ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

মহেশপুরে ইছামতি নদীতে ভাসছিলো বাংলাদেশি যুবককে লাশ

বিএসএফ পিটিয়ে হত্যা করেছে দাবি পরিবারের

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৮:২২:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১২ বার পড়া হয়েছে

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পলিয়ানপুর সীমান্তে ওয়াসিম নামে এক বাংলাদেশি যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। হত্যার পর তার মরদেহ ইছামতি নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার নদীতে তার মরদেহ ভেসে ওঠে। নিহত ওয়াসিমের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের বুনোপাড়ায়। তিনি ওই গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। পরিবারের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই লাশটি ওয়াসিমের বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল।
বাঘাডাঙ্গা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ওবাইদুল ইসলাম জানান, গতকাল দুপুরে হুদাপাড়া গ্রামের এক কৃষক মাঠে যাওয়ার পথে নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে। খবর পেয়ে বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করে। তবে মরদেহ নদীতে থাকায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তার পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে ধূর পাচারের সময় ভারতের অভ্যন্তরে ওয়াসিমের সঙ্গে যাওয়া সলেমানপুর গ্রামের আব্দুস সোবহান, কাঞ্চনপুর গ্রামের রাজু, শাওবুদ্দিন, মানিক এবং বাঘাডাঙ্গার আব্দুল ওয়াহেদ মরদেহটি ওয়াসিমের বলে শনাক্ত করেন।
ওয়াসিমের বড় ভাই মেহেদী হাসান দাবি করেন, তার ভাই ৩-৪ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তিনি বলেন, ‘শুনেছি সে মাঝেমধ্যে ধূর নিয়ে ভারতে যাতায়াত করত। গত ৮ এপ্রিল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়েছিল। ফেরার সময় বিএসএফ ধাওয়া করলে অন্যরা পালিয়ে এলেও ওয়াসিম ধরা পড়ে এবং তাকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়।’ ওয়াসিমের পিতা রমজান আলী জানান, বিভিন্ন সূত্র থেকে তিনি জানতে পেরেছেন নদীতে ভেসে ওঠা লাশটি তার ছেলের। তিনি দ্রুত লাশটি উদ্ধারের দাবি জানান।
মহেশপুর-৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম জানান, ‘মরদেহটি ইছামতি নদীর ভারতীয় অংশে থাকায় আমরা এখনো উদ্ধার করতে পারিনি। তবে বিষয়টি বিএসএফকে জানানো হয়েছে। মরদেহটি বাংলাদেশি না ভারতীয়, সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া কোনো পরিবার তাদের সদস্য নিখোঁজ আছে বলেও আমাদের জানায়নি।’
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইয়াসমিন মনিরা বলেন, ‘ইছামতি নদীর ভারতীয় অংশে একটি লাশ ভাসছে, এমন খবর পেয়েছি। তবে মরদেহের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’ মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়েজ উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘ইছামতি নদীর ভারতীয় অংশে বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে একটি লাশ ভেসে থাকতে দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে বিজিবি কাজ করছে। বিজিবি বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেবে। এখনো আমরা কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

মহেশপুরে ইছামতি নদীতে ভাসছিলো বাংলাদেশি যুবককে লাশ

বিএসএফ পিটিয়ে হত্যা করেছে দাবি পরিবারের

আপলোড টাইম : ০৮:২২:০০ পূর্বাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

ঝিনাইদহ অফিস:
ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার পলিয়ানপুর সীমান্তে ওয়াসিম নামে এক বাংলাদেশি যুবককে পিটিয়ে হত্যা করেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ)। হত্যার পর তার মরদেহ ইছামতি নদীতে ফেলে দেওয়া হয়। গতকাল শুক্রবার নদীতে তার মরদেহ ভেসে ওঠে। নিহত ওয়াসিমের বাড়ি ঝিনাইদহের মহেশপুর উপজেলার বাঘাডাঙ্গা গ্রামের বুনোপাড়ায়। তিনি ওই গ্রামের রমজান আলীর ছেলে। পরিবারের পক্ষ থেকে শুরু থেকেই লাশটি ওয়াসিমের বলে সন্দেহ করা হচ্ছিল।
বাঘাডাঙ্গা ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ওবাইদুল ইসলাম জানান, গতকাল দুপুরে হুদাপাড়া গ্রামের এক কৃষক মাঠে যাওয়ার পথে নদীতে একটি মরদেহ ভাসতে দেখে। খবর পেয়ে বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে বিষয়টি নিশ্চিত করে। তবে মরদেহ নদীতে থাকায় রাত সাড়ে ৯টা পর্যন্ত তার পরিচয় নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি। তবে ধূর পাচারের সময় ভারতের অভ্যন্তরে ওয়াসিমের সঙ্গে যাওয়া সলেমানপুর গ্রামের আব্দুস সোবহান, কাঞ্চনপুর গ্রামের রাজু, শাওবুদ্দিন, মানিক এবং বাঘাডাঙ্গার আব্দুল ওয়াহেদ মরদেহটি ওয়াসিমের বলে শনাক্ত করেন।
ওয়াসিমের বড় ভাই মেহেদী হাসান দাবি করেন, তার ভাই ৩-৪ দিন ধরে নিখোঁজ ছিলেন। তিনি বলেন, ‘শুনেছি সে মাঝেমধ্যে ধূর নিয়ে ভারতে যাতায়াত করত। গত ৮ এপ্রিল সীমান্ত পেরিয়ে ভারতে গিয়েছিল। ফেরার সময় বিএসএফ ধাওয়া করলে অন্যরা পালিয়ে এলেও ওয়াসিম ধরা পড়ে এবং তাকে নির্যাতনের পর হত্যা করা হয়।’ ওয়াসিমের পিতা রমজান আলী জানান, বিভিন্ন সূত্র থেকে তিনি জানতে পেরেছেন নদীতে ভেসে ওঠা লাশটি তার ছেলের। তিনি দ্রুত লাশটি উদ্ধারের দাবি জানান।
মহেশপুর-৫৮ বিজিবির অধিনায়ক লে. কর্নেল রফিকুল আলম জানান, ‘মরদেহটি ইছামতি নদীর ভারতীয় অংশে থাকায় আমরা এখনো উদ্ধার করতে পারিনি। তবে বিষয়টি বিএসএফকে জানানো হয়েছে। মরদেহটি বাংলাদেশি না ভারতীয়, সেটি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এছাড়া কোনো পরিবার তাদের সদস্য নিখোঁজ আছে বলেও আমাদের জানায়নি।’
মহেশপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ইয়াসমিন মনিরা বলেন, ‘ইছামতি নদীর ভারতীয় অংশে একটি লাশ ভাসছে, এমন খবর পেয়েছি। তবে মরদেহের পরিচয় এখনো নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’ মহেশপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) ফয়েজ উদ্দিন মৃধা বলেন, ‘ইছামতি নদীর ভারতীয় অংশে বাংলাদেশ সীমান্তের ওপারে একটি লাশ ভেসে থাকতে দেখা গেছে। বিষয়টি নিয়ে বিজিবি কাজ করছে। বিজিবি বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নেবে। এখনো আমরা কিছু নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।’