আলমডাঙ্গায় গুণী শিক্ষক রইচ উদ্দিনের ইন্তেকাল
- আপলোড টাইম : ০৮:৩৮:২১ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
- / ১৪ বার পড়া হয়েছে
আলমডাঙ্গা উপজেলার কুলপালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক সহকারী প্রধান শিক্ষক শ্রদ্ধাভাজন রইচ উদ্দিন আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাহি রাজিউন। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স হয়েছিল ৬৬ বছর। গতকাল মঙ্গলবার বেলা সাড়ে তিনটার দিকে নিজ বাড়ি কুলপালায় তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। তিনি দীর্ঘদিন ধরে ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ ও লিভারজনিত রোগে ভুগছিলেন। উন্নত চিকিৎসার জন্য সম্প্রতি ঢাকাসহ বিভিন্ন স্থানে চিকিৎসা নিলেও শেষ পর্যন্ত আর ফেরা হলো না এই শিক্ষাগুরুর।
কুলপালা পশ্চিমপাড়ার মরহুম ইয়াস উদ্দিন মণ্ডলের জ্যেষ্ঠ পুত্র রইচ উদ্দিন তার কর্মজীবন শুরু করেন নিজ গ্রামের কুলপালা বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে। শিক্ষাক্ষেত্রে অসামান্য অবদান রাখার স্বীকৃতিস্বরূপ তিনি একাধিকবার আলমডাঙ্গা উপজেলার শ্রেষ্ঠ শিক্ষক হিসেবে নির্বাচিত হন। ব্যক্তিজীবনে তিনি ছিলেন অদম্য প্রচেষ্টার এক অনন্য উদাহরণ। কর্মজীবনের ব্যস্ততার মাঝেও ৬০ বছর বয়সে এইচএসসি পাশ করেন, পরে ডিগ্রিও অর্জন করেন। তার এই ব্যতিক্রমী অর্জন বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোড়ন তোলে। বেসরকারি বিদ্যালয়ে শিক্ষকতা শুরু করলেও বিদ্যালয়টি পরবর্তীতে সরকারি হওয়ায় একজন সরকারি শিক্ষক হিসেবেই অবসর গ্রহণ করেন তিনি।
মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, দুই পুত্র ও অসংখ্য গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। বড় ছেলে হাসান শাহরিয়ার সুজন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পড়ালেখা শেষ করে বর্তমানে চুয়াডাঙ্গায় টেলিটকে কর্মরত। ছোট ছেলে রাশেদ শাহরিয়ার ছোটন সিঙ্গাপুর প্রবাসী।
এদিকে, গতকাল বাদ মাগরিব কুলপালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠেই তাঁর নামাজে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে গ্রামের কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। জানাজায় অংশ নেন চিৎলা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান, আব্দুস সালাম বিপ্লব, গোকুলখালী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুর রাজ্জাক, কুলপালা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক প্রধান শিক্ষক আখতার হোসেন, শিক্ষক ইসরাইল হোসেন ও আব্দুল খালেক, জেলা যুবলীগের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক আসাদুজ্জামান কবির, সোনালী ব্যাংক গোকুলখালী শাখার ব্যবস্থাপক ছানোয়ার হোসেন, অগ্রণী ব্যাংক হারদী শাখার ব্যবস্থাপক ফখরউদ্দিন, সাংবাদিক আলমগীর কবীর শিপলু, রামনগর কলাবাড়ী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক মাহমুদুল হাসান শিপনসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষক ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ।
জানাজার নামাজ পরিচালনা করেন বিশিষ্ট ইসলামি বক্তা মাওলানা হারুন অর রশীদ। গুণী এই শিক্ষকের মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার বিদ্যালের সাবেক ছাত্রদের অনেকে বলেন, শিক্ষা-অঙ্গন হারাল এক আদর্শ শিক্ষককে-যার মতো মানুষ বারবার জন্মায় না।