এবারের কোরবানি ঈদে পশু জবাই ও পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় সরকারের দেশজুড়ে সম্মিলিত উদ্যোগ চুয়াডাঙ্গার ৯ ওয়ার্ডে পরিচ্ছন্ন কর্মীদের সাথে বর্জ্য অপসারণ করলেন পৌর মেয়র জিপু চৌধুরী
- আপলোড টাইম : ০২:০৭:৪২ অপরাহ্ন, শুক্রবার, ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬
- / ৭৮৬ বার পড়া হয়েছে
নিজস্ব প্রতিবেদক: এবারের কোরবানি ঈদে পশু জবাই ও পশুর বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় দেশজুড়ে সম্মিলিত উদ্যোগ নিয়েছিলো সরকার। পশু জবাইয়ের জন্য নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করা হয়েছিলো ঈদ উপলক্ষে। পশু জবাইয়র জন্য নির্ধারিত কেন্দ্রগুলোতে মাওলানা ও কসাইসহ যাবতীয় ব্যবস্থা ছিলো। জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশ দূষণ রোধে জবাইয়ের ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে বর্জ্য নিষ্কাশনের ঘোষণা দিয়েছিলো পৌরসভার মেয়র ওবাইদুর রহমান চৌধূরী জিপু। এমনকি মনস্তাত্ত্বিক দিক বিবেচনায় ১৮ বছরের নিচে কাউকে পশু জবাই না করারও নির্দেশনা জারি করে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন। আর যত্রতত্র পশু জবাই ও বর্জ্য নিষ্কাশনে অবহেলাকারীদের শাস্তির বিধানও রাখে জেলা প্রশাসন। তবে এসব উদ্যোগের মধ্যে পশু জবাই কেন্দ্রকে ঘিরে কিছুটা অব্যবস্থাপনাও চোখে পড়েছে এই কেন্দ্রগুলোতে। অনেক এলাকায় নির্দিষ্ট করা পশু জবাই কেন্দ্র সম্পর্কে অজ্ঞ ছিলো অনেক বাসিন্দা। ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই বর্জ্য নিষ্কাশনের কাজ সম্পন্ন করে চুয়াডাঙ্গা পৌরসভা। চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় নির্ধারিত ৬৪টি স্থানের অধিকাংশ স্পট গুলোতে চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস, অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক আনজুমান আরা বেগম ও মেয়র জিপু চৌধূরী পরিদর্শনে যান এবং সার্বিক খোজঁখবর নেন। এ প্রসঙ্গে চুয়াডাঙ্গা পৌর মেয়র ওবায়দুর রহমান চৌধুরি জিপু বলেন, যেহেতু এই নিয়মটি প্রথমবারের মতো চালু হয়েছে তারপরও পৌরসভার আহ্বানে সাড়া দিয়ে চুয়াডাঙ্গা পৌরবাসী যেভাবে সহযোগীতা করেছেন এজন্য পৌরবাসীকে ধন্যবাদ জানাতে চাই। কিছু কিছু এলাকার বাসিন্দারা নিজ স্থানে পশু কোরবানী দিয়েছেন এবং তার বর্জ্য ঠিকমতো অপসারণ করেননি। তাদের প্রতি ক্ষোভ জানিয়ে পৌর পরিষদ আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে বর্জ্য অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন। তা না হলে পরিষদ তাদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করবে। তিনি আরো বলেন নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি বিষয়ে আগামী ঈদে চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকার জনগনের মধ্যে সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিশেষ উদ্যোগ নেওয়া হবে ইনশায়াল্লাহ। তবে ৬৪টি স্থানের অনেক গুলো স্পটে পশু কোরবানি দেওয়া হয়নি বলেও জানাগেছে। চুয়াডাঙ্গা জেলা প্রশাসন গত মাসের ২৯ আগষ্ট চুয়াডাঙ্গা পৌর এলাকায় কোরবানির পশু জবাইয়ের জন্য ৬৫টি নির্দিষ্ট স্থান নির্ধারণ করে দেয়। এরমধ্যে সিএ্যান্ডবি’র সামনে, হাটকালুগঞ্জ কেরুর মাঠ, ভিমরুল¬া স্কুল মাঠ, আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় মাঠ ও নতুন বাজার, বুদু মিয়ার আমবাগান, বনানী পাড়া তেতুলতলা, বলাকা পাড়া মোড়, সুমিরদিয়া রেল পাড়া, সুমিরদিয়া কলোনী পাড়া কিছুক্ষণ মোড়, শান্তি পাড়া মেহগুনি আমবাগান, মুন্সি পাড়া রেজাউল করিম খোকনের বাড়ীর পাশে, বুজরুক গড়গড়ী মাদ্রাসা চত্ত্বর, কোর্ট পাড়া জিএন টাওয়ারের সামনে, কোর্ট পাড়া প্রেস ক্লাবের সামনে জহুরুল মিয়ার জমি, ভিজে স্কুলের নিচে নদীর ধারে, পুরাতন হাসপাতাল চত্তর, সাদেক আলী মলি¬ক পাড়া মুনছুর মোল¬ার গর্তের ধার, মুক্তি পাড়া পুরাতন জেল খানার পিছনে, সবুজ পাড়া মসজিদের সামনে, মুক্তি পাড়া মজিবুল হকের বাড়ীর সামনে, কোর্ট পাড়া স্টাফ কোযার্টার, জোয়াদ্দার পাড়া ইউসুপ আলী জোয়ার্দ্দার পুকুর পাড়, জ্বিনতলা মলি¬ক পাড়া, উদ্বিপন ক্লাব, শেকরাতলা মোড়, পুরাতন পাড়া ভাদি গর্তের ধারে, মাঝের পাড়া মধু ওস্তাদের বাড়ীর পাশে, মলি¬ক পাড়া ওহিদ জমিদারের পুরাতন বাড়ীর পাশে, তালতলা পশু হাট, কানা পুকুরের পাশে, উম্বাত মোড়, ইসলাম মোড় বটতলা, ইসলাম মোড়, শেকরাতলা মোড়, রেল পাড়া শান্তি মিয়ার মিলের সামনে, বড় মসজিদ পাড়া মুক্তারের দোকানের সামনে, হাজরাহাটি আলীউজ্জামানের বাড়ীর পাশের বাগান, হাজরাহাটি অঙ্গিকার প্রাথমিক বিদ্যালয়, হাজরাহাটি সালাম মোড়, রাজার গোডাউনের সামনে, আতিয়ার বিশ্বাসের বাঁশঝাড়, পীরপাড়া শফিউদ্দিনের বাঁশঝাড়, তালতলা স্কুল পাড়া, খেয়াঘাট মোড়, সাবেক কমিশনার সামাদের বাড়ীর পাশে, এতিমখানা পাড়া লিখন মিয়ার বাড়ীর সামনে, সাতগাড়ী লতিফ মাষ্টারের বাড়ী, সাতগাড়ী ওদুদ মিয়ার মাঠ নতুন পাড়া, নুরনগর গোলাবাড়ী, দিগড়ী ইসলামপুর শরীফ মিয়ার বাড়ীর পাশে, দিগড়ী হেলী পোর্ট, কুলচারা সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, সাতগাড়ী উত্তর পাড়া ঈদগা ময়দানের সামনে, সাতগাড়ী পুরাতন পাড়া মাদ্রাসা মাঠ, বেলগাছি জাহিদুর রহমানের বাড়ীর নিকট, বেলগাছি তেতুলতলা, বেলগাছি ঈদগা পাড়া মসজিদের পাশে, ফার্ম পাড়া শরিফুদ্দিনের বাড়ীর পাশে, নুরনগর কলোনী পাড়া ঘনু মিয়ার আম বাগান, নুর কলোনী পাড়া গোডাউনের সামনে, আরামপাড়া মাছের আড়ৎ, সিনেমা হল পাড়া কাটপট্টি, গোরস্থান পাড়া তিন থাম্বা, প্রভাতী সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠ, গুলশান পাড়া সাবেক পৌর কমিশনার শাহাবুদ্দিনের বাড়ীর পাশে, সিনেমা হল পাড়া পুরাতন পাবলিক লাইব্রেরীর সামনে কোরবানি পশু জবাইয়ের খবর পাওয়া গেছে। বিভিন্ন স্থান সরেজমিনে গিয়ে স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, কোরবানির জন্য পশু জবাইয়ের স্থান নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে নানা প্রতিক্রিয়া রয়েছে। কেউ কেউ বলছেন, পরিবেশের ভারসাম্য রক্ষার এমন উদ্যোগে জটিলতা সৃষ্টি করেছে। আবার কেউ বলছেন, পৌরসভা কখন পশু জবাইয়ের স্থান নির্ধারণ করেছেন, তারা জানেন না। আবার কোথাও সরকারের বেঁধে দেওয়া নির্দিষ্ট স্থানে জবাইয়ে বাধা দিয়েছেন স্থানীয়রা। কোথাও বাঁশ দিয়ে জবাইয়ের স্থান চিহ্নিত করে রাখা হয়েছে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী এবং সুষ্ঠু ব্যবস্থাপনা বজায় রাখতে এবং ময়লা-আবর্জনা ও দুর্গন্ধ থেকে পৌরবাসীকে রেহাই দিতে জেলা প্রশাসক সায়মা ইউনুস এবং পৌর মেয়র জিপু চৌধূরী অক্লান্ত পরিশ্রম করেছেন পুরো ঈদ জুড়ে।