ইপেপার । আজ শুক্রবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৫

স্বামীর নির্যাতন ও প্রতারণার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

ভ্রাম্যমাণ প্রতিবেদক, আলমডাঙ্গা:
  • আপলোড টাইম : ০৮:৪২:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫
  • / ১৫ বার পড়া হয়েছে

আলমডাঙ্গার জাহাপুর গ্রামের হাসিনা খাতুন নামের এক গৃহবধূ স্বামীর নির্যাতন ও প্রতারণা বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বেলগাছী ইউনিয়নের ফরিদুপুর গ্রামের আশারফ আলীর মেয়ে হাসিনা খাতুন বলেন, প্রায় ২০ বছর পূর্বে উপজেলার জাহাপুর গ্রামের ঘোষপাড়ার মৃত মসলেম মণ্ডলের ছেলে শুকুর আলীর সাথে শরীয়াহ মোতাবেক তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ১৬ বছরের একটি মেয়ে ও ১২ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর সংসারের কথা চিন্তা করে হাসিনা খাতুন বাবার বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে ২ লাখ টাকা এনে স্বামী শুকুর আলীকে দেন। ৮ বছর আগে তার স্বামী শুকুর আলী বিদেশ যাওয়ার জন্য তাকে আবারও বাবার বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে নিয়ে আসতে বলে। ছেলে-মেয়ে ও সংসারের সুখের কথা চিন্তা করে ফের বাবার বাড়ির থেকে জমি বিক্রি করে বিদেশ যাওয়ার জন্য ৫ লাখ টাকা দেন। সেই টাকা নিয়ে তার স্বামী মালয়েশিয়ায় যায়। মালয়েশিয়া গিয়ে মাঝে মাঝে টাকা পাঠাতো। ৫ বছর পর ছুটিতে বাড়ি আসে শুকুর আলী। বাড়ি এসে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে পরিবারের লোকজন বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়। কয়েক মাস পর শুকুর আলী আবারও মালয়েশিয়া ফিরে যেতে চান । বাধ্য হয়ে হাসিনা খাতুন আবারও তার বাবার বাড়ি থেকে শেষ সম্বল বাড়ির ভিটা বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা এনে দেন। এবার মালয়েশিয়া গিয়ে স্ত্রী-সন্তানের খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করে দেয় শুকুর আলী। পরে বাধ্য হয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে সে তার মামার বাড়িতে গিয়ে উঠে। গত কয়েকদিন আগে তার ভাশুর মেছের মন্ডল ও দেবর ঝন্টু মণ্ডলের মাধ্যমে জানতে পারে তার স্বামী বাড়ি আসবে। তিনি ছেলে-মেয়ে নিয়ে জাহাপুর গ্রামে যান।

তিনি আরও বলেন, ৬ এপ্রিল তার স্বামী বাড়িতে এসে তাকে ও তার ছেলে-মেয়েদের গালিগালাজ করে। রাতে ঘরে ঘুমাতে গেলে ঘর থেকে বের করে দেয়। ৭ এপ্রিল সকালে তার স্বামী তাকে ঘরে আটক করে নির্যাতন শুরু করেন। একপর্যায়ে গলা চেপে ধরে হত্যা করার চেষ্টা করেন। পরে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে। এরপর তার মামারা গিয়ে তাকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হারদী নিয়ে ভর্তি করে। ৮ এপ্রিল হাসিনার মামারা জাহাপুর গিয়ে শুকুর আলীর বাড়িতে গেলে সে একটি কম্পিউটারের টাইপকৃত ভুয়া তালাক নামা দেখিয়ে বলে ২৩ সালে হাসিনাকে তালাক দিয়েছি। এ কথা শুনে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। তিনি তার দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে বিচারের দাবিতে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে সু-বিচার প্রার্থনা করেছেন।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

স্বামীর নির্যাতন ও প্রতারণার বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন

আপলোড টাইম : ০৮:৪২:৪২ পূর্বাহ্ন, শুক্রবার, ১১ এপ্রিল ২০২৫

আলমডাঙ্গার জাহাপুর গ্রামের হাসিনা খাতুন নামের এক গৃহবধূ স্বামীর নির্যাতন ও প্রতারণা বিচার চেয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার তিনি এই সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বেলগাছী ইউনিয়নের ফরিদুপুর গ্রামের আশারফ আলীর মেয়ে হাসিনা খাতুন বলেন, প্রায় ২০ বছর পূর্বে উপজেলার জাহাপুর গ্রামের ঘোষপাড়ার মৃত মসলেম মণ্ডলের ছেলে শুকুর আলীর সাথে শরীয়াহ মোতাবেক তার বিয়ে হয়। দাম্পত্য জীবনে তাদের ১৬ বছরের একটি মেয়ে ও ১২ বছরের একটি ছেলে সন্তান রয়েছে। বিয়ের কিছুদিন পর সংসারের কথা চিন্তা করে হাসিনা খাতুন বাবার বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে ২ লাখ টাকা এনে স্বামী শুকুর আলীকে দেন। ৮ বছর আগে তার স্বামী শুকুর আলী বিদেশ যাওয়ার জন্য তাকে আবারও বাবার বাড়ি থেকে জমি বিক্রি করে নিয়ে আসতে বলে। ছেলে-মেয়ে ও সংসারের সুখের কথা চিন্তা করে ফের বাবার বাড়ির থেকে জমি বিক্রি করে বিদেশ যাওয়ার জন্য ৫ লাখ টাকা দেন। সেই টাকা নিয়ে তার স্বামী মালয়েশিয়ায় যায়। মালয়েশিয়া গিয়ে মাঝে মাঝে টাকা পাঠাতো। ৫ বছর পর ছুটিতে বাড়ি আসে শুকুর আলী। বাড়ি এসে স্ত্রীর ওপর নির্যাতন শুরু করে। এ পরিস্থিতিতে পরিবারের লোকজন বসে বিষয়টি মীমাংসা করে দেয়। কয়েক মাস পর শুকুর আলী আবারও মালয়েশিয়া ফিরে যেতে চান । বাধ্য হয়ে হাসিনা খাতুন আবারও তার বাবার বাড়ি থেকে শেষ সম্বল বাড়ির ভিটা বিক্রি করে ৫ লাখ টাকা এনে দেন। এবার মালয়েশিয়া গিয়ে স্ত্রী-সন্তানের খোঁজখবর নেওয়া বন্ধ করে দেয় শুকুর আলী। পরে বাধ্য হয়ে ছেলে-মেয়ে নিয়ে সে তার মামার বাড়িতে গিয়ে উঠে। গত কয়েকদিন আগে তার ভাশুর মেছের মন্ডল ও দেবর ঝন্টু মণ্ডলের মাধ্যমে জানতে পারে তার স্বামী বাড়ি আসবে। তিনি ছেলে-মেয়ে নিয়ে জাহাপুর গ্রামে যান।

তিনি আরও বলেন, ৬ এপ্রিল তার স্বামী বাড়িতে এসে তাকে ও তার ছেলে-মেয়েদের গালিগালাজ করে। রাতে ঘরে ঘুমাতে গেলে ঘর থেকে বের করে দেয়। ৭ এপ্রিল সকালে তার স্বামী তাকে ঘরে আটক করে নির্যাতন শুরু করেন। একপর্যায়ে গলা চেপে ধরে হত্যা করার চেষ্টা করেন। পরে প্রতিবেশীরা তাকে উদ্ধার করে। এরপর তার মামারা গিয়ে তাকে নিয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হারদী নিয়ে ভর্তি করে। ৮ এপ্রিল হাসিনার মামারা জাহাপুর গিয়ে শুকুর আলীর বাড়িতে গেলে সে একটি কম্পিউটারের টাইপকৃত ভুয়া তালাক নামা দেখিয়ে বলে ২৩ সালে হাসিনাকে তালাক দিয়েছি। এ কথা শুনে তিনি দিশেহারা হয়ে পড়েন। তিনি তার দুই ছেলে-মেয়ে নিয়ে বিচারের দাবিতে পথে পথে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। তিনি আলমডাঙ্গা থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। তিনি প্রশাসনের কাছে সু-বিচার প্রার্থনা করেছেন।