ঝিনাইদহে সিগারেট কোম্পানির ফাঁদে চাষিরা, প্রতিনিয়ত বাড়ছে তামাক চাষ
নষ্ট হচ্ছে জমির উর্বরতা, বিপণ্ন পরিবেশ ও প্রাণ-প্রকৃতি
- আপলোড টাইম : ০৮:১২:২৬ পূর্বাহ্ন, বুধবার, ৯ এপ্রিল ২০২৫
- / ৬১ বার পড়া হয়েছে
ঝিনাইদহের চাষিরা ধীরে ধীরে সিগারেট কোম্পানির ফাঁদে পড়ে তামাক চাষে উদ্বুদ্ধ হচ্ছেন। গত বছর জেলায় ১৯৩ হেক্টর জমিতে তামাক চাষ হলেও এ বছর তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২২৯ হেক্টরে। পরিবেশ ও স্বাস্থ্যঝুঁকির পরও বাড়ছে তামাক চাষ, বিপন্ন হচ্ছে প্রাণ ও প্রকৃতি। চাষিরা জানান, তামাক কোম্পানির নানা প্রলোভনে তারা ক্ষতিকর এই চাষের দিকে ঝুঁকছেন। অধিক রাসায়নিক সার ব্যবহারে জমির স্বাভাবিক উর্বরতা হারিয়ে যাচ্ছে। ফলে এসব জমিতে অন্য ফসল ভালো হচ্ছে না।
কৃষকেরা অভিযোগ করে বলেন, তামাক চাষের ক্ষতিকর দিক সম্পর্কে কৃষি বিভাগ থেকে তাদের কোনো ধারণা দেওয়া হয় না। সরেজমিনে হরিণাকুণ্ডু, মহেশপুর, সদর ও শৈলকূপা উপজেলার বিভিন্ন মাঠে বিস্তীর্ণ তামাকখেত দেখা গেছে। কৃষকরা বলেন, ধান, গম ও ভুট্টা বিক্রি করে একসঙ্গে বড় অঙ্কের টাকা মেলে না। অথচ তামাকে লাভ বেশি। তামাক কোম্পানিগুলো অগ্রিম টাকা, সার ও পরামর্শ দিয়ে কৃষকদের আগ্রহী করে তোলে। চাঁদপুর ইউনিয়নের বাসুদেবপুর গ্রামের কৃষক আলী হোসেন জানান, তিনি চার বিঘা জমিতে তামাক চাষ করেছেন। প্রতি বিঘায় খরচ প্রায় ৯০-৯৫ হাজার টাকা হলেও লাভ ভালো। তামাকের মান অনুযায়ী গ্রেডভেদে দাম নির্ধারণ হয়। এ গ্রেডের তামাকের প্রতি কেজির দাম এখনো ২২৬ টাকা। তামাক ক্রয়কারী প্রতিষ্ঠান গ্লোবাল টোব্যাকো লিমিটেডের সুপারভাইজার জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘কোনো কৃষককে তামাক চাষে বাধ্য করা হয় না। লাভের আশায় তারাই চাষ করেন।’ সাবেকবিন্নি গ্রামের চাষি মনতাজ মণ্ডল বলেন, ‘তামাক চাষ করে ভুল করেছি। জমির উর্বরতা নষ্ট হয়ে গেছে। এখন ওই জমিতে অন্য ফসল ভালো হচ্ছে না। তামাক পোড়ানোর ধোঁয়ায় পরিবেশও দূষিত হচ্ছে।’ ঝিনাইদহ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ষষ্টিচন্দ্র রায় বলেন, ‘গত বছরের তুলনায় এ বছর তামাক চাষ বেড়েছে। সবচেয়ে বেশি চাষ হয়েছে হরিণাকুণ্ডু উপজেলায়। আমরা সচেতনতা বাড়ানোর চেষ্টা করছি। তবু চাষ থামছে না।’