ইপেপার । আজ মঙ্গলবার, ২২ এপ্রিল ২০২৫
ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহসহ সারাদেশের রাজপথ উত্তাল

ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের আহ্বান

কাফনে মোড়ানে শিশুর প্রতীকী মরদেহ প্রদর্শন ও নেতানিয়াহু’র কুশপুত্তলিকা দাহ

সমীকরণ প্রতিবেদন
  • আপলোড টাইম : ০৫:৩৪:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫
  • / ২৪ বার পড়া হয়েছে

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের লাগাতার বোমা হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, থানা এবং গ্রাম পর্যায়ে একযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এসব বিক্ষোভ থেকে গাজায় নির্বিচারে হামলা ও গণহত্যা বন্ধে কার্যকর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানানো হয়। এতে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিশ্বব্যাপী হরতাল কর্মসূচির সঙ্গেও সংহতি প্রকাশ করেন। বিক্ষোভকারীরা দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

চুয়াডাঙ্গা:
‘চুয়াডাঙ্গার সকল সচেতন ও বিবেকবান জনগণ’ ব্যানারে শহরের প্রাণকেন্দ্র শহিদ হাসান চত্বর থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন। হাতে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে তারা ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানান এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান। এসময় চুয়াডাঙ্গার রাজপথ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শহিদ হাসান চত্বরে এসে শেষ হয়।

এরপর সেখানে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের ওপর বর্বর আগ্রাসন চালিয়ে আসছে। এই অমানবিকতা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে।’ তারা আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মুসলিম বিশ্বের ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন।’ বক্তারা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, অবিলম্বে এই নির্মমতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সমাবেশে ইসরায়েলি পণ্যের বিরুদ্ধে বর্জনের ডাকও দেওয়া হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল ইকবাল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রতিনিধি এস এম ফাহিম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম হোসেন, সদস্যসচিব সাফফাতুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্যসচিব রনি বিশ্বাস, মুখ্য সংগঠক সজিবুল ইসলাম, ইন্তিফাদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রতিনিধি সাফায়েত আদনান প্রমুখ।

এদিকে, বিকেলে আছরের নামাজের পর গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতে ইসলামী। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সামনে মুক্তমঞ্চ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে কোর্ট রোড, বড়বাজার, কবরী রোড হয়ে পুনরায় মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা আমির অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন।

তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বের মুসলমানরা ইচ্ছা করলে একসঙ্গে থুতু ছুড়ে ইসরায়েলকে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দিতে পারে। জাতিসংঘ, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ শক্তিশালী দেশগুলো এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করায় আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘মুসলিম বিশ্ব বিবেকবান হলে তারা গাজার শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের পাশে দাঁড়াবে। আজ হোক, কাল হোক-ইসরায়েল টিকে থাকতে পারবে না, ধ্বংস হয়ে যাবে। যতদিন পর্যন্ত এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ না হবে, নিষ্পাপ শিশুদের হত্যার বিচার না হবে, আমরা থেমে থাকব না। আমাদের শরীরে শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত প্রতিবাদের আন্দোলন চলবে।’

এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আজিজুর রহমান, সেক্রেটারি অ্যাড. আসাদুজ্জামান, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল, আব্দুল কাদের, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি সাগর আহমেদ প্রমুখ। তারা বলেন, বিশ্বের মুসলিম নেতাদের এখনই ঐক্যবদ্ধভাবে মানবতার শত্রু ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং গাজায় মুসলিমদের জীবন রক্ষা করতে হবে। বক্তারা ইসরায়েলি পণ্যের বর্জনেরও আহ্বান জানান।

একই দিনে বিকেলে ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা ও ইসলামী যুব আন্দোলন সদর থানা শাখা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা উলামা পরিষদ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামান সজিবের সভাপতিত্বে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যার প্রতিবাদে এবং বিশ্বব্যাপী আহুত হরতালের সমর্থনে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা উলামা পরিষদ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই বিক্ষোভ কর্মসূচি আসরের নামাজের পর চুয়াডাঙ্গা শহরের থানা মসজিদ সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে সমবেত হয়ে শুরু হয়। সমাবেশ শেষে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক শহিদ আবুল কাশেম সড়ক, পৌরসভা মোড়, কবরী রোড, কলেজ রোড, কোর্ট মোড় দোয়েল চত্বর প্রদক্ষিণ করে বড় বাজারের শহিদ হাসান চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা উলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি জুনাইদ আল হাবিবী, সেক্রেটারি মুফতি মোস্তফা কামাল কাসেমী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামান সজিব, সহসভাপতি মাওলানা জহুরুল ইসলাম আজিজী এবং সেক্রেটারি তুষার ইমরান সরকার।

বক্তারা বলেন, ‘ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী শক্তি, জারজ-দখলদার রাষ্ট্র ইসরাইল আমেরিকার সহায়তায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা উপত্যকা ও রাফাহ শহর তারা বোমার আঘাতে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে। নারী-শিশুসহ সকল মুসলমানকে তারা পাখির মতো নির্মমভাবে হত্যা করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। গাজার জনগণ আজ বিশ্বব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে, আমরা সেই কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানাতে মাঠে নেমেছি। গাজার ভাইদের বলতে চাই-আমরা তোমাদের পাশে আছি।’

বক্তারা আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানাই, গাজার মুসলমানদের সমর্থনে যা কিছু করা প্রয়োজন, তা তাৎক্ষণিকভাবে গ্রহণ করুন। এ দেশের কোটি কোটি জনতা আপনাকে সহযোগিতা করবে। মুসলিম রাষ্ট্রনেতারা যদি আজ ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতেন, তাহলে ইসরাইল কখনোই আমেরিকার সহযোগিতায় গাজায় গণহত্যা চালাতে পারত না। আমরা সকল মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের বলছি, আপনারা আল্লাহকে ভয় করুন, গাজার নিপীড়িত মানুষের পক্ষে অবস্থান নিন। ইহুদিবাদী ইসরাইল ও আমেরিকার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমান এবং আল্লাহর রহমত আপনাদের সঙ্গে থাকবে।’ এছাড়াও, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশু হত্যার প্রতিবাদে ‘ডেমোনেস্ট্রেশন’ কর্মসূচি পালন করেছে ন্যাশনাল ডক্টর্স ফোরাম (এনডিএফ) চুয়াডাঙ্গা শাখা। গতকাল বেলা একটায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন এনডিএফ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি ডা. মাহাবুবুর রহমান মিলন, সাধারণ সম্পাদক ও অর্থপেডিক কনসালটেন্ট রোকনুজ্জামান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামান মালিক খোকন, ডা. আব্দুর রহমান, ডা. সাজিদ হাসান, ডা. ফাতিমা হকসহ সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও চিকিৎসকরা অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ মানবতাবিরোধী অপরাধ। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত দ্রুত এই সহিংসতা বন্ধে কার‌্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’

আলমডাঙ্গা:
অব্যহত এই গণহত্যার প্রতিবাদে আলমডাঙ্গায় ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে জোরালো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষোভকারীরা আবেগঘন ও প্রতিবাদমূলক স্লোগান দেয়। বিকেল পাঁচটায় উপজেলা মডেল মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এরপর ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির আওতায় উপজেলা শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। এসময় আলমডাঙ্গা শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। কর্মসূচিতে বিএনপি আলমডাঙ্গা উপজেলা শাখা, ছাত্রদল, জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, উপজেলা ওলামা পরিষদ, ইসলামী ছাত্রশিবির, বণিক সমিতি, গার্মেন্টস সমিতি, কাপড় ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন একযোগে অংশ নেয়। আল-তায়েবা দোকান মোড়ে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান, সমন্বয়ক মুসাব আলী, কাজল, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক জাহিদ হাসান শুভ, মাওলানা ইমদাদুল হক, মাওলানা আকরাম হোসেন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আক্তার হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, গাজায় মুসলিম ভাই-বোনদের ওপর ইসরায়েলি হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধ। বিশ্ব সম্প্রদায়ের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সামর্থ্য থাকলে আলমডাঙ্গার ১০ হাজার ছাত্র-জনতা ফিলিস্তিনে গিয়ে লড়াইয়ে অংশ নিতো। বিক্ষোভ শেষে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের উপজেলা সভাপতি মাওলনা আকরাম হোসেনের পরিচালনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

দর্শনা:
ইসরাইল কর্তৃক নিরীহ মুসলিমদের ওপর হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে দর্শনা থানা উলামা পরিষদ ও তওহীদি জনতা। গতকাল বাদ আছর এ কর্মসূচিতে অংশ নেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। মিছিলে ইসরাইলি পণ্য বর্জন, নেতানিয়াহুর ফাঁসি ও যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানানো হয়। শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরাও এতে যোগ দেন। দর্শনা মুক্ত মঞ্চ থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। সভাপতিত্ব করেন উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল মালেক। বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জুনায়েদ আজাদ, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল বাসার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুক প্রমুখ। এ সময় দর্শনার চারটি প্রবেশমুখে ১৫ মিনিট যান চলাচল বন্ধ থাকে। শেষে দর্শনা চৌরাস্তা মোড়ে নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা ও ইসরাইলের পতাকা পোড়ানো হয়। মিছিল ও সমাবেশ পরিচালনা করেন ইউনুস আলী ও মাওলানা আবু জাফর।

জীবননগর:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জীবননগরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেল চারটায় জীবননগর শহরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েক শতাধিক মানুষ অংশ নেয়। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে যোগ দেন। ‘ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, ইসরাইল নিপাত যাক’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, আল আকসা জিন্দাবাদ’সহ নানা স্লোগানে মুখরিত হয় মানববন্ধনস্থল। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জীবননগর শাখার সভাপতি মাওলানা সাজেদুর রহমান বলেন, গাজায় শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষের ওপর যে নৃশংসতা চলছে, তা রাজনৈতিক নয়, এটি চরম মানবিক ও নৈতিক সংকট। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, মানবিক করিডোরে হামলা ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ধ্বংস সভ্যতার চরম অবক্ষয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এখন শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ নয়, রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানবতার পক্ষে কণ্ঠ মিলিয়ে আওয়াজ তোলার সময় এসেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশের নিষ্ক্রিয়তাকে সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণ বলে অভিহিত করেন। তারা ইসরায়েলের গণহত্যা এবং তা সমর্থনকারী পরাশক্তিগুলোর তীব্র নিন্দা জানান। পাশাপাশি আরব বিশ্বের নিরবতা ও জাতিসংঘের নিষ্ক্রিয়তায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেন।

আন্দুলবাড়ীয়া:
আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের তাওহীদি জনতা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ও হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। গতকাল আছর নামাজের পর বাজারের দোয়েল চত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশে বক্তৃতা দেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইন, মুফতি শহিদুল ইসলাম সোহেল আশরাফি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ, খেলাফত মজলিস, জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতারা। ফিলিস্তিনি জাতীয় পতাকা, কালো পতাকা, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভকারীরা বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। দোয়েল চত্বরে অনুষ্ঠিত পথসভা সঞ্চালনা করেন মাদরাসা মুহতামিম মাওলানা তরিকুল ইসলাম মাহমুদী। প্রেসক্লাব, মাদরাসা, মসজিদ কমিটি ও সাধারণ জনগণসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে অংশ নেন।

মেহেরপুর:
গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে গতকাল সকালে মেহেরপুর পৌরসভার সামনে মানববন্ধন করে সচেতন মহল। এতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে। ইসরায়েলকে গণহত্যার দায়ে বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার আহ্বান জানান তারা। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রোকন, খন্দকার, সুরুজ ফয়সাল, জাহিদ, রাহিদুজ্জামান, আসিফ খন্দকারসহ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ। বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। কোর্ট মসজিদ থেকে মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে। বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইকবাল হুসাইন, নায়েবে আমির মাওলানা মাহবুবুল আলম, রাজনীতি সেক্রেটারি কাজী রুহুল আমিন, সদর উপজেলা আমির মাওলানা সোহেল রানা, পৌর আমির সোহেল রানা ডলার, খেলাফত মজলিস সভাপতি হুসাইন আহমেদ, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি আব্দুর রউফ মুকুল, ব্যবসায়ী বিভাগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা আরোও বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতা মানবাধিকার লঙ্ঘন। ইসরায়েলের পণ্য বর্জন ও নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে বলেন, বিশ্ব যদি থামাতে না পারে, প্রতিবাদ আরও তীব্র হবে।

গাংনী:
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে গাংনীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গাংনী উপজেলা শাখার আমির ডা. মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য নাজমুল হুদা, সূরা সদস্য মাওলানা আব্দুল মজিদ, উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, বায়তুলমাল সম্পাদক সামসুল হুদা, নায়েবে আমির মাওলানা মফিজুর রহমান, পৌর সেক্রেটারি ওয়ায়েস কুরুনি জামিল, বায়তুলমাল ও রাজনৈতিক সেক্রেটারি জিল্লুর রহমান এবং কাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলম হুসাইন। বক্তারা বলেন, বিশ্ব বিবেক আজ নিশ্চুপ। মানবাধিকার কোথায়? শক্তি সঞ্চয় করে প্রতিরোধ গড়তে হবে। মুসলিম হিসেবে লজ্জা হয়, এখনও লড়াইয়ে নামতে পারছি না। বক্তারা ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান।

মুজিবনগর:
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধের দাবিতে তৌহিদী জনতার উদ্যোগে মুজিবনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়। রামনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি কেদারগঞ্জ বাজারে গিয়ে শেষ হয়। বক্তব্য দেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা খান জাহান আলী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুর রশিদ, নায়েবে আমির মাওলানা ফিরাতুল ইসলাম নাইম, সাধারণ সম্পাদক খাইরুল বাসার, ছাত্রশিবির সভাপতি আবু তালহা, খেলাফত মজলিস সাধারণ সম্পাদক আব্বাস উদ্দীন, ইসলামী আন্দোলনের যুব বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক শাওন শেখ প্রমুখ। মাওলানা খান জাহান আলী বলেন, যেসব দোকানে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি হয়, সেগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি। এরপরও বিক্রি হলে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ঝিনাইদহ:
ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ করেছে জনতা। এসময় বিক্ষোভকারীরা কাফনের কাপড় পরে ও প্রতীকী মরদেহ কোলে নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে কয়েক হাজার মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝিনাইদহবাসীর ব্যানারে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পায়রা চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে ঝিনাইদহ ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসাইন, কেসি কলেজের প্রভাষক আলমগীর হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের পক্ষে তৌফিক হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে রত্না খাতুন, কেসি কলেজ ছাত্রদের পক্ষে তাসদিদ হাসানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শহরের পায়রা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুসলিম বিশ্ব আজ বিচ্ছিন্ন। তারা দিনের পর দিন চুপ থাকার কারণে আজ ফিলিস্তিনে মুসলিম ভাই-বোনের প্রাণ ঝরছে। বর্বর ইসরাইল ন্যাক্কারজনকভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে। গাজা উপত্যকা আজ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ইতিহাস দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলকে ক্ষমা করবে না। আমরা সবসময় ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। বক্তারা আরও বলেন, ইসরাইলের সব ধরনের পণ্য ব্যবহার বয়কট করতে হবে। ইসরাইলের দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের বয়কট করতে হবে।

ট্যাগ :

নিউজটি শেয়ার করে ছড়িয়ে দিন

আজকের সমীকরণ ইপেপার

You cannot copy content of this page

ইসরাইলের বর্বরতার বিরুদ্ধে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহসহ সারাদেশের রাজপথ উত্তাল

ফিলিস্তিনের সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মুসলিম বিশ্বের ঐক্যের আহ্বান

কাফনে মোড়ানে শিশুর প্রতীকী মরদেহ প্রদর্শন ও নেতানিয়াহু’র কুশপুত্তলিকা দাহ

আপলোড টাইম : ০৫:৩৪:০০ পূর্বাহ্ন, মঙ্গলবার, ৮ এপ্রিল ২০২৫

ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের লাগাতার বোমা হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে চুয়াডাঙ্গা, মেহেরপুর, ঝিনাইদহসহ দেশের বিভিন্ন জেলা, উপজেলা, থানা এবং গ্রাম পর্যায়ে একযোগে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল সোমবার সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এসব বিক্ষোভ থেকে গাজায় নির্বিচারে হামলা ও গণহত্যা বন্ধে কার্যকর আন্তর্জাতিক পদক্ষেপ এবং ইসরায়েলের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আদালতে বিচারের দাবি জানানো হয়। এতে অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ বিশ্বব্যাপী হরতাল কর্মসূচির সঙ্গেও সংহতি প্রকাশ করেন। বিক্ষোভকারীরা দখলদার ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে গণহত্যার জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে বিচারের আওতায় এনে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি জানান।

চুয়াডাঙ্গা:
‘চুয়াডাঙ্গার সকল সচেতন ও বিবেকবান জনগণ’ ব্যানারে শহরের প্রাণকেন্দ্র শহিদ হাসান চত্বর থেকে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে একটি বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। মিছিলে সাধারণ মানুষ, শিক্ষার্থী, রাজনৈতিক নেতা-কর্মী, বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠনের সদস্যরা অংশ নেন। হাতে প্ল্যাকার্ড, ফেস্টুন ও ব্যানার নিয়ে তারা ফিলিস্তিনের প্রতি সংহতি জানান এবং ইসরায়েলি আগ্রাসনের তীব্র নিন্দা জানান। এসময় চুয়াডাঙ্গার রাজপথ স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়কসমূহ প্রদক্ষিণ করে পুনরায় শহিদ হাসান চত্বরে এসে শেষ হয়।

এরপর সেখানে আয়োজিত মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘ইসরায়েল দীর্ঘদিন ধরে ফিলিস্তিনের নিরীহ জনগণের ওপর বর্বর আগ্রাসন চালিয়ে আসছে। এই অমানবিকতা বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে আরও কঠোর ভূমিকা রাখতে হবে।’ তারা আরও বলেন, ‘ফিলিস্তিনের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষায় মুসলিম বিশ্বের ঐক্য গড়ে তোলা প্রয়োজন।’ বক্তারা জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলোর দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, অবিলম্বে এই নির্মমতা বন্ধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সমাবেশে ইসরায়েলি পণ্যের বিরুদ্ধে বর্জনের ডাকও দেওয়া হয়।

এসময় উপস্থিত ছিলেন জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজ শাখার আহ্বায়ক ফয়সাল ইকবাল, ইসলামী ছাত্র আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রতিনিধি এস এম ফাহিম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন জেলা শাখার আহ্বায়ক আসলাম হোসেন, সদস্যসচিব সাফফাতুল ইসলাম, যুগ্ম সদস্যসচিব রনি বিশ্বাস, মুখ্য সংগঠক সজিবুল ইসলাম, ইন্তিফাদা ফাউন্ডেশন চুয়াডাঙ্গা জেলার প্রতিনিধি সাফায়েত আদনান প্রমুখ।

এদিকে, বিকেলে আছরের নামাজের পর গাজায় ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা ও বর্বরোচিত হামলার প্রতিবাদে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে চুয়াডাঙ্গা জেলা জামায়াতে ইসলামী। চুয়াডাঙ্গা সরকারি কলেজের সামনে মুক্তমঞ্চ থেকে বিক্ষোভ মিছিলটি শুরু হয়ে কোর্ট রোড, বড়বাজার, কবরী রোড হয়ে পুনরায় মুক্তমঞ্চে এসে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা-২ আসনের জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী ও জেলা আমির অ্যাডভোকেট রুহুল আমিন।

তিনি বলেন, ‘সারা বিশ্বের মুসলমানরা ইচ্ছা করলে একসঙ্গে থুতু ছুড়ে ইসরায়েলকে বঙ্গোপসাগরে ভাসিয়ে দিতে পারে। জাতিসংঘ, সৌদি আরব, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ শক্তিশালী দেশগুলো এই বর্বর হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ না করায় আমরা তাদের ধিক্কার জানাই।’ তিনি আরও বলেন, ‘মুসলিম বিশ্ব বিবেকবান হলে তারা গাজার শিশু, নারী ও বৃদ্ধদের পাশে দাঁড়াবে। আজ হোক, কাল হোক-ইসরায়েল টিকে থাকতে পারবে না, ধ্বংস হয়ে যাবে। যতদিন পর্যন্ত এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ না হবে, নিষ্পাপ শিশুদের হত্যার বিচার না হবে, আমরা থেমে থাকব না। আমাদের শরীরে শেষ রক্তবিন্দু থাকা পর্যন্ত প্রতিবাদের আন্দোলন চলবে।’

এই সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের নায়েবে আমির মাওলানা আজিজুর রহমান, সেক্রেটারি অ্যাড. আসাদুজ্জামান, সহকারী সেক্রেটারি অ্যাড. মাসুদ পারভেজ রাসেল, আব্দুল কাদের, ইসলামী ছাত্রশিবিরের জেলা সভাপতি সাগর আহমেদ প্রমুখ। তারা বলেন, বিশ্বের মুসলিম নেতাদের এখনই ঐক্যবদ্ধভাবে মানবতার শত্রু ইসরায়েলি দখলদার বাহিনীর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে এবং গাজায় মুসলিমদের জীবন রক্ষা করতে হবে। বক্তারা ইসরায়েলি পণ্যের বর্জনেরও আহ্বান জানান।

একই দিনে বিকেলে ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরায়েলের হামলার প্রতিবাদে বাংলাদেশ ইসলামী আন্দোলন চুয়াডাঙ্গা জেলা ও ইসলামী যুব আন্দোলন সদর থানা শাখা এবং চুয়াডাঙ্গা জেলা উলামা পরিষদ বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ আয়োজন করে। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামান সজিবের সভাপতিত্বে ফিলিস্তিনের গাজা উপত্যকায় ইতিহাসের জঘন্যতম গণহত্যার প্রতিবাদে এবং বিশ্বব্যাপী আহুত হরতালের সমর্থনে চুয়াডাঙ্গায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।

চুয়াডাঙ্গা জেলা উলামা পরিষদ ও ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এই বিক্ষোভ কর্মসূচি আসরের নামাজের পর চুয়াডাঙ্গা শহরের থানা মসজিদ সংলগ্ন মুক্তমঞ্চে সমবেত হয়ে শুরু হয়। সমাবেশ শেষে বিশাল বিক্ষোভ মিছিল শহরের প্রধান প্রধান সড়ক শহিদ আবুল কাশেম সড়ক, পৌরসভা মোড়, কবরী রোড, কলেজ রোড, কোর্ট মোড় দোয়েল চত্বর প্রদক্ষিণ করে বড় বাজারের শহিদ হাসান চত্বরে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন চুয়াডাঙ্গা জেলা উলামা পরিষদের সভাপতি মুফতি জুনাইদ আল হাবিবী, সেক্রেটারি মুফতি মোস্তফা কামাল কাসেমী, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি হাসানুজ্জামান সজিব, সহসভাপতি মাওলানা জহুরুল ইসলাম আজিজী এবং সেক্রেটারি তুষার ইমরান সরকার।

বক্তারা বলেন, ‘ইহুদিবাদী সন্ত্রাসী শক্তি, জারজ-দখলদার রাষ্ট্র ইসরাইল আমেরিকার সহায়তায় নিরীহ ফিলিস্তিনিদের ওপর ইতিহাসের জঘন্যতম বর্বর গণহত্যা চালিয়ে যাচ্ছে। গাজা উপত্যকা ও রাফাহ শহর তারা বোমার আঘাতে মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিচ্ছে। নারী-শিশুসহ সকল মুসলমানকে তারা পাখির মতো নির্মমভাবে হত্যা করছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই। গাজার জনগণ আজ বিশ্বব্যাপী হরতালের ডাক দিয়েছে, আমরা সেই কর্মসূচির প্রতি সংহতি জানাতে মাঠে নেমেছি। গাজার ভাইদের বলতে চাই-আমরা তোমাদের পাশে আছি।’

বক্তারা আরও বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ সরকারকে আহ্বান জানাই, গাজার মুসলমানদের সমর্থনে যা কিছু করা প্রয়োজন, তা তাৎক্ষণিকভাবে গ্রহণ করুন। এ দেশের কোটি কোটি জনতা আপনাকে সহযোগিতা করবে। মুসলিম রাষ্ট্রনেতারা যদি আজ ঐক্যবদ্ধভাবে আওয়াজ তুলতেন, তাহলে ইসরাইল কখনোই আমেরিকার সহযোগিতায় গাজায় গণহত্যা চালাতে পারত না। আমরা সকল মুসলিম রাষ্ট্রনেতাদের বলছি, আপনারা আল্লাহকে ভয় করুন, গাজার নিপীড়িত মানুষের পক্ষে অবস্থান নিন। ইহুদিবাদী ইসরাইল ও আমেরিকার বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তুলুন। বিশ্বের ২০০ কোটি মুসলমান এবং আল্লাহর রহমত আপনাদের সঙ্গে থাকবে।’ এছাড়াও, ফিলিস্তিনের গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নারী ও শিশু হত্যার প্রতিবাদে ‘ডেমোনেস্ট্রেশন’ কর্মসূচি পালন করেছে ন্যাশনাল ডক্টর্স ফোরাম (এনডিএফ) চুয়াডাঙ্গা শাখা। গতকাল বেলা একটায় চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতাল প্রাঙ্গণে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। এতে উপস্থিত থেকে বক্তব্য দেন এনডিএফ চুয়াডাঙ্গা জেলা শাখার সভাপতি ডা. মাহাবুবুর রহমান মিলন, সাধারণ সম্পাদক ও অর্থপেডিক কনসালটেন্ট রোকনুজ্জামান। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন চুয়াডাঙ্গা সদর হাসপাতালের শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. আসাদুজ্জামান মালিক খোকন, ডা. আব্দুর রহমান, ডা. সাজিদ হাসান, ডা. ফাতিমা হকসহ সংগঠনের স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও চিকিৎসকরা অংশ নেন। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, ‘গাজায় চলমান হত্যাযজ্ঞ মানবতাবিরোধী অপরাধ। বিশ্ব সম্প্রদায়ের উচিত দ্রুত এই সহিংসতা বন্ধে কার‌্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করা।’

আলমডাঙ্গা:
অব্যহত এই গণহত্যার প্রতিবাদে আলমডাঙ্গায় ছাত্র-জনতার স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণে জোরালো বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচি চলাকালে বিক্ষোভকারীরা আবেগঘন ও প্রতিবাদমূলক স্লোগান দেয়। বিকেল পাঁচটায় উপজেলা মডেল মসজিদের সামনে থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের হয়। এরপর ‘নো ওয়ার্ক, নো স্কুল’ কর্মসূচির আওতায় উপজেলা শহরের প্রধান সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ অনুষ্ঠিত হয়। মিছিল শেষে ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়। এসময় আলমডাঙ্গা শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ১ ঘণ্টা বন্ধ রাখা হয়। কর্মসূচিতে বিএনপি আলমডাঙ্গা উপজেলা শাখা, ছাত্রদল, জামায়াতে ইসলামী, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন, উপজেলা ওলামা পরিষদ, ইসলামী ছাত্রশিবির, বণিক সমিতি, গার্মেন্টস সমিতি, কাপড় ব্যবসায়ী সমিতিসহ বিভিন্ন সংগঠন একযোগে অংশ নেয়। আল-তায়েবা দোকান মোড়ে আয়োজিত সংক্ষিপ্ত সমাবেশে বক্তব্য দেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের উপজেলা আহ্বায়ক রাকিবুল হাসান, সমন্বয়ক মুসাব আলী, কাজল, উপজেলা ছাত্রদলের সাবেক আহ্বায়ক জাহিদ হাসান শুভ, মাওলানা ইমদাদুল হক, মাওলানা আকরাম হোসেন, উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি আক্তার হোসেন, পৌর বিএনপির সভাপতি আজিজুর রহমান প্রমুখ। বক্তারা বলেন, গাজায় মুসলিম ভাই-বোনদের ওপর ইসরায়েলি হামলা মানবতাবিরোধী অপরাধ। বিশ্ব সম্প্রদায়ের এখনই কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। সামর্থ্য থাকলে আলমডাঙ্গার ১০ হাজার ছাত্র-জনতা ফিলিস্তিনে গিয়ে লড়াইয়ে অংশ নিতো। বিক্ষোভ শেষে ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলনের উপজেলা সভাপতি মাওলনা আকরাম হোসেনের পরিচালনায় দোয়া ও মোনাজাত অনুষ্ঠিত হয়।

দর্শনা:
ইসরাইল কর্তৃক নিরীহ মুসলিমদের ওপর হামলা ও গণহত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে দর্শনা থানা উলামা পরিষদ ও তওহীদি জনতা। গতকাল বাদ আছর এ কর্মসূচিতে অংশ নেন ধর্মপ্রাণ মুসল্লিরা। মিছিলে ইসরাইলি পণ্য বর্জন, নেতানিয়াহুর ফাঁসি ও যুদ্ধ বন্ধের দাবি জানানো হয়। শহরের সকল ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও দোকানপাট বন্ধ রেখে ব্যবসায়ীরাও এতে যোগ দেন। দর্শনা মুক্ত মঞ্চ থেকে মিছিল শুরু হয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে বাসস্ট্যান্ডে গিয়ে শেষ হয়। সভাপতিত্ব করেন উলামা পরিষদের সভাপতি মাওলানা আব্দুল মালেক। বক্তব্য দেন সাধারণ সম্পাদক মাওলানা জুনায়েদ আজাদ, সহ-সভাপতি মাওলানা আব্দুল বাসার, সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান, দপ্তর সম্পাদক মাওলানা ওমর ফারুক প্রমুখ। এ সময় দর্শনার চারটি প্রবেশমুখে ১৫ মিনিট যান চলাচল বন্ধ থাকে। শেষে দর্শনা চৌরাস্তা মোড়ে নেতানিয়াহুর কুশপুত্তলিকা ও ইসরাইলের পতাকা পোড়ানো হয়। মিছিল ও সমাবেশ পরিচালনা করেন ইউনুস আলী ও মাওলানা আবু জাফর।

জীবননগর:
স্বাধীন ফিলিস্তিন রাষ্ট্র ও গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যা বন্ধের দাবিতে মানববন্ধন করেছে জীবননগরের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ ও শিক্ষার্থীরা। গতকাল বিকেল চারটায় জীবননগর শহরে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়। এতে কয়েক শতাধিক মানুষ অংশ নেয়। বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা একাত্মতা প্রকাশ করে কর্মসূচিতে যোগ দেন। ‘ফিলিস্তিন মুক্তি পাক, ইসরাইল নিপাত যাক’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, আল আকসা জিন্দাবাদ’সহ নানা স্লোগানে মুখরিত হয় মানববন্ধনস্থল। ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ জীবননগর শাখার সভাপতি মাওলানা সাজেদুর রহমান বলেন, গাজায় শিশু, নারী ও সাধারণ মানুষের ওপর যে নৃশংসতা চলছে, তা রাজনৈতিক নয়, এটি চরম মানবিক ও নৈতিক সংকট। যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন, মানবিক করিডোরে হামলা ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা ধ্বংস সভ্যতার চরম অবক্ষয়। মানববন্ধনে বক্তারা বলেন, এখন শুধু সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিবাদ নয়, রাস্তায় দাঁড়িয়ে মানবতার পক্ষে কণ্ঠ মিলিয়ে আওয়াজ তোলার সময় এসেছে। তারা যুক্তরাষ্ট্র ও আরব দেশের নিষ্ক্রিয়তাকে সংকট দীর্ঘায়িত হওয়ার কারণ বলে অভিহিত করেন। তারা ইসরায়েলের গণহত্যা এবং তা সমর্থনকারী পরাশক্তিগুলোর তীব্র নিন্দা জানান। পাশাপাশি আরব বিশ্বের নিরবতা ও জাতিসংঘের নিষ্ক্রিয়তায় গভীর হতাশা প্রকাশ করেন।

আন্দুলবাড়ীয়া:
আন্দুলবাড়ীয়া ইউনিয়নের তাওহীদি জনতা ফিলিস্তিনিদের ওপর ইসরাইলি আগ্রাসনের প্রতিবাদে ও হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। গতকাল আছর নামাজের পর বাজারের দোয়েল চত্বরে এ কর্মসূচি পালিত হয়। সমাবেশে বক্তৃতা দেন কেন্দ্রীয় জামে মসজিদের খতিব মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ইমাম-মুয়াজ্জিন কল্যাণ পরিষদের সভাপতি মাওলানা আনোয়ার হোসাইন, মুফতি শহিদুল ইসলাম সোহেল আশরাফি, ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন নেতৃবৃন্দ, খেলাফত মজলিস, জামায়াতে ইসলামীর স্থানীয় নেতারা। ফিলিস্তিনি জাতীয় পতাকা, কালো পতাকা, ফেস্টুন ও প্ল্যাকার্ড হাতে নিয়ে বিক্ষোভকারীরা বাজারের প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ করে। দোয়েল চত্বরে অনুষ্ঠিত পথসভা সঞ্চালনা করেন মাদরাসা মুহতামিম মাওলানা তরিকুল ইসলাম মাহমুদী। প্রেসক্লাব, মাদরাসা, মসজিদ কমিটি ও সাধারণ জনগণসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে এতে অংশ নেন।

মেহেরপুর:
গাজায় ইসরায়েলের বর্বর হামলার প্রতিবাদে গতকাল সকালে মেহেরপুর পৌরসভার সামনে মানববন্ধন করে সচেতন মহল। এতে বিভিন্ন স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। বক্তারা বলেন, অনতিবিলম্বে এই হত্যাযজ্ঞ বন্ধ করতে হবে। ইসরায়েলকে গণহত্যার দায়ে বিশ্বের মানচিত্র থেকে মুছে ফেলার আহ্বান জানান তারা। মানববন্ধনে বক্তব্য দেন রোকন, খন্দকার, সুরুজ ফয়সাল, জাহিদ, রাহিদুজ্জামান, আসিফ খন্দকারসহ শিক্ষার্থীদের অভিভাবকগণ। বিকেলে জামায়াতে ইসলামীর মেহেরপুর জেলা শাখার উদ্যোগে পৃথক বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। কোর্ট মসজিদ থেকে মিছিলটি শহর প্রদক্ষিণ করে প্রেসক্লাবের সামনে সমাবেশ করে। বক্তব্য দেন জেলা জামায়াতের সেক্রেটারি ইকবাল হুসাইন, নায়েবে আমির মাওলানা মাহবুবুল আলম, রাজনীতি সেক্রেটারি কাজী রুহুল আমিন, সদর উপজেলা আমির মাওলানা সোহেল রানা, পৌর আমির সোহেল রানা ডলার, খেলাফত মজলিস সভাপতি হুসাইন আহমেদ, শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনের সভাপতি আব্দুর রউফ মুকুল, ব্যবসায়ী বিভাগের সভাপতি সাইফুল ইসলাম প্রমুখ। বক্তারা আরোও বলেন, ফিলিস্তিনে ইসরায়েলের বর্বরতা মানবাধিকার লঙ্ঘন। ইসরায়েলের পণ্য বর্জন ও নিষেধাজ্ঞার দাবি জানিয়ে বলেন, বিশ্ব যদি থামাতে না পারে, প্রতিবাদ আরও তীব্র হবে।

গাংনী:
গাজায় ইসরায়েলের গণহত্যার প্রতিবাদে জামায়াতে ইসলামীর উদ্যোগে গাংনীতে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। গাংনী উপজেলা শাখার আমির ডা. মো. রবিউল ইসলামের নেতৃত্বে মিছিল অনুষ্ঠিত হয়। উপস্থিত ছিলেন জেলা জামায়াতের কর্মপরিষদ সদস্য নাজমুল হুদা, সূরা সদস্য মাওলানা আব্দুল মজিদ, উপজেলা সেক্রেটারি মাওলানা জাহাঙ্গীর আলম, বায়তুলমাল সম্পাদক সামসুল হুদা, নায়েবে আমির মাওলানা মফিজুর রহমান, পৌর সেক্রেটারি ওয়ায়েস কুরুনি জামিল, বায়তুলমাল ও রাজনৈতিক সেক্রেটারি জিল্লুর রহমান এবং কাজিপুর ইউপি চেয়ারম্যান আলম হুসাইন। বক্তারা বলেন, বিশ্ব বিবেক আজ নিশ্চুপ। মানবাধিকার কোথায়? শক্তি সঞ্চয় করে প্রতিরোধ গড়তে হবে। মুসলিম হিসেবে লজ্জা হয়, এখনও লড়াইয়ে নামতে পারছি না। বক্তারা ইসরায়েলি পণ্য বর্জনের আহ্বান জানান।

মুজিবনগর:
ফিলিস্তিনে ইসরায়েলি বর্বরতা বন্ধের দাবিতে তৌহিদী জনতার উদ্যোগে মুজিবনগরে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধন হয়। রামনগর প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে শুরু হয়ে মিছিলটি কেদারগঞ্জ বাজারে গিয়ে শেষ হয়। বক্তব্য দেন উপজেলা জামায়াতের আমির মাওলানা খান জাহান আলী, জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুর রশিদ, নায়েবে আমির মাওলানা ফিরাতুল ইসলাম নাইম, সাধারণ সম্পাদক খাইরুল বাসার, ছাত্রশিবির সভাপতি আবু তালহা, খেলাফত মজলিস সাধারণ সম্পাদক আব্বাস উদ্দীন, ইসলামী আন্দোলনের যুব বিষয়ক সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সংগঠক শাওন শেখ প্রমুখ। মাওলানা খান জাহান আলী বলেন, যেসব দোকানে ইসরায়েলি পণ্য বিক্রি হয়, সেগুলো নিষিদ্ধ ঘোষণা করছি। এরপরও বিক্রি হলে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।

ঝিনাইদহ:
ফিলিস্তিনের গাজায় দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বর্বর হামলার প্রতিবাদে ঝিনাইদহে বিক্ষোভ করেছে জনতা। এসময় বিক্ষোভকারীরা কাফনের কাপড় পরে ও প্রতীকী মরদেহ কোলে নিয়ে বিক্ষোভ করেন। এতে কয়েক হাজার মানুষ ফিলিস্তিনের পক্ষে বিভিন্ন স্লোগান দেন। বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঝিনাইদহবাসীর ব্যানারে এই বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়। মিছিলটি শহরের গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে পায়রা চত্বরে গিয়ে সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশে ঝিনাইদহ ইমাম পরিষদের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসাইন, কেসি কলেজের প্রভাষক আলমগীর হোসেন, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের পক্ষে তৌফিক হাসান, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষে রত্না খাতুন, কেসি কলেজ ছাত্রদের পক্ষে তাসদিদ হাসানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও ছাত্রসংগঠনের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। শহরের পায়রা চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে বক্তারা বলেন, মুসলিম বিশ্ব আজ বিচ্ছিন্ন। তারা দিনের পর দিন চুপ থাকার কারণে আজ ফিলিস্তিনে মুসলিম ভাই-বোনের প্রাণ ঝরছে। বর্বর ইসরাইল ন্যাক্কারজনকভাবে গণহত্যা চালাচ্ছে। গাজা উপত্যকা আজ মৃত্যুপুরীতে পরিণত হয়েছে। ইতিহাস দখলদার ইহুদিবাদী ইসরাইলকে ক্ষমা করবে না। আমরা সবসময় ফিলিস্তিনের মানুষের পাশে ছিলাম, ভবিষ্যতেও থাকব। বক্তারা আরও বলেন, ইসরাইলের সব ধরনের পণ্য ব্যবহার বয়কট করতে হবে। ইসরাইলের দোসরদের চিহ্নিত করে তাদের বয়কট করতে হবে।