন পর সাইদুল্লাহ আল সাহেদ মারা গেলে কপাল খোলে হকার রাজুর।
দর্শনা শহরে মাথাভাঙ্গার সাংবাদিক সংকটের কারণে রাজু লিখতে না জানলেও পত্রিকার কাটতির জন্য দর্শনার বিভিন্ন ঘটনার তথ্য  মাথাভাঙ্গা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পত্রিকার পাতায় সংবাদ প্রকাশের কাজটি করতো সে। পরে রামনগর গ্রামের পেশাদার দর্জি হানিফ মন্ডলকে সাথে নিয়ে  হকার রাজু এলাকার বিভিন্ন ঘটনা মাথাভাঙ্গাকে জানিয়ে নিজেরাই একদিন সাংবাদিক পরিচয় দিতে থাকে।
মাথাভাঙ্গা কর্তৃপক্ষও প্রয়োজনের তাগিদে হকার ও দর্জিকে সাংবাদিকতার দায়িত্ব দেয়। সাংবাদিকতার দায়িত্ব পাবার পর হারুন রাজু হানিফ মন্ডলের ঘাড়ে বন্দুক রেখে এলাকায় সাংবাকিতার নামে সাধারণ মানুষের পিছনে সুঁচ হয়ে লেগে ফাল হয়ে বেরিয়েছে। পত্রিকায় সংবাদ ছেপে দেওয়ার হুমকি  দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে হাজার হাজার  টাকাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা।
এক পর্যায়ে দর্শনায় এলাকার সকল মহলে সাংবাদিক রাজুর পদচারনা বাড়তে থাকে । স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের প্রয়োজনে হকার রাজুর মাধ্যমে তাদের সংবাদ পত্রিকায় দেখার আশায় রাজুকে ডেকেই তাদের অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কর্মসূচীর সংবাদ ও টাকা তার হাতে ধরিয়ে দিতে শুরু করে। হকারীর পাশাপাশি সংবাদের ধারা ও টাকার উৎস্য বুঝতে শুরু করে রাজু। পাশে ঢাল হয়ে ছিল হানিফ মন্ডল। রাজুর বিরুদ্ধে জনশ্র“তি রয়েছে সাংবাদিকতার হুমকি দেখিয়ে ডিসের ব্যবসা হাতিয়ে নেয়ার । সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে দিনে দিনে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হতে থাকে রাজু। এভাবেই বর্তমানে প্রায় কোটি টাকার সম্পদের মালিক রাজু। এলাকাবাসী হকার থেকে সাংবাদিক রাজুর দূর্নীতিসহ তার সম্পদের  বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার জন্য দুর্নীর্তি দমন কমিশন এবং ইনকাম ট্র্যাক্স এর কর্মকর্তাদের কাছে দাবী জানিয়েছে।
এছাড়াও জনশ্র“তি রয়েছে ৫বছর আগে দর্শনার শু. আলী নামে রং মিস্ত্রীর মেয়ে কে দিয়ে ফাঁদ পেতে ব্যাপক অর্থ বাণিজ্য করেছে। দর্শনা ক্যাম্প পাড়ার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হিন্দু সম্প্রদায়ের ছেলের কাছ থেকে তাকে ফাঁদে ফেলে সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকা আদায় করে নেয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে অসামাজিক কার্যকলাপেরও অভিযোগ রয়েছে। এর আগে বেগমপুর ইউনিয়নের হিজলগাড়ী এলাকায় নারীঘটিত বিষয়ে স্থানীয়রা তাকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মাদক ঘাটি থেকে মাসোহারা আদায় করে আসছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ পরকীয়ায় ধরা পড়ে হারুন রাজুর গ্যাড়াকলের ঘটনায় দর্শনা প্রেসক্লাব থেকে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ৫ সদস্যের এই তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যদের না নিয়ে মনিরুজ্জামান ধীরু একাই মনগড়া তদন্ত করেছে বলে দর্শনার সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, যা একবারেই গ্রহনযোগ্য নয়।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

ফলোআপ : দর্শনা শান্তিপাড়ায় প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে দীর্ঘদিনের পরকীয়া : শাস্তির দাবিতে আজ দর্শনায় সর্বসাধারণের মানববন্ধন সেকালের ডিম বিক্রেতা একালের সাংবাদিক : লম্পট রাজুর কোটি টাকার উৎস কি?

আপলোড টাইম : ০১:০২:০৫ অপরাহ্ন, রবিবার, ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬

13872628_1191377167570023_6244448631609268347_n 14322414_711371339010277_7597290814397819938_nনিজস্ব প্রতিবেদক: চুয়াডাঙ্গার সীমান্ত শহর দর্শনার ডিম বিক্রেতা ও পত্রিকার হকার নামধারী আলোচিত সাংবাদিক হারুন রাজুর নানা কু-কীর্তি ফাঁস। তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দূর্নীতিসহ ভয়ঙ্কর চাঁদাবাজী ও লাম্পট্যের অভিযোগ করেছে এলাকার সাধারণ মানুষ। এলাকাবাসী ক্রমেই তার  বিভিন্ন অপকর্মের তথ্য প্রকাশ করতে শুরু করেছে এবং সেইসাথে এই নামধারী সাংবাদিকের শাস্তির দাবীতে দর্শনাবাসী ফুঁসে উঠেছে। আজ তার শাস্তির দাবীতে দর্শনা শহরের সর্বসাধারণ মানববন্ধনের ডাক দিয়েছে। এছাড়াও এলাকাবাসীর জিজ্ঞাসা কিভাবে জিরো থেকে কোটিপতি বনে গেল রাজু! উল্লেখ্য সম্প্রতি ঈদুল আজহার আগের দিন দর্শনা শহরে সিপি ভূট্টা ক্রয় কেন্দ্রের পাশের  কটি বাড়ীতে  প্রবাসীর স্ত্রীর সাথে অনৈতিক কর্মকান্ডে লিপ্ত থাকাকালে এলাকাবাসী তাকে আটক করে গণধোলাই দেয়।
কে এই হারুন রাজু ? দর্শনা শহরের আজমপুর গ্রামের  তোতা মিয়ার ছেলে হারুন অর রশীদ রাজু । দারিদ্রতার কষাঘাতে সপ্তম শ্রেনীর বেশি শিক্ষার গন্ডি পেরুবার আগেই রুটিরুজির পথে পা বাড়ায় রাজু। প্রথমে দর্শনা বাজারে সিদ্ধ ডিম বিক্রিই ছিল তার পেশা। এরপর ২০০০ সালের দিকে দর্শনা শহরের আওয়াল হোসেন ও সাইদুল্লাহ আল সাহেদ মাথাভাঙ্গার দর্শনা বুরে‌্যা প্রধানের দায়িত্ব নিলে রাজু তাদের অধীনে  হকার  হিসাবে কাজ শুরু করে । সে সময় দর্শনা শহরে পত্রিকা নিয়ে ছুটে বেড়াতো রাজু। একসময় চাকুরীর বদলির কারণে আওয়াল হোসেন জীবননগর অফিসে চলে যান এবং এর কিছুদিন পর সাইদুল্লাহ আল সাহেদ মারা গেলে কপাল খোলে হকার রাজুর।
দর্শনা শহরে মাথাভাঙ্গার সাংবাদিক সংকটের কারণে রাজু লিখতে না জানলেও পত্রিকার কাটতির জন্য দর্শনার বিভিন্ন ঘটনার তথ্য  মাথাভাঙ্গা কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে পত্রিকার পাতায় সংবাদ প্রকাশের কাজটি করতো সে। পরে রামনগর গ্রামের পেশাদার দর্জি হানিফ মন্ডলকে সাথে নিয়ে  হকার রাজু এলাকার বিভিন্ন ঘটনা মাথাভাঙ্গাকে জানিয়ে নিজেরাই একদিন সাংবাদিক পরিচয় দিতে থাকে।
মাথাভাঙ্গা কর্তৃপক্ষও প্রয়োজনের তাগিদে হকার ও দর্জিকে সাংবাদিকতার দায়িত্ব দেয়। সাংবাদিকতার দায়িত্ব পাবার পর হারুন রাজু হানিফ মন্ডলের ঘাড়ে বন্দুক রেখে এলাকায় সাংবাকিতার নামে সাধারণ মানুষের পিছনে সুঁচ হয়ে লেগে ফাল হয়ে বেরিয়েছে। পত্রিকায় সংবাদ ছেপে দেওয়ার হুমকি  দেখিয়ে হাতিয়ে নিয়েছে হাজার হাজার  টাকাসহ বিভিন্ন সুযোগ সুবিধা।
এক পর্যায়ে দর্শনায় এলাকার সকল মহলে সাংবাদিক রাজুর পদচারনা বাড়তে থাকে । স্থানীয় রাজনৈতিক নেতারা নিজেদের প্রয়োজনে হকার রাজুর মাধ্যমে তাদের সংবাদ পত্রিকায় দেখার আশায় রাজুকে ডেকেই তাদের অনুষ্ঠিত বিভিন্ন কর্মসূচীর সংবাদ ও টাকা তার হাতে ধরিয়ে দিতে শুরু করে। হকারীর পাশাপাশি সংবাদের ধারা ও টাকার উৎস্য বুঝতে শুরু করে রাজু। পাশে ঢাল হয়ে ছিল হানিফ মন্ডল। রাজুর বিরুদ্ধে জনশ্র“তি রয়েছে সাংবাদিকতার হুমকি দেখিয়ে ডিসের ব্যবসা হাতিয়ে নেয়ার । সাংবাদিকতাকে পুঁজি করে দিনে দিনে আঙ্গুল ফুলে কলা গাছ হতে থাকে রাজু। এভাবেই বর্তমানে প্রায় কোটি টাকার সম্পদের মালিক রাজু। এলাকাবাসী হকার থেকে সাংবাদিক রাজুর দূর্নীতিসহ তার সম্পদের  বিষয়টি ক্ষতিয়ে দেখার জন্য দুর্নীর্তি দমন কমিশন এবং ইনকাম ট্র্যাক্স এর কর্মকর্তাদের কাছে দাবী জানিয়েছে।
এছাড়াও জনশ্র“তি রয়েছে ৫বছর আগে দর্শনার শু. আলী নামে রং মিস্ত্রীর মেয়ে কে দিয়ে ফাঁদ পেতে ব্যাপক অর্থ বাণিজ্য করেছে। দর্শনা ক্যাম্প পাড়ার নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক হিন্দু সম্প্রদায়ের ছেলের কাছ থেকে তাকে ফাঁদে ফেলে সংবাদ প্রকাশের ভয় দেখিয়ে ৩০ হাজার টাকা আদায় করে নেয়। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে অসামাজিক কার্যকলাপেরও অভিযোগ রয়েছে। এর আগে বেগমপুর ইউনিয়নের হিজলগাড়ী এলাকায় নারীঘটিত বিষয়ে স্থানীয়রা তাকে উত্তম মাধ্যম দিয়ে ছেড়ে দেয়। দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন মাদক ঘাটি থেকে মাসোহারা আদায় করে আসছে বলেও অভিযোগ রয়েছে। সর্বশেষ পরকীয়ায় ধরা পড়ে হারুন রাজুর গ্যাড়াকলের ঘটনায় দর্শনা প্রেসক্লাব থেকে তদন্ত কমিটি গঠিত হয়। ৫ সদস্যের এই তদন্ত কমিটির অন্য সদস্যদের না নিয়ে মনিরুজ্জামান ধীরু একাই মনগড়া তদন্ত করেছে বলে দর্শনার সাংবাদিকেরা জানিয়েছেন, যা একবারেই গ্রহনযোগ্য নয়।