ইপেপার । আজ বৃহস্পতিবার, ২৩ জানুয়ারী ২০২৫

মাদক নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ১০:০৫:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ জানুয়ারী ২০১৮
  • / ৪২৮ বার পড়া হয়েছে

‘মাদকে ভাসছে সারা দেশ’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট ছাপা হয়েছে জাতীয় একটি দৈনিকে। ৬ জানুয়ারি তারিখে প্রকাশিত রিপোর্টটিতে বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ, প্রশাসনিক দৌড়ঝাঁপ আর অসংখ্য মামলা-হয়রানির মধ্যেও দেশে জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলেছে মাদকাসক্তের সংখ্যা। মাদকের কেনাবেচাও বেড়ে চলেছে পাল্লা দিয়ে। দেশের প্রতিটি সীমান্ত এলাকা থেকে শুরু করে প্রায় জায়গাতে বসছে মাদকের খোলা হাট-বাজার। লুকোচুরি নয়, বরং প্রকাশ্যেই বেচাকেনা চলছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ সব ধরনের মাদকদ্রব্য। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও পুলিশের পৃথক পরিসংখ্যান সূত্রে জানা যায়, প্রভাবশালী ২০০ গডফাদারের তত্ত্বাবধানে এক লাখ ৬৫ হাজার পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার সমন্বয়ে দেশব্যাপী মাদক বাণিজ্যের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। এ চক্রের সদস্যরা ঘাটে ঘাটে টাকা বিলিয়ে সবকিছু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়। মাঝেমধ্যে কোথাও কোথাও প্রশাসনিক অভিযান পরিচালিত হলেও তা মাদক নেটওয়ার্কে কোনরকম ব্যাঘাত ঘটাতে পারে না। বরং পুলিশের পাঁচ শতাধিক সদস্য ও বিভিন্ন পর্যায়ের সহ¯্রাধিক রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে উল্টো মাদক বাণিজ্যে সম্পৃক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে মাদকাসক্তি নিরাময় কর্মকা-ে সম্পৃক্ত বিশেষজ্ঞরা আশংকা প্রকাশ করে বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে দেশে এক কোটি লোক নেশায় আসক্ত হতে পারে। তারা বলছেন, প্রতিবছর শুধু নেশার পেছনেই খরচ হয় ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি। সংশ্লিষ্টরা এমন অবস্থায় পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নেশামুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া দেশজুড়ে একযোগে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তারা বলেন, অন্যথায় দেশের যাবতীয় অগ্রগতি নেশার আগ্রাসনে ম্লান হয়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য যে, সরকারের নানা পদক্ষেপের মধ্যেও মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মকা- বেপরোয়াভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। সচল রয়েছে তাদের সরবরাহ ব্যবস্থাও। মাদক আমদানি, সরবরাহ ও বিপণন ব্যবস্থা নির্বিঘœ রাখতে একের পর এক কৌশল পাল্টাচ্ছে তারা। মাদক পরিস্থিতি প্রশাসন ও সরকারের জন্য রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারকে অসহায় অবস্থায় দেখতে চায় না জনগণ। জনগণ মাদক স¤্রাটদের পতন চায়। এই পতনের রোডম্যাপ সরকারকেই তৈরি করতে হবে। ইতোমধ্যে মাদক নেটওয়ার্কে কিছু পুলিশ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর যুক্ত হওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। তাই অনুরাগ-বিরাগের বাইরে থেকেই সরকারকে কাজটি করতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

মাদক নিয়ন্ত্রণের বিকল্প নেই

আপলোড টাইম : ১০:০৫:৪২ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ৭ জানুয়ারী ২০১৮

‘মাদকে ভাসছে সারা দেশ’ শিরোনামে একটি রিপোর্ট ছাপা হয়েছে জাতীয় একটি দৈনিকে। ৬ জানুয়ারি তারিখে প্রকাশিত রিপোর্টটিতে বলা হয়, সরকারি-বেসরকারি নানা উদ্যোগ, প্রশাসনিক দৌড়ঝাঁপ আর অসংখ্য মামলা-হয়রানির মধ্যেও দেশে জ্যামিতিক হারে বেড়ে চলেছে মাদকাসক্তের সংখ্যা। মাদকের কেনাবেচাও বেড়ে চলেছে পাল্লা দিয়ে। দেশের প্রতিটি সীমান্ত এলাকা থেকে শুরু করে প্রায় জায়গাতে বসছে মাদকের খোলা হাট-বাজার। লুকোচুরি নয়, বরং প্রকাশ্যেই বেচাকেনা চলছে ইয়াবা, ফেনসিডিল, গাঁজাসহ সব ধরনের মাদকদ্রব্য। মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদফতর ও পুলিশের পৃথক পরিসংখ্যান সূত্রে জানা যায়, প্রভাবশালী ২০০ গডফাদারের তত্ত্বাবধানে এক লাখ ৬৫ হাজার পাইকারি ও খুচরা বিক্রেতার সমন্বয়ে দেশব্যাপী মাদক বাণিজ্যের শক্তিশালী নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে। এ চক্রের সদস্যরা ঘাটে ঘাটে টাকা বিলিয়ে সবকিছু নিজেদের নিয়ন্ত্রণে রাখতে সক্ষম হয়। মাঝেমধ্যে কোথাও কোথাও প্রশাসনিক অভিযান পরিচালিত হলেও তা মাদক নেটওয়ার্কে কোনরকম ব্যাঘাত ঘটাতে পারে না। বরং পুলিশের পাঁচ শতাধিক সদস্য ও বিভিন্ন পর্যায়ের সহ¯্রাধিক রাজনৈতিক নেতা-কর্মীকে উল্টো মাদক বাণিজ্যে সম্পৃক্ত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে।
এদিকে মাদকাসক্তি নিরাময় কর্মকা-ে সম্পৃক্ত বিশেষজ্ঞরা আশংকা প্রকাশ করে বলেন, ২০২০ সালের মধ্যে দেশে এক কোটি লোক নেশায় আসক্ত হতে পারে। তারা বলছেন, প্রতিবছর শুধু নেশার পেছনেই খরচ হয় ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি। সংশ্লিষ্টরা এমন অবস্থায় পারিবারিক ও সামাজিক সচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে নেশামুক্ত সমাজ গড়ে তুলতে ভূমিকা রাখার ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি আহ্বান জানান। এছাড়া দেশজুড়ে একযোগে সাঁড়াশি অভিযান পরিচালনার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তারা বলেন, অন্যথায় দেশের যাবতীয় অগ্রগতি নেশার আগ্রাসনে ম্লান হয়ে যেতে পারে। উল্লেখ্য যে, সরকারের নানা পদক্ষেপের মধ্যেও মাদক ব্যবসায়ীরা তাদের কর্মকা- বেপরোয়াভাবে চালিয়ে যাচ্ছে। সচল রয়েছে তাদের সরবরাহ ব্যবস্থাও। মাদক আমদানি, সরবরাহ ও বিপণন ব্যবস্থা নির্বিঘœ রাখতে একের পর এক কৌশল পাল্টাচ্ছে তারা। মাদক পরিস্থিতি প্রশাসন ও সরকারের জন্য রীতিমতো চ্যালেঞ্জের বিষয় হয়ে উঠেছে। তবে মাদক নিয়ন্ত্রণে সরকারকে অসহায় অবস্থায় দেখতে চায় না জনগণ। জনগণ মাদক স¤্রাটদের পতন চায়। এই পতনের রোডম্যাপ সরকারকেই তৈরি করতে হবে। ইতোমধ্যে মাদক নেটওয়ার্কে কিছু পুলিশ সদস্য ও রাজনৈতিক নেতা-কর্মীর যুক্ত হওয়ার অভিযোগও পাওয়া গেছে। তাই অনুরাগ-বিরাগের বাইরে থেকেই সরকারকে কাজটি করতে হবে।