দর্শনার ডিএস মাদরাসার অভিভাবক সদস্য নির্বাচনে নতুন রহস্য
ভোট কেন্দ্রে পাওয়া গেলো সিল মারা ব্যালট- আপলোড টাইম : ০৮:৪৬:৫৬ পূর্বাহ্ন, রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫
- / ১২ বার পড়া হয়েছে
দর্শনার ডিএস মাদরাসার অভিভাবক সদস্য নির্বাচনে ২টি প্যানেলের ভোট হওয়ার ৪ দিনের মাথায় নতুন রহস্য সামনে এসেছে। ভোট কেন্দ্রের ভিতর টেবিলের ড্রয়ার থেকে পাওয়া গেছে সিল মারা ৩টি ব্যালট পেপার। এতে করে বেশ ধুম্রজালের সৃষ্টি হয়েছে। কারণ যে ৩টি ব্যালট পেপার পাওয়া গেছে তা পরাজিত প্যানেলের। এ বিষয়ে মামলা হতে পারে বলে জানা গেছে।
গতকাল শনিবার সকালে সাড়ে ১০টার দিকে মাদরাসার নির্বাচনী কেন্দ্রের ১ নম্বর বুথ থেকে এই ব্যালট পেপার ৩টি পাওয়া যায়। ব্যালট পেপার উদ্ধারের সময় উপস্থিত ছিলেন দর্শনা ডিএস মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. শফি উদ্দিন মোল্লা, সহকারী অধ্যাপক আরিফুজ্জামান, শিক্ষক আবু সাইদ, পৌর বিএনপির সমন্বয় কমিটির সদস্য ইকবাল হোসেন, সাংবাদিকসহ বেশ কয়েকজন।
জানা গেছে, গতকাল সকালে মাদরাসার শিক্ষক আবু সাঈদ ছাত্র-ছাত্রীদের পড়ানোর সময় ওই রুমে থাকা টেবিলের ড্রয়ারে কাগজ খুঁজতে ড্রয়ার খুলে দেখেন তার ভিতরে ব্যালট পেপার। পরে ভালোভাবে কাগজ সরিয়ে দেখতে পায় ৩টি সীল মারা ব্যালট পেপার। যেটা পরাজিত প্যানেলের ৩ জন সদস্যের। পরে তিনি বেশ কয়েকজনকে জানালে তারপর সাংবাদিকদের উপস্থিতিতে মাদরাসার ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. শফি উদ্দিন মোল্লা ও সহকারী অধ্যাপক আরিফুজ্জামান ও বিএনপি নেতা ইকবাল হোসেনসহ বেশ কয়েকজনের উপস্থিতিতে এই সীল মারা ৩টি ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়।
উদ্ধারের পর মুঠোফোনে এই নির্বাচনের প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার সাথে কথা বললে তিনি বলেন, ব্যালট পেপার হারিয়ে গেছে বলে অবগত আছেন এবং তা নোট করা আছে। এদিকে পরাজিত প্যানেলে পক্ষ থেকে ভোটে কারচুপির অভিযোগ তুলে মামলা করা হবে বলেও জানা গেছে।
এ বিষয়ে প্রতিষ্ঠানের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মাওলানা মো. শফি উদ্দিন মোল্লা বলেন, ১ নম্বর বুথ থেকে সীল মারা ৩টি ব্যালট পেপার উদ্ধার করা হয়েছে। আমি প্রিজাইডিং অফিসারের সাথে কথা বলেছি। তিনি এ বিষয়ে অবগত আছেন এবং তার নোট করা আছে। এর বেশি আমি আর কিছু বলতে পারবো না।
উল্লেখ্য, গত ৮/০৪/২৫ তারিখে দর্শনা দারুস সুন্নাত সিদ্দিকীয়া সিনিয়র ফাজিল (ডিগ্রি) মাদরাসা প্রতিষ্ঠার ৭১ বছরের ইতিহাসে প্রথমবার সরাসরি অভিভাবকদের ভোটে মাদরাসার গভর্নিং বডির অভিভাবক সদস্য নির্বাচন সম্পন্ন হয়। নির্বাচনে বিএনপি সমর্থিত প্যানেলকে পরাজিত করে জামায়াত সমর্থিত শহিদুল-শাহ আলম-মনির হোসেন প্যানেল একক বিজয় অর্জন করেছে।
এর মধ্যে বেসরকারিভাবে প্রাপ্ত ফলাফল অনুযায়ী ইবতেদায়ী-দাখিল বিভাগে জামায়াত সমর্থিত মো. মনির হোসেন মুকুল (আম) ১৫৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী›দ্বি বিএনপির মো. মিজানুর রহমান (মাছ) পেয়েছেন ১৫৪ ভোট। আলিম বিভাগে জামায়াতের মাওলানা মো. শাহ আলম (গোলাপ ফুল) ১৫৮ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মো. কামাল উদ্দীন (হরিণ) পেয়েছেন ১৪৪ ভোট এবং ফাজিল (ডিগ্রি) পর্যায়ে জামায়াতের সুপারিনটেনডেন্ট মাওলানা মো. শহিদুল ইসলাম (সাইকেল) ১৬৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন, তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপির মো. মকলেছুর রহমান (ছাতা) পেয়েছেন ১৪৬ ভোট। নির্বাচনে ৫৬৪ জন ভোটারের মধ্যে ৩১২ জন ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। নির্বাচনে প্রিজাইডিং অফিসারের দায়িত্ব পালন করেন দামুড়হুদা উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার জিয়াউল হক।