স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামীর যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড
- আপলোড টাইম : ১০:৫২:০৯ পূর্বাহ্ন, বৃহস্পতিবার, ১০ এপ্রিল ২০২৫
- / ১৯ বার পড়া হয়েছে
মেহেরপুরে স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী তসিম উদ্দিনকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড ও ২০ হাজার টাকা জরিমানা এবং অনাদায়ে আরও ৬ মাসের সশ্রম কারাদণ্ডাদেশ দেওয়া হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে মেহেরপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মঞ্জুরুল ইমাম স্ত্রী হত্যার দায়ে স্বামী তসিমউদ্দিনকে এই সাজা দেন। সাজাপ্রাপ্ত তসিম উদ্দিন মেহেরপুর সদর উপজেলার চাঁদবিল গ্রামের দেলু শেখের ছেলে।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০১৭ সালের ২৬ এপ্রিল রাতে তসিমউদ্দিন তার স্ত্রী রওশনারা খাতুনকে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে ঘরে বাঁশের আড়ার সাথে ওড়না দিয়ে পেঁচিয়ে লাশ ঝুলিয়ে রাখে এবং সে আত্মহত্যা করেছে বলে প্রচার করেন। পরদিন সকালে পুলিশ গিয়ে লাশ উদ্ধার করে এবং ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করে। ওই ঘটনায় মেহেরপুর সদর থানায় একটি মামলা করা হয়। ময়নাতদন্তে শ্বাসরোধ করে হত্যা করা হয়েছে মর্মে ময়নাতদন্তকারী কর্মকর্তা রিপোর্ট দেন। রিপোর্ট পাওয়ার পর তসিম উদ্দিন শেখের ছেলে রাজন তার বাবার দায়ের করা এজাহার বাতিল করে ২০১৭ সালের ৮ জুন একটি এজাহার দাখিল করেন।
ছেলের দায়ের করা এজাহারে জানানো হয়, তার মা শারীরিকভাবে অসুস্থ হওয়ায় প্রতিদিন ওষুধ সেবন করতেন। ঘটনার দিন ওষুধ খেতে রাজি না হওয়ায় স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে রাজনের মা অর্থাৎ তসিমের স্ত্রী রওশনারা খাতুন মৃত্যুবরণ করেন। পরে তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে পাশের ঘরে আড়ের সঙ্গে লাশ ঝুলিয়ে রাখেন। আত্মহত্যার মামলাটি পরে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণ করা হয়।
তদন্তকারী অফিসার মেহেরপুর সদর থানার তৎকালীন এসআই খন্দকার রবিউল ইসলাম প্রাথমিক তদন্ত শুরু করেন। পরে তার বদলির কারণে সিআইডিকে তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়। ওই সময় নিহত রওশন আরার স্বামী তসিমউদ্দিনকে আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ করলে ১৬৪ ধারায় হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। মামলা তদন্তকারী কর্মকর্তা প্রাথমিক তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন।
মামলায় মোট ১৬ জন সাক্ষী তাদের সাক্ষ্য প্রদান করেন। এতে আসামি তসিমউদ্দীন দোষী প্রমাণিত হওয়ায় আদালত তাকে দণ্ডবিধি ৩০২ ধারা মতে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদণ্ড এবং ২০ হাজার টাকা জরিমানা, অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডাদেশ দেন। মামলায় রাষ্ট্রপক্ষে পাবলিক প্রসিকিউটর সাইদুর রাজ্জাক এবং আসামির পক্ষে আসাদুল আজম খোকন কৌশলী ছিলেন।