ইপেপার । আজ সোমবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৫

দামুড়হুদার খা পাড়ায় ৮ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা

হাসপাতালে ভর্তি, দাদার বিরুদ্ধে মামলা

নিজস্ব প্রতিবেদক:
  • আপলোড টাইম : ০৭:৫৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১৬ বার পড়া হয়েছে

দামুড়হুদা উপজেলায় ৮ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তারই চাচাতো দাদা ফয়েক খা’র (৫০) বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের খাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিকেলে শিশুটির মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত ফয়েজ খা’র বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ফয়েজ খা একই বাড়ির ইয়াকুব খা’র ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ‘গতকাল দুপুরে নিজ বাড়ির পাশে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলছিল ৮ বছর বয়সী ওই শিশু। এসময় অভিযুক্ত ফয়েজ খা কৌশলে তাকে নিজের ঘরে ডেকে নেয় এবং ধর্ষণচেষ্টা করেন। এসময় ব্যাথায় শিশুটি চিৎকার শুরু করলে ফয়েজ খা তাকে কাউকে কিছু বললে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে শিশুটি বাড়িতে ফিরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার মা রোমানা খাতুনকে পুরো ঘটনা জানায়।’
রোমানা খাতুন বলেন, ‘মেয়ে বাড়িতে ফিরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায় জার শরীরে ব্যাথা করছে। এসময় গ্রামের মা-চাচীরা তার শরীরের গোপন স্থানে ফোলা ও ক্ষত দেখতে পায়। বিষয়টি জানাজানি হলে ফয়েজ খা’ ঘটনা অস্বীকার করে এবং আমাকে ও মেয়েকে ঘরে আটকে রাখে যেন পুলিশের কাছে অভিযোগ না করি। থানায় যাওয়ার কথা শুনে সে বড় দা নিয়ে আমাদের মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে। এসময় ফয়েজ খা পালিয়ে যায়।’
শিশুটির মামা সাইদুর রহমান বলেন, ‘এটা প্রথম নয়, এর আগেও একই ব্যক্তি আমার ভাগ্নিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছে। সেবার পরিবারের কথা ভেবে থানায় জানানো হয়নি। এবারও ফয়েজ তাকে ভয় দেখিয়েছিল- কাউকে কিছু বললে তাকে মেরে ফেলা হবে। আমরা এই পশুর বিচার চাই।’
ঘটনার বিষয়ে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনাটি জানার পরপরই শিশুটির বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। শিশুটি শারীরিক ও মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়েছে। এমন অমানবিক ঘটনার দ্রুত বিচার হওয়া উচিত। এলাকাবাসীও দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়।’
খবর পেয়ে বিকেলে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং ভুক্তভোগী শিশুকে তার মায়ের সঙ্গে থানায় নিয়ে আসেন। পরে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে পরিবারের সদস্যরা শিশুটিকে জরুরি বিভাগে আনে। ঘটনার প্রাথমিক বিবরণ শুনে তাকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির মা জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে।’
ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ভুক্তভোগীর মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু হয়েছে অভিযুক্ত ফয়েজ খা ঘটনার পর থেকেই পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিশুটির চিকিৎসা ও প্রাথমিক তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

দামুড়হুদার খা পাড়ায় ৮ বছর বয়সী শিশুকে ধর্ষণচেষ্টা

হাসপাতালে ভর্তি, দাদার বিরুদ্ধে মামলা

আপলোড টাইম : ০৭:৫৩:৩৫ অপরাহ্ন, শনিবার, ১২ এপ্রিল ২০২৫

দামুড়হুদা উপজেলায় ৮ বছর বয়সী এক শিশুকে ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে তারই চাচাতো দাদা ফয়েক খা’র (৫০) বিরুদ্ধে। গতকাল শুক্রবার বেলা দেড়টার দিকে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের খাপাড়া গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। বিকেলে শিশুটির মা বাদী হয়ে অভিযুক্ত ফয়েজ খা’র বিরুদ্ধে দামুড়হুদা মডেল থানায় মামলা দায়ের করেছেন। অভিযুক্ত ফয়েজ খা একই বাড়ির ইয়াকুব খা’র ছেলে।
পরিবার সূত্রে জানা যায়, ‘গতকাল দুপুরে নিজ বাড়ির পাশে অন্যান্য শিশুদের সঙ্গে খেলছিল ৮ বছর বয়সী ওই শিশু। এসময় অভিযুক্ত ফয়েজ খা কৌশলে তাকে নিজের ঘরে ডেকে নেয় এবং ধর্ষণচেষ্টা করেন। এসময় ব্যাথায় শিশুটি চিৎকার শুরু করলে ফয়েজ খা তাকে কাউকে কিছু বললে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে ছেড়ে দেয়। পরে শিশুটি বাড়িতে ফিরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে তার মা রোমানা খাতুনকে পুরো ঘটনা জানায়।’
রোমানা খাতুন বলেন, ‘মেয়ে বাড়িতে ফিরে কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানায় জার শরীরে ব্যাথা করছে। এসময় গ্রামের মা-চাচীরা তার শরীরের গোপন স্থানে ফোলা ও ক্ষত দেখতে পায়। বিষয়টি জানাজানি হলে ফয়েজ খা’ ঘটনা অস্বীকার করে এবং আমাকে ও মেয়েকে ঘরে আটকে রাখে যেন পুলিশের কাছে অভিযোগ না করি। থানায় যাওয়ার কথা শুনে সে বড় দা নিয়ে আমাদের মেরে ফেলার হুমকিও দেয়। পরে খবর পেয়ে পুলিশ আমাদের উদ্ধার করে। এসময় ফয়েজ খা পালিয়ে যায়।’
শিশুটির মামা সাইদুর রহমান বলেন, ‘এটা প্রথম নয়, এর আগেও একই ব্যক্তি আমার ভাগ্নিকে শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত করার চেষ্টা করেছে। সেবার পরিবারের কথা ভেবে থানায় জানানো হয়নি। এবারও ফয়েজ তাকে ভয় দেখিয়েছিল- কাউকে কিছু বললে তাকে মেরে ফেলা হবে। আমরা এই পশুর বিচার চাই।’
ঘটনার বিষয়ে দামুড়হুদা সদর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমি ঘটনাটি জানার পরপরই শিশুটির বাড়িতে গিয়ে তার পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। শিশুটি শারীরিক ও মানসিকভাবে খুবই ভেঙে পড়েছে। এমন অমানবিক ঘটনার দ্রুত বিচার হওয়া উচিত। এলাকাবাসীও দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চায়।’
খবর পেয়ে বিকেলে দামুড়হুদা মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হুমায়ুন কবীর ঘটনাস্থলে পৌঁছান এবং ভুক্তভোগী শিশুকে তার মায়ের সঙ্গে থানায় নিয়ে আসেন। পরে শিশুটিকে চিকিৎসার জন্য চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।
চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক ডা. আল ইমরান জুয়েল বলেন, ‘রাত ১১টার দিকে পরিবারের সদস্যরা শিশুটিকে জরুরি বিভাগে আনে। ঘটনার প্রাথমিক বিবরণ শুনে তাকে গাইনি ওয়ার্ডে ভর্তি করা হয়েছে। শিশুটির মা জানিয়েছেন, শিশুটিকে ধর্ষণ চেষ্টা করা হয়েছে।’
ওসি হুমায়ুন কবীর বলেন, ‘ভুক্তভোগীর মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেছেন। অভিযোগের ভিত্তিতে একটি মামলা রুজু হয়েছে অভিযুক্ত ফয়েজ খা ঘটনার পর থেকেই পলাতক। তাকে গ্রেপ্তারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। শিশুটির চিকিৎসা ও প্রাথমিক তদন্ত শেষে পরবর্তী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’